প্রধানমন্ত্রীর-কার্যালয়
ডলার সাশ্রয়ে টেলিটকের ২৩৬ কোটি টাকার প্রকল্প স্থগিত
বৈশ্বিক সংকটের মধ্যে সরকারের নেয়া রিজার্ভের ডলার সাশ্রয়ে পদক্ষেপের অংশ হিসেবে রাজধানীতে বাণিজ্যিকভাবে ফাইভ-জি সেবা চালুর জন্য টেলিটকের ২৩৬ কোটি টাকার একটি প্রকল্প স্থগিত করেছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)।
তবে একনেক দুই হাজার সাত কোটি ৫৭ লাখ টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়সহ আরও সাতটি উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন করেছে (এখানে তিনটি সংশোধিত প্রকল্পের অতিরিক্ত ব্যয় গণনা করা হয়েছে)।
মঙ্গলবার এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় এ অনুমোদন দেয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারম্যান শেখ হাসিনা তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে এতে যোগ দেন।
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে বলেন, ‘আজকের বৈঠকে সাতটি প্রকল্প অনুমোদন করা হলেও টেলিটকের নতুন একটি প্রকল্প স্থগিত করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, টেলিটকের প্রকল্পটি স্থগিত করা হয়েছে, কারণ এতে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে ডলার খরচ হবে, যা এখন খুবই প্রয়োজনীয়।’
মন্ত্রী বলেন, প্রকল্পটি একেবারে বাতিল করা হয়নি, পরবর্তীতে এটা বাস্তবায়ন করা হবে।
তিনি বলেন, ‘ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় টেলিটক নেটওয়ার্কে ফাইভ-জি প্রযুক্তির বাণিজ্যিক প্রবর্তন’- শিরোনামের নতুন এই প্রকল্পটি ২৩৬ কোটি ৫৪ লাখ টাকা ব্যয়ে ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে বাস্তবায়নের জন্য প্রণয়ন করা হয়েছিল।
প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে বাণিজ্যিকভাবে ফাইভ-জি প্রযুক্তি চালু করা, ফাইভ-জি প্রযুক্তির প্রতি মানুষের আগ্রহ বাড়ানো এবং অন্যান্য মোবাইল ফোন অপারেটরদের ফাইভ-জি পরিষেবা চালু করতে উৎসাহিত করা।
সভায় অনুমোদিত চারটি নতুন প্রকল্পের মধ্যে সবচেয়ে বড় প্রকল্পটি হল এক হাজার ২২৪ কোটি ৮১ লাখ টাকা ব্যয়ে ময়মনসিংহ বিভাগ প্রকল্পের বিভাগীয় সদর দপ্তর প্রতিষ্ঠার জন্য ভূমি অধিগ্রহণ, ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ প্রদান ও তাদের পুনর্বাসন।
আরও পড়ুন: একনেকে ২ হাজার ২১৭ কোটি টাকার ১০টি প্রকল্প অনুমোদন
একনেকে ১০ হাজার ৮৮৫ কোটি টাকার ১০ প্রকল্পের অনুমোদন
আ.লীগের প্রতি জনগণের আস্থা সরকারের সাফল্যের চাবিকাঠি: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মঙ্গলবার বলেছেন, বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত করতে আওয়ামী লীগের ওপর জনগণের আস্থাই তার সরকারের সাফল্যের চাবিকাঠি।
তিনি বলেন, ‘আমাদের ওপর যেমন জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস রয়েছে, তেমনই তাদের ওপরও আমাদের আস্থা ও বিশ্বাস রয়েছে। বাংলাদেশ আজকে একটি উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে।’
রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে পরিকল্পনা কমিশনের এনইসি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সাপ্তাহিক একনেক সভায় সূচনা বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি সভায় যোগ দেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় জনগণের ভোটে জয়ী হয়ে সরকার গঠন করেছে।
তিনি উল্লেখ করেন, সরকারের ধারাবাহিকতা দেশকে এগিয়ে নিতে এবং উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা অর্জনে সহায়তা করেছে।
