তিনি বলেন, ‘এ নৃশংস হত্যাকাণ্ডে যে-ই জড়িত থাকুক না কেন এবং তাদের পরিচয় যা-ই হোক না কেন সবাইকে বিচারের আওতায় আনা হবে। ন্যায়বিচারের মাধ্যমে এ মামলা শেষ করা হবে।’
নোয়াখালীতে মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালত ভবন উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এ কথা বলেন। ৬০ কোটি ৯২ লাখ টাকা ব্যয়ে ১০ তলা বিশিষ্ট এ ভবন নির্মাণ করা হয়েছে।
সরকার আবরার হত্যার ঘটনা দ্রুতগতিতে তদন্তের ব্যবস্থা করেছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘মানুষ যাতে বিচারের জন্য পথে পথে না ঘুরে, মানুষ যেন ন্যায়বিচার পায়, ন্যায়বিচার যেন শুধু মুখের বুলি না হয় ও কাগজে দেখা যায় সেই ব্যবস্থা সরকার করছে।’
মন্ত্রী জানান, সরকার চায় মানুষ যেন দ্রুত বিচার পায় এবং বিচার না হওয়ার কারণে ‘স্ট্রিট জাস্টিসের’ জন্ম না হয়।
অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আনিসুল হক বলেন, নিরাপত্তা জোরদার করার জন্য দেশের সব আদালতে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করে নিয়মিত নজরদারি করা হবে।
তিনি দাবি করেন, বৃটিশ ও পাকিস্তান আমল এবং জিয়াউর রহমান, এইচএম এরশাদ ও খালেদা জিয়ার আমলে বিচার বিভাগের যে উন্নয়ন হয়েছে তার সবগুলো যোগ করলেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের উন্নয়নের সমান হবে না।
মন্ত্রী জানান, দেশে মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালত ভবন নির্মাণে বর্তমান সরকার ২ হাজার ৩৮৮ কোটি টাকার প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে এবং এর প্রায় ৮৫ শতাংশ কাজ ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। সেই সাথে আগের জেলা জজ আদালত ভবনগুলোর ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ প্রকল্প বাস্তবায়নসহ আরও অনেক প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
বিচারকরা এখন সরকারিভাবে অস্ট্রেলিয়া, চীন, জাপান ও ভারতসহ বিভিন্ন দেশে প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন উল্লেখ করে তিনি জানান, বর্তমান সরকার জেলা জজ ছাড়াও অতিরিক্ত জেলা জজদের গাড়ি বরাদ্দ দিচ্ছে। অধস্তন আদালতে কর্মরত বিচারকদের যাতায়াতের সুবিধার্থে কেবল ২০১৮-১৯ অর্থবছরেই ১০৯টি সেডান কার ও ৬টি মাইক্রোবাস বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরে আরও ১১৫টি সেডান কার ও মাইক্রোবাস ক্রয়ের জন্য অর্থ বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
বিচারকদের সময় মতো পদোন্নতি, আলাদা বেতন কাঠামো ও স্বল্প সুদে গৃহনির্মাণ ঋণের ব্যবস্থা করে দেয়া হয়েছে বলে জানান মন্ত্রী।
আনিসুল হক বলেন, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের আবাসন সমস্যা দূর করার জন্য ঢাকার কাকরাইলে ২০ তলা ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। সেই সাথে তাদের এজলাস ও চেম্বারের অবকাঠামোগত অপ্রতুলতা দূর করার জন্য ১৫৬ কোটি টাকা ব্যয়ে সুপ্রিম কোর্ট চত্বরে ১২ তলা ভবন নির্মাণ এবং ১১৭ কোটি ৬৬ লাখ টাকা ব্যয়ে ১৫ তলা বিশিষ্ট বাংলাদেশ বার কাউন্সিল ভবন নির্মাণ প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে।
নোয়াখালীর জেলা ও দায়রা জজ সালেহ উদ্দিন আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরী, আয়েশা ফেরদাউস ও ফরিদা খানম, আইন সচিব মো. গোলাম সারওয়ার, যুগ্ম সচিব বিকাশ কুমার সাহা প্রমুখ বক্তব্য দেন।