প্রধানমন্ত্রীর-কার্যালয়
মুক্তিযোদ্ধাদের ঈদের শুভেচ্ছা জানালেন প্রধানমন্ত্রী
পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের সকল মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
শুক্রবার ঈদের দিন দেশের সূর্যসন্তান- মুক্তিযোদ্ধাদের শুভেচ্ছা জানান প্রধানমন্ত্রী।
দেশের অন্যান্য অনুষ্ঠানের মতো, ঈদের দিনেও প্রধানমন্ত্রী ঢাকার মোহাম্মদপুরের মুক্তিযোদ্ধা পুনর্বাসন কেন্দ্রের মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের জন্য ফুল, ফল ও মিষ্টান্ন সামগ্রী পাঠিয়ে ঈদের শুভেচ্ছা পৌঁছে দেন।
আরও পড়ুন: করোনা মহামারির চাদরে মোড়া আরও একটি ঈদ!
শুক্রবার সকালে প্রধানমন্ত্রীর সহকারী ব্যক্তিগত সচিব-২ গাজী হাফিজুর রহমান লিকু, উপ প্রেস সচিব জাহিদ তুষার এবং সহকারী প্রেস সচিব এ.বি.এম. সারওয়ার-এ-আলম সরকার প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে এসকল শুভেচ্ছা সামগ্রী মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের হাতে তুলে দেন।
আরও পড়ুন: খুলনায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঈদের নামাজ আদায়
জাতীয় দিবসগুলোর মতো দেশের অন্যান্য উৎসবগুলোতেও মুক্তিযোদ্ধাদের এভাবে স্মরণ করা এবং তাদের শুভেচ্ছা জানানোর জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন মুক্তিযোদ্ধা এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা। তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নেতৃত্বের প্রশংসা এবং তার দীর্ঘায়ু কামনা করেন।
অনিয়ন্ত্রিত ঈদ উদযাপনে করোনার প্রকোপ বাড়বেন না: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ও জাতিকে পবিত্র ঈদ-উল-ফিতরের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। জাতির উদ্দেশে ঈদ শুভেচ্ছা বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ঈদ উদযাপনে সকলকে সচেতন হতে হবে যেন করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি না পায়।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঈদ উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী এই আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ আপনাদের প্রতি আমার অনুরোধ, ঈদের আনন্দের বশে আত্মীয়দের বাড়িতে বেড়াতে চলে যাবেন। কারণ অনেকের মধ্যেই করোনার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। বিভিন্ন আত্মীয়দের বাড়িতে বেড়াতে যেয়ে নিজেকে এবং আপনার কাছের আত্মীয়দের জীবনও ঝুঁকির মধ্যে ফেলবেন না।’
আরও পড়ুন: বায়তুল মোকাররমে ঈদ জামাত শুরু সকাল ৭টায়
প্রধানমন্ত্রীর ১৬ মিনিটের এই ভাষণ বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতার এবং বিভিন্ন বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল এক যোগে সম্প্রচার করে।
শেখ হাসিনা সকলকে আবারও মনে করিয়ে বলেন, মানুষের জীবন সবার আগে। আমরা যদি সবাই সুন্দরভাবে বাঁচতে পারি, তাহলে আগামী বছর সুন্দরভাবে ঈদ উদযাপন করতে পারবো।
প্রধানমন্ত্রী জানান, গত বছরের মতো এবছরও খোলা ময়দানে ঈদের জামাত নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তিনি সকলকে পরিপূর্ণ স্বাস্থ্যবিধি মেনে মসজিদে ঈদের জামাত আদায় করার অনুরোধ করেন।
আরও পড়ুন: ঐতিহাসিক শোলাকিয়ায় ঈদের জামাত হচ্ছে না
সকলকে নিজ অবস্থানে থেকে ঈদের আনন্দ উপভোগ করার পাশাপাশি সমাজের অন্যদের প্রতিও সহায়তা বাড়িয়ে দেয়ার আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সমাজে অন্যান্য মানুষের প্রতি আপনার সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিন। আপনার সামান্য সাহায্য পারে একটি পরিবারের মাঝে ঈদের আনন্দ ছড়িয়ে দিতে। মানুষ হিসেবে মানুষের পাশে দাঁড়ানোই আমাদের বড় কর্তব্য।’
আরও পড়ুন: চীনের উপহার ৫ লাখ টিকা বাংলাদেশে