সরকারপ্রধান বলেন, আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় আসে তখনই আমরা জনগণের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য কাজ করি। আমাদের অর্জন যাই হোক, তা জনগণের অবদান।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ সন্তান হাসিনা জানান, দেশ ও জনগণের জন্য কাজ করতে তিনি সবসময় তার পিতার পথ ও আদর্শ অনুসরণ করেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা স্বল্প-মধ্য এবং পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা নিয়েছি এবং সেগুলো বাস্তবায়ন করেছি। এছাড়াও, আমরা দীর্ঘমেয়াদী পরিপ্রেক্ষিত পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছি, লক্ষ্য নির্দিষ্ট করেছি এবং দেশকে সে দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি।’
তিনি আরও উল্লেখ করেন, তার সরকার ২০০৮ সালের নির্বাচনের আগে ঘোষিত রূপকল্প ২০২১ বাস্তবায়ন করছে।
পড়ুন: তরুণদের উদ্যোক্তা হতে দক্ষতা অর্জনের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
রিজার্ভ দিয়ে ৯ মাসের খাবার আমদানি করতে পারবো: শেখ হাসিনা
তরুণদের উদ্যোক্তা হতে দক্ষতা অর্জনের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
দেশের জনমিতিক সুবিধাকে লভ্যাংশে পরিণত করতে সরকার দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলার ওপর জোর দিচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রবিবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (এনএসডিএ) গভর্নিং বোর্ডের প্রথম সভার সূচনা বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে প্রতি বছর ২২ লাখ তরুণ-তরুণী শ্রমবাজারে যুক্ত হয়। তারা যেন শুধু চাকরি খোঁজার পরিবর্তে উদ্যোক্তা হয়ে ওঠে সে জন্য তাদের দক্ষতা বৃদ্ধি করতে প্রশিক্ষণ প্রদানের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার জনমিতিক লভ্যাংশকে কাজে লাগিয়ে রূপকল্প ২০৪১ অর্জন করে দেশের অগ্রগতি ত্বরান্বিত করতে চায়।
তিনি বলেন, দেশের তরুণদের দক্ষ জনশক্তি হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।
তিনি বলেন, ‘বিশ্ব প্রযুক্তিগত দিক দিয়ে ক্রমাগত বিকশিত হচ্ছে। এজন্য আমাদের লক্ষ্য ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে পরিবর্তনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে দক্ষ হিসেবে গড়ে তোলা।’
আরও পড়ুন: জনগণের অর্থ বাঁচাতে অপ্রয়োজনীয় জিনিস কেনার কথা ভুলে যান: প্রধানমন্ত্রী
তিনি বলেন, বাংলাদেশে বিপুল সংখ্যক তরুণ-তরুণী রয়েছে। এর ফলে বিশ্বের অনেক দেশের তুলনায় বাংলাদেশের জনমিতিক সুবিধা রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার চায় তরুণরা বিশ্ববাজারে তাদের সম্ভাবনাকে দক্ষ জনশক্তি হিসেবে যেন কাজে লাগায়।
তিনি বলেন, ‘আমরা চাই দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম আধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর জ্ঞান সমৃদ্ধ হবে। আমরা চতুর্থ শিল্প বিপ্লবকে মাথায় রেখে দক্ষ জনশক্তি তৈরি করতে চাই।’
শেখ হাসিনা বিশ্ববাজারে চাহিদার কথা মাথায় রেখে জনশক্তির প্রশিক্ষণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ দেশ-বিদেশ থেকে বিনিয়োগ চায় যেখানে দক্ষ জনশক্তি মুখ্য ভূমিকা পালন করবে।
বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের জন্য প্রবাসীদের কাছ থেকে রেমিট্যান্সের ওপর নির্ভরতা কমানোর আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন তিনি।
আরও পড়ুন: দলমত নির্বিশেষে আমি প্রতিটি নাগরিকের প্রধানমন্ত্রী
তিনি বলেন, ‘আমাদের উৎপাদন বাড়াতে হবে ও বৈচিত্র্য আনতে হবে। আমাদের রপ্তানি বাস্কেট প্রসারিত করতে হবে।’
তিনি কর্মকর্তাদের নতুন বাজার অনুসন্ধান এবং তাদের চাহিদা খুঁজে বের করতে বলেন যাতে বাংলাদেশ সেই অনুযায়ী রপ্তানি পণ্য তৈরি করতে পারে।
তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক বাজারের জন্য নতুন পণ্য উৎপাদনের জন্য আমাদের উপায় খুঁজে বের করতে হবে।
