১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ মধ্যরাতে নিরস্ত্র বাঙালির বিরুদ্ধে পাকিস্তান দখলদার বাহিনীর হত্যাযজ্ঞের পর ২৬ মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
৩০ লাখ মানুষের প্রাণ এবং ২ লাখ নারীর সম্ভ্রমের বিনিময়ে দীর্ঘ ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর অবশেষে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর স্বাধীনতা অর্জন করে বাংলাদেশ।
দিবসটির প্রাক্কালে পৃথক বাণীতে দেশ-বিদেশে থাকা সকল বাংলাদেশিকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভ্যর্থনা জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ তার বাণীতে বলেন, নানা ষড়যন্ত্র করেও বাঙালির মুক্তিসংগ্রামকে প্রতিহত করতে না পেরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ বাঙালিদের নিশ্চিহ্ন করতেই ২৫ মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত পাকিস্তানি হানাদারেরা এ দেশের গণমানুষের ওপর নির্মম হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছিল।
তিনি বলেন, সব বাধা পেরিয়ে মুক্তিযুদ্ধের মন্ত্রে উজ্জীবিত হয়ে বাংলাদেশ আজ উন্নতি আর সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে চলেছে। ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত, বৈষম্যহীন ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ গড়ার প্রত্যয়ে দেশ আজ ঐক্যবদ্ধ ও দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
এবছর জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী ও ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপিত হবে। বাংলাদেশকে ২০৪১ সালে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘রূপকল্প-২০২১’ ও ‘রূপকল্প-২০৪১’ ঘোষণা করেছেন। এসব কর্মসূচি বাস্তবায়নে আমি দলমত নির্বিশেষে সবাইকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে অবদান রাখার আহ্বান জানাই, বলেন রাষ্ট্রপতি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাণীতে বলেন, ভিশন-২০২১, ভিশন-২০৪১ এবং ডেল্টা প্লান-২১০০ বাস্তবায়নের মাধ্যমে আমরা জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত, উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি।
বাণীতে, মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে সকল ষড়যন্ত্র প্রতিহত করে উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার মাধ্যমে পরবর্তী প্রজন্মের জন্য বাংলাদেশকে একটি নিরাপদ ও শান্তিপূর্ণ দেশ হিসাবে গড়ে তোলার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
এ দিবস উপলক্ষে বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে জাতীয় দৈনিকগুলো। এছাড়া বাংলাদেশ বেতার, বাংলাদেশ টেলিভিশন, বেসরকারি রেডিও স্টেশন এবং টেলিভিশন চ্যানেলগুলো স্বাধীনতা দিবসের বিশেষ তাৎপর্য তুলে ধরে বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচার করছে।
তবে সরকার এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা- ডব্লিউএইচও’র নির্দেশনা অনুসরণ করে জনসমাগম এড়াতে ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে এবারের স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে নিজেদের সকল কর্মসূচি স্থগিত করেছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও পেশাদার সংগঠন।