করোনার টিকার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার করোনা সবচেয়ে কার্যকরী অক্সফোর্ডের টিকা দিয়েই গণ টিকাদান কার্যক্রম শুরু করে। ভারতের বর্তমান করোনার পরিস্থিতির অবনতির ফলে ভ্যাক্সিন রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করায় বর্তমানে ভ্যাক্সিন সংকটা দেখা দিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী জানান, সরকার ইতিমধ্যেই অন্যান্য উৎস, চীন ও রাশিয়ার কাছ থেকে ভ্যাক্সিন সংগ্রহের ব্যাপারে কাজ করছে।
নন-এমপিও শিক্ষক-কর্মচারীদের জন্য ৭৫ কোটির টাকার অনুদান প্রধানমন্ত্রীর
করোনা মহামারির কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় আর্থিক সংকটে পড়া ১ লাখ ৬৭ হাজার ২২৫ জন নন এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীর জন্য ৭৪ কোটি ৮১ লাখ টাকা অনুদান দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সাধারণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ১ লাখ পাঁচ হাজার ৭৮৫ জন এবং কারিগরি শিক্ষা, মাদরাসা শিক্ষা ও স্বতন্ত্র এবতেদায়ি মাদরাসার ৬১ হাজার ৪৪০ জন শিক্ষক-কর্মচারী এ অনুদানের অন্তর্ভুক্ত হবেন।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য ৪৬ কোটি ৬৩ লাখ টাকা এবং কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের জন্য ২৮ কোটি ১৮ লাখ টাকা প্রধানমন্ত্রী অনুদান প্রদান করেছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রত্যেক শিক্ষক ৫ হাজার হাজার টাকা এবং কর্মচারীরা ২ হাজার ৫০০ টাকা করে পাবেন।
এর আগে ২ মে ৩৬.৫ লাখ নিম্ন আয়ের মানুষের প্রত্যেকের জন্য ২ হাজার ৫০০ টাকা করে অর্থ সহায়তা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রত্যেক পরিবার মোবাইল ব্যাংকিং সেবা নগদ, বিকাশ, রকেট এবং শিউরক্যাশের মাধ্যমে সরাসরি এই টাকা গ্রহণ করেন।
আরও পড়ুন: কোভিড-১৯: সাংবাদিকদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর ১০ কোটি টাকার অনুদান
করোনার দ্বিতীয় ঢেউ চলাকালীন সময়ে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ভোগান্তি দূর করার জন্য ইতোমধ্যে ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউ সামনে আসায় দ্রুততার সাথে মানবিক কার্যক্রম শুরুর নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
১৪ এপ্রিল থেকে কোভিড-১৯ নিয়ন্ত্রণে কঠোর লকডাউন ঘোষাণার পর গ্রাম ও প্রত্যন্ত অঞ্চলের প্রান্তিক মানুষ, দিনমজুর, রিকশা ও ভ্যান চালক, ভিক্ষুকেরা কর্মহীন হয়ে পরে।
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে এসব অভাবগ্রস্ত জনগণের মাঝে অর্থ বিতরণের জন্য দুযোর্গ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রনালয়ের পক্ষ থেকে দ্রুত সময়ে মাঠ পর্যায়ের প্রশাসনকে ৫৯০ কোটি টাকা দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: প্রত্যেক জেলায় পরিকল্পিত শহর গড়ে তোলা হবে: প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা করোনাভাইরাসের আরও বিস্তার প্রতিরোধে চলমান লকডাউনে ক্ষতিগ্রস্ত দরিদ্র, দুস্থ, অসচ্ছল ও ভাসমান মানুষকে সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে সাড়ে ১০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছেন।
এছাড়াও কোভিড-১৯ মহামারিতে দেশের সাংবাদিকদের সহায়তা প্রদানের জন্য ১০ কোটি টাকার অনুদান দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রত্যেক জেলায় পরিকল্পিত শহর গড়ে তোলা হবে: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রবিবার বলেছেন, শুধুমাত্র ঢাকা শহরের জন্যই নয়, বরং প্রত্যেক বিভাগ এবং জেলা শহরে পরিকল্পিত শহর তৈরি করা হবে।
তিনি বলেন, ‘কেবল ঢাকা কেন্দ্রিক পরিকল্পিত নগরায়নের কাজ আমরা করব না। প্রত্যেক বিভাগ এবং জেলায় মানুষের উন্নত জীবন মান নিশ্চিত করার জন্য পরিকল্পিত নগরায়ন গড়ে তোলা হবে।’
পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্প এলাকার ১ হাজার ৪৪০ জন সাধারণ ক্ষতিগ্রস্ত ও মূল অধিবাসীকে প্লটের বরাদ্দপত্র বুঝিয়ে দেয়ার অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: কোভিড সংকট মোকাবিলায় একসাথে কাজ করব: মমতাকে হাসিনা