তিনি বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের বিদেশে বিনিয়োগের সুযোগ খোঁজারও পরামর্শ দেন।
তিনি বলেন, ‘শুধু আমরা বিনিয়োগের আমন্ত্রণ জানাব না। আমরা অন্যান্য দেশেও বিনিয়োগ করতে পারি। এই সবের জন্য আমাদের দক্ষ জনবল দরকার।’
তরুণ প্রজন্মকে শুধু সনদ পাওয়ার পরিবর্তে বিভিন্ন ক্ষেত্রে দক্ষতা অর্জনের আহ্বান জানান তিনি। যাতে করে তারা নিজেদের উদ্যোগ শুরু করতে পারে এবং অন্যদের চাকরির ব্যবস্থা করতে পারে।
তিনি বলেন, অনেক তরুণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে সনদ নিয়ে চাকরির পেছনে ছুটে।
তিনি বলেন, ‘আমরা চাই তরুণ প্রজন্ম যেন দক্ষ জনশক্তি হিসেবে গড়ে উঠে।’
আরও পড়ুন: আবারও জীবনের সকল ক্ষেত্রে মিতব্যয়ীতা অনুশীলন করার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
রিজার্ভ দিয়ে ৯ মাসের খাবার আমদানি করতে পারবো: শেখ হাসিনা
বিদ্যমান বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দিয়ে বাংলাদেশ ছয় থেকে নয় মাসের আমদানি ব্যয় মেটাতে পারবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘যে কোনো সংকটের সময় কমপক্ষে তিন মাসের জন্য খাদ্যশস্য এবং অন্যান্য (প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র) আমদানি করার জন্য আমাদের হাতে অর্থ রয়েছে। আমাদের এখন যে রিজার্ভ আছে তা দিয়ে শুধু তিন মাস নয়, ছয় থেকে নয় মাসের জন্য খাবার আমদানি করতে পারবো।’
বুধবার রাজধানীর ফার্মগেট এলাকায় কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ মিলনায়তনে বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের ২৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, পর্যাপ্ত রিজার্ভ থাকা সত্ত্বেও সরকারকে বৈদেশিক মুদ্রা বাঁচাতে এবং যে কোনো জরুরি অবস্থার জন্য বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ রাখার জন্য আরও ফসল ফলানোর পদক্ষেপ নিতে হবে।
আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের একটি সহযোগী সংগঠন। এটি ১৯৯৪ সালের ২৭ জুলাই প্রতিষ্ঠিত হয়।
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ‘স্বেচ্ছাসেবার ১ বছর’ শীর্ষক একটি প্রকাশনার মোড়ক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনার ছেলে ও তার আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের জন্মদিন উপলক্ষে কেক কাটা হয়।
গত ২৯ জুন মারা যাওয়া স্বেচ্ছাসেবক লীগের প্রয়াত সভাপতি নির্মল রঞ্জন গুহকে নিয়ে একটি তথ্যচিত্র দেখানো হয়।
স্বেচ্ছাসেবক লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।
স্বেচ্ছাসেবক লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি গাজী মেসবাউল হোসেন সাচ্চুর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবু।
পড়ুন: ডি-৮ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের জন্য বাংলাদেশ জায়গা দিতে প্রস্তুত: প্রধানমন্ত্রী
যুদ্ধে সৃষ্ট সংকট মোকাবিলায় বহুপাক্ষিক সহযোগিতা জোরদারের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
জনগণের অর্থ বাঁচাতে অপ্রয়োজনীয় জিনিস কেনার কথা ভুলে যান: প্রধানমন্ত্রী
বর্তমান বৈশ্বিক সংকটের মধ্যে সরকারের খরচ কমাতে কম গুরুত্বপূর্ণ জিনিসপত্র ক্রয় এড়াতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে একটি ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে মন্ত্রিসভার বৈঠকে সভাপতিত্বকালে এই নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, ‘দ্রুত প্রয়োজনীয় নয়, এমন জিনিসপত্রের ক্রয় এখন বন্ধ থাকবে।’
