%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%B7%E0%A7%8D%E0%A6%9F%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%AA%E0%A6%A4%E0%A6%BF%E0%A6%B0-%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%B2%E0%A7%9F
বাংলাদেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নিলেন মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন
বাংলাদেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নিয়েছেন মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন। সোমবার বেলা ১১টায় স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী শপথবাক্য পাঠ করান।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, মন্ত্রিসভার সদস্য এবং শতাধিক বিশিষ্ট অতিথি উপস্থিত ছিলেন।
মোহাম্মদ শাহবুদ্দিন আবদুল হামিদের স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন, গতকাল যার টানা দ্বিতীয় মেয়াদ শেষ হয়েছে।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন।
আরও পড়ুন: নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন শপথ নেবেন সোমবার
রাষ্ট্রপতি হামিদকে বিদায় জানাতে প্রস্তুত হচ্ছে বঙ্গভবন
রাষ্ট্রপতি হামিদকে বিদায় জানাতে প্রস্তুত হচ্ছে বঙ্গভবন
বুধবার রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব জয়নাল আবেদীন ইউএনবিকে জানান, ২৪ এপ্রিল সকাল ১১টায় হামিদের উত্তরসূরি মো. শাহাবুদ্দিন শপথ নেওয়ার পরই দুপুর সাড়ে ১২ টায় বিদায় অনুষ্ঠান শুরু হবে।
তিনি বলেন, ‘এই প্রথম কোনো রাষ্ট্রপতিকে এত বড় বিদায় দেওয়া হচ্ছে। অনুষ্ঠানটিকে স্মরণীয় করে রাখতে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।’
আগামী ২৪ এপ্রিল দেশের ২১তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে হামিদের দ্বিতীয় মেয়াদ পূর্ণ হবে।
রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের মৃত্যুর পর ২০১৩ সালের ২০ মার্চ তিনি ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি হন। একই বছরের ১৮ এপ্রিল রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নেন তিনি। তিনি ২০১৮ সালে দ্বিতীয় মেয়াদে পুনরায় নির্বাচিত হন।
আরও পড়ুন: রাষ্ট্রপতি হামিদের সঙ্গে সাক্ষাত করেছেন স্পিকার শিরীন শারমিন
বঙ্গভবনের ক্রেডেনশিয়াল গ্রাউন্ডে বিদায়ী গার্ড অব অনার প্রদানের মধ্য দিয়ে মূল অনুষ্ঠান শুরু হবে। শেষে তৎকালীন রাষ্ট্রপতির গার্ড অব অনার বঙ্গভবনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপস্থিতিতে একটি খোলা ফুলে সজ্জিত জিপে ফোয়ারা এলাকা থেকে প্রধান ফটকের দিকে যাত্রা করবেন।
জয়নাল বলেন, বঙ্গভবনে তার দীর্ঘ অবস্থানের সমাপ্তি শেষে বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনীর (এসএসএফ) তত্ত্বাবধানে রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের প্রধান ফটক থেকে একটি ভিভিআইপি মোটর শোভাযাত্রায় নগরীর নিকুঞ্জ এলাকায় তার নতুন বাসভবনের উদ্দেশে রওনা হবেন।
ক্রেডেনশিয়াল গ্রাউন্ডে গার্ড অব অনার এবং প্রধান ফটকে স্যালুট গার্ড প্রদান করবে প্রেসিডেন্সিয়াল গার্ড রেজিমেন্ট। অন্যদিকে অনুষ্ঠানের অংশ হিসেবে প্রাক্তন রাষ্ট্রপতিকে বহন করবে সুন্দর সাজানো গাড়ি। বঙ্গভবনের সব কর্মকর্তারা দুই দলে ভাগ হয়ে গাড়ির সামনে দড়ি টেনে দাঁড়াবেন। তারপর এটি সামনে অগ্রসর হবে।
বঙ্গভবনের ভিতরে সকল কর্মকর্তা, কর্মচারী এবং পিজিআর সদস্যরা ফুলের পাপড়ি ছিটিয়ে দেবেন এবং হামিদ বঙ্গভবনকে বিদায় জানিয়ে একটি খোলা জিপে বঙ্গভবন থেকে প্রস্থান করবেন।
আরও পড়ুন: দেশের উন্নয়নে কারিগরি ও প্রযুক্তিগত শিক্ষার ওপর গুরুত্বারোপ রাষ্ট্রপতির
গত ১৭ এপ্রিল রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের সম্মানে বঙ্গভবনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এক বিদায় অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন।
অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি তার সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বলেন, তিনি রাষ্ট্রপতি হলেও নিজেকে সব সময় দেশের একজন সাধারণ মানুষ হিসেবেই মনে করতেন।
রাষ্ট্রপতি বলেন, রাষ্ট্রপতির পদকে দায়িত্ব হিসেবে বিবেচনা করে তিনি তার ওপর অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করেছেন।
বঙ্গভবনের উন্নয়নে তার গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে রাষ্ট্রপতি বলেন, বঙ্গভবন মর্যাদার প্রতীক।
আওয়ামী লীগের রাজনীতিবিদ আবদুল হামিদ ময়মনসিংহ-১৮ আসন থেকে ১৯৭০ সালে পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের সর্বকনিষ্ঠ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন। তিনি কিশোরগঞ্জের হাওর এলাকা থেকে আওয়ামী লীগের টিকিটে সাতবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
হামিদ আইন অনুযায়ী অবসর ভাতা, চিকিৎসাসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা পাবেন।
রাষ্ট্রপতি হামিদ শুধু সংস্কার করা এয়ার রেইড শেল্টার ও বঙ্গভবন তোষাখানা জাদুঘর উদ্বোধন করেননি, জনসাধারণের জন্য উন্মুক্তও করেন।
বঙ্গভবন তোষাখানা জাদুঘরকে বাঙালির শতবর্ষের বর্ণাঢ্য ইতিহাস ও ঐতিহ্যের অন্যতম নিদর্শন উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, আমি বিশ্বাস করি, বঙ্গভবনের সমৃদ্ধ ইতিহাস সংরক্ষণ ও তা জাতির ভবিষ্যত প্রজন্মের সামনে তুলে ধরতে বঙ্গভবন তোষাখানা জাদুঘর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।’
দেশি-বিদেশি দর্শনার্থীদের জন্য সীমিত পরিসরে বঙ্গভবন উন্মুক্ত করার লক্ষ্যে তোশাখানা ও এয়ার রেইড শেল্টার হাউসের আধুনিকীকরণ এবং ওয়াকওয়ে নির্মাণ করা হয়।
তোষাখানা বাড়িগুলো বিশ্বের বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধান ও সরকারের উপহার দিয়ে সজ্জিত।
আরও পড়ুন: রাষ্ট্রপতি হামিদের সঙ্গে শেষবারের মতো বঙ্গভবনে সাক্ষাৎ করেছেন প্রধানমন্ত্রী
দেশের উন্নয়নে কারিগরি ও প্রযুক্তিগত শিক্ষার ওপর গুরুত্বারোপ রাষ্ট্রপতির
রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের যুগে দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতি নিশ্চিত করতে তরুণ প্রজন্মকে কারিগরি ও প্রযুক্তিগত শিক্ষা দেওয়ার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন।
রাষ্ট্রপতি হামিদ মঙ্গলবার বঙ্গভবনের মন্ত্রিসভা হলে বঙ্গভবন তোশাখান জাদুঘরের ভার্চুয়াল রিয়েলিটি (ভিআর) কার্যক্রমের উদ্বোধনকালে এ কথা বলেন।
আরও পড়ুন: সরকারের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতে সংসদের প্রতি আহ্বান রাষ্ট্রপতির
এসময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্য যোগাযোগ ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
তিনি বলেন, আমরা দেশকে কতটা এগিয়ে নিতে পারব তা নির্ভর করবে প্রযুক্তির উদ্ভাবন এবং এর সঠিক ব্যবহারের ওপর। আমাদের তরুণ প্রজন্ম খুবই মেধাবী।
তিনি আরও বলেন, যদি তাদের সঠিক সুযোগ দেওয়া হয়, তবে তারা যে কোনও পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে পারে।
আবদুল হামিদ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে; বিশেষ করে উচ্চশিক্ষা পর্যায়ের, প্রযুক্তি শিক্ষা ও গবেষণার পরিধি বাড়াতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ অংশীজনদের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগ নিতে বলেন।
স্মার্ট বাংলাদেশে তথ্যপ্রযুক্তি বাংলাদেশের উন্নয়নের অন্যতম হাতিয়ার হয়ে উঠতে পারে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ভিআর এবং অন্যান্য প্রযুক্তির সঠিক বিকাশের জন্য উন্নত প্রশিক্ষণ, উচ্চশিক্ষা, মৌলিক গবেষণার সুযোগসহ বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণের মাধ্যমে দেশে প্রযুক্তির যথাযথ বিকাশ নিশ্চিত করা প্রয়োজন।
তিনি বলেন, ভিআর প্রযুক্তি সত্যিকার অর্থে মানুষের জীবনযাত্রার ধরন পরিবর্তন করবে। আমাদের এখন থেকে এই প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে এবং এর সর্বোচ্চ সুবিধা পেতে হবে।