প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে অনলাইনের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত প্লট বরাদ্দ অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
এসময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার প্রান্তিক এবং গ্রাম এলাকার মানুষের মাঝে শহরের সকল সুবিধা পৌঁছে দেয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে এবং করছে। প্রত্যেক গ্রামেই সরকার প্রয়োজনীয় রাস্তা, পুল, ব্রিজ এবং বিভিন্ন স্থাপনা তৈরির মাধ্যমে গ্রামীণ জনগণের জীবন মান উন্নয়নের কাজ করে চলেছে সরকার।
তিনি বলেন, কেউ যদি শহরের মতো গ্রামে ফ্ল্যাট বাসায় থাকতে চায়, সেকথা মাথায় রেখে সরকার ‘পল্লী জনপদ’ নামে প্রকল্প গ্রহণ করেছে। এই প্রকল্প বাস্তবায়নে সরকার নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
প্রধানমন্ত্রী আবারও সকলের জন্য বসতবাড়ি নিশ্চিত করার কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘আমরা যেভাবেই হোক সকলের জন্য বাসস্থানের ব্যবস্থা করবে। আর প্রতিটি বাড়িতেই বিদ্যৎ সংযোগের মাধ্যমে আলোকিত করা হবে।’
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের প্রত্যেকটি ঘরের মানুষ শিক্ষিত হবে এবং বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশ শিক্ষা, জ্ঞান-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিগত ভাবে উন্নত এক দেশ হিসেবে পরিচিত হবে।
আরও পড়ুন: করোনা: ভারতে একদিনে আরও ৪০৯২ মৃত্যু
এসময় ভারতে ছড়িয়ে পড়া করোনার নতুন ধরন সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী সবাইকে সতর্ক থাকার এবং মাস্ক পরার আহ্বান জানান। ভারতের করোনা ভ্যারিয়েন্ট বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কার কথাও জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রী ঈদে মানুষের গ্রামে ফেরার ব্যাপারে তীব্র সমালোচনা করে বলেন, ‘মানুষ ভিড়ের মধ্যে ঠেলাঠেলি করে যানবাহন ও ফেরিতে চলাচল করছে। কার শরীরে ভাইরাস আছে তা না জেনেই, আপনি আপনার পরিবারের সকলের জীবন ঝুঁকিতে ফেলছেন।’
সাধারণ মানুষের পরিবারের সুরক্ষার কথা চিন্তা করে সকলকে নিজ অবস্থানে থেকে ঈদ উদযাপন করার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী (বীর প্রতীক), গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মোশারফ হোসেন, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব শহীদ উল্লাহ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) চেয়ারম্যান এ. বি. এম. আমিন উল্লাহ নুরি।
করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত এবং গৃহহীনদের জন্য ১০ কোটি টাকার অনুদান প্রধানমন্ত্রীর
করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত ও গৃহহীন জনগোষ্ঠীর পুনর্বাসনের জন্য দুটি আলাদা তহবিলে ১০ কোটি টাকার অনুদান দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি ট্রাস্টে এ সহায়তা দেন তিনি।
আরও পড়ুন: করোনার দুর্দিনে জনগণের পাশেই আছেন প্রধানমন্ত্রী
এর মধ্যে ৫ কোটি টাকা দেয়া হবে করোনায় ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তায় এবং বাকি ৫ কোটি টাকা ব্যয় করা হবে গৃহহীন জনগোষ্ঠীর আশ্রয় এবং পুনর্বাসনে।
আরও পড়ুন: বিশ্বব্যাপী কোভিড সঙ্কট: দ্রুত পুনরুদ্ধারে ইএসসিএপি-কে ব্যবস্থা গ্রহণের পরামর্শ শেখ হাসিনার
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম বলেন, প্রধানমন্ত্রী তার ব্যাক্তিগত উদ্যোগে এই ১০ কোটি টাকা সহায়তা প্রদান করেছেন।
আরও পড়ুন: লিডার্স সামিট: জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রীর ৪ পরামর্শ
দরিদ্র ও দুস্থদের সহায়তায় এগিয়ে আসার জন্য বিত্তবানদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
করোনার দুর্দিনে জনগণের পাশেই আছেন প্রধানমন্ত্রী
করোনার প্রথম আঘাতের মতো এবারও করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় কর্মসংস্থান হারানো ও অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
করোনায় মৃত্যু মিছিলের মধ্যেই চলমান লকডাউনের কারণে খেটে খাওয়া সকল শ্রেণী পেশার মানুষের জীবিকা নির্বাহের জন্য মানবিক সহায়তা পৌঁছে দিতে নিরলস চেষ্টা করছেন প্রধানমন্ত্রী।
ইতোমধ্যেই করোনায় দ্বিতীয় ঢেউ-এ প্রান্তিক জনগণের কষ্ট-দুর্দশা দূর করতে সরকার ১৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। মানবিক সহায়তার অংশ হিসেবে প্রধানমন্ত্রী নিম্ন-আয়ের প্রায় সাড়ে ৩৬ লাখ পরিবারের মাঝে নগদ ২ হাজার ৫০০ টাকা করে অর্থ সহায়তা দিবেন।
প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের (পিএমও) সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া ইউএনবিকে জানান, আগামী রবিবার (২ এপ্রিল) প্রধানমন্ত্রী এই অর্থ সহায়তার কার্যক্রম শুরু করবেন।
তিনি বলেন, করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হবার পরপরই প্রধানমন্ত্রী তাৎক্ষণিকভাবে জনগণকে অর্থসহায়তা নিশ্চিত করার নির্দেশ দেন।
উল্লেখ্য, গতবছরও করোনার প্রথম প্রকোপের সময় সরকার সাড়ে ৩৬ লাখ পরিবারের মাঝে অর্থ সহায়তা প্রদান করে।
পিএমও সচিব জানান, মোবাইল ব্যাংকিং সেবা নগদ, বিকাশ, রকেট এবং শিউরক্যাশ এর মাধ্যমে সাধারণ জনগণের মাঝে সরাসরি অর্থ সহায়তা পৌঁছে দেয়া হবে।
আরও পড়ুন: বিশ্বব্যাপী কোভিড সঙ্কট: দ্রুত পুনরুদ্ধারে ইএসসিএপি-কে ব্যবস্থা গ্রহণের পরামর্শ শেখ হাসিনার
দেশে গত ১৪ এপ্রিল থেকে কঠোর লকডাউন ঘোষণা করার পর কর্মহীন হয়ে পড়ে সমাজের খেটে খাওয়া ও নিম্ন আয়ের মানুষ। তাই প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে প্রান্তিক শ্রেণীর অসহায় জনগণের জীবিকা নিশ্চিত করতে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় তাৎক্ষণিকভাবেই মাঠ পর্যায়ের প্রশাসনকে ৫৯০ কোটি টাকা বরাদ্দ করে।
পিএমও সচিব বলেন, অন্যান্য অর্থ সহায়তার পাশাপাশি হতদরিদ্র মানুষের জরুরি সাহায্যের জন্য প্রত্যেক জেলার ডিসিদের প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে সাড়ে ১০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়।
সচিব আরও বলেন, করোনার আঘাতে কর্মহীন হয়ে পড়া এবং ক্ষতিগ্রস্ত সাংবাদিকদের জন্য প্রধানমন্ত্রী ইতোমধ্যেই নিজ উদ্যোগে ১০ কোটি টাকা অর্থ সহায়তা প্রদান করেছেন।
আরও পড়ুন: লিডার্স সামিট: জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রীর ৪ পরামর্শ
এছাড়া সরকারি তথ্য সেবা ৩৩৩-হেল্প লাইন সেন্টারের কথা উল্লেখ করে তোফাজ্জল হোসেন জানান, সমাজরে মধ্যবিত্ত মানুষের কথা মাথায় রেখেই সরকার এই সেবা চালু করেছে। মধ্যবিত্ত পরিবারের কেউ সংকোচ না করে হেল্প সেন্টারে সাহায্য চাওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
তিনি বলেন, হেল্প সেন্টারে সাহায্য চাওয়া হলে অতি দ্রুততম সময়ের মধ্যে স্থানীয় প্রশাসন সাহায্যপ্রার্থীর পরিচয় গোপন রেখে প্রয়োজনীয় সহায়তা পৌঁছে দেবে।
কোভিড-১৯: সাংবাদিকদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর ১০ কোটি টাকার অনুদান
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মঙ্গলবার কোভিড-১৯ মহামারিতে দেশের সাংবাদিকদের সহায়তা প্রদানের জন্য ১০ কোটি টাকার অনুদান দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: কোভিড-১৯: ক্ষতিগ্রস্ত দরিদ্রদের জন্য সাড়ে ১০ কোটি টাকা বরাদ্দ প্রধানমন্ত্রীর
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম ইউএনবিকে বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী কোভিড-১৯ মহামারির এই কঠিন সময়ে সারা দেশে সাংবাদিকদের সহায়তার জন্য বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টকে ১০ কোটি টাকা অনুদান দিয়েছেন।'
বিশ্বব্যাপী কোভিড সঙ্কট: দ্রুত পুনরুদ্ধারে ইএসসিএপি-কে ব্যবস্থা গ্রহণের পরামর্শ শেখ হাসিনার
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সোমবার ইউএন-ইএসসিএপি-কে চারটি ব্যবস্থা নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন, যার মধ্যে একটি কোভিড-১৯ সঙ্কট থেকে দ্রুত পুনরুদ্ধার নিশ্চিত করতে উন্নত বিশ্ব, উন্নয়ন অংশীদার এবং আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো (আইএফআই) এগিয়ে আসতে সহায়তা করবে।
শেখ হাসিনা এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের জন্য জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশনের ৭৭তম বার্ষিক অধিবেশনে (ইউএন-ইএসসিএপি) রেকর্ড করা ভাষণে এই সুপারিশ রাখেন।
'এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে আঞ্চলিক সহযোগিতার মাধ্যমে সঙ্কট থেকে পুনরুদ্ধার' এই প্রতিপাদ্যে ইএসসিএপি-এর চার দিনের (সোমবার-বৃহস্পতিবার) ভার্চুয়াল অধিবেশন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
আরও পড়ুন: লিডার্স সামিট: জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রীর ৪ পরামর্শ
বাংলাদেশ প্রধানমন্ত্রী ইএসসিএপি-এর জন্য যে চারটি পদক্ষেপের পরামর্শ দিয়েছেন সেগুলোর মধ্যে রয়েছে: উন্নত বিশ্ব, উন্নয়ন অংশীদার এবং আইএফআই-এর কোভিড মহামারি থেকে দ্রুত পুনরুদ্ধারের জন্য এগিয়ে আসা উচিত; যে কোনও সঙ্কট থেকে উন্নততর পুনরুদ্ধারের জন্য এবং উন্নয়নের পদ্ধতির আরও সংহত, স্থিতিস্থাপক ও পরিবেশ বান্ধব হওয়া উচিত।
এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের একটি শক্তিশালী ও সর্বজনীন জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থার জন্য দক্ষ নীতি ও কৌশল গ্রহণ করা উচিত; এবং বাণিজ্য, পরিবহন, শক্তি এবং আইসিটি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রে বিরামহীন সংযোগ স্থাপন করা। এটিও একটি পদক্ষেপ।
রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে কথা বলার সময় শেখ হাসিনা বলেন, মিয়ানমার থেকে ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত করা হয়েছে যাদের আশ্রয় দিয়েছে বাংলাদেশ।
তিনি বলেন, 'আমরা স্থায়ী প্রত্যাবাসনের মাধ্যমে কার্যকর সমাধানের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এই বিষয়ে মনোনিবেশ করার আহ্বান জানাচ্ছি।'
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোভিড-১৯ মহামারি বিশ্বজুড়ে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা এবং অর্থনীতিকে ধ্বংস করেছে। তিনি বলেন, প্রায় ২৯ লাখ ৫০ হাজার মানুষ মারা গিয়েছে এবং প্রতিদিন আরও শতাধিক মারা যাচ্ছে এই মারাত্মক রোগে।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, মহামারিটি বহু মানুষকে দরিদ্র করেছে এবং আবার অনেকে দারিদ্র্যের দিকে ফিরে যাচ্ছে।
আরও পড়ুন: কোভিড-১৯: ক্ষতিগ্রস্ত দরিদ্রদের জন্য সাড়ে ১০ কোটি টাকা বরাদ্দ প্রধানমন্ত্রীর
হাসিনা বলেন, 'বাংলাদেশে আমরা সামাজিক সুরক্ষা প্রশস্তকরণ, চাকরি বজায় রাখা এবং অর্থনীতিকে উন্নয়নের জন্য প্রায় ১৪.৬ বিলিয়ন ডলার মূল্যে উদ্দীপনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছি যা আমাদের জিডিপির প্রায় ৪.৪৪%।'
তিনি বলেন, সর্বশেষ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় কোভিড-১৯ থেকে পুনরুদ্ধার এবং বাংলাদেশকে মসৃণ ও টেকসই এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন, এসডিজি অর্জন, এবং ২০৪১ সালের মধ্যে একটি সমৃদ্ধ দেশের দিকে পথনির্দেশের কৌশল অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
পরিবেশ ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ এগিয়ে চলেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে অভিযোজন প্রচেষ্টা বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট তহবিলের মাধ্যমে অর্থায়িত কর্মসূচির দ্বারা সমর্থিত হয়েছে।
তিনি বলেন, 'আমরা আঞ্চলিক সহযোগিতা ভাগাভাগি করাকে সমৃদ্ধির সবচেয়ে কার্যকর বিকল্প হিসাবে দেখছি।'তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ সার্ক, বিমসটেক, বিবিআইএন, বিসিআইএম-ইসি এবং ত্রিপক্ষীয় হাইওয়ে উদ্যোগে নিযুক্ত রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'সাউথ-সাউথ নেটওয়ার্ক ফর পাবলিক সার্ভিস ইনোভেশন' অন্যান্য দেশের সাথে অংশীদারিত্বের মাধ্যমে বাংলাদেশকে সহায়তা করে।
শেখ হাসিনা বলেন, ইএসসিএপি-র উদ্যোগবাংলাদেশ এশিয়ান হাইওয়ে এবং ট্রান্স-এশিয়ান রেলওয়ে এবং বর্ধিত সংযোগের প্রবল সমর্থক।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ক্রস বর্ডার পেপারলেস বাণিজ্য, এশিয়া-প্যাসিফিক বাণিজ্য চুক্তি, পিপিপি নেটওয়ার্কিং, নবায়নযোগ্য শক্তি এবং ইউএন-ইএসসিএপি-র অন্যান্য উদ্যোগে সক্রিয়ভাবে জড়িত।
তিনি বলেন, 'নিরাপদ, সুশৃঙ্খল এবং নিয়মিত অভিবাসনের জন্য আমরা গ্লোবাল কম্প্যাক্ট অর্জনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।'
আরও পড়ুন: কোভিড ভ্যাকসিনকে বিশ্বজনীন পণ্য হিসেবে ঘোষণা করা উচিত: প্রধানমন্ত্রী
ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রপতি জোকো উইদোদো, শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে, ভুটানের প্রধানমন্ত্রী লোটে শেরিং, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান, আফগানিস্তানের রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ আশরাফ গনি, কিরগিজস্তানের রাষ্ট্রপতি সাদির জাপারভ, তাজিকিস্তানের রাষ্ট্রপতি ইমোমালি রাহমন, উজবেকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী আবদুল্লা আরিপভ, থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী প্রায়ুত চান-ও-চা, মঙ্গোলিয়ার রাষ্ট্রপতি বাতুলগা খালতমা, কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন সেন, আজারবাইজানের রাষ্ট্রপতি ইলহাম আলিয়েভ, কিরিবাতি টানেটি মামাউয়ের রাষ্ট্রপতি, টুভালু কোসিয়া নাটানোর প্রধানমন্ত্রী, মার্শাল দ্বীপপুঞ্জের রাষ্ট্রপতি এবং ফিজির প্রধানমন্ত্রী জোসাইয়া ভোরেকি বেনিমারাম অধিবেশনে বক্তব্য রাখেন।
কাজাখস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী মুখতার তাইলুবারদির সভাপতিত্বে অধিবেশনটিতে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার শীর্ষ প্রতিনিধিরাও বক্তব্য রাখেন।
লিডার্স সামিট: জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রীর ৪ পরামর্শ
জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় বিশ্ব নেতাদের কাছে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চারটি পরামর্শ তুলে ধরেছেন।
বৃহস্পতিবার (২১ এপ্রিল) মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের আমন্ত্রণে শুরু হওয়া বিশ্ব নেতাদের অংশগ্রহণে জলবায়ু বিষয়ক সম্মেলন ‘লিডার্স সামিটের’ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এই পরামর্শগুলো তুলে ধরার পাশাপাশি সম্বনিত উদ্যোগ গ্রহণেরও আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: বাইডেনের জলবায়ু সম্মেলনের আলোচ্যসূচিতে থাকছে বাংলাদেশের দাবিদাওয়া: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সমস্যা মোকাবিলায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সারা বিশ্বের ৪০ জন রাষ্ট্রপ্রধানকে জলবায়ু বিষয়ক ভার্চুয়াল সম্মেলন 'লিডারস সামিট'-এ অংশগ্রহণের আমন্ত্রণ জানান।
প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো, বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে রাখতে উন্নত দেশগুলোকে কার্বন নিঃসরণ হ্রাসে অবিলম্বে একটি উচ্চাভিলাষী কর্ম-পরিকল্পনা প্রণয়ন করতে হবে। এছাড়া ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার তহবিলের বার্ষিক লক্ষ্যমাত্রা নিশ্চিত করতে হবে, যা অভিযোজন ও প্রশমনের মধ্যে ৫০:৫০ ভারসাম্য বজায় রাখবে।
প্রধানমন্ত্রীর তৃতীয় পরামর্শ হলো, প্রধান অর্থনীতি, আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বেসরকারি খাতগুলোকে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় উদ্ভাবনের পাশাপাশি জলবায়ু অর্থায়নের জন্য বিশেষভাবে ছাড় দিতে হবে। তিনি তার শেষ পরামর্শে, সবুজ অর্থনীতি ও কার্বন প্রশমন প্রযুক্তির ওপর গুরুত্ব দেয়া এবং এ লক্ষ্যে দেশগুলোর মধ্যে প্রযুক্তির বিনিময়ের প্রতি জোর দেন।
পূর্বে ধারণকৃত ভিডিও বার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'করোনা মহামারি আমাদের আবারও স্মরণ করিয়ে দিয়েছে যে, বৈশ্বিক সমস্যা নিরসনে সকল দেশের সমন্বিত উদ্যোগ অত্যন্ত প্রয়োজন।'
প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতে যুক্তরাষ্ট্রের ফিরে আসায় এবং জলবায়ু শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজন ও এই আয়োজনে তাকে আমন্ত্রণ করায় শেখ হাসিনা প্রেসিডেন্ট বাইডেনের প্রশংসা ও ধন্যবাদ জানান।
আরও পড়ুন: দেশের উন্নয়নের জন্য আরও জ্বালানি প্রয়োজন: প্রধানমন্ত্রী
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সাথে জলবায়ুর সংকট নিরসনে বাংলাদেশের আগ্রহ প্রকাশ করে প্রধানমনত্রী বলেন, জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ ও সীমিত সম্পদের দেশ হওয়া সত্ত্বেও বাংলাদেশ অভিযোজন ও প্রশমনের ক্ষেত্রে বিশ্ব নেতৃত্ব হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ মোট জিডিপির প্রায় ২.৫ শতাংশ বা প্রায় ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার জলবায়ু পরিবর্তনজনিত দুর্যোগ মোকাবিলা এবং টেকসই জলবায়ু সহনশীল ব্যবস্থা গড়ে তুলতে ব্যয় করছে।
সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী রোহিঙ্গা সমস্যার কথা উল্লেখ করে বলেন, 'মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যূত প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে বাংলাদেশ। তারা দেশের প্রতিবেশকে অধিকতর ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলেছে।'
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ ন্যাশনালি ডিটারমাইন্ড কন্ট্রিবিউশন (এনডিসি) বৃদ্ধিতে এবং জলবায়ুর পরিবর্তন সহনীয় টেকসই পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে কার্বন হ্রাসের পদক্ষেপ নিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, বাংলাদেশ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ‘মুজিববর্ষ’ উদযাপনে দেশব্যাপী ৩০ কোটি গাছের চারা রোপণের পরিকল্পনা নিয়েছে। এছাড়া কম-কার্বনের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনে ‘মুজিব ক্লাইমেট প্রোসপারিটি প্ল্যান’ প্রণয়নের পরিকল্পনার কথাও তুলে ধরেন।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানাতে জন কেরি ঢাকায়
প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন যে, ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরাম (সিভিএফ) এবং ভি২০ (ভালনারেবল টুয়েন্টি) এর সভাপতি হিসেবে বাংলাদেশের প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর স্বার্থ সমুন্নত রাখা।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট হ্যারিস ‘লিডার্স সামিটের’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উস্থিত ছিলেন।
কোভিড-১৯: ক্ষতিগ্রস্ত দরিদ্রদের জন্য সাড়ে ১০ কোটি টাকা বরাদ্দ প্রধানমন্ত্রীর
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার করোনাভাইরাসের আরও বিস্তার রোধে চলমান লকডাউনে ক্ষতিগ্রস্ত দরিদ্র, দুস্থ ও অসচ্ছল মানুষকে সহায়তা প্রদানের জন্য সাড়ে ১০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছেন।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী সকল জেলা প্রশাসকদের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিল থেকে এই সহায়তা দেয়া হয়েছে।'
আরও পড়ুন: কোভিড ভ্যাকসিনকে বিশ্বজনীন পণ্য হিসেবে ঘোষণা করা উচিত: প্রধানমন্ত্রী
তিনি বলেন, লকডাউন চলাকালীন সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দরিদ্র, দুস্থ ও অসচ্ছল মানুষের তালিকা তৈরির পরে জেলা প্রশাসকরা সহায়তা প্রদান করবেন।
বিভিন্ন জেলার দরিদ্র, দুস্থ ও অসচ্ছল মানুষের সংখ্যার উপর নির্ভর করে বরাদ্দকৃত অর্থের পরিমাণ একেক রকম হবে।
ইহসানুল করিম বলেন, ৬৪টি জেলার জেলা প্রশাসকরা বরাদ্দকৃত অর্থের অংশ পাবেন।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ এবং প্রাণহানি- উভয় ক্ষেত্রেই ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সরকার ৫ এপ্রিল থেকে এক সপ্তাহের জন্য দেশব্যাপী সীমিত আকারের লকডাউন আরোপ করে।
সপ্তাহব্যাপী লকডাউন শেষে সরকার ১৪ এপ্রিল থেকে কঠোর পদক্ষেপ নিয়ে আরও এক সপ্তাহের নতুন লকডাউন কার্যকর করে এবং পরবর্তীতে ২৮ এপ্রিল মধ্যরাত পর্যন্ত এটি বাড়ানো হয়।
১৮ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী চলমান করোনাভাইরাস মহামারি এবং সাম্প্রতিক প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্থ প্রায় ৩৬ লাখ পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
৩৬ লাখ পরিবারে মধ্যে ৩৫ লাখ পরিবার স্বল্প আয়ের যারা বিভিন্ন পেশায় জড়িত থাকলেও বর্তমান করোনাভাইরাসের পরিস্থিতিতে ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বাকি এক লাখ পরিবার কৃষক যারা সাম্প্রতিক প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত।
আরও পড়ুন: মাগুরায় প্রধানমন্ত্রীর তহবিলের প্রণোদনার টাকা বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ
৩৫ লক্ষ পরিবারকে নগদ সহায়তা হিসাবে ২ হাজার ৫০০ টাকা এবং কৃষকদের এক লাখ পরিবারকে পাঁচ হাজার টাকা করে দেয়া হবে।
কোভিড-ক্ষতিগ্রস্ত নিম্ন-আয়ের পরিবারের জন্য বরাদ্দ ৮৮০ কোটি এবং দুর্যোগ-ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের জন্য ৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ থাকায় ৩৬ লাখ পরিবারের মধ্যে নগদ বিতরণে সরকার মোট ৯৩০ কোটি টাকা ব্যয় করবে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত ৪ এপ্রিল ৩৬টি জেলার ৩০,৯৪,২৪৯ হেক্টর ফসলি জমির মধ্যে ১০,৩০১ হেক্টর ফসলি জমি সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে যায় এবং ৫৯,৩২৭ হেক্টর জমির আংশিক ক্ষতি হয়েছে। সাম্প্রতিক বিপর্যয়ের কারণে প্রায় ১ লাখ কৃষক সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে কৃষি মন্ত্রণালয় প্রত্যেক কৃষককে প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং কোভিড-১৯ মহামারি -দ্বিগুণ আঘাত দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় প্রত্যেককে পাঁচ হাজার টাকা দেয়ার সুপারিশ করেছে।
মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে এক লাখ কৃষকের নাম, জাতীয় পরিচয়পত্র এবং মোবাইল নম্বর অন্তর্ভুক্ত করে তালিকাভুক্ত করা শুরু করেছে। চূড়ান্ত তালিকার কৃষকের সংখ্যার উপর নির্ভর করে কৃষকদের জন্য আসল বরাদ্দ কম-বেশি হতে পারে।
২০১৯-২০২০ অর্থবছরে কোভিড-১৯ মহামারির প্রথম ঢেউয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ৫০ লাখ পরিবারের তালিকা সরকার যাচাই-বাছাই করে ৩৫ লাখ পরিবারকে নগদ সহায়তা হিসাবে ২ হাজার ৫০০ টাকা করে বিতরণ করেছে। দরিদ্র পরিবারগুলিকে নগদ সহায়তা প্রদানের জন্য বরাদ্দ ছিল ১ হাজার২৫৭ কোটি৫০ লাখ টাকা।
আরও পড়ুন: মানুষের জীবন সর্বাগ্রে: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী ২০২০ সালের মে মাসে মোবাইল আর্থিক পরিষেবার (এমএফএসএস) মাধ্যমে জিটুপি (সরকার থেকে ব্যক্তি) মাধ্যমে নগদ অর্থ বিতরণ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন।
করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ে ভাইরাসটির বিস্তার রোধে সরকার লকডাউন কার্যকর করেছে।
এ প্রসঙ্গে মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্টরা এবার ৩৫ লাখ পরিবারের প্রত্যেককে নগদ সহায়তা হিসাবে ২ হাজার ৫০০ টাকা দেয়ার প্রস্তাব করেছেন।