প্রধানমন্ত্রীর-কার্যালয়
কিছু পশ্চিমা শক্তি বাংলাদেশে পুতুল সরকার বসাতে চায়: এএলপিপি বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, কিছু পশ্চিমা শক্তি বাংলাদেশে পুতুল সরকার প্রতিষ্ঠা করতে চায়, যাতে তারা সহজেই তা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।
তিনি বলেন, ‘তারা যদি আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বানচাল করতে পারে, তাহলে তারা বাংলাদেশে পুতুল সরকার গঠন করতে পারবে এবং সহজেই তা নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে।’
রবিবার (২২ অক্টোবর) সংসদ ভবনে ক্ষমতাসীন দলের সভাকক্ষে আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের বৈঠকে (এএলপিপি) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্ধৃতি দিয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে আওয়ামী লীগের এক সংসদ সদস্য এসব কথা জানান।
সংসদ নেতা ও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিতে আগ্রহ না দেখালেও শেষের দিকে নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় আসতে পারে, এটিকে বিতর্কিত করার জন্য।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের আরেক সংসদ সদস্য বলেন, আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেছেন, বাংলাদেশে একটি পরাধীন সরকার আনতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি উভয়কেই নির্বাচন থেকে দূরে রাখার ষড়যন্ত্র চলছে।
তিনি বলেন, ‘নেত্রী (শেখ হাসিনা) বলেছেন যে আমরা (আওয়ামী লীগ) ও বিএনপি যাতে নির্বাচনে আসতে না পারি, সেজন্য স্বার্থান্বেষী মহল ষড়যন্ত্র করছে।’
আরও পড়ুন: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক চেয়েছে ইসি
তিনি বলেন, আমাদের এই ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করতে হবে এবং নির্বাচন করতে হবে।
তিনি বলেন, ক্ষমতাসীন দল তাদের জরিপের ভিত্তিতে আগামী জাতীয় সংসদের জন্য প্রার্থী বাছাই করবে।
তিনি বলেন, ‘আমি প্রতি ছয় মাস পর পর জরিপ পরিচালনা করেছি এবং সেই জরিপের ভিত্তিতে মনোনয়ন দেওয়া হবে।’
দলের নির্বাচিত প্রার্থীদের পক্ষে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার জন্য তিনি সংসদ সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘যারা দলীয় মনোনীত প্রার্থীদের বিরোধিতা করবে, তাদের রাজনীতি শেষ হয়ে যাবে।’
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের বৈঠকে উপস্থিত অনেক সংসদ সদস্য হয়ত দলীয় মনোনয়ন পাবেন না।
তিনি বলেন, ‘আমি শুধু আপনাদের মুখ দেখে মনোনয়ন দেবো না, আগামী নির্বাচনে যাদের জেতার সম্ভাবনা আছে তাদেরই দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হবে।’
প্রধানমন্ত্রী জানান, আগামী নির্বাচনে কারো কোনো দায়িত্ব নেবেন না।
তিনি বলেন, ‘আপনাদের নিজেদের দায়িত্ব নিতে হবে এবং নির্বাচনে জিততে হবে।’
আর সে লক্ষ্যে তিনি জনগণের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াতে সবাইকে নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকায় যাওয়ার নির্দেশ দেন।
বেশ কয়েকজন সংসদ সদস্য দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল উল্লেখ করে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, এটি নির্বাচনে তাদের জন্য একটি বড় ধাক্কা হতে পারে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল পরিহার করে আগামী নির্বাচনে দলের বিজয় নিশ্চিত করতে সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে।’
বৈঠক প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ সাংবাদিকদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন যে নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসতে পারে এবং এ কারণেই পাশ্চাত্যের অনেকেই নির্বাচন ছাড়া অনির্বাচিত সরকার চান। কারণ, অনির্বাচিত সরকার থাকলে তাদের প্রভাব বিস্তার করা সুবিধাজনক।
তিনি বলেন, নির্বাচনে বিজয়ী হতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
হানিফ আরও বলেন, বিভিন্ন জরিপ প্রতিবেদনের ভিত্তিতে মনোনয়ন দেওয়া হবে।
তিনি বলেন, ‘যাদের গ্রহণযোগ্যতা ও জনপ্রিয়তা আছে তাদেরই মনোনয়ন দেওয়া হবে। প্রার্থীকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।’
সভায় আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য শামীম ওসমান, রাজবাড়ীর কাজী কেরামত আলী, লক্ষ্মীপুরের নূর উদ্দিন চৌধুরী নয়ন, চট্টগ্রামের আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামউদ্দিন নদভী, সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য অ্যারোমা দত্ত ও সৈয়দা রুবিনা আক্তার মীরা বক্তব্য দেন।