সংস্কারের পর রাষ্ট্রপতি হামিদ চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারি তোশাখানা জাদুঘর উদ্বোধন করেন।
পরে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের উদ্যোগে এবং ম্যাজিক সফটওয়্যার লিমিটেডের প্রযুক্তিগত সহায়তায় ভিআর প্রযুক্তির মাধ্যমে জাদুঘরটি জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন রাষ্ট্রপতির সামরিক সচিব মেজর জেনারেল এস এম সালাহউদ্দিন ইসলাম, বঙ্গভবনের প্রেস সচিব জয়নাল আবেদীন এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব সামসুল আরেফিন।
আরও পড়ুন: রাষ্ট্রপতি হামিদের সঙ্গে শেষবারের মতো বঙ্গভবনে সাক্ষাৎ করেছেন প্রধানমন্ত্রী
রাষ্ট্রপতি হামিদের সঙ্গে সাক্ষাত করেছেন স্পিকার শিরীন শারমিন
মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন ২২তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নেবেন ২৪ এপ্রিল
বর্তমান রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের মেয়াদ আগামী ২৩ এপ্রিল শেষ হওয়ায় নবনির্বাচিত রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন ২৪ এপ্রিল শপথ নেবেন।
প্রেস সচিব জয়নাল আবেদীন ইউএনবিকে জানান, আগামী ২৪ এপ্রিল সকাল ১১টায় বঙ্গভবনে নতুন রাষ্ট্রপতির শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি চলছে।
রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাহাবুদ্দিন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। আবদুল হামিদের স্থলাভিষিক্ত হয়ে তিনি হবেন বাংলাদেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের রাষ্ট্রপতি প্রার্থীর নাম প্রস্তাব করেন এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ তা সমর্থন করেন।
আরও পড়ুন: মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিনকে বাংলাদেশের নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি ঘোষণা: গেজেট
সাহাবুদ্দীন ১৯৪৯ সালে পাবনায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি পাবনা জেলা ছাত্রলীগের অন্যতম সদস্য ছিলেন।
তিনি ১৯৭১ সালে তিনি পাবনায় স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক হন এবং মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন।
১৯৭৪ সালে তিনি পাবনা জেলা যুবলীগের সভাপতি নির্বাচিত হন।
১৯৭৫ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নৃশংসভাবে হত্যার পর তিনি কারারুদ্ধ হন। এ ছাড়া বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় আইন মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিযুক্ত সমন্বয়কারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।
১৯৮২ সালে তিনি বিসিএস (বিচার) বিভাগে যোগ দেন এবং ১৯৯৫ সালে জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।
এছাড়াও, ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় আসার পর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জনগোষ্ঠীর মানুষদের হত্যা, ধর্ষণ, চুরি এবং অন্যান্য অপরাধের তদন্তকারী বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশনের চেয়ারম্যান এর দায়িত্ব পালন করেন সাহাবুদ্দীন।
বিচারকের বিভিন্ন পদে চাকরি শেষে ২৫ বছর পর তিনি ২০০৬ সালে জেলা ও দায়রা জজ হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন। তিনি ২০১১ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কমিশনার ছিলেন।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের গত জাতীয় কাউন্সিলে তিনি নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
তিনি ১৯৭৫ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) থেকে এলএলবি এবং একই প্রতিষ্ঠান থেকে এমএসসি ডিগ্রি অর্জন করেন।
সাহাবুদ্দিনের স্ত্রী অধ্যাপক ড. রেবেকা সুলতানা সরকারের সাবেক যুগ্ম সচিব হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
