প্রধানমন্ত্রীর-কার্যালয়
বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে উদার ও স্বচ্ছ সম্পর্ক চায় বাংলাদেশ: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে একটি উদার ও স্বচ্ছ সম্পর্ক রাখতে চায় বাংলাদেশ।
বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্টিন রাইজার এবং নবনিযুক্ত কান্ট্রি ডিরেক্টর আব্দুলায়ে সেক তার কার্যালয়ে সাক্ষাৎকালে তিনি এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে: ১৭ হাজার ৫৫৩ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণকাজ উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
সোমবার বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন,ধনী-দরিদ্র নির্বিশেষে বিশ্বজুড়ে মারাত্মক সমস্যা সৃষ্টিকারী রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের বিষয়ে বিশ্বব্যাংককে পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ করেছেন প্রধানমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রী বিলম্বিত পরিশোধের সময়সূচীসহ সৌদি জ্বালানি চেয়েছেন
এখন মেগাপ্রজেক্ট নয় জনকল্যাণমুখী প্রকল্প নিয়ে আসুন: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ক্ষুদ্র, গ্রামীণ বা জনকল্যাণমুখী প্রকল্প নিয়ে আসতে বলেছেন।
মঙ্গলবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় সভাপতিত্বকালে তিনি এ নির্দেশনা দেন।
সভা শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, মেগাপ্রজেক্ট করা যাবে না, তবে ক্ষুদ্র, গ্রামীণ প্রকল্প বা কল্যাণমুখী প্রকল্পে কোনও আপস করা যাবে না।’
আরও পড়ুন: এখনও ৫ মাসের খাদ্য আমদানি করার জন্য বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ যথেষ্ট: প্রধানমন্ত্রী
একনেক সভাপতি শেখ হাসিনা যে কোনও বড় প্রকল্প গ্রহনের ক্ষেত্রে পুঙ্খানুপুঙ্খ সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।
তিনি দেশের সর্বত্র অনাবাদি জমি চিহ্নিত করে চাষের জন্য প্রস্তুত করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বলেন।
‘প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘উৎপাদন বাড়াতে হবে। এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদি রাখা যাবে না’ উদ্বৃতি দিয়ে মান্নান বলেন, প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে জেলা প্রশাসকদের সহায়তায় অনাবাদি জমি চিহ্নিত করার নির্দেশ দিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী চলমান বিশ্ব মন্দার মধ্যে সবাইকে মিতব্যয়ী হতে এবং অপচয় বন্ধ করতে বলেছেন।
আরও পড়ুন:কৃষি উৎপাদন ও জীবিকা নির্বাহের জন্য সমবায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ: যুবকদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী
একনেক সভায় মোট তিন হাজার ৯৮১ দশমিক ৯০ কোটি টাকা আনুমানিক ব্যয়ের সাতটি প্রকল্প অনুমোদন করা হয়েছে (শুধুমাত্র তিনটি সংশোধিত প্রকল্পের অতিরিক্ত ব্যয় এখানে গণনা করা হয়েছে)।
ব্যয়ের মধ্যে সরকারের তহবিল থেকে তিন হাজার ৩৯২ দশমিক ৩৩ কোটি টাকা, সংশ্লিষ্ট সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে ২৬৭ দশমিক ৩৫ কোটি টাকা এবং বৈদেশিক উৎস থেকে ৩৩২ দশমিক ২১ কোটি টাকার যোগান আসবে।
আরও পড়ুন: ২৫ জেলায় ১০০টি সেতুর উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
২৫ জেলায় ১০০টি সেতুর উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সোমবার দেশের ২৫টি জেলায় নবনির্মিত ১০০টি সেতু উদ্বোধন করেছেন। সেতুগুলোর মোট দৈর্ঘ্য ৫ হাজার ৪৯৪ মিটার এবং নির্মাণ ব্যয় ৮ হাজার ৭৯ কোটি ৬১ লাখ টাকা।
সোমবার প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে সেতুগুলো উদ্বোধন করেন।
এর মধ্যে ঢাকা বিভাগে ৭টি, চট্টগ্রাম বিভাগে ৪৬টি (শুধু খাগড়াছড়ি জেলায় ৪২টি), ময়মনসিংহ বিভাগে ৬টি, সিলেট বিভাগে ১৭টি, বরিশাল বিভাগে ১৪টি, রাজশাহী বিভাগে ৭টি এবং রংপুর বিভাগে ৩টি নির্মাণ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: এখনও ৫ মাসের খাদ্য আমদানি করার জন্য বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ যথেষ্ট: প্রধানমন্ত্রী
সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের অধীন সড়ক ও জনপথ বিভাগ সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে সেতুগুলো নির্মাণ করে।
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউসের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এবিএম আমিন উল্লাহ নুরী নবনির্মিত ১০০টি সেতুর বিষয়ে একটি উপস্থাপনা করেন।
আরও পড়ুন: মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে সরকারি কর্মকর্তাদের নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করতে হবে: প্রধানমন্ত্রী
অগ্নিসন্ত্রাসের সঙ্গে জড়িতদের কোনো স্থান নেই: প্রধানমন্ত্রী