আরও পড়ুন: ইসলামে নারীর অবস্থানবিষয়ক সম্মেলনে যোগ দিতে প্রধানমন্ত্রীর সৌদি যাওয়ার সম্ভাবনা
গুরুত্বপূর্ণ সময়ে প্রধানমন্ত্রীর ব্রাসেলস সফর বাংলাদেশ-ইইউ সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
বাংলাদেশে সবাই সমান ধর্মীয় অধিকার ভোগ করে: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তার সরকার ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সব নাগরিকের সমান অধিকার নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর।
রবিবার (২২ অক্টোবর) রাজধানীর ঢাকেশ্বরী মন্দিরের দুর্গাপূজার মণ্ডপে হিন্দু ভক্তদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন।
আরও পড়ুন: আ. লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য ফখরুল ইসলাম মুন্সীর মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রীর শোক
তিনি বলেন, ‘আমরা সবসময় বিশ্বাস করি, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে দেশের সবাই সমান অধিকার ভোগ করবে।’
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে সারা দেশে উদযাপিত হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৭১ সালে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য লড়াই করেছিল এবং তাই এখানে সবার সমান অধিকার রয়েছে।
‘আমরা সবাই এই মাটির সন্তান। আমরা এই ভূমিতে আমাদের নিজ নিজ অধিকার উপভোগ করে বসবাস করব।’
প্রধানমন্ত্রী হিন্দু সম্প্রদায়কে বাংলাদেশ ও এর অগ্রগতির জন্য দোয়া করার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, আজকের বাংলাদেশের প্রতিটি বাড়ি বিদ্যুতের আওতায় এসেছে এবং প্রতিটি পরিবারে খাবার রয়েছে। সরকার জনগণের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিচ্ছে।
তিনি বলেন, এই উন্নয়ন বাংলাদেশের প্রতিটি স্থান স্পর্শ করেছে।
তিনি বলেন, জনগণের কল্যাণ নিশ্চিত করা আমাদের কাজ এবং একমাত্র দায়িত্ব। এখন আমাদের লক্ষ্য ২০৪১ সালের মধ্যে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ে তোলা এবং আমরা সেই লক্ষ্য অর্জন করতে সক্ষম হব।
শেখ হাসিনা বলেন, সারাদেশে আনন্দও শান্তিপূর্ণভাবে দুর্গাপূজা উদযাপিত হচ্ছে এবং উৎসব চলাকালে যাতে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সেজন্য পুলিশ ও তার দলের সদস্যসহ সংশ্লিষ্ট সব সরকারি সংস্থা আন্তরিকভাবে কাজ করছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা চাই এই পূজা উৎসব শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হোক। সরকার শান্তিপূর্ণভাবে ধর্মীয় উৎসব উদযাপনের জন্য প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।’
তিনি বলেন, এবার শান্তিপূর্ণ পরিবেশের মধ্য দিয়ে সারাদেশে ৩২ হাজারেরও বেশি পূজা মণ্ডপে দুর্গাপূজা উদযাপিত হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বের হিন্দু সম্প্রদায়ের সবাইকে শুভেচ্ছা জানান।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি জে এল ভৌমিক ও মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি মণীন্দ্র কুমার নাথ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।
এ সময় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস, স্থানীয় সংসদ সদস্য হাজী মোহাম্মদ সেলিম, বিপিইউপির সাধারণ সম্পাদক নির্মল কুমার চ্যাটার্জি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
দেশের বিভিন্ন মন্দির ও অস্থায়ী মণ্ডপে বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হয়েছে পাঁচ দিনব্যাপী শারদীয় দুর্গাপূজা উৎসব।
আরও পড়ুন: ইসলামে নারীর অবস্থানবিষয়ক সম্মেলনে যোগ দিতে প্রধানমন্ত্রীর সৌদি যাওয়ার সম্ভাবনা
আন্দোলনের নামে বিএনপি-জামায়াতকে নৈরাজ্য করতে দেওয়া হবে না: প্রধানমন্ত্রী
ইসলামে নারীর অবস্থানবিষয়ক সম্মেলনে যোগ দিতে প্রধানমন্ত্রীর সৌদি যাওয়ার সম্ভাবনা
আগামী ৬-৮ নভেম্বর অনুষ্ঠিতব্য ইসলামে নারীর অবস্থানবিষয়ক একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগ দিতে সৌদি আরবের জেদ্দায় যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার।
সৌদি আরব ও অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশন (ওআইসি) সম্মেলনের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে ইউএনবিকে জানিয়েছেন একজন কর্মকর্তা।
২০২৩ সালের মার্চ মাসে মৌরিতানিয়ায় অনুষ্ঠিত পররাষ্ট্র মন্ত্রীদের কাউন্সিলের ৪৯তম অধিবেশনে ইসলামে নারীর উপর একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন আয়োজনের আহ্বান জানানো হয়। জেনারেল সেক্রেটারিয়েটের সঙ্গে সমন্বয় করে এটি আয়োজনের প্রস্তাবকে স্বাগত জানায় সৌদি আরব।
