কিন্তু সোহেলের স্বপ্ন পূরণের পথে বাঁধার দেয়াল হয়ে দাঁড়িয়েছে সংসারের অভাব। অনিশ্চিয়তার শঙ্কায় আছেন কলেজে ভর্তি নিয়ে।
সোহেল রানা লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার সিঙ্গিমারী ইউনিয়নের উওর ধুবনী গ্রামের তাঁতী ঠান্ডু মিয়ার দ্বিতীয় ছেলে। সে এবার হাতীবান্ধা এসএস সরকারি হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে কারিগরি শাখায় এসএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়েছে।
এক সময় দেশিয় তাঁত শিল্পের বেশ কদর থাকলেও বিশ্বায়নের প্রভাবে এ শিল্প ধ্বংসের পথে। এ পেশার সংশ্লিষ্টরা পেশা পরিবর্তন করে অন্য পেশায় চলে গেলেও সোহেল রানার বাবা ঠান্ডু মিয়া এখনো তাঁত শিল্পকে নিয়েই বেঁচে আছেন।
সংসারে অভাবের কারণে তার এক ছেলে ও এক মেয়েকে লেখাপড়া উস্তফা দিয়ে ঢাকায় পোশাক শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন। তার স্ত্রীও ঢাকায় গিয়ে বিভিন্ন ধরনের কাজ করেন।
তবে, পরিবারের দ্বিতীয় সন্তান সোহেল রানা লেখাপড়ায় ভালো হওয়ায় তাকে শিক্ষিত করে গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখেন পরিবারের অন্য সদস্যরা।
লেখাপড়ার পাশাপাশি বাবাকে তাঁতের কাজে সহযোগিতা করেও সদ্য প্রকাশিত এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলে কারিগরি শাখা থেকে গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়েছে সোহেল রানা। পিইসি ও জেএসসিতেও গোল্ডেন এ প্লাস পেয়েছে এ মেধাবী শিক্ষার্থী। দরিদ্রতাকে জয় করে এখন স্বপ্ন দেখেন প্রকৌশলী হওয়ার।
সোহেল রানা বলেন, ‘আমি তো পিইসি, জেএসসি ও এসএসসিতে গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়েছি। এইচএসসিতেও আমি এ রেজাল্ট ধরে রাখতে চাই। তবে, আমাকে কলেজে ভর্তি করানো থেকে শুরু করে লেখাপড়ার খরচ যোগাড় করা সম্ভব নয়।
মেধাবী সোহেলের প্রশ্ন ‘আমি কি তাহলে দারিদ্রতার কাছে আমি হেরে যাবো? জিপিএ-৫ পেয়েও কী কলেজে ভর্তি হতে পারবো?’
হাতীবান্ধা এসএস সরকারি হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক রেজাউল করিম প্রধান জুয়েল বলেন, ‘সোহেল রানা একজন মেধাবী ও ভদ্র শিক্ষার্থী। তার পরিবারে আর্থিক সংকট রয়েছে। যদি কেউ সোহেল রানাকে সহযোগিতা করেন তাহলে সে একদিন দেশের সম্পদ হয়ে উঠবে।’