সংস্থাটি জানায়, ২০১৮ সাল জুড়ে বিশ্বব্যাপী প্রতি ৫ শিশুর মধ্যে একজনের বেশি তাদের জীবনের প্রথম মুহূর্তগুলো সংঘাতের বিশৃঙ্খলায় আক্রান্ত সমাজে কাটিয়েছে।
‘প্রতিটি বাবা-মায়ের তাদের শিশুদের প্রথম মুহূর্তগুলো মমতায় লালন করতে পারা উচিত। কিন্তু সংঘাতের মাঝে বাস করা লাখো পরিবারের জন্য বাস্তবতা অনেক বিবর্ণ,’ বলেন ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক হেনরিয়েটা ফোর।
তিনি বলেন, বিশ্বের নানা দেশে সহিংস সংঘাত বাবা-মা ও তাদের শিশুদের জন্য প্রয়োজনীয় সেবা পাওয়ার সুযোগ মারাত্মকভাবে সীমাবদ্ধ করে দিয়েছে।
‘লাখো পরিবারের পুষ্টিকর খাবার, নিরাপদ পানি ও স্বাস্থ্যসেবার বা বেড়ে উঠা ও বন্ধনের জন্য নিরাপদ ও সুস্থ পরিবেশের সুযোগ নেই। আসন্ন ও সুস্পষ্ট বিপদের পাশাপাশি জীবনের এমন শুরুর দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব হয় সম্ভাব্য বিপর্যয়কর,’ বলেন ফোর।
যুগান্তকারী শিশু অধিকার সনদের ৩০তম বার্ষিকী এবার। এ সনদে সংঘাতে আক্রান্ত শিশুদে সুরক্ষা ও সেবার জন্য সরকারগুলোর প্রতি আহ্বান রয়েছে।
ইউনিসেফ জানায়, গত তিন দশকের যেকোনো সময়ের তুলনায় বর্তমানে সবচেয়ে বেশি দেশ অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক সংঘাতে জড়িত। যা লাখো শিশুর নিরাপত্তা ও কল্যাণকে হুমকিতে ফেলেছে।
বাবা-মায়েরা সংঘাতের নেতিবাচক স্নায়ুবিক প্রভাব থেকে সন্তানদের রক্ষা করতে পারলেও তারা নিজেরাই সংঘাতের সময় প্রায়ই শোকে বিহ্বল হয়ে পড়ে বলে মন্তব্য করেন ফোর।
এদিকে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা (ইউনিভার্সাল হেলথ কাভারেজ) লক্ষ্যমাত্রার দায়িত্বে থাকা নির্বাহী পরিচালক ডা. পিটার সালামা জানান, সবার জন্য মানসম্পন্ন সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় সব প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা লক্ষ্য অর্জনে বছরে ২০ হাজার কোটি ডলার দরকার।
ইউএন নিউজে বলা হয়, ২০০০ সালের পর থেকে বিশ্বব্যাপী শিশু ও মাতৃমৃত্যু রোধে ইতিবাচক পরিবর্তনকে স্বাগত জানিয়ে ডা. সালামা বলেন যে অনেক দেশ নতুন তহবিল পাওয়া ছাড়াই আরও বেশি অর্জন করার অবস্থানে ছিল।
তার মতে, অনেক দেশের জন্যই অর্থ আছে। তাদের শুধু সঠিক জায়গায় তা ব্যয় করতে হবে।
‘তাই আমরা দাতাদের কাছে গিয়ে বলছি না যে আমাদের ২০ হাজার কোটি ডলার দেন। আমরা মধ্য-আয় ও উচ্চ-আয় এবং এমনকি স্থিতিশীল থাকা কিছু নিম্ন-আয়ের দেশের কাছে গিয়ে বলছি, আসলে আপনি যদি সঠিক জিনিসটি বাছাই করেন তাহলে আপনার বর্তমান বাজেটের মধ্যেই এসব লক্ষ্য পূরণ করতে পারবেন,’ বলেন ডা. সালামা।
তিনি বলেন, ২০০০ সালের পর থেকে মাতৃ ও শিশুমৃত্যু হ্রাসের ক্ষেত্রে সার্বিকভাবে যে বিস্ময়কর সাফল্য এসেছে তা বিশ্বের স্বাস্থ্য খাতে প্রতিনিয়ত দেখা যায় না। ২০০০ থেকে ২০১৮ সময়ে ১৫ বছরের নিচের শিশুর মৃত্যুর হার ৫০ শতাংশ কমে ১ কোটি ৪২ লাখ থেকে ৬২ লাখে দাঁড়িয়েছে। একই সময়ে মাতৃমৃত্যুর হার কমেছে ৩৫ শতাংশ।