ইসলাম অনুযায়ী শিক্ষা ও কাজের ক্ষেত্রে নারীর অধিকার ও দায়িত্ব স্পষ্ট করা সম্মেলনের লক্ষ্য। এতে ইসলামী পণ্ডিতরা অংশ নেবেন।
গত সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে দেখা করেন বাংলাদেশে সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত এসা ইউসুফ এসা আল দুহাইলান। তখন প্রধানমন্ত্রীকে ইসলামে নারীবিষয়ক সম্মেলনে অংশগ্রহণের আমন্ত্রণ জানিয়ে একটি চিঠি দেন তিনি।
২০৩৪ সালের ফিফা বিশ্বকাপ আয়োজনে তার দেশের আবেদনে বাংলাদেশের সমর্থন চেয়ে আরেকটি চিঠিও তিনি হস্তান্তর করেন।
এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী ইতিবাচক সাড়া দিয়েছেন।
এদিকে, গ্লোবাল গেটওয়ে ফোরাম ২০২৩-এ যোগ দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চলতি মাসের শেষের দিকে বেলজিয়ামের ব্রাসেলস সফর করবেন।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) এবং সারা বিশ্বের সরকারের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বেসরকারি খাত, সুশীল সমাজ, নেতৃস্থানীয় চিন্তাবিদ, অর্থায়নকারী প্রতিষ্ঠান এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সঙ্গে একত্রে ২৫-২৬ বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে একটি দুদিনের অনুষ্ঠান আয়োজন করবে গ্লোবাল গেটওয়ে ফোরাম।
প্রধানমন্ত্রী আগামী ২৭ অক্টোবর দেশে ফিরবেন বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। তিনি রবিবার গণমাধ্যমকে বিস্তারিত ব্রিফ করবেন।
মোমেন বলেন, ফোরামের সাইডলাইনে ইউরোপীয় দেশগুলোর নেতাদের সঙ্গে বেশ কয়েকটি বৈঠক করবেন প্রধানমন্ত্রী।
ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডার লেন সম্প্রতি জি-২০ সম্মেলনে সাক্ষাৎকালে প্রধানমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানান।
টেকসই উন্নয়ন ও অনুশাসন, স্বচ্ছতা ও সমান অংশীদারিত্বের মতো ইউরোপীয় মূল্যবোধের উপর জোর দেয় ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) গ্লোবাল গেটওয়ে কৌশল। একই সঙ্গে পরিবহন ও সরবরাহ চেইন, গ্রিন এনার্জি, আধুনিক টেলিযোগাযোগ, শিক্ষা ও গবেষণার বৈশ্বিক নেটওয়ার্কে সরকারি ও বেসরকারি বিনিয়োগকে উৎসাহিত করে সারা বিশ্বের দেশ ও অঞ্চলগুলোকে সংযুক্ত করে এটি।
গ্লোবাল গেটওয়ে ফোরামের উদ্দেশ্য হলো সরকারি ও বেসরকারি খাতের চ্যালেঞ্জ, সর্বোত্তম অনুশীলন এবং অভিজ্ঞতার আলোকে অবকাঠামোতে বিশ্বব্যাপী বিনিয়োগসংক্রান্ত বিষয় নিয়ে বিতর্কের জন্য নেতাদের একত্র করা।
এটি গ্রিন এনার্জি স্থানান্তর এবং সবুজ হাইড্রোজেন, শিক্ষা ও গবেষণা, জটিল কাঁচামাল, পরিবহন করিডোর, স্বাস্থ্যসেবা পণ্য উৎপাদন এবং ডিজিটাল পরিকাঠামো থিমের উপর গুরুত্বারোপ করবে।
এটি গ্লোবাল অবকাঠামো ও বিনিয়োগের জন্য জি-৭ অংশীদারিত্ব প্রদর্শনের জন্য একটি প্ল্যাটফর্মও তৈরি করবে।
আন্দোলনের নামে বিএনপি-জামায়াতকে নৈরাজ্য করতে দেওয়া হবে না: প্রধানমন্ত্রী
আন্দোলনের নামে যেকোনো ধরনের নৈরাজ্য ও ভাঙচুরের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি দিয়ে শনিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তার সরকার ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড বরদাস্ত করবে না।
বিএনপি-জামায়াত ও তাদের মিত্রদের রাজপথে বিক্ষোভের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাদের আন্দোলন কর্মসূচি করতে দিন।
তিনি ঘোষণা করেন, ‘কিন্তু যদি তারা আবার অগ্নিসংযোগ সন্ত্রাস ও ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ শুরু করে; যদি কেউ অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়, আমরা তাদের রেহাই দেব না এবং এটাই বাস্তবতা।’
বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের নবনির্মিত ১৫ তলা ভবন উদ্বোধনের পর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ আয়োজিত আইনজীবীদের মহাসমাবেশে ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ১৯৭৫-১৯৯৬ এবং ২০০১-২০০৮ পর্যন্ত ২৯ বছরে বাংলাদেশের মানুষ তাদের উন্নতির জন্য কোনো পরিবর্তন দেখেনি।
তিনি বলেন, ‘যারা ক্ষমতায় আছে তারা নিজেদের ভাগ্য বদলাতে ব্যস্ত ছিল। তারা দেশের মানুষের জন্য কিছুই করেনি। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পরই জনগণের অবস্থার উন্নতি হতে শুরু করে।’
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তিনি কখনো নিজের স্বার্থে রাজনীতি করেন না।
তিনি বলেন, আমি এদেশের মানুষের কল্যাণে রাজনীতি করি।
সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের আহ্বায়ক ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের সদস্য সচিব ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস, বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের চেয়ারম্যান আবু মোহাম্মদ অমি উদ্দিন, ভাইস চেয়ারম্যান সৈয়দ রেজাউর রহমান, আইনবিষয়ক সম্পাদক নজিবুল্লাহ হিরু এবং আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সারওয়ার।
আইন মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত ‘বঙ্গবন্ধুর আইনি দর্শন’ শীর্ষক বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে সদ্য উদ্বোধন হওয়া বাংলাদেশ বার কাউন্সিল ভবনের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যের উপর একটি ভিডিও ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়।
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি আয়োজিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও প্রত্যক্ষ করেন প্রধানমন্ত্রী।
বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের নতুন ভবনের উদ্বোধন শনিবার
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শনিবার (২১ অক্টোবর) ঢাকায় বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের নবনির্মিত ভবন উদ্বোধন করবেন।
১৩৮ কোটি টাকা ব্যয়ে অত্যাধুনিক সুবিধা সম্বলিত ১৫ তলা বার কাউন্সিল ভবনে পর্যাপ্ত অফিস স্পেস, মিটিং রুম, দুটি কনফারেন্স রুম, রেকর্ড রুম, স্টোর রুম, ওয়েটিং এরিয়া, ক্যাফেটেরিয়া, ডে-কেয়ার সেন্টার, প্রদর্শনী স্থান এবং অন্যান্য অনেক সুবিধা রয়েছে।
ভবন উদ্বোধনের পর তিনি ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আইনজীবীদের মহাসমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেবেন।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করবেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
সমাবেশে বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের কেন্দ্রীয় নেতারা এবং সারাদেশ থেকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুসারী আইনজীবীরা অংশ নেবেন।
আরও পড়ুন: বিএনপি মানুষ হত্যাকারী সন্ত্রাসী দল: প্রধানমন্ত্রী
একদিনে ৩৯ জেলায় ১৫০টি সেতুর উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
উন্নয়নের ধারা বজায় রাখতে আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে ভোট দিন: প্রধানমন্ত্রী
বিএনপি মানুষ হত্যাকারী সন্ত্রাসী দল: প্রধানমন্ত্রী
বিএনপিকে 'মানুষ হত্যাকারী সন্ত্রাসী দল' হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘বিএনপি একটি সন্ত্রাসী দল এবং মানুষ হত্যাকারী দল। তারা প্রতিদিন আমাদের পদত্যাগ চায় এবং আন্দোলনের মাধ্যমে আমাদের উৎখাত করে। এটা ভালো। তাদের আন্দোলন চালিয়ে যেতে দিন।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি বিএনপিকে বিরোধী দল বলতে চান না, কারণ তাদের সংসদে কোনো প্রতিনিধিত্ব নেই। তিনি বলেন, 'গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় বিরোধী দলই সংসদে আসন পায়।’
বুধবার (১৯ অক্টোবর) বৃহস্পতিবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে সড়ক ভবন থেকে সড়ক ও জনপথ বিভাগের ৩৯টি জেলায় নবনির্মিত ১৫০টি সেতু এবং ১৪টি নবনির্মিত ওভারপাস উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, বিএনপির আন্দোলনে সরকারের কোনো আপত্তি নেই। তবে জনগণের সুরক্ষার স্বার্থে সম্ভাব্য অগ্নিসংযোগের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি বলেন, 'তারা আন্দোলন করলে আমার কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু তাদের জনগণের কোনো ক্ষতি করতে দেওয়া হবে না। আমি মনে করি এ ব্যাপারে আপনাদের সবার কিছুটা হলেও সজাগ থাকা উচিত।’
আরও পড়ুন: নিরাপদ প্রস্থান চান নাকি ক্ষমতাচ্যুতি চান, সিদ্ধান্ত নিন: ফখরুল
তিনি আরও বলেন, এটা ভালো যে বিএনপি-জামায়াত এখন আন্দোলন করছে। তিনি বলেন, ‘তারা যদি বাসে আগুন দিতে যায়, তাহলে আমি পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থাসহ সবাইকে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে বলেছি, যাতে তারা জনগণের কোনো ক্ষতি করতে না পারে এবং অগ্নিসংযোগ করতে না পারে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি বিএনপিকে বিরোধী দল বলতে চান না, কারণ গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় সংসদে বিরোধী দলের আসন থাকে।
তিনি বলেন, জনগণ ছাড়া তার আর কিছুই নেই। ‘আমি সব হারিয়েছি- বাবা-মা ও ভাইদের। আমার হারানোর আর কিছু নেই। আমার একমাত্র লক্ষ্য আমার দেশের মানুষের কল্যাণ নিশ্চিত করা। আমরা নিরলসভাবে তা করে যাচ্ছি।’