এখনও ৫ মাসের খাদ্য আমদানি করার জন্য বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ যথেষ্ট: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশের এখনও পর্যাপ্ত বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ রয়েছে, যা পাঁচ মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর জন্য যথেষ্ট।
তিনি বলেন, ‘২০২২ সালের ৩ নভেম্বর পর্যন্ত বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল ৩৫ দশমিক ৭২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। তারপরও আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দিয়ে পাঁচ মাসের জন্য পণ্য আমদানি করা সম্ভব। আন্তর্জাতিক মানদন্ডে যদি ৩ মাসের আমদানী পরিমান রিজার্ভ থাকে তাহলে সেটাই যথেষ্ট।’
রবিবার একাদশ জাতীয় সংসদের ২০তম অধিবেশনে সমাপনী ভাষণ দেয়ার সময় সংসদ নেত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, সবাই এখন রিজার্ভের কথা বলে এবং সবাই এটা নিয়ে বিশেষজ্ঞ হয়ে উঠেছে। ১৯৯৬ সালে রিজার্ভ ছিল মাত্র ২ দশমিক ১২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, কিন্তু তার প্রথম সরকার ২০০১ সালের মধ্যে এটি প্রায় ৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত করে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ২০০৯ সালে আবার ক্ষমতায় এসে ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি ক্ষমতায় এসে ৫ দশমিক ৩৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ পায়- যা ২০১৪ সালের ৮ জানুয়ারি তা ১৭ দশমিক ৪৭ বিলিয়ন, ২০১৯ সালের ৭ জানুয়ারি ৩২ দশমিক ০৯ বিলিয়ন, ২০২০ সালের ৩০ জুন ৩৬ দশমিক ০৪ বিলিয়ন এবং ২০২১ সালের ৩০ জুন ৪৬ দশমিক ৩৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়।
আরও পড়ুন: কৃষি উৎপাদন ও জীবিকা নির্বাহের জন্য সমবায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ: যুবকদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী
তিনি বলেন, কোভিড-১৯ এর সময় আমদানি-রপ্তানিসহ অন্যান্য ব্যয় প্রায় বন্ধ থাকায় তা প্রায় ৪৮ বিলিয়নে উঠে গিয়েছিল।
পরবর্তী আমদানী বৃদ্ধি এবং সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প বস্তবায়ন এবং ক্যাপিটাল মেনিারিজ আমদানীর ফলে রিজার্ভ কিছুটা কমে বর্তমান ৩ নভেম্বর ৩৫ দশমিক ৭২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে এসে দঁড়িয়েছে।
তিনি আরও বলেন, যখন কোভিড বিধিনিষেধ প্রত্যাহার করা হয়, তখন পণ্য আমদানি স্বাভাবিকভাবে বেড়েছে। তাই, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ হ্রাস পেয়েছে।
তবে তিনি বিলাসবহুল পণ্যের আমদানি হ্রাস এবং কম প্রয়োজনীয় পণ্য আমদানিতে উচ্চ কর আরোপের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।
এছাড়া শেখ হাসিনা তার ভাষণে খাদ্যের পর্যাপ্ত মজুদ নিশ্চিত করতে, ডলার সংকট নিরসনে, আমদানি ব্যয় কমাতে এবং ওএমএসসহ খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি সম্প্রসারণে সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের ওপর আলোকপাত করেন।
তিনি বিভিন্ন খাতে ভর্তুকি, সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর সম্প্রসারণ, রপ্তানি বৃদ্ধি, ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব, সরকারের ঋণের পরিমাণ এবং বৈদেশিক ঋণের কথাও তুলে ধরেন।
পরবর্তীতে ৬টি অধিবেশন স্থায়ী সংসদের ২০তম অধিবেশন স্থগিত করা হয়।
গত ৩০ অক্টোবর শুরু হওয়া অধিবেশনে রাষ্ট্রপতির স্থগিতাদেশ পাঠ করেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।
আরও পড়ুন: মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে সরকারি কর্মকর্তাদের নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করতে হবে: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ এখন রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে সৃষ্ট বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সঙ্কট এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে কোভিড-১৯ মহামারি পরবর্তী নিষেধাজ্ঞা ও পাল্টা নিষেধাজ্ঞার পরিণতির মুখোমুখি হচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশও এর থেকে আলাদা নয়। বাংলাদেশও এর ফল ভোগ করছে।’
তিনি বলেন, বিশ্বের প্রায় সব দেশেই মুদ্রাস্ফীতি রেকর্ড করেছে।
তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন মুদ্রার বিপরীতে ডলারের মূল্য ক্রমাগত বৃদ্ধি সংকটকে আরও গভীর করেছে।
ভর্তুকি সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সংকটের কারণে সরকারকে বিদ্যুৎ, জ্বালানি, খাদ্য আমদানি এবং খাদ্যবান্ধব কর্মসূচিসহ বিভিন্ন খাতে অতিরিক্ত ভর্তুকি দিতে হবে।
তিনি বলেন, ভর্তুকির মোট চাহিদা ১ লাখ ৫ হাজার কোটি টাকা বেড়েছে।