বাংলাদেশ সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সভাকক্ষে মন্ত্রিসভার অন্যান্য সদস্য ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বিমানের উড়োজাহাজের সংঘর্ষ, প্রকল্পের ব্যয়, কর্মকর্তাদের গাড়ি ব্যবহারসহ বেশ কিছু বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার বিস্তারিত তুলে ধরেন।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ইতোমধ্যেই সব প্রকল্পকে এ, বি এবং সি শ্রেণিভুক্ত করা হয়েছে। এ-ক্যাটাগরির প্রকল্পগুলো অবিলম্বে বাস্তবায়ন করা হবে এবং সেসব প্রকল্পের পুরো বরাদ্দ ব্যয় করা যাবে।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনে জাপানের সহায়তা কামনা প্রধানমন্ত্রীর
বি-শ্রেণির প্রকল্পগুলির ক্ষেত্রে, ৭৫ শতাংশ পর্যন্ত খরচ করা যেতে পারে এবং সি-ক্যাটাগরির প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়ন এখন স্থগিত থাকবে বলে জানান তিনি।
আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, কোনো মন্ত্রণালয় যদি মনে করে যে কোনো প্রকল্পকে আবার শ্রেণিবিভাগ করা দরকার, তাহলে তারা অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবে।
তিনি বলেন, বিদেশি সাহায্যে এবং ক্রয় সংক্রান্ত বিষয়ে সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ সফরের সুযোগ এখনও রয়েছে। তবে অন্যান্য বিদেশ সফর সীমাবদ্ধ।
উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, সরকারের টাকা খরচ করে কোনো কর্মকর্তা স্টাডি ট্যুরে বিদেশে যেতে পারবেন না।
বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী ফসলের উৎপাদন বাড়ানো এবং জ্বালানির সতর্ক ব্যবহারের ওপরও জোর দেন।
তিনি সকলকে জ্বালানির ব্যবহারে কঠোরতা প্রয়োগ করতে এবং পরিবহন যানবাহন - পাবলিক ও প্রাইভেট উভয় গাড়ির যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করতে বলেন।
বিমান সম্পর্কে শেখ হাসিনা এর স্টাফদের দায়িত্ব আরও সুনির্দিষ্ট করার এবং যে কোনো দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে দায়িত্বপ্রাপ্তদের দ্রুত খুঁজে বের করে দায়িত্বরত সকল কর্মীদের জবাবদিহি করার নির্দেশ দেন।
আরও পড়ুন: বৈদেশিক মুদ্রার আয় বাড়াতে মৎস্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প স্থাপনের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
যারা আপনাদের বেতন দেয়, তাদের জন্য কাজ করুন: সরকারি কর্মচারীদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারি কর্মচারীদের বেতন, আরাম-আয়েশ ও বিলাসের জন্য কর প্রদানকারী জনগণের কল্যাণে আত্মনিয়োগ করতে বলেছেন।
তিনি বলেন, ‘আপনারা সকলেই জনগণের ট্যাক্স হিসেবে দেয়া অর্থ থেকে বেতন ও সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন। আপনাদের আরাম-আয়েশসহ সবই জনগণের টাকা থেকে আসছে। তাই আপনাদের তাদের জন্য, তাদের স্বার্থ ও কল্যাণে কাজ করতে হবে।’
শনিবার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জাতীয় জনসেবা দিবস ও বঙ্গবন্ধু জনপ্রশাসন পুরস্কার ২০২২ বিতরণ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন শেখ হাসিনা।
তিনি তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি এই কর্মসূচিতে যোগ দেন।
তিনি বলেন, তৃণমূলের মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নই সরকারের প্রধান লক্ষ্য।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এবং আমাদের সরকার সেই লক্ষ্যকে মাথায় রেখে কাজ করে যাচ্ছে।’
তিনি বলেন, সরকার প্রশাসনিক ব্যবস্থাকে জনগণের দোরগোড়ায় নিয়ে যেতে চায়, যাতে প্রজাতন্ত্রের প্রতিটি কর্মচারী দেশের সংবিধান অনুযায়ী সুনির্দিষ্ট দায়িত্ব পালন করতে পারে।
আরও পড়ুন: দলমত নির্বিশেষে আমি প্রতিটি নাগরিকের প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী বলেন, একটি দেশের উন্নয়ন করতে হলে একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্য, একটি সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা ও উদ্দেশ্য থাকতে হবে।
তিনি বলেন, আর সে জন্য কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন ও তার যথাযথ বাস্তবায়ন থাকতে হবে। তার মানে জনগণের প্রতি কর্তব্য পালন করা সকলের প্রধান দায়িত্ব।
তিনি উল্লেখ করে বলেন, সরকার কর্মক্ষেত্রে একটি অনুকূল পরিবেশ তৈরি করছে, যাতে সরকারি কর্মচারীরা নির্ভয়ে ও নির্বিঘ্নে তাদের দায়িত্ব পালন করতে পারে।
তিনি বলেন,‘এর জন্য সরকার বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। প্রশাসনিক কাঠামোকে সময় উপযোগী করে তোলাই আমাদের লক্ষ্য।’
তিনি বলেন, ‘আমরা আপনাদের পরিবারের জন্য আপনাদের দুশ্চিন্তা কমানোর পদক্ষেপ নিয়েছি, যাতে আপনারা মানুষের কথা ভাবতে পারেন।’
তিনি সরকারি কর্মচারীদের অত্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে জনগণের প্রতি তাদের দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানান।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও রাশিয়ার ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, নিষেধাজ্ঞা আরোপের মাধ্যমে একটি দেশকে শিক্ষা দেয়া হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘কিন্তু সবাই এখন সেই ফল ভুগছে। সবাই এর দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।’
তিনি বলেন, বিশ্বব্যাপী মূল্যস্ফীতি বেড়েছে। ব্রিটেন ও আমেরিকার মতো উন্নত দেশগুলো শক্তি ও জ্বালানি ব্যবহারে কঠোরতা বজায় রাখতে শুরু করেছে।
আরও পড়ুন: পঞ্চগড় ও মাগুরা জেলাকে ভূমিহীনমুক্ত ঘোষণা প্রধানমন্ত্রীর
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তাদের অবস্থা খুবই শোচনীয়।’
বাংলাদেশ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা এখন পর্যন্ত যেভাবে আমাদের দায়িত্ব আন্তরিকতা ও দক্ষতার সঙ্গে পালন করেছি, বিশ্বের অনেক দেশের তুলনায় আমরা এগিয়ে যাচ্ছি।
তিনি আরও বলেন, ‘তবে ভবিষ্যতের কথা বিবেচনা করে আমাদের মিতব্যয়ীতা বজায় রাখতে হবে এবং অপচয় এড়াতে হবে। আমাদের এ বিষয়ে বিশেষ মনোযোগ দিতে হবে।’
বিরোধী দল ও মিডিয়া রিপোর্টের সমালোচনার কথা উল্লেখ করে তিনি কর্মকর্তাদের কোন ত্রুটি হয়েছে কিনা তা পরীক্ষা করার জন্য অনুরোধ করেন।
তিনি আমলাদের বলেন, ‘আপনাদের আত্মবিশ্বাস থাকতে হবে যে আপনারা যা করছেন তা জনগণের কল্যাণের জন্য করছেন।’
জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এইচএন আশিকুর রহমান, মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম, জনপ্রশাসন সচিব কে এম আলী আজম প্রমুখ বক্তব্য দেন।
এর আগে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন।
অনুষ্ঠানে একটি তথ্যচিত্রও প্রদর্শন করা হয়।
আরও পড়ুন: আবারও জীবনের সকল ক্ষেত্রে মিতব্যয়ীতা অনুশীলন করার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়ার মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রীর শোক
গাইবান্ধা-৫ আসনের সংসদ সদস্য এবং জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বী মিয়ার মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শনিবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই শোক জানানো হয়।
শোকবার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ছাত্রজীবন থেকেই ফজলে রাব্বী মিয়া আইয়ুব বিরোধী আন্দোলন এবং ৬২-এর শিক্ষা কমিশন বিরোধী আন্দোলনে জড়িত ছিলেন। মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি ১১নং সেক্টরে যুদ্ধ করেছিলেন। সংসদীয় গণতন্ত্রে অসামান্য ভূমিকার জন্য তিনি স্মরণীয় হয়ে থাকবেন।
আরও পড়ুন: আবদুল গাফ্ফার চৌধুরীর মেয়ের মৃত্যুতে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর শোক
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জানান।
প্রসঙ্গত, ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট মো. ফজলে রাব্বী মিয়া যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর। মৃত্যুকালে তিন মেয়ে, আত্মীয়স্বজন ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। তার স্ত্রী আনোয়ারা রাব্বি ২০২০ সালের মে মাসে মারা যান।
দলমত নির্বিশেষে আমি প্রতিটি নাগরিকের প্রধানমন্ত্রী
দলমত নির্বিশেষে প্রতিটি গৃহহীন নাগরিক বাংলাদেশে একটি করে ঘর পাবে উল্লেখ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৃহস্পতিবার বলেছেন, আমি ‘প্রত্যেক নাগরিকের প্রধানমন্ত্রী’।
তিনি বলেন, ‘দেশটি আমাদের সকলের। আমি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। তার মানে বাংলাদেশের প্রতিটি নাগরিকের দেখাশোনা করা আমার দায়িত্ব।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানুষের মধ্যে মতামত বা আদর্শের পার্থক্য থাকতে পারে তবে ‘আমি প্রতিটি মানুষকে মানুষ হিসাবে বিবেচনা করি।’
তিনি বলেন, ‘আমি চাই প্রতিটি নাগরিকের একটি সুন্দর জীবন হোক। এটাই আমার পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শিক্ষা।’
তিনি দলমত নির্বিশেষে অন্যান্য রাজনৈতিক দলসহ সকলকে ভূমিহীন ও গৃহহীন আছে কি না সরকারকে জানানোর অনুরোধ করেন যাতে তাদের জন্য ঘরের ব্যবস্থা করতে পারেন।
তিনি বলেন, ‘আমি সমস্ত সরকারি কর্মচারী এবং সমস্ত রাজনৈতিক দলকে যে কোনও ভূমিহীন এবং গৃহহীন লোকদের সম্পর্কে তথ্য দেয়ার জন্য অনুরোধ করছি যাতে আমরা তাদের একটি বাড়ি এবং ঠিকানা দিতে পারি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা তাদের জন্য ঘর তৈরি করব, তাদের একটি ঠিকানা দেব এবং তাদের জন্য জীবিকার ব্যবস্থা করব।’
আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় সারাদেশে ভূমিহীন পরিবারের মধ্যে মোট ২৬ হাজার ২২৯টি ঘর হস্তান্তর করার সময় প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন।
এসময় তিনি সরকারের আশ্রয়ণ প্রকল্পের এক যুগান্তকারী অর্জনে পঞ্চগড় ও মাগুরা জেলাকে ভূমিহীন ও গৃহহীন হিসেবে ঘোষণা করেন।
তিনি বলেন, মুজিববর্ষ উপলক্ষে গৃহহীন সকলের আশ্রয় নিশ্চিত করার সরকারের প্রতিশ্রুতির অংশ হিসেবে পঞ্চগড় ও মাগুরার নয়টি উপজেলাসহ বিভিন্ন জেলার মোট ৫২টি উপজেলায় ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার নেই।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাদের দেয়া ঘরগুলো সংরক্ষণ করা সুবিধাভোগীদের দায়িত্ব।
ভূমিহীন ও গৃহহীনদের দেয়া ঘর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এটা নিছক ঘর নয়, এটা আপনার পরিবার ও আপনার পরবর্তী প্রজন্মের আশ্রয়, ঠিকানা ও ভবিষ্যৎ।’
পড়ুন: পঞ্চগড় ও মাগুরা জেলাকে ভূমিহীন ঘোষণা প্রধানমন্ত্রীর
শেখ হাসিনা বলেন, করোনাভাইরাস মহামারি, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে রাশিয়ার ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কারণে সরকার সার ও খাদ্য সংগ্রহে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘শুধু বাংলাদেশে নয়, বিশ্বব্যাপী মূল্যস্ফীতি বেড়েছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বাড়ানো হয়েছে, সারা বিশ্বে খাদ্যের অভাব চলছে, এমনকি উন্নত দেশগুলোতেও এর প্রভাব পড়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, উন্নত দেশগুলোও বিদ্যুৎ ও জ্বালানির সাশ্রয়ে ব্যবস্থা নিয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশ বেশ ভালোভাবে চালাচ্ছি, তবে আমাদের এখন থেকে সতর্ক থাকতে হবে। আমরা সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়েছি।’
তিনি বিদ্যুৎ, পানি, জ্বালানি সাশ্রয় এবং খাদ্য উৎপাদনের জন্য তাদের জমির প্রতিটি ইঞ্চি ব্যবহার করার আহ্বান জানান।
আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের পরিচালক আবু সালেহ মোহাম্মদ ফেরদৌস খান প্রকল্পের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে একটি পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন দেন।
প্রকল্পের ওপর একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়।
পরে প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে পঞ্চগড়, মাগুরা, বাগেরহাট, লক্ষ্মীপুর ও ময়মনসিংহের বেশ কয়েকজন উপকারভোগীর সঙ্গে কথা বলেন।
পড়ুন: আশ্রয়ণ: বাগেরহাটে শেফালীসহ ৪৫ পরিবারের স্বপ্ন পুরণ করলেন প্রধানমন্ত্রী
পঞ্চগড় ও মাগুরা জেলাকে ভূমিহীনমুক্ত ঘোষণা প্রধানমন্ত্রীর
সরকারের আশ্রয়ণ প্রকল্পের এক যুগান্তকারী অর্জনে বৃহস্পতিবার পঞ্চগড় ও মাগুরা জেলাকে ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত হিসেবে ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে সারাদেশে ভূমিহীন ও গৃহহীন ২৬ হাজার ২২৯টি ঘর হস্তান্তরের সময় এ ঘোষণা দেন।
তিনি বলেন, আমরা খুব আনন্দিত যে দুই জেলার সব উপজেলায়ই এখন সম্পূর্ণরূপে ভূমিহীন ও গৃহহীন মানুষমুক্ত হয়েছে। ‘আমাদের উদ্যোগের ফলে আজ এই সাফল্য অর্জিত হয়েছে’।
এর বাইরে দেশের বিভিন্ন জেলার আরও ৪৩টি উপজেলাও একই মর্যাদা পেয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, এটা একটা বড় অর্জন। আমি আশা করি বাংলাদেশের সব জেলা ও উপজেলা একদিন ভূমিহীন ও গৃহহীন মানুষ মুক্ত হবে। ‘দেশের প্রতিটি মানুষের একটি বাড়ি এবং ঠিকানা থাকবে।’
পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক মো. জহিরুল ইসলাম বলেন, পঞ্চগড়ে ৪ হাজার ৮৫০টি ভূমিহীন ও গৃহহীন লোক খুঁজে পেয়েছে সরকার এবং তাদের সবার জন্য ঘর নির্মাণ করা হয়েছে।
সরকারি সূত্রে জানা গেছে, মাগুরা জেলায় ৬৭৮টি পরিবারের জন্য ঘর তৈরি করা হয়েছে।
মুজিববর্ষ উপলক্ষে গৃহহীন সকলের জন্য আশ্রয় নিশ্চিত করার সরকারের প্রতিশ্রুতির অংশ হিসেবে পঞ্চগড় ও মাগুরা জেলার সবগুলো উপজেলাসহ দেশের ৫২টি উপজেলাকে ভূমিহীন ও গৃহহীন উপজেলা হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
এই ৫২টি উপজেলায় মোট ১৯ হাজার ৭৮০টি ভূমিহীন পরিবারকে পুনর্বাসন করা হয়েছে বলে প্রকল্পের সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
তারা বলেন, দুই জেলা ও ৫২টি উপজেলায় কাউকে ভূমিহীন পাওয়া গেলে দ্রুত তাদের জমিসহ ঘর দেয়া হবে।
ইতোমধ্যে স্থানীয় প্রশাসনকে এ বিষয়ে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
ভূমিহীন ৫২ উপজেলা হলো ঢাকার নবাবগঞ্জ, মাদারীপুর সদর, শরীয়তপুরের ডামুড্যা, কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী, টাঙ্গাইলের গোপালপুর, মানিকগঞ্জের ঘিওর ও সাটুরিয়া, রাজবাড়ীর কালুখালী, ফরিদপুরের নগরকান্দা, নেত্রকোণার মদন, ময়মনসিংহের ভালুকা, নান্দাইল, ফুলপুর ও ফুলবাড়িয়া, জামালপুরের বকশীগঞ্জ, চট্টগ্রামের পটিয়া, কর্ণফুলী, সাতকানিয়া ও লোহাগাড়া, লক্ষ্মীপুরের রায়পুর ও রামগঞ্জ, ফেনীতে ফেনী সদর, ছাগলনাইয়া, ফুলগাজী ও পরশুরাম, গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ, পঞ্চগড়ের আটোয়ারী, পঞ্চগড় সদর, দেবীগঞ্জ, তেতুলিয়া ও বোদা, দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ, ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী, নীলফামারীর ডিমলা, নওগাঁর রানীনগর, জয়পুরহাটের পাঁচবিবি, রাজশাহীর মোহনপুর, চারঘাট ও বাঘা, বগুড়ার নন্দীগ্রাম ও দুপচাঁচিয়া, নাটোরের বাগাতিপাড়া, পাবনার ঈশ্বরদী, চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ, ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডু, সাতক্ষীরার তালা, মাগুরায় মাগুরা সদর, শ্রীপুর, মোহাম্মদপুর ও শালিখা, ঝালকাঠির কাঁঠালিয়া ও পটুয়াখালীর দশমিনা।
পড়ুন: আশ্রয়ণ: বাগেরহাটে শেফালীসহ ৪৫ পরিবারের স্বপ্ন পুরণ করলেন প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় জানিয়েছে, আশ্রয়ণ-২-এর তৃতীয় প্রকল্পে ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের মধ্যে মোট ৬৭ হাজার ৮০০টি ঘর দেয়া হচ্ছে।
এর মধ্যে গত ২৬ এপ্রিল ৩২ হাজার ৯০৪টি ঘর হস্তান্তর করা হয়েছে, ২১ জুলাই হস্তান্তর করা হয়েছে ২৬ হাজার ২২৯টি এবং বাকি ৮ হাজার ৬৬৭টি ঘর নির্মাণাধীন রয়েছে।
এর আগে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ২০২১ সালের ২৩ জানুয়ারি এবং ২০ জুন প্রথম দুই দফায় দেশে গৃহহীনদের মধ্যে ভূমিসহ এক লাখ ১৭ হাজার ৩২৯টি আধা-পাকা ঘর হস্তান্তর করা হয়েছে।
প্রকল্পের আওতায় ২০২১-২০২২ অর্থবছরে আশ্রয়ণ ঘরের জন্য প্রায় ৪ হাজার ২৯কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল।
সরকার সারা দেশে গৃহহীনদের জন্য ঘর নির্মাণের জন্য প্রায় ৫ হাজার ৫১২ একর খাস জমি উদ্ধার করে। এই জমির আনুমানিক বাজার মূল্য ২ হাজার ৯৬৭ কোটি টাকা।
এছাড়া আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় ঘর নির্মাণের জন্য সরকার ১৩৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৯১ দশমিক ৭৯ একর জমি ক্রয় করেছে। আর এ পর্যন্ত ৮ হাজার ৪৬২টি ভূমিহীন পরিবারকে সংগৃহীত জমিতে পুনর্বাসন করা হয়েছে।
এই আবাসন প্রকল্প গ্রামীণ অর্থনীতিকে প্রাণবন্ত করতে অবদান রাখবে। বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক সংকট সত্ত্বেও সরকার আশ্রয়-২ প্রকল্প বাস্তবায়ন চালিয়ে যাবে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
পড়ুন: স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়নে সরকারের ব্যাপক পরিকল্পনা
জনবল সংকটে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে আইসিইউ ও এইচডিইউ সেবা বন্ধ
আবারও জীবনের সকল ক্ষেত্রে মিতব্যয়ীতা অনুশীলন করার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৈশ্বিক মুল্যস্ফীতি পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে বিদ্যুৎ ব্যবহারসহ জীবনের সব ক্ষেত্রে মিতব্যয়ীতা বজায় রাখার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
তিনি আরও বলেন, সংশ্লিষ্ট সবাই যদি মিতব্যয়ী হতে পারে, তাহলে দীর্ঘমেয়াদে দেশ লাভবান হবে।
মঙ্গলবার রাজধানীর এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) প্রথম বৈঠকে সভাপতিত্বকালে প্রধানমন্ত্রী এ আহ্বান জানান।
এসময় তিনি তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি বৈঠকে যোগ দেন।
বৈঠক শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী সকল ক্ষেত্রে মিতব্যয়ীতা বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছেন।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘সরকার প্রধান বলেছেন মিতব্যয়ী হতে হবে। আসুন সবাই মিতব্যয়ী হই। তিনি গোটা আমলাতন্ত্রসহ সরকার এবং সরকারের বাইরে যারা সাধারণ নাগরিক আছেন সবাইকে মিতব্যয়ী হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।’
বর্তমান বৈশ্বিক পরিস্থিতি ও জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণে বাংলাদেশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
মন্ত্রী বলেন, ‘যে পণ্যগুলো আমরা নিজেরা উৎপাদন করি না, সেগুলোর অভিঘাত মোকাবিলায় আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। প্রধানমন্ত্রী মূলত এ কারণে দেশবাসীকে মিতব্যয়ীতা বজায় রাখার পরামর্শ দিয়েছেন।’
পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শামসুল আলম বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সব সময় সবাইকে মিতব্যয়ীতা বজায় রাখার পরামর্শ দিয়েছেন।
তিনি প্রতিনিয়তই নাগরিক পরিষেবা খাতগুলোর অপব্যবহার বন্ধ করারও আহ্বান জানিয়েছেন। যেমন- গরমের সময় অফিসে কোট-স্যুট না পরতে। এছাড়া সরকারি অফিসগুলোর এসি একটি নির্দিষ্ট মাত্রায় চালানোর জন্য বলেছিলেন। অপচয় না করতে প্রধানমন্ত্রী সবসময়ই বলে আসছেন।
আরও পড়ুন: জনদুর্ভোগ সৃষ্টির জন্য যুদ্ধ দায়ী: প্রধানমন্ত্রী