২০০৮ সালের সাধারণ নির্বাচনে বিএনপি মাত্র ২৯টি আসন এবং পরে উপনির্বাচনে আরেকটি আসন পেয়েছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, ৩০০ আসনের মধ্যে ৩০টি আসন জনগণের কাছে তাদের গ্রহণযোগ্যতার করুণ অবস্থার প্রতিফলন।
তিনি বলেন, ‘এখন তারা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে অনেক কথা বলে। তাদের কথা ও কাজ সবকিছুই ধ্বংসাত্মক। আমি এ বিষয়ে দেশের জনগণকে সতর্ক করতে চাই।’
আরও পড়ুন: অবরোধ করলে বিএনপি অবরুদ্ধ হবে: ওবায়দুল কাদের
প্রধানমন্ত্রী বলেন, উন্নয়ন কর্মকাণ্ড ও অর্জন যেন নষ্ট না হয়।
অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা ময়মনসিংহে ব্রহ্মপুত্র নদের ওপর ১১০০ মিটার কেওয়াটখালি সেতু ও ১ হাজার ৪৭১ মিটার রহমতপুর সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর উন্মোচন, ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের জন্য নবনির্মিত ডিটিসিএ ভবন উদ্বোধন, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের বিআরটিএ অটোমেটেড মোটর ভেহিকেল ফিটনেস টেস্ট সেন্টার, বিআরটিসি বাস ডিপো ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশনের ট্রেনিং সেন্টারের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। পাশাপাশি দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন।
প্রধানমন্ত্রী ভার্চুয়াল প্লাটফর্মের মাধ্যমে অবকাঠামো উদ্বোধন করেন এবং রাজধানীর মিরপুরে ময়মনসিংহ সার্কিট হাউজ মাঠ ও বিআরটিএ অফিস থেকে দর্শকরা ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হন।
আরও পড়ুন: তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা আজিমপুর কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত: কাদের
ইসরায়েলের হামলায় নিহত ফিলিস্তিনিদের জন্য শনিবার রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা প্রধানমন্ত্রীর
সম্প্রতি ইসরায়েলি হামলায় নিহত ফিলিস্তিনিদের স্মরণে শনিবার (২১ অক্টোবর) বাংলাদেশে একদিনের রাষ্ট্রীয় শোক পালনের ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শুক্রবার (২০ অক্টোবর) সারাদেশের সব মসজিদে জুমার এবং অন্যান্য নামাজের পরে নিহত ফিলিস্তিনিদের জন্য দোয়া করার আহ্বান জানান তিনি।
তিনি বলেন, ইসরায়েলের নৃশংস হামলার শিকার শুধু মুসলিমরাই নয়, খ্রিস্টান ও ইহুদিরাও এর শিকার।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর তেজগাঁও এলাকার সড়ক ভবনে একযোগে ৩৯টি জেলায় ১৫০টি সেতু এবং সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের নবনির্মিত ১৪টি ওভারপাস উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ ঘোষণা দেন।
আরও পড়ুন: একদিনে ৩৯ জেলায় ১৫০টি সেতুর উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
তিনি বলেন, ফিলিস্তিনের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে বাংলাদেশ পাশে থাকবে। কারণ ফিলিস্তিনের ওপর বারবার হামলা কখনোই মেনে নেওয়া যায় না।
তিনি বলেন, ‘আমাদের অবস্থান হলো অবিলম্বে এই যুদ্ধ বন্ধ করতে হবে। ইসরায়েলের দখল করা ভূমি ফিলিস্তিনের জনগণকে ফিরিয়ে দেওয়া উচিত। ফিলিস্তিনের জনগণকে তাদের ভূমি ফিরিয়ে দিতে হবে।’
ঢাকায় অবস্থিত ওআইসি সদস্য দেশগুলোর রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে বুধবারের বৈঠকের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, তিনি রাষ্ট্রদূতদের বলেছেন ফিলিস্তিনি জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াই করতে হবে।
তিনি বলেন, ‘আমরাও তাদের সঙ্গে আছি। আমাদের লড়াই করতে হবে। তাদের ওপর বার বার হামলা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। আমরা এটা মেনে নিতে পারি না।’
তিনি বলেন, ইসরায়েল যেভাবে ফিলিস্তিনের একটি হাসপাতাল ও অন্যান্য স্থানে হামলা চালিয়ে ফিলিস্তিনের নারী ও শিশুসহ নিরপরাধ মানুষ হত্যা করেছে, তার নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ।
তিনি বলেন, ‘ইসরায়েলের বোমা হামলায় নিহত বা আহত শিশুদের রক্তমাখা মুখ দেখা অসহনীয়।’
তিনি বলেন, যুদ্ধবিধ্বস্ত ফিলিস্তিনের জনগণের জন্য বাংলাদেশ ওষুধ, শুকনো খাবার ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী পাঠাবে।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা নারী ও শিশুদের জন্য ওষুধ, শুকনো খাবার এবং প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র পাঠাব। আমরা এই পদক্ষেপ নিয়েছি। আমাদের যা কিছু সম্পদ আছে আমরা সবসময় তা নিয়ে মানুষের পাশে আছি।’