খাদ্যের বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, দেশের কোষাগারে বর্তমানে ১৫ লাখ ৭৩ হাজার ৪৮৫ টন খাদ্যশস্য মজুদ থাকায় উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। এছাড়া সরকার আরও খাদ্য আমদানির পদক্ষেপ নিয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, দেশের ২৯ শতাংশ পরিবারকে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় আনা হয়েছে এবং বিভিন্ন খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি জোরদার করা হয়েছে এবং ওএমএস (ওপেন মার্কেট সেল) স্কিম উপজেলায় নামিয়ে আনা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা ওএমএসের মাধ্যমে দরিদ্রদের আরও বেশি পরিমাণে প্রয়োজনীয় জিনিস সরবরাহ করার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘আমরা দেশের মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। আমরা আমাদের যথাসাধ্য চেষ্টা করছি যাতে দেশের মানুষ ভালো থাকে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, চলতি অর্থবছরের জুলাই-অক্টোবর সময়কালে রপ্তানি আয় ও রেমিট্যান্স প্রবাহ যথাক্রমে ৭ শতাংশ এবং ২ শতাংশ ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি পেয়েছে, যেখানে আমদানির জন্য খোলা এলসি ১১ দশমিক ৭ শতাংশ কমেছে।
তিনি বলেন, ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে দেশে যাতে কোনো ডলার সংকট না হয় সেদিকে সরকার নজর রাখছে।
বৈদেশিক ঋণ সম্পর্কে শেখ হাসিনা বলেন, সরকারের মোট ঋণ জিডিপির মাত্র ৩৬ শতাংশ এবং বৈদেশিক ঋণ জিডিপির মাত্র ১৩ দশমিক ৫ শতাংশ।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর আমরা (বাংলাদেশ) ঋণ বা ঋণ খেলাপিদের ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হইনি এবং ভবিষ্যতেও ব্যর্থ হব না।
প্রধানমন্ত্রী সংসদে বলেন, ‘আমরা আমাদের অর্থনীতিকে প্রাণবন্ত রাখার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করছি।’
এ প্রেক্ষাপটে তিনি সকল মানুষকে মিতব্যয়ীতা অবলম্বন, সম্পদের অপচয় বন্ধ, খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি এবং আমদানি পণ্যের ওপর নির্ভরতা কমানোর আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: দাম নিয়ন্ত্রণে কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়
কৃষি উৎপাদন ও জীবিকা নির্বাহের জন্য সমবায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ: যুবকদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের যুব সমাজকে সমবায়ের মাধ্যমে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি এবং গ্রামে বসবাসকারী মানুষের জীবনযাত্রার উন্নয়নে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘সমবায় আমাদের কৃষি উৎপাদন, জীবন ও জীবিকার জন্য একেবারে অপরিহার্য। সমবায় আমাদের মতো ঘনবসতিপূর্ণ দেশের জন্য বিশাল সুযোগ তৈরি করে।’
শনিবার প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে একটি ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) ৫১তম জাতীয় সমবায় দিবস-২০২২ উপলক্ষে এবং জাতীয় সমবায় পুরস্কার-২০২১ প্রদানের আয়োজনে একটি অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করছিলেন।
এসময় শেখ হাসিনা দেশের উন্নয়নে সমবায়কে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়ার ওপরও জোর দেন।
তিনি বলেন, ‘আমাদের যুব সমাজকে এগিয়ে আসতে হবে। যদি যুব সমাজ এগিয়ে এসে সমগ্র গ্রাম ও মানুষকে এক করে সমবায়ের মাধ্যমে কার্যক্রম চালাতে পারে তাহলে আমরা অনেক দূর এগিয়ে যেতে পারবো।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার জনগণের জন্য কাজ করছে এবং সুযোগ তৈরি করতে চায়, যাতে প্রত্যেক ব্যক্তি তাদের জীবন ও জীবিকা উন্নত করতে পারে।
তিনি বলেন, তার সরকার বেসরকারি উদ্যোক্তাদের জন্য প্রতিটি খাত খুলে দিয়েছে, যাতে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়।
মুদ্রাস্ফীতির বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং কোভিড-১৯ মহামারির কারণে সারা বিশ্বে পণ্যের দাম বেড়েছে, যার প্রভাব বাংলাদেশেও পড়েছে। এখন প্রায় সব দেশই উচ্চ মূল্যস্ফীতিতে ভুগছে।
তিনি বলেন, ‘প্রত্যেকেরই (প্রত্যেক দেশের) রিজার্ভ ব্যবহার করেই চলতে হচ্ছে। আমাদেরও করতে হচ্ছে এবং সেটা দেশের মানুষের জন্য।’
তিনি বলেন, বাংলাদেশের জনগণ ও কৃষি উৎপাদনের স্বার্থে উচ্চ পরিবহন ব্যয় সত্বেও খুব উচ্চ মূল্যে সার, জ্বালানি ও ভোজ্যতেল কিনতে হবে।
‘বঙ্গবন্ধুর দর্শনই সমবায়ের মাধ্যমে উন্নয়ন’ এই প্রতিপাদ্য নিয়ে এ বছর সারাদেশে দিবসটি পালিত হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে এলজিআরডি ও সমবায় মন্ত্রী তাজুল ইসলাম এ খাতে অবদানের জন্য ৯টি সমবায় সমিতি এবং একজন ব্যক্তিকে জাতীয় সমবায় পুরস্কার-২০২১ তুলে দেন। প্রত্যেক পুরস্কারপ্রাপ্তকে স্বর্ণপদক ও সনদপত্র দেয়া হয়।
এলজিআরডি ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্যের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় সচিব মশিউর রহমান এবং সমবায় অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. তরুণ কান্তি সিকদার।
মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে সরকারি কর্মকর্তাদের নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করতে হবে: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার নবনিযুক্ত সরকারি কর্মচারীদের একটি দলকে জনগণের জীবন পরিবর্তনে আত্মনিয়োগ করতে বলেছেন।
তিনি বলেন, ‘সবাইকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হতে হবে, দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে নিজেদের নিয়োজিত করতে হবে।’
বুধবার রাজধানীর শাহবাগে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অ্যাকাডেমিতে ১২৪তম, ১২৫তম ও ১২৬তম আইন ও প্রশাসন প্রশিক্ষণ কোর্সের সার্টিফিকেট প্রদান ও সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি তাদেরকে ‘জনসাধারণের সেবক’ হিসাবে নিজেদের পরিচয় দিতেও নির্দেশ দেন।
তিনি বলেন, আমি চাই দেশকে উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিতে আপনারা জনগণের সেবা করবেন।
তিনি তাদের স্মরণ করিয়ে দেন যে একটি দেশকে জনকল্যাণমূলক কর্মসূচি গ্রহনের পাশাপাশি একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে যোগাযোগ অবকাঠামো, স্বাস্থ্য, কৃষি, শিক্ষা ও বিদ্যুৎ ব্যবস্থার উন্নয়নে মনোনিবেশ করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি আমাদের নতুন অফিসাররা সেই অনুযায়ী কাজ করবেন।’
প্রধানমন্ত্রী নতুন কর্মকর্তাদেরকে ২০৪১ সালের পরিবর্তিত পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত হতে বলেছেন। কেননা সরকার ওই সময়ের মধ্যে দেশকে একটি উন্নত দেশে রূপান্তর করার সময়সীমা নির্ধারণ করেছে।
তিনি বলেন, ‘প্রশাসনের নতুন কর্মকর্তাদের ওপর অনেক কিছুই নির্ভর করে এবং তাদের যথাযথ পরিকল্পনা নিয়ে অগ্রসর হতে হবে।’
প্রশাসনের নতুন কর্মকর্তাদের সাধারণ মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করার সুযোগ রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তার সরকার দেশের তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দেয়।
১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধুর দেয়া ভাষণের উদ্ধৃতি দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনগণকে সেবা দেয়ার জন্য সরকারি কর্মকর্তাদেরকে নিজেদেরকে নিবেদিত করতে হবে এবং সর্বোপরি জাতীয় স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।
তিনি উল্লেখ করেন যে সরকারি কর্মকর্তাদের দেশপ্রেম ও আত্মমর্যাদাবোধ খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
শেখ হাসিনা জনগণকে শিক্ষিত করা এবং যুবকদের কর্মসংস্থান সৃষ্টির ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, তার সরকার বেসরকারি খাত উন্মুক্ত করে দিয়েছে।
তিনি বলেন, কোনও জাতি কাঙ্ক্ষিত উন্নতি করতে পারে না, যদি না একটি সমাজে নারী-পুরুষ উভয়ে মিলে অগ্রসর হতে পারে।
কোভিড মহামারি এবং ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের পরে নিষেধাজ্ঞা ও পাল্টা নিষেধাজ্ঞার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী দেশে খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে উৎপাদন বাড়ানোর আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, কোভিড-১৯ মহামারি সত্ত্বেও সরকার দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে সক্ষম হয়েছে।
তবে ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে যুক্তরাষ্ট্রসহ ইউরোপের অন্যান্য দেশসহ উন্নত বিশ্বের মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা।
পরিস্থিতি মোকাবিলায় গ্রামীণ জনগণকে খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধিতে উৎসাহিত করতে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান তিনি।
তিনি দেশে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্প স্থাপনের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।
হাসিনা পরিবেশ রক্ষায় দেশব্যাপী পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা এবং চারা রোপণের প্রয়োজনীয়তার ওপরও জোর দেন।
গৃহহীন মানুষকে বাড়ি উপহার দেয়ার তার সরকারের পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে একটি পরিবারও গৃহহীন থাকবে না। এটি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন ছিল।
তিনি সবাইকে স্মরণ করিয়ে দেন যে পাকিস্তান আমলে সেক্রেটারি জেনারেল ও মেজর জেনারেল পদে কোনো বাঙালি ছিল না, কেবল একজন কর্নেল ছিল।
তিনি বলেন, এখন স্বাধীন বাংলাদেশে সবাই সেই সুযোগ পাচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী ১২৪তম, ১২৫তম ও ১২৬তম আইন ও প্রশাসনের ১০৩জন প্রশিক্ষণার্থীর মধ্যে সনদ ও পুরস্কার বিতরণ করেন।
এর আগে তিনি সেখানে বঙ্গবন্ধু অধ্যয়ন কেন্দ্রের ফলক উন্মোচন ও পরিদর্শন করেন। তিনি অ্যাকাডেমিতে তার বক্তব্য সম্বলিত একটি সংকলন বইয়ের মোড়কও উন্মোচন করেন।
বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন একাডেমির ওপর একটি ভিডিও ডকুমেন্টারিও প্রদর্শিত হয়
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কে এম আলী আজম ও বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন একাডেমির রেক্টর মমিনুর রশিদ আমিন।
সাজেদা চৌধুরীর মৃত্যু এক বিরাট ক্ষতি, সংসদে প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর মৃত্যু শুধু আওয়ামী লীগের জন্য নয়, দেশের জন্যও এক বিরাট ক্ষতি কারণ দলের পাশাপাশি জাতির জন্য তার গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে।
তিনি বলেন, তার (সাজেদা চৌধুরী) মৃত্যু শুধু আওয়ামী লীগের নয়, আমাদের দেশ, জাতি ও আমার জন্যও ক্ষতি।
রবিবার প্রধানমন্ত্রী জাতীয় সংসদে সংসদ উপনেতা মরহুম সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী এবং সংসদ সদস্য শেখ এ্যানী রহমান, ব্রিটেনের রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথসহ সাবেক একাধিক সংসদ সদস্য ও বিশিষ্টজনের মৃত্যুতে আনা শোক প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে এ কথা বলেন।
একাদশ জাতীয় সংসদের ২০তম অধিবেশনের শুরুতে সংসদে শোক প্রস্তাব উত্থাপন করেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। পরে আলোচনা শেষে সংসদে সর্বসম্মতিক্রমে শোক প্রস্তাব গৃহীত হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সাজেদা চৌধুরী ১৯৭৫ সালের পর অত্যন্ত দুঃসময়ে আওয়ামী লীগের হাল ধরেন এবং এগিয়ে নিয়ে যান।
তিনি বলেন, ‘তিনি দলের আদর্শ ও নীতি অনুসরণ করতেন এবং সেই কঠিন সময়ে দলকে সুসংগঠিত রাখার চেষ্টা করেছিলেন।’
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, সাজেদা চৌধুরী প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামে সামনের সারিতে থাকতেন।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ তাদের শাসনামলে জিয়াউর রহমান, এইচএম এরশাদ ও খালেদা জিয়া সবার হাতেই নির্যাতিত হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সাজেদা চৌধুরী একজন মুক্তিযোদ্ধা, সমাজকর্মী ও সংস্কৃতিমনা ব্যক্তি ছিলেন।
তিনি বলেন, তার মৃত্যুতে আমরা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সত্যিই একজন নিবেদিতপ্রাণ আত্মাকে হারালাম।
আরও পড়ুন: অগ্নিসন্ত্রাসের সঙ্গে জড়িতদের কোনো স্থান নেই: প্রধানমন্ত্রী
সাজেদা চৌধুরীকে খালা বলে ডাকতেন উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘জীবন চলার পথে সবসময় তাকে পাশে পেয়েছি।’
প্রধানমন্ত্রী নারীর ক্ষমতায়ন, নারী নেতৃত্ব, বনায়ন ও পরিবেশসহ জাতির প্রতি তার অবদানের কথা স্মরণ করেন।
রানী এলিজাবেথ-দ্বিতীয় সম্পর্কে শেখ হাসিনা বলেন, তিনি ছিলেন গ্রেট ব্রিটেনের জনগণের কাছে মাতৃত্বের প্রতীক।
রানী এলিজাবেথ-২ কমনওয়েলথ দেশগুলোর প্রতিও আন্তরিক ছিলেন। ‘যখনই আমি কমনওয়েলথ সম্মেলনে অংশগ্রহণ করতাম, রানী আমার সঙ্গে কথা বলতেন এবং আমার খোঁজ খবর নিতেন।’
কমনওয়েলথ দেশগুলোতে নারী নেতৃত্বের সংকট, পরিবেশ এবং জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব নিয়ে তার উদ্বেগের কথা রানী তার সঙ্গে শেয়ার করেছেন।
তার স্মৃতি স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রানী একবার তাকে বাকিংহাম প্যালেসের বারান্দায় নিয়ে গিয়েছিলেন এবং সমুদ্রে প্লাস্টিকের দূষণ দেখেছিলেন এবং তাকে বলেছিলেন যে দূষণ রোধে ব্যবস্থা নেয়া উচিত।
নিয়ম অনুযায়ী, আওয়ামী লীগের দুই বর্তমান সংসদ সদস্যের মৃত্যুতে শোক প্রস্তাব গৃহীত হলে সংসদের দিনের কার্যক্রম মুলতবি করা হয়।
ফরিদপুর-২ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়া লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী গত ১১ সেপ্টেম্বর মারা যান এবং সংরক্ষিত নারী আসন-১৯ থেকে নির্বাচিত আওয়ামী লীগের আরেক সংসদ সদস্য শেখ এ্যানি রহমান গত ১১ অক্টোবর মারা যান।
বাকি পাঁচ সাবেক সংসদ সদস্য হলেন সাবেক হুইপ অধ্যাপক খালেদা খানম (সংরক্ষিত নারী আসন-২৩), গিয়াস উদ্দিন আহমেদ (ময়মনসিংহ-১০), সাবেক উপ-প্রধানমন্ত্রী শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন (ঢাকা-৫ ও রংপুর-৬), সাবেক মন্ত্রী আবুল হাসনাত (ঢাকা-৯) ও শাহানারা বেগম (সংরক্ষিত নারী আসন-৪৮)।
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা আকবর আলী খান, বিশিষ্ট সাংবাদিক রণেশ মৈত্র ও তোয়াব খান, কিংবদন্তি গীতিকার, পরিচালক ও প্রযোজক গাজী মাজহারুল আনোয়ার, প্রখ্যাত শিল্পী সমরজিৎ রায় চৌধুরী এবং প্রখ্যাত নাট্যকার মাসুম আজিজসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিদের মৃত্যুতে হাউস গভীর শোক প্রকাশ করেছে।
এছাড়া সাম্প্রতিক ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং পঞ্চগড়ের করতোয়া নদীতে নৌকাডুবি এবং দেশ-বিদেশে সাম্প্রতিক বিভিন্ন দুর্ঘটনায় প্রাণহানির ঘটনায়ও সংসদ শোক প্রকাশ করেছে।
শোক প্রস্তাব পাসের আগে এক মিনিট নীরবতা পালন ও মরহুমের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে মোনাজাত করা হয়।
