দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘সরকার রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু করার জন্য কিছু করতে পারেনি। তাদের (রোহিঙ্গা) এখানে আসার পর এত দিন হয়ে গেল, কিন্তু আপনারা (সরকার) তাদের কাউকে এখনো ফেরত পাঠাতে পারলেন না।’
‘এটা চরম ব্যর্থতা। রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাতে আপনারা কূটনৈতিকভাবে ব্যর্থ হয়েছেন,’ যোগ করেন তিনি।
বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে রাজধানীর নয়াপল্টনে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল ও জাতীয়তাবাদী মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্ম আয়োজিত মিছিলে রিজভী এসব কথা বলেন।
ব্যাপক প্রস্তুতির পরও রোহিঙ্গাদের অনিচ্ছার কারণে বৃহস্পতিবার দ্বিতীয়বারের মতো আটকে যায় স্বেচ্ছায় প্রত্যাবাসন শুরুর কার্যক্রম। এ দিন শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনের (আরআরআরসি) কমিশনার মোহাম্মদ আবুল কালাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘রোহিঙ্গারা রাজি না হওয়ায় আজ প্রত্যাবাসন সম্ভব হচ্ছে না।’
এর আগে, রোহিঙ্গাদের প্রথম দলের ফেরার কথা ছিল গত বছরের ১৫ নভেম্বর। কিন্তু রাখাইনে অনুকূল পরিবেশ না থাকায় রোহিঙ্গারা ফিরতে রাজি না হওয়ায় এ কার্যক্রম স্থগিত করা হয়।
বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন বলেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বিষয়ে বাংলাদেশ জোর করে কিছু করতে চায় না। সেই সাথে তিনি মাতৃভূমি মিয়ানমারে ফিরতে না চাওয়া রোহিঙ্গাদের মাঝে আস্থার ঘাটতি দূর করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
বাংলাদেশে বর্তমানে ১১ লাখের অধিক রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়ে আছেন। তাদের বেশির ভাগই মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীগুলোর বর্বর অভিযান থেকে জীবন বাঁচাতে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। তাদের প্রত্যাবাসনে দুই দেশ ২০১৭ সালের ২৩ নভেম্বর চুক্তি এবং মাঠপর্যায়ে কার্যক্রম এগিয়ে নিতে ২০১৮ সালের ১৬ জানুয়ারি ‘ফিজিক্যাল অ্যারেঞ্জমেন্ট’ সই করলেও এখনো একজন রোহিঙ্গা রাখাইন রাজ্যে ফিরে যায়নি।
রিজভী বলেন, সরকার এত দিন ধরে বলেছে যে তাদের না কি এত বিদেশি বন্ধু আছে। কিন্তু রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু করতে কেউ সরকারের জন্য কিছু করেনি। ‘বাংলাদেশকে এত দিন ধরে এতগুলো রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর চাপ সহ্য করতে হচ্ছে।’
সরকার শুধু কূটনৈতিকভাবেই নয় সেই সাথে সব ক্ষেত্রে ব্যর্থ দাবি করে তিনি বলেন, ‘আপনারা অর্থনৈতিকভাবে ব্যর্থ এবং আপনারা আইনশৃঙ্খলা পরিচালনায় ব্যর্থ। যার ফলে, চারদিকে রক্ত ঝরছে, লাশ পড়ছে এবং নারী ও শিশুরা নির্যাতিত হচ্ছে।’
বিএনপির এ নেতা বলেন, গণতন্ত্র ও মানুষের অধিকার ফিরিয়ে আনতে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে অবশ্যই কারাগার থেকে মুক্ত করতে হবে।