প্রধানমন্ত্রী ইতোমধ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে ফিলিস্তিনিদের জন্য ওষুধ পাঠানোর পদক্ষেপ নিতে বলেছেন।
বিএনপিকে খোঁচা দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, লক্ষ্য করা গেছে এ ধরনের ঘটনার পেছনে যারা অসন্তুষ্ট হবেন তাদের ভয়ে অনেকেই এ ব্যাপারে এখনও নীরব রয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘যারা নির্যাতিত মানুষের পক্ষে আওয়াজ তোলার সাহস পায় না, তারা (সরকারের) পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন করে; যা দুর্ভাগ্যজনক।’
অনুষ্ঠানে তিনি ময়মনসিংহে ব্রহ্মপুত্র নদের উপর ১ হাজার ১০০ মিটার কেওয়াটখালি সেতু এবং ১ হাজার ৪৭১ মিটার রহমতপুর সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর উন্মোচন, ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের জন্য নবনির্মিত ডিটিসিএ ভবন উদ্বোধন, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের বিআরটিএ অটোমেটেড মোটর ভেহিকেল ফিটনেস টেস্ট সেন্টার, বিআরটিসি বাস ডিপো এবং বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশনের প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের উদ্বোধন করেন।
প্রধানমন্ত্রী রাজধানীর তেজগাঁওয়ের সড়ক ভবনে এক অনুষ্ঠান থেকে ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে এসব অবকাঠামো উদ্বোধন করেন। ময়মনসিংহ সার্কিট হাউজ মাঠ এবং মিরপুরে বিআরটিএ অফিস থেকেও ভার্চুয়ালি যুক্ত হন দর্শকরা।
আরও পড়ুন: ওআইসি প্রতিবেশিদের সংলাপের মাধ্যমে তাদের সমস্যা সমাধানের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
একদিনে ৩৯ জেলায় ১৫০টি সেতুর উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের ৩৯টি জেলায় সড়ক ও জনপথ বিভাগের নবনির্মিত ১৫০টি সেতু ও ১৪টি ওভারপাস বৃহস্পতিবার একযোগে উদ্বোধন করেছেন।
তিনি ময়মনসিংহে ব্রহ্মপুত্র নদের উপর ১ হাজার ১০০ মিটার কেওয়াটখালী সেতু ও ১ হাজার ৪৭১ মিটার রহমতপুর সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর উন্মোচন, ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের জন্য নবনির্মিত ডিটিসিএ ভবন উদ্বোধন, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের বিআরটিএ অটোমেটেড মোটর ভেহিকেল ফিটনেস টেস্ট সেন্টার, বিআরটিসি বাস ডিপো ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশনের প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের উদ্বোধন করেন।
প্রধানমন্ত্রী রাজধানীর তেজগাঁওয়ের সড়ক ভবনে এক অনুষ্ঠান থেকে ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে এসব অবকাঠামো উদ্বোধন করেন। ময়মনসিংহ সার্কিট হাউজ মাঠ এবং মিরপুরে বিআরটিএ অফিস থেকেও ভার্চুয়ালি যুক্ত হন দর্শকরা।
তিনি সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের সড়ক ভবনে বঙ্গবন্ধুর একটি ম্যুরালও উন্মোচন করেন।
আরও পড়ুন: ওআইসি প্রতিবেশিদের সংলাপের মাধ্যমে তাদের সমস্যা সমাধানের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
এক বছরেরও কম সময়ের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী ময়মনসিংহ বিভাগে ৪০টি, ঢাকা বিভাগে ৩২টি, চট্টগ্রাম বিভাগে ২৭টি, রাজশাহী বিভাগে ২২টি, খুলনা বিভাগে ১২টি, বরিশাল ও রংপুর বিভাগে ৮টি করে এবং সিলেট বিভাগে একটি সেতু উদ্বোধন করেন।
১৫০টি সেতুর মোট দৈর্ঘ্য ৯ দশমিক ৪৫ কিলোমিটার এবং রাজশাহী বিভাগের ৮টি ও রংপুর বিভাগের ৬টি সহ মোট ১৪টি ওভারপাসের দৈর্ঘ্য ৬৮৯ মিটার।
৩ হাজার ২৬৩ কোটি ৬৩ লাখ টাকা ব্যয়ে ১ হাজার ১০০ মিটার দীর্ঘ কেওয়াটখালী সেতু এবং ৩৫৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ১ হাজার ৪৭১ মিটার দীর্ঘ রহমতপুর সেতু ২০২৫ সালের জুনের মধ্যে নির্মাণ করা হবে।
২০২২ সালের ৭ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২৫টি জেলায় ১০০টি সেতু উদ্বোধন করেন। সেতুগুলোর মোট দৈর্ঘ্য ছিল ৫ দশমিক ৫ কিলোমিটার।
আরও পড়ুন: ফিলিস্তিন সংকট সমাধান নির্ভর করছে মুসলিম উম্মাহর সম্মিলিত প্রচেষ্টার ওপর: প্রধানমন্ত্রী
ওআইসি প্রতিবেশিদের সংলাপের মাধ্যমে তাদের সমস্যা সমাধানের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওআইসি (ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা) প্রতিবেশিদেশগুলোকে সংলাপের মাধ্যমে তাদের সমস্যা সমাধানের আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি তার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন, ‘… এমনকি ওআইসি দেশগুলোর প্রতিবেশিদের মধ্যে সমস্যা থাকলেও একটি অভিন্ন কারণের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য সংলাপের মাধ্যমে সমাধান করুন।’