এতে আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য আমির হোসেন আমু, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, বেগম মতিয়া চৌধুরী, শাজাহান খান, মুহাম্মদ ফারুক খান, এসএম রেজাউল করিম, জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য জিএম কাদের, আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, কাজী ফিরোজ রশীদ ও মশিউর রহমান রাঙ্গা প্রমুখ।
আরও পড়ুন: মানুষের উন্নত জীবনযাপনের সুযোগ দিতে হবে: আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে প্রধানমন্ত্রী
পায়রা সমুদ্রবন্দরে সুযোগ-সুবিধা বাড়াতে প্রকল্পের মোড়ক উন্মোচন প্রধানমন্ত্রীর
অগ্নিসন্ত্রাসের সঙ্গে জড়িতদের কোনো স্থান নেই: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপি এখন নির্বিঘ্নে রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করতে পারলেও, অগ্নিসংযোগ করে যারা জীবন্ত পুড়িয়ে হত্যা করেছে তাদের গ্রেপ্তার করে উপযুক্ত শাস্তি দেয়া হবে।
তিনি বলেন, ‘যেহেতু আমরা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি, তাই বিএনপি এখন নির্বিঘ্নে সভা-সমাবেশ, মিছিলসহ সব কর্মসূচি আয়োজন করতে পারে। তবে এ ধরনের হত্যাকাণ্ড, অগ্নিসংযোগ ও জঙ্গিবাদের সঙ্গে জড়িত আসামিদের গ্রেপ্তার করে উপযুক্ত শাস্তি দিতে হবে। কারণ, তারা মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে এবং মানুষকে জীবন্ত পুড়িয়ে হত্যা করেছে।’
শুক্রবার বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা তার সরকারি বাসভবন গণভবনে দলের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে সভাপতিত্বকালে এসব কথা বলেন।
২০১৩-২০১৫ সালে বিএনপি-জামায়াতের অগ্নিসংযোগ সহিংসতার উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারা মানুষকে জীবন্ত পুড়িয়ে হত্যা করেছে; ট্রেন, বাস, লঞ্চ এমনকি সিএনজি চালিত অটোরিকশাসহ সর্বত্র অগ্নিসংযোগ করেছে।
তিনি বলেন, অপরাধীরা আত্মগোপন করেছে, কিন্তু বিএনপি রাজপথে আন্দোলন করছে বলে তারা এখন বেরিয়ে আসবে।
আরও পড়ুন: দাম নিয়ন্ত্রণে কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়
শেখ হাসিনা বলেন, ‘তারা জনগণকে নির্যাতন করেছে। তাদের জন্য কোন জায়গা থাকবে না। আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে। আইন সবার জন্য সমান।’
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, এদেশে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের রাজনীতির কোনো স্থান থাকবে না। ‘আমরা এর অনুমতি দেব না।’
শেখ হাসিনা বলেন, তার দল জনগণের জন্য কাজ করে, তাদের মন জয় করে ক্ষমতায় এসেছে এবং এখনও জনগণের আস্থা রাখতে সক্ষম হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা জনগণের ভোট ও আস্থা নিয়ে ক্ষমতায় এসেছি। আমরা গত ১৪ বছর ধরে এই দেশের জনগণের আস্থা ধরে রেখেছি। বরং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এই সময়ে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে।’
এই অর্জন ধরে রেখে তার দলের নেতাকর্মীদের তিনি সামনে এগিয়ে যেতে বলেন।
তিনি বলেন, যারা সন্ত্রাসী, খুনি, ১০ ট্রাক অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনার অপরাধী, গ্রেনেড হামলাকারী এবং যারা ৬৩টি জেলায় একযোগে বোমা হামলা চালিয়েছে তাদের জনগণ বিশ্বাস করে না।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণ কখনই তাদের পাশে দাঁড়াবে না এবং তাদের ভোটও দেবে না।’
পায়রা সমুদ্রবন্দর নির্মাণের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের বৈদেশিক রিজার্ভের অর্থে গঠিত বাংলাদেশ অবকাঠামো উন্নয়ন তহবিলের নিজস্ব অর্থে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়কে ২ শতাংশ সার্ভিস চার্জে টাকা দেয়া হয়েছে এবং ২ শতাংশ সুদে টাকা ফেরত দেয়া হবে। সুতরাং, এটি রিজার্ভকে প্রভাবিত করবে না বরং এটি থেকে লাভও হবে।
আরও পড়ুন: রূপপুর বিদ্যুৎ কেন্দ্রের দ্বিতীয় ইউনিটের চুল্লি বসছে বুধবার, উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী
জ্বালানি সংকট সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে কীভাবে ঘাটতি মেটাতে জ্বালানি আমদানি করা যায় সে বিষয়ে সরকার পদক্ষেপ নিচ্ছে।
খাদ্য আমদানিকারকদের সঙ্গে সম্প্রতি এক বৈঠকে তিনি ব্যবসায়ীদের স্পষ্টভাবে বলেন, সরকার যদি আন্তর্জাতিক দামে জ্বালানি কিনতে প্রস্তুত হয়, তবে তা আমদানি করতে পারে।
তিনি তাদের বলেন, এখানে অতিরিক্ত ভর্তুকি দেয়ার ক্ষমতা সরকারের নেই ।কারণ খাদ্য ক্রয়ের জন্য ভর্তুকি হিসাবে ৪৬ হাজার কোটি টাকা দিতে হবে। এখন কৃষি, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ভর্তুকি দেয়ার জন্য প্রায় ৮৬ হাজার কোটি টাকার প্রয়োজন। সরকার দেশে সৌরশক্তি বাড়ানোর ব্যবস্থা নিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আ.লীগ নেতাকর্মীদের তার সরকারের সাফল্য ও অর্জন, উন্নয়ন পরিকল্পনা এবং বিএনপি সরকারের দুঃশাসন জনগণের সামনে তুলে ধরতে বলেছেন।
সংকটের মধ্যে আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক কাউন্সিল সহজভাবে অনুষ্ঠিত হবে:
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগই সম্ভবত একমাত্র দল যারা তার সনদ অনুসরণ করে নিয়মিত কাউন্সিল আয়োজনের পাশাপাশি জনগণের জন্য কাজ করে।
তিনি বলেন, আগামী ডিসেম্বরে আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে এবং শুক্রবারের সভায় কাউন্সিল বাস্তবায়নের জন্য একটি কমিটি গঠন করা হবে।
আ.লীগ সভাপতি বলেন, অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে কঠোর পরিশ্রমের অংশ হিসেবে স্বল্প বাজেটে এ বছর কাউন্সিল হবে সহজ পদ্ধতিতে।
আরও পড়ুন: অস্ত্রব্যয়ের একটি অংশ খাদ্য উৎপাদনে দিলে, কেউ ক্ষুধার্ত থাকবে না: প্রধানমন্ত্রী
দাম নিয়ন্ত্রণে কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়
নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম, মজুদ ও সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে বাজার তদারকিসহ প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়।
রবিবার বিকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ বিষয়ে এক মতবিনিময় অনুষ্ঠানে এ নির্দেশনা দেয়া হয়।
বৈঠকে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং, আমন ও রবি ফসলের উৎপাদন, সার মজুদসহ সাম্প্রতিক অন্যান্য বিষয়গুলো আলোচনা করা হয়।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে রমজান জুড়ে মাঠে থাকবে বাজার মনিটরিং টিম
সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস।
বৈঠকটি সঞ্চালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সিনিয়র সচিব মো. তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া।
বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব কে এম শাখাওয়াত মুন সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
তিনি জানান, ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বৈঠকে শিল্পসচিব, খাদ্য সচিব, কৃষি মন্ত্রণালয়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়, আবহাওয়া অধিদপ্তরের প্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় কমিশনার ও উপকূলীয় জেলাগুলোর জেলা প্রশাসকরা বৈঠকে যুক্ত ছিলেন।
তিনি বলেন, সংশ্লিষ্ট মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা সার ও বাজারে নিত্যপণ্যের মজুদ ও সরবরাহ পরিস্থিতি সম্পর্কে মুখ্য সচিবকে বিস্তারিত অবহিত করেছেন।
এসময় প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব বিভিন্ন বিষয়ে কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেন।
সভায় সাম্প্রতিক সময়ে বাজারে চিনির ঘাটতি ও দাম বৃদ্ধি, বিশেষ করে চিনির মজুদ ও আমদানি পরিস্থিতি, সরবরাহকারী বা সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের পরিস্থিতি, অন্যান্য নিত্যপণ্য সরবরাহ পরিস্থিতি এবং টিসিবির কার্যক্রম নিয়েও আলোচনা হয়।
সভায় আবহাওয়ার সর্বশেষ তথ্য বিশেষ করে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং সম্পর্কে আলোচনা করা হয় এবং ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি পর্যালোচনা করা হয়।
এর আগে, সভার শুরুতে আশ্রয়ণ প্রকল্পের পরিচালক আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের প্রাথমিক উপস্থাপনা করেন।
আরও পড়ুন: পুঁজিবাজার টিকিয়ে রাখতে ১০ হাজার কোটি টাকার তহবিল দাবি বিএমবিএ’র
রূপপুর বিদ্যুৎ কেন্দ্রের দ্বিতীয় ইউনিটের চুল্লি বসছে বুধবার, উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের (আরএনপিপি) দ্বিতীয় ইউনিটে চুল্লি স্থাপন (রিঅ্যাকটর প্রেসার ভেসেল) হবে বুধবার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি এর উদ্বোধন করবেন।
মঙ্গলবার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এই কর্মসূচির কথা জানান।
তারা বলছেন, ইতোমধ্যে প্রকল্পের প্রথম ইউনিটের ভৌত কাজের ৭০ শতাংশ অগ্রগতি হয়েছে এবং দ্বিতীয় ইউনিটে চুল্লি স্থাপন করার মধ্য দিয়ে প্রকল্পের মোট ভৌত কাজের ৫৩ শতাংশ সম্পন্ন হবে।
পাবনা জেলার ঈশ্বরদীতে ১২ দশমিক ৬৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয়ে নির্মিত দেশের একমাত্র পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রটিতে দু’টি ইউনিট থাকবে। যার প্রতিটিতে এক হাজার ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষমতা থাকবে।
রাশিয়ার রোসাটম স্টেট করপোরেশনের মহাপরিচালক আলেক্সি লিখাচেভ এই অনুষ্ঠানে শারীরিকভাবে উপস্থিত থাকতে ঢাকা আসছেন এবং প্রধানমন্ত্রী ঢাকার তার সরকারি বাসভবন থেকে ভার্চুয়ালি যোগ দেবেন।
গত বছরের অক্টোবরে প্রথম ইউনিটের চুল্লি স্থাপন উদ্বোধন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী।
বিদ্যুৎ উৎপাদনে দেশের বৃহত্তম প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ডা. মো. শওকত আকবর ইউএনবিকে বলেছেন, ‘চুল্লি স্থাপনের সঙ্গে প্রকল্পের দ্বিতীয় ইউনিটের ভৌত কাজের লক্ষ্যমাত্রার ৪৫ শতাংশেরও বেশি সম্পন্ন হবে।’
সরকার ২০০৯ সালে প্রকল্পটি হাতে নেয় এবং দীর্ঘ আলোচনার পর ২০১৬ সালের ২৬ জুলাই রাশিয়ান ফেডারেশনের সঙ্গে ১১ দশমিক ৩৮৫ বিলিয়ন ডলারের একটি ক্রেডিট চুক্তি সই করে যাতে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পারমাণবিক শক্তি সংস্থা- রোসাটমকে এর ঠিকাদার হিসেবে নিয়োগের মাধ্যমে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হয়।
এছাড়াও ২০১৯ সালের ৬ আগস্ট বাংলাদেশ প্রকল্পের জন্য রাশিয়ার সঙ্গে একটি পারমাণবিক জ্বালানি সরবরাহ চুক্তি সই করে।
চুক্তি অনুযায়ী, রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন পারমাণবিক জ্বালানি সংস্থা টিভেল জয়েন্ট স্টক কোম্পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পুরো জীবনকালের জন্য পারমাণবিক জ্বালানি সরবরাহ করবে।
বিদ্যুতকেন্দ্রের প্রতিটি ইউনিটকে প্রতি ১৮ মাস পর পর মোট প্রয়োজনীয় পারমাণবিক জ্বালানির এক তৃতীয়াংশ পুনরায় লোড করতে হবে এবং প্রথম, দ্বিতীয় এবং তৃতীয় পুনরায় লোড বিনামূল্যে রাশিয়ান ফার্ম প্রদান করবে।
প্রতিটি পারমাণবিক জ্বালানি পুনরায় লোড করতে খরচ হবে ৬২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা ৫৫০ কোটি টাকার সমান।
ড. শওকত আকবর বলেন, দ্বিতীয় ইউনিটে চুল্লি স্থাপনের পর যে বড় কাজগুলো অসমাপ্ত থাকবে তার মধ্যে রয়েছে প্রি-অপারেশনাল টেস্টিং এবং ফুয়েল লোডিং।
তিনি আরও বলেন, প্রকল্পটি চালু করার আগে আরও কিছু কাজ শেষ করতে হবে। ‘আমরা আশা করছি আগামী বছরের জুনের মধ্যে এই কাজগুলো শেষ করব।’
তিনি বলেন, ‘পাওয়ার গ্রিড লাইন নির্মাণ এবং যোগাযোগ ও নিরাপত্তা ব্যবস্থার নির্মাণ গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলোর মধ্যে যা রয়েছে তা আগামী ২০২৪ সালের মাঝামাঝি আগে সম্পন্ন করতে হবে।’
পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সঙ্গে চুক্তির জন্য একটি নিবেদিত কোম্পানি নিউক্লিয়ার পাওয়ার কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেড। এর (এনপিসিবিএল)-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. শওকত আকবর বলেছেন, ২০২৪ সালের দ্বিতীয়ার্ধে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের এক হাজার ২০০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন প্রথম ইউনিটের বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু করার সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে এবং ২০২৫ সালে দ্বিতীয় ইউনিট।
প্রাথমিকভাবে প্রথম ইউনিটের বাণিজ্যিক কার্যক্রম ২০২২ এবং দ্বিতীয় ইউনিট ২০২৩ থেকে শুরু করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছিল এবং তারপর লক্ষ্য পিছিয়ে দেয়া হয়েছিল।
এনবিসিবিএল-এর কর্মকর্তারা বলেছেন, রাশিয়া এবং বেলারুশসহ বিভিন্ন পশ্চিমা দেশ থেকে প্রায় ১৪ হাজার বিদেশি কর্মী এখন বিভিন্ন কাজ সম্পাদনের জন্য ঠিকাদার এবং এর সাব-কন্ট্রাক্টরদের অধীনে এই প্রকল্পে নিযুক্ত রয়েছে।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর সময়মতো প্রকল্পের বাস্তবায়ন নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছিল।
কিন্তু এই প্রকল্পের রাশিয়ান ঠিকাদার রোসাটম এ বছরের ১ মার্চ একটি বিবৃতিতে এই ধরনের অনিশ্চয়তা উড়িয়ে দিয়ে বলেছে যে সময়মত প্রকল্পের কাজ শেষ করতে কোন ব্যাঘাত হবে না।
রোসাটম বলেছে, ‘রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের প্রতিশ্রুতি এবং কাজের সময়সূচিগুলোর মধ্যে কোন বাধার পূর্বাভাস দেয়া হয়নি।’
যদিও রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে বর্তমান যুদ্ধ সম্পর্কে বিবৃতিতে কিছুই উল্লেখ করা হয়নি, তবে ধারণা করা হয় যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং কিছু পশ্চিমা দেশ কর্তৃক রাশিয়ার ওপর আরোপিত আর্থিক নিষেধাজ্ঞা নিয়ে উদ্বেগের প্রেক্ষিতে রোসাটম এটি স্পষ্ট করেছে।
রোসাটমের কর্মকর্তারা দ্বিতীয় ইউনিটে চুল্লি স্থাপনকে একটি বিশেষ ঘটনা হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
তারা বলেন, নকশা অবস্থানে দ্বিতীয় পাওয়ার ইউনিটের ভিভিইআর-১২০০ রিঅ্যাক্টর প্রেসার ভেসেল স্থাপন করার কার্যক্রমটি বেশ কয়েকটি ধাপে পরিচালিত হয়েছিল।
একটি লিয়েবয়ার-১১৩৫০ ভারী ক্রলার ক্রেন চুল্লি সিলিন্ডারটিকে পাওয়ার ইউনিটের পরিবহন পোর্টালে তুলেছে।
এরপর একটি বিশেষ পরিবহন ট্রলিতে এটিকে চুল্লির বগির কেন্দ্রীয় হলে সরানো হয়েছিল। আরও একটি পোলার ক্রেনের সাহায্যে চুল্লি সিলিন্ডারটিকে একটি খাড়াভাবে তোলা হয়েছিল এবং চুল্লির যন্ত্রে একটি সাহায্যকারী ফ্রেমে স্থাপন করা হয়েছিল।
রোসাটম জানিয়েছে, এইএম প্রযুক্তিতে নির্মিত ভিভিইআর-১২০০ চুল্লি সিলিন্ডারটির ওজন ৩৩৩ দশমিক ৬ টন।