আরও পড়ুন: উত্তরসূরি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিনকে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের শুভেচ্ছা
সরকারের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতে সংসদের প্রতি আহ্বান রাষ্ট্রপতির
রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ শুক্রবার সরকারের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে সংসদীয় ব্যবস্থায় বিভিন্ন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটিগুলোকে সত্যিকার অর্থে কার্যকর করার আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘আমাদের সংসদের সামগ্রিকভাবে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব ও ভূমিকা রয়েছে। প্রথমত, শ্রেণী, পেশা ও লিঙ্গ নির্বিশেষে সমাজের মতামতের প্রতিনিধিত্ব করা; দ্বিতীয়ত, আইন প্রণয়ন এবং সরকারি ব্যয় নিয়ন্ত্রণ এবং তৃতীয়ত তদারকির মাধ্যমে নির্বাহী শাখার জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা।
তিনি বলেন, সংসদীয় ব্যবস্থায় বিভিন্ন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটিগুলোকে সত্যিকার অর্থে কার্যকর করতে পারলে সরকারের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা যাবে।
শুক্রবার জাতীয় সংসদের পঞ্চাশ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত ‘বিশেষ অধিবেশনে’ ভাষণ দানকালে তিনি এসব কথা বলেন।
‘উন্নয়ন ও গণতন্ত্র তাল মিলিয়ে এগিয়েছে'- লক্ষ্য করে তিনি বলেন, দেশে গণতন্ত্র বিরাজ করলেই উন্নয়ন ও অগ্রগতি এগিয়ে যায়। আবার গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার অভাবে উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হয়।
উন্নয়নকে স্থায়ী ও টেকসই করতে হলে তৃণমূল পর্যায়ে বিকাশের জন্য গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ও গণতান্ত্রিক চর্চাকে শক্তিশালী করার ওপর জোর দেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্রের অনুপস্থিতিতে যে উন্নয়ন হয় তা কখনই সর্বজনীন হতে পারে না। এ ধরনের উন্নয়ন ব্যক্তি বা গোষ্ঠীকেন্দ্রিক হয়ে ওঠে। পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পর দেশে ফেরার পরপরই বঙ্গবন্ধু অর্থনৈতিক লক্ষ্যে একটি সমন্বিত উন্নয়ন পরিকল্পনার কাজ শুরু করেন। জনগণের মুক্তি। মাত্র সাড়ে তিন বছরে তিনি দেশকে শূন্য থেকে স্থিতিশীল পর্যায়ে নিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছেন।’
আরও পড়ুন: সংস্কৃতির বিভিন্ন উপাদান ছড়িয়ে দিন: রাষ্ট্রপতি
রাষ্ট্রপতি হামিদ বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট স্বাধীনতাবিরোধী ঘাতকদের হাতে বঙ্গবন্ধু শহীদ না হলে দেশ অনেক আগেই উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশে পরিণত হতো। ১৯৭৫ সালের পর বহু বছর উন্নয়ন ও গণতন্ত্র অবরুদ্ধ ছিল।
সংসদকে কার্যকর করতে সকল সংসদ সদস্যকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, রাজনীতিতে মত, নীতি ও আদর্শের ভিন্নতা থাকতে পারে। তবে সংসদকে গণতন্ত্র ও উন্নয়নের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করার বিষয়ে কোনো ভিন্নমত থাকতে পারে না।
তিনি বলেন, এই সংসদকে জনগণের আশা-আকাঙ্খা বাস্তবায়নের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করা দল-মত নির্বিশেষে সকল সদস্যের দায়িত্ব ও কর্তব্য।
তিনি আরও বলেন, গণতন্ত্র কোনো আমদানি-রপ্তানিযোগ্য পণ্য বা সেবা নয়।
হামিদ বলেন, ‘আমাদের মনে হলে অন্য দেশ থেকে পছন্দের পরিমাণে গণতন্ত্র আমদানি বা রপ্তানি করা’ এর সারমর্ম নয়। গণতন্ত্র বিকাশ লাভ করে এবং চর্চার মাধ্যমে শক্তিশালী হয়।’
তিনি বলেন, ‘জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালির অধিকার আদায়ের আন্দোলন-সংগ্রামে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত রেখে গেছেন। ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত সংসদীয় কার্যক্রমে লিপিবদ্ধ বঙ্গবন্ধুর বক্তব্য অধ্যয়ন করলে সংসদকে কীভাবে প্রাণবন্ত ও কার্যকর করা যায় তা আমরা শিখতে পারব।’
তিনি আরও বলেন, কীভাবে বিরোধী দলকে আস্থায় নেওয়া যায় এবং অন্যদের সম্মান করা যায়, বঙ্গবন্ধু বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত রেখে গেছেন।
রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘আমরা ভাগ্যবান যে আমরা বঙ্গবন্ধুর মতো বৈশ্বিক মর্যাদার একজন কিংবদন্তী নেতা পেয়েছিলাম। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য যে আমরা তাকে ধরে রাখতে পারিনি।’
আরও পড়ুন: টেকসই উন্নয়নের জন্য দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রস্তুতি নিন: রাষ্ট্রপতি
নবনির্বাচিত স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকারকে অভিনন্দন জানানোর সময় তিনি পঞ্চাশ বছর আগে প্রথম সংসদের প্রথম অধিবেশনে সংসদ নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের বক্তব্যের কথা স্মরণ করেন।
রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধুকে উদ্ধৃত করে বলেন, সংসদ সদস্যরা আপনাদের দায়িত্ব পালনে সব সময় সহযোগিতা করবেন।
বঙ্গবন্ধু আশা প্রকাশ করেন যে ঐতিহ্যবাহী সংসদীয় রীতিনীতি মেনে কার্যক্রম নিরপেক্ষভাবে পরিচালিত হবে এবং তাদের কাছ থেকে সাহায্য ও সহযোগিতা পাবেন।
সেসময় সংসদ নেতা শেখ মুজিব বলেছিলেন, ‘আপনাদের মনোযোগ দিতে হবে যাতে এই সংসদের মর্যাদা সমুন্নত থাকে, কারণ আমরা যে ইতিহাস তৈরি করেছি তাতে কোনও ত্রুটি থাকা উচিত নয়।’
হামিদ বলেন, দেশ উন্নয়ন ও অগ্রগতির পথে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে
গত দেড় দশক ধরে শাসন ও গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতার কারণে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের কাজ এখন অগ্রগতির এই ধারাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া।’
বৃহস্পতিবার সকালে জাতীয় সংসদের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে বিশেষ অধিবেশন শুরু করেছে বাংলাদেশ সংসদ।
এটিও একাদশ জাতীয় সংসদের ২২তম অধিবেশন।
সংসদ সদস্যদের আলোচনা সাপেক্ষে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর একটি প্রস্তাব জাতীয় সংসদে গৃহীত হবে।
১৯৭৩ সালের ৭ এপ্রিল বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ তার প্রথম অধিবেশন বসে।
আরও পড়ুন: মেডিকেল কলেজকে টাকা বানানোর যন্ত্রে পরিণত করা উচিত নয়: রাষ্ট্রপতি
প্রাণীদের সুরক্ষায় চিড়িয়াখানা বিলে অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থার প্রস্তাব
চিড়িয়াখানার যে কোনও দর্শনার্থী প্রাণীদের বিরক্ত এবং আঘাত করলে জরিমানা বা কারাদণ্ডের বিধান রেখে প্রস্তাবিত চিড়িয়াখানা বিল-২০২৩ সংসদে উত্থাপন করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সংসদের বিশেষ অধিবেশনে এই বিল উত্থাপন করা হয়।
এই ধরনের দর্শনার্থীদের কাছ থেকে ক্ষিপ্ত প্রাণীদের জন্য ২০০০ টাকা প্রশাসনিক ক্ষতিপূরণ আদায় করা ও তাদের দুই মাসের কারাদণ্ড এবং পূর্বানুমতি ছাড়া তাদের আহত বা খাবার দেওয়ার জন্য ৫০০০ টাকা জরিমানা ধার্য করা হবে।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী এস এম রেজাউল করিম বিলটি উত্থাপন করেন এবং পরবর্তী পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য সংশ্লিষ্ট যাচাই-বাছাই কমিটিতে পাঠানো হয়।
কমিটিকে ৩০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
বিলটি পাস হলে দেশের সব সরকারি চিড়িয়াখানা এর অধীনে পরিচালিত হবে। বর্তমানে, বাংলাদেশ জাতীয় চিড়িয়াখানা একটি উপদেষ্টা কমিটির মাধ্যমে পরিচালিত হয়।
প্রস্তাবিত আইন অনুযায়ী, কোনো দর্শনার্থী এন্ট্রি ফি ছাড়া চিড়িয়াখানায় প্রবেশ করলে তাকে প্রবেশ মূল্যের সমপরিমাণ টাকা নেওয়া হবে।
অবস্থান বিবেচনায় ওই ব্যক্তির কাছ থেকে ২০০০ টাকা ক্ষতিপূরণ আদায় করা যেতে পারে।
এই আইন পাশ হলে, কোনো দর্শনার্থীর জন্য কোনো চিড়িয়াখানার কোনো প্রাণীকে কোনোভাবে আঘাত করা বা আহত করা বা কোনো কিউরেটরের নির্দেশ অমান্য করা বা অনুমতি ছাড়া খাবার দেওয়া অপরাধ হবে।
এ জন্য দুই মাসের কারাদণ্ড বা পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করা হবে।
ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে এসব অপরাধের বিচার করা যাবে।
বিলটি বয়সজনিত শারীরিক অক্ষমতা বা সংক্রামক রোগের কারণে অন্য প্রাণীর জীবন বাঁচাতে বা জনস্বাস্থ্যের স্বার্থে একটি প্রাণীর অসহনীয় দুর্ভোগ রোধ করতে চিড়িয়াখানায় একটি প্রাণীর বেদনাহীন মৃত্যুর অনুমতি দেয়।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার নতুন অতিথি আফ্রিকার ২ সিংহ ও ৮ ওয়াইল্ড বিস্ট
বিলে বলা হয়েছে, কোনো অবস্থাতেই নির্দিষ্ট কারণ ছাড়া একই প্রজাতির একই লিঙ্গের কোনো প্রাণীকে চিড়িয়াখানায় রাখা যাবে না।
ভেটেরিনারি অফিসারের নির্দেশনা ব্যতীত প্রাকৃতিক কারণে দলবদ্ধভাবে রাখা প্রাণী থেকে কোনো প্রাণীকে আলাদা বা একা রাখা যাবে না।
প্রাণীর প্রকৃতি বিবেচনা করে, এটিকে ন্যূনতম প্রাকৃতিক পরিবেশ বা সুবিধা সহ খাঁচায় আবদ্ধ বা মুক্ত রাখতে হবে।
প্রাণীদের স্বাভাবিক আচরণ, পশু লালন-পালনের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তি এবং দর্শনার্থীদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে পশুর খাঁচার অবকাঠামো তৈরি করতে হবে।
বিপন্ন প্রজাতি সংরক্ষণের জন্য সরকার এক বা একাধিক চিড়িয়াখানা নির্ধারণ করতে পারে।
বিল অনুসারে, প্রতিটি প্রাণীর নিয়মিত পরীক্ষা থেকে প্রাপ্ত তথ্যগুলো চিড়িয়াখানার প্রাণীদের দেহে প্রাণী থেকে প্রাণীতে বা মানুষের দেহে সংক্রামিত রোগ-জীবাণু বা পরজীবীর মাত্রা বা মাত্রা নির্ধারণের জন্য প্রযোজ্যতা অনুসারে নিয়মের মাধ্যমে নির্ধারিত পদ্ধতিতে প্রতিটি প্রাণীর জন্য আলাদাভাবে সংরক্ষণ করতে হবে।
এতে বলা হয়েছে, সরকারের অনুমোদন ছাড়া কোনো চিড়িয়াখানায় কোনো বিদেশি প্রজাতির বন্য প্রাণী কেনা, বিনিময়, উপহার দেওয়া বা অন্য কোনোভাবে সংগ্রহ করা যাবে না।
আরও পড়ুন: সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের বিশেষ অধিবেশন শুরু
স্বাধীনতা দিবস: বঙ্গভবনে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী ও নবনির্বাচিত রাষ্ট্রপতি
রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও তার স্ত্রী রাশিদা খানম রবিবার বঙ্গভবনে দেশের ৫৩তম স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে এক সংবর্ধনার আয়োজন করেন।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। এছাড়া স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী ও প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীও এসময় উপস্থিত ছিলেন।
কোভিড-১৯ মহামারির কারণে দীর্ঘদিন পর প্রায় ২৫০০ অতিথিকে সংবর্ধনায় আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল।
মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, উপদেষ্টা, প্রতিমন্ত্রী, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনার, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি, তিন বাহিনীর প্রধান, সংসদ সদস্য, সিনিয়র রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, শিক্ষাবিদ, ব্যবসায়ী সমাজের নেতৃবৃন্দ, শিল্পী, বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং বীরশ্রেষ্ঠ পরিবারের সদস্যবৃন্দ, বীরত্ব পুরষ্কার প্রাপ্তরা এবং বিশিষ্ট নাগরিকরা এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
শীর্ষ বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তাদের পাশাপাশি সংবাদপত্রের সম্পাদক ও সাংবাদিক নেতৃবৃন্দও সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন।
এ উপলক্ষে কেক কাটেন রাষ্ট্রপতি হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আরও পড়ুন: স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে মুক্তিযোদ্ধাদের উপহার পাঠালেন প্রধানমন্ত্রী
অনুষ্ঠানে তারা আহত মুক্তিযোদ্ধা এবং অন্যান্য গণ্যমান্য ব্যক্তি ও অতিথিদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন।
পরে সংবর্ধনা ও ইফতার পার্টির আয়োজন করা হয়। দেশের অব্যাহত শান্তি, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। মোনাজাত পরিচালনা করেন বঙ্গভবন জামে মসজিদের পেশ ইমাম মাওলানা এম সাইফুল কবির।
এর আগে রাষ্ট্রপতি দিবসটি উপলক্ষে আজ সকালে রাজধানীর উপকণ্ঠে জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
প্রথমে রাষ্ট্রপতি এবং পরে প্রধানমন্ত্রী স্মৃতিসৌধের বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
পুষ্পস্তবক অর্পণের পর রাষ্ট্রপতি ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমান বাহিনীর একটি স্মার্ট কন্টিনজেন্ট রাষ্ট্রীয় সালাম প্রদান করে।রাষ্ট্রপতি স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণে রাখা দর্শনার্থী বইতেও সাক্ষর করেন।
আরও পড়ুন: স্বাধীনতা দিবসে জাতীয় স্মৃতিসৌধে শহীদদের প্রতি রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা
স্বাধীনতা দিবসে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা
৫ সিটি নির্বাচনে ইভিএম, সিসিটিভি ক্যামেরা ব্যবহার করবে ইসি: কমিশনার রাশেদা সুলতানা
নির্বাচন কমিশনার বেগম রাশেদা সুলতানা বলেছেন, আসন্ন সিটি নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) এবং সিসিটিভি ক্যামেরা ব্যবহার করা হবে, তবে তারা আগামী সাধারণ নির্বাচনে তাদের ব্যবহারের বিষয়ে নিশ্চিত নন।
আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে জুন থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে বরিশাল, গাজীপুর, খুলনা, রাজশাহী ও সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন।
বুধবার নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে রাশেদা সুলতানা এ মন্তব্য করেন।
সিসিটিভি ক্যামেরা ব্যবহারের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এ বছর অনুষ্ঠিতব্য পাঁচ সিটি নির্বাচনে আমরা সিসিটিভি ক্যামেরা ব্যবহার করব।
তিনি বলেন, ‘ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার করে ভোটগ্রহণ করা হবে। জাতীয় নির্বাচনে সিসিটিভি ক্যামেরা ব্যবহারের সিদ্ধান্ত এখনও হয়নি। তবে ভবিষ্যতে কী হবে তা বলতে পারছি না। তবে এ বিষয়ে আমাদের ইতিবাচক মানসিকতা রয়েছে।’
কর্পোরেশনের পাঁচ বছরের মেয়াদের শেষ ১৮০ দিনের মধ্যে সিটি কর্পোরেশনে নির্বাচন করতে ইসি আইনত বাধ্য।
আরও পড়ুন: অর্থ ছাড়ের ওপর দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের ভাগ্য ঝুলছে: ইসি সচিব
ইসিকে ১১ মার্চ থেকে ১০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন, ১৩ এপ্রিল থেকে ১০ অক্টোবরের মধ্যে খুলনা সিটি করপোরেশন ও রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচন, ১৪ মে থেকে ১৩ নভেম্বরের মধ্যে বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচন এবং ৬ মে এবং ৫ নভেম্বরের মধ্যেসিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচন করতে হবে।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতা তালুকদার আব্দুল খালেক ২০১৮ সালের ১৫ মে খুলনা সিটির এবং একই বছরের ২৬ জুন জাহাঙ্গীর আলম গাজীপুর সিটির মেয়র নির্বাচিত হন।
আওয়ামী লীগ নেতা এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন ও সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ এবং বিএনপি নেতা আরিফুল হক চৌধুরী যথাক্রমে রাজশাহী, বরিশাল ও সিলেট সিটির মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। তিনটি নির্বাচনই ২০১৮ সালের ৩০ জুলাই অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
আরও পড়ুন: ইভিএম হচ্ছে শতভাগ স্বচ্ছতার প্রতীক: চুয়াডাঙ্গায় ইসি হাবিব
রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত
রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের সঙ্গে ঢাকায় নিযুক্ত সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত এসা ইউসুফ এসা আলদুহাইলান সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।
রবিবার সন্ধ্যায় বঙ্গভবনে তিনি রাষ্ট্রপতির সঙ্গে এই সাক্ষাৎ করেন।
রাষ্ট্রদূত সৌদি আরবের বাদশাহ সালমান বিন আব্দুল আজিজ আল সৌদ এবং সৌদি আরবের প্রধানমন্ত্রী ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ সালমান বিন আব্দুল আজিজ আল সৌদের কাছ থেকে ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস’ উপলক্ষে রাষ্ট্রপতির কাছে দু’টি শুভেচ্ছা পত্র হস্তান্তর করেন।
রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব জয়নাল আবেদীন ইউএনবিকে বলেন, তারা চিঠিতে বাংলাদেশের সরকার ও জনগণের অব্যাহত উন্নয়ন ও অগ্রগতি কামনা করেছেন।
রাষ্ট্রপতি বলেন, সৌদি আরবের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক অত্যন্ত চমৎকার। এই সম্পর্ক বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রসারিত হচ্ছে, তিনি যোগ করেন।
আরও পড়ুন: সৌদি আরবে অবৈধ ভিসা ব্যবসার অভিযোগে বেশ কয়েকজন বাংলাদেশি আটক
সম্প্রতি সৌদি আরবের বাণিজ্যমন্ত্রীর বাংলাদেশ সফর সম্পর্কে রাষ্ট্রপতি বলেন, এই সফর দুই দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে অভিনব সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করেছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে।
মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের সহায়তা দেয়ার জন্য সৌদি আরবের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন আবদুল হামিদ।
সৌদি আরবের এই সহযোগিতা ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে এবং রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে সৌদি আরব মিয়ানমারের ওপর চাপ অব্যাহত রাখবে।
আরও পড়ুন: ইরান ও সৌদি আরবের সম্পর্ক পুনস্থাপনকে স্বাগত জানায় বাংলাদেশ: মোমেন
সংস্কৃতির বিভিন্ন উপাদান ছড়িয়ে দিন: রাষ্ট্রপতি
রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ কবি, লেখক, নাট্যকার, নির্মাতা, সংগ্রাহক, গবেষক এবং অন্যান্য ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের প্রতি সংস্কৃতির বিভিন্ন উপাদান ছড়িয়ে দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘আমাদের সব সংস্কৃতিকে অনুমতি দেয়া উচিত নয়। তথ্যপ্রযুক্তির সঠিক ব্যবহারের মাধ্যমে সাংস্কৃতিক উপাদানগুলোকে সংগ্রহ করে দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে দিতে হবে। তবেই বহির্বিশ্বে আমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ফুটে উঠবে।’
শনিবার জাতীয় জাদুঘর মিলনায়তনে বৃহত্তর ময়মনসিংহ সাংস্কৃতিক উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, তথ্যপ্রযুক্তি এখন গ্রাম-শহর নির্বিশেষে সবার জীবনকে প্রভাবিত করেছে। তথ্যের অবাধ প্রবাহের কারণে পৃথিবী এখন গ্রামে পরিণত হয়েছে। ফলে আকাশ সংস্কৃতি এখন বাস্তবতা।
আরও পড়ুন: মেডিকেল কলেজকে টাকা বানানোর যন্ত্রে পরিণত করা উচিত নয়: রাষ্ট্রপতি
তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন দেশ ও জাতির সংস্কৃতিতেও এর প্রভাব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। সাংস্কৃতিক চিন্তাধারা এবং মানসিকতাও একই গতিতে পরিবর্তিত হচ্ছে।
'নতুন প্রজন্মকে ইতিহাস ও ঐতিহ্য সম্পর্কে সচেতন করা আমাদের দায়িত্ব' উল্লেখ করে হামিদ বলেন, আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের পাশাপাশি শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতিসহ ভারসাম্যপূর্ণ বিকাশের জন্য সৃজনশীল ও মেধাবী জনশক্তি অপরিহার্য। আলোকিতরাই পারে সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা যদি আমাদের সন্তানদের ইতিহাস, ঐতিহ্য, বেদনা এবং গর্বের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে না দিই, তাহলে তারা আত্মসম্মানে সচেতন নাগরিক হিসাবে বেড়ে উঠবে না।’
তিনি প্রচলিত শিক্ষার পাশাপাশি তাদের শিকড় খুঁজে বের করার এবং গৌরবময় অতীতের কথাও বলার আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: টেকসই উন্নয়নের জন্য দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রস্তুতি নিন: রাষ্ট্রপতি