বৃহস্পতিবার ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে চলমান সংঘাতের প্রেক্ষাপটে সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত ঈসা বিন ইউসুফ আল দুহাইলান প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে তার সঙ্গে সাক্ষাৎকালে তিনি এ আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: ফিলিস্তিন সংকট সমাধান নির্ভর করছে মুসলিম উম্মাহর সম্মিলিত প্রচেষ্টার ওপর: প্রধানমন্ত্রী
সাক্ষাৎ শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
সৌদি রাষ্ট্রদূত আগামী ৬-৮ নভেম্বর জেদ্দায় অনুষ্ঠিতব্য ওআইসি'র 'উইমেন ইন ইসলাম' সম্মেলনে যোগদানের আমন্ত্রণ জানিয়ে একটি চিঠি হস্তান্তর করেন।
তিনি ২০৩৪ ফিফা বিশ্বকাপ আয়োজনে বাংলাদেশের সমর্থন চেয়ে আরেকটি চিঠি হস্তান্তর করেন।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে ইতিবাচক সাড়া দিয়েছেন।
রাষ্ট্রদূত এক্সপো ২০৩০ আয়োজনে বাংলাদেশের নতুন করে সমর্থনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানান।
শেখ হাসিনা রাষ্ট্রদূতকে অবহিত করেন, বাংলাদেশ একটি ইমাম সম্মেলন আয়োজন করতে যাচ্ছে এবং তিনি পবিত্র দু’টি মসজিদের ইমামদের এই অনুষ্ঠানে যোগদানের জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রদূতকে বলেন, বাংলাদেশ ইতোমধ্যে ভারতের সঙ্গে মুদ্রা বিনিময় চালু করেছে এবং অন্যান্য দেশের সঙ্গেও তা করতে চায়।
রাষ্ট্রদূত উল্লেখ করেন, তার দেশ প্রস্তাবটি বিবেচনা করবে।
তিনি পবিত্র দু’টি মসজিদের খাদেমকে তার শুভেচ্ছা জানান।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষের হৃদয়ে সৌদি আরবের জন্য বিশেষ স্থান রয়েছে।
প্রেস সচিব বলেন, রাষ্ট্রদূত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের ধারাবাহিক অগ্রগতির প্রশংসা করেন।
আরও পড়ুন: যুদ্ধ বন্ধ করে অস্ত্র কেনার অর্থ শিশুদের কল্যাণে সঞ্চয় করুন: বিশ্ব নেতাদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী
যুদ্ধ বন্ধ করে অস্ত্র কেনার অর্থ শিশুদের কল্যাণে সঞ্চয় করুন: বিশ্ব নেতাদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্ববাসীর কল্যাণের স্বার্থে চলমান যুদ্ধ ও অস্ত্রের প্রতিযোগিতা বন্ধে এগিয়ে আসতে বিশ্ব নেতাদের প্রতি তার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং মঙ্গলবার(১৭ অক্টোবর) ফিলিস্তিনের একটি হাসপাতালে বোমা হামলার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'যুদ্ধ ও অস্ত্র প্রতিযোগিতা জনগণের কল্যাণ বয়ে আনতে পারে না।
বুধবার(১৮ অক্টোবর) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে শেখ রাসেল দিবস-২০২৩ এর উদ্বোধনী ও শেখ রাসেল পদক-২০২৩ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: উন্নয়নের ধারা বজায় রাখতে আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে ভোট দিন: প্রধানমন্ত্রী
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেলের ৬০তম জন্মদিন উপলক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। মাত্র ১০ বছর বয়সে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের ট্র্যাজেডির অন্যতম শহীদ ছিলেন রাসেল।
শেখ হাসিনা বলেন, যুদ্ধে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির শিকার হচ্ছে শিশু ও নারীরা। ইসরায়েল এখন ফিলিস্তিনের ওপর হামলা শুরু করেছে। মঙ্গলবার একটি হাসপাতালে বোমা হামলায় অনেক শিশু নিহত হয়েছে। সেখানে শিশুদের রক্তাক্ত ছবি দেখা গেছে। ইসরায়েলেও শিশুদের হত্যা করা হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, তারা যুদ্ধে বাবা-মা ও সন্তানদের হারানো মানুষের বেদনা ও কষ্ট বুঝতে পারেন। কারণ ১৯৭৫ সালের রক্তপাতের পর বিদেশে শরণার্থী হিসেবে বসবাস করতে হয়েছে দুই বোন শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানাকে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তাই আমরা যুদ্ধ চাই না। আমি আহ্বান জানাচ্ছি যুদ্ধ বন্ধের।’
তিনি আরও বলেন, অস্ত্র উৎপাদন ও প্রতিযোগিতার জন্য যে অর্থ ব্যয় করা হয় তা খাদ্য, স্বাস্থ্যসেবা এবং বিশ্বের শিশুদের উন্নয়ন নিশ্চিত করতে ব্যবহার করতে হবে। ‘এটা আমাদের দাবি। আমিও এই দাবি করছি।’
বাংলাদেশ সবসময় শান্তির জন্য কাজ করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'আমরা শান্তি চাই। কারণ, শান্তি উন্নয়ন নিয়ে আসে এবং যুদ্ধ ধ্বংস ডেকে আনে। আমরা ধ্বংস চাই না, বরং উন্নয়ন ও শান্তি চাই।’
শিশুদের কল্যাণ ও সাফল্যে তার সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, শিশুদের উন্নয়নে তারা প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। সুতরাং শিশু মৃত্যুহার ও মাতৃমৃত্যুর হার হ্রাসের পাশাপাশি তাদের জন্য খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, শিশুরা যাতে শৈশব থেকেই শিক্ষার পাশাপাশি খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক চর্চায় সম্পৃক্ত হয়ে সঠিকভাবে গড়ে উঠতে পারে সেজন্য সরকার কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, 'আমি বাংলাদেশকে ডিজিটাল বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলেছি। আমরা দেশের শান্তি ও অগ্রগতি চাই।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, শিশুদের পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি বাবা-মা ও প্রিয়জনদের অনুগত হওয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, 'শিক্ষাই একজন মানুষের প্রধান শক্তি।’
শেখ হাসিনা বলেন, তিনি ও তার ছোট বোন রেহানা তাদের সন্তানদের বলেছিলেন যে তারা তাদের জন্য অর্থ ও সম্পদের মতো কিছুই রেখে যেতে পারবেন না এবং তাদের পড়াশোনা চালিয়ে যেতে বলেছিলেন। তারা (তাদের সন্তানরা) প্রকৃতপক্ষে শিক্ষা গ্রহণ করেছে এবং বিশ্বখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিগ্রি অর্জন করেছে।
তিনি বলেন, এখন তাদের সন্তানরা ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণ, অটিস্টিক শিশুদের উন্নয়ন ও সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মসূচির মতো দেশের উন্নয়নে পর্দার আড়ালে থেকে কাজ করছে।
তিনি বলেন, ‘ওরা সামনে আসে না। তারা নেপথ্যে থেকে দেশ ও দেশের স্বার্থে কাজ করে যাচ্ছে। তারা দেশের কল্যাণে আমাদের সহযোগিতা করে যাচ্ছেন।’
আরও পড়ুন: জন্মদিনে শেখ রাসেলকে স্মরণ করলেন প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ ও মাদক থেকে দূরে থেকে নিজেদের যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে দেশকে এগিয়ে নিতে শিশুদের উচ্চ আকাঙ্ক্ষী হতে আহ্বান জানান।
২০৪১ সালের মধ্যে দেশকে স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলতে তার সরকারের ভিশনের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকের শিশু-কিশোররা স্মার্ট বাংলাদেশের সৈনিক হবে এবং সে সময় দেশকে নেতৃত্ব দেবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার পর্যায়ক্রমে দেশের প্রতিটি স্কুলে একটি করে শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব স্থাপন করবে।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব শামসুল আরেফিন, শেখ রাসেল জাতীয় শিশু কিশোর পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি চৌধুরী নাফিজ সরাফাত, মহাসচিব কে এম শহীদুল্লাহ, সাংগঠনিক সম্পাদক ফরিদউদ্দিন আহমেদ রতন, শিশু বক্তা আমিরা নায়ের চৌধুরী বক্তব্য দেন।
পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার জাহাঙ্গীর হোসেন রনির সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে শেখ রাসেলের সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকা ভারতীয় কর্নেল (অব.) অশোক কুমার তারার একটি ভিডিও বার্তা, শেখ রাসেলের ওপর একটি ভিডিও ডকুমেন্টারি এবং শেখ রাসেল দিবস-২০২৩ উপলক্ষে একটি ‘থিম সং’ পরিবেশন করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী স্মার্ট কার্ড বিনিময়ের মাধ্যমে বেশ কয়েকটি প্রকল্পের উদ্বোধন করেন এবং আইসিটি বিভাগের আরও কয়েকটি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর উন্মোচন করেন।
রাসেলের শৈশব নিয়ে লেখা 'শ্রাবণের আবরণ শেখ রাসেল' বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
'শেখ রাসেল দীপ্তিময়, নির্ভীক নির্মল দুর্জয়' প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে পালিত হচ্ছে শেখ রাসেল দিবস-২০২৩।
রাসেল ১৯৬৪ সালের ১৮ অক্টোবর ধানমন্ডির ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবনে জন্মগ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ রাসেল পদক-২০২৩ এবং স্মার্ট বাংলাদেশ পদক-২০২৩ প্রদানের পাশাপাশি বিভিন্ন চিত্রাঙ্কন, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সমাপনী পুরস্কার বিতরণ করেন।
পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন (বাংলাদেশ পুলিশের পক্ষে) এবং চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, ঢাকা, পঞ্চগড় ও ঠাকুরগাঁও জেলার জেলা প্রশাসকরা (ডিসি) প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশ পদক-২০২৩ গ্রহণ করেন।
আরও পড়ুন: ইসরায়েল-ফিলিস্তিন যুদ্ধ বন্ধ করুন, নারী ও শিশুদের বাঁচান: বিশ্ব নেতাদের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান