এলাকাবাসী জানায়, উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের দশপাইকা বাজারের অদূরে ও ইউনিয়ন পরিষদের কিছুটা সামনে অবস্থিত দৌলতপুর ইউনিয়ন উপ-স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রটি। এখানে সপ্তাহে দুইদিন একজন চিকিৎসক আসলেও কিছুক্ষণ থেকে আবার চলে যান। সপ্তাহের বাকি দিনগুলো চিকিৎসা সেবা চালিয়ে যাচ্ছেন স্বাস্থ্যকেন্দ্রটির পরিদর্শক। ফলে চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন এই এলাকার মানুষ।
দৌলতপুর ইউনিয়ন উপ-স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে লোকবল সংকট রয়েছে। ৬টি পদের মধ্যে ৪টি পদ দীর্ঘদিন ধরে শূন্য।
এছাড়া কেন্দ্রটির আবাসিক অবস্থাও অত্যন্ত খারাপ। বেহাল অবস্থা হওয়ায় কোন স্টাফরা আবাসিক কোয়ার্টারে থাকেন না। কেন্দ্রের পরিদর্শিকা জানান, এই কেন্দ্রটির আবাসিক অবস্থা অত্যন্ত খারাপ হওয়ায় এখানে থাকা সম্ভব নয়।
সরেজমিনে উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি ঘুরে দেখা গেছে, নির্মাণের পর আর কোনো সংস্কার হয়নি এখানকার। বেহাল অবস্থা বিরাজ করছে কেন্দ্রটিতে। উপ-স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র প্রবেশের একমাত্র রাস্তাটি ছোট। এ কেন্দ্রে পায়ে হেঁটে যেতে হয়। যানবাহন নিয়ে যাওয়া খুবই কষ্টকর। হাসপাতালের ভেতরে প্রবেশ করে দেখা যায়, ৬-৭ জন রোগী রয়েছেন। স্বাস্থ্যকেন্দ্রটির পরিদর্শকের রুমে আরও দুজন রোগী রয়েছেন। তাদের তিনি চিকিৎসা প্রদান করছেন।
এছাড়া ইউনিয়নের উপ-স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে যাওয়ার রাস্তাটিও বেহাল। গর্ভবতী নারীদের উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রে যেতে তাদের পোহাতে হয় চরম দুর্ভোগ। রাস্তাটি সংস্কার করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন স্থানীয়রা।
চিকিৎসা নিতে আসা রোগী আফিয়া বেগম বলেন, চিকিৎসার কিছুটা মান ভাল হলেও হাসপাতালের রাস্তা দিয়ে গর্ভবতী রোগী নিয়ে আসা খুবই কষ্ট হয়।
দৌলতপুর ইউনিয়নের উপ-স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের পরির্দশিকা সুলতানা বেগম বলেন, প্রতিদিন ৩০-৪০জন রোগী আসেন। তবে কেন্দ্রের রাস্তাটি ছোট ও সংস্কার না হওয়ার কারণে গর্ভবতী নারীরা চিকিৎসা নিতে পোহাতে হয় দুর্ভোগ।
দৌলতপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমির আলী বলেন, ইউনিয়ন উপ-স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের রাস্তাটি ইউনিয়ন পরিষদের বরাদ্ধ থেকে করা হয়। তবে রাস্তা বড় করার জন্য উপজেলা পরিষদের মাসিক সমন্বয় সভায় বিষয়টি উপস্থাপন করব।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ডাক্তার নজরুল ইসলাম জানান, দীর্ঘদিন ধরেই এই স্বাস্থ্য কেন্দ্রের লোকবল সংকট রয়েছে। স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ছয়টি পদের মধ্যে চারটি পদই শূন্য রয়েছে। মেডিকেল অফিসার, ফার্মাসিস্ট, অফিস সহায়ক ও পিয়ন পদ শূন্য রয়েছে।
জনবল সংকটের কারণে এই স্বাস্থ্য কেন্দ্রে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন উপজেলার দেওকলস ইউনিয়ন উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার শিরিন আক্তার। তিনি বলেন, আমরা সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লোকবল সংকটের বিষয়টি জানিয়েছি। শিগগিরই এ সমস্যার সমাধান হবে বলে আশা করছেন তিনি।