দুই দিনের টানা বিৃষ্টিতে বিভিন্ন সড়ক ও বাড়িঘরে হাঁটু পানি জমে গেছে। জেলার বিভিন্ন এলাকায় প্রায় ৩৮ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন।
আরও পড়ুন: বৈরী আবহাওয়া: বরিশালে লঞ্চ চলাচল বন্ধ
বৃষ্টিপাতের কারণে শুক্রবার দেশের দ্বিতীয় সমুদ্রবন্দর মোংলায় জাহাজে পণ্য ওঠা-নামার কাজ ব্যাহত হয়। জেলায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
বৃহস্পতিবার ভোর থেকে বাগেরহাটে বৃষ্টি শুরু হয়। মাঝে মধ্যে দমকা বাতাস বয়ে গেছে। কখনও হালকা আবার কখনও ভারী বৃষ্টিপাত ছিল। পানি জমে জেলার নিম্নাঞ্চলে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে।
শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে শহরের শালতলার মোড়, সাধনার মোড়, মিঠাপুকুরপাড়, মেইন রোডসহ বিভিন্ন এলাকার সড়কে হাঁটু সমান পানি জমে থাকতে দেখা গেছে। একই সাথে জেলার মোড়েলগঞ্জ, রামপাল, শরণখোলা এবং মোংলা উপজেলার নিম্নাঞ্চলে পানি জমে আছে।
শরণখোলা উপজেলার চার ইউনিয়ের ৩০ গ্রামের প্রায় ৩৫ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। দ্রুত পানি নিষ্কাশন হতে না পারার কারণে সাময়িক এ জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। কোনো কোনো এলাকা থেকে অবশ্য পানি নেমে গেছে। বাগেরহাটে ২৪ ঘণ্টায় ৬৮ দশমিক ৬৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রের্কড করা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বৃষ্টিপাতের কারণে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করে তালিকা প্রস্তুত করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। জেলা মৎস্য বিভাগের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত মৎস্য ঘেরের তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে।
রামপাল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাধন কুমার বিশ্বাস জানান, বৃষ্টিপাতের কারণে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় প্রায় এক হাজার ২০০ পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়ে। বৃষ্টি পরবর্তীতে বিভিন্ন এলাকা থেকে পানি নামতে শুরু করেছে।
মোংলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কমলেশ মজুমদার এবং মোড়েলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. দেলোয়ার হোসেন জানান, বৃষ্টিপাতের কারণে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানতে তথ্য সংগ্রহ করে যাচাই বাছাই করা হচ্ছে।
বাগেরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নাহিদ-উজ-জামান খান জানান, জেলার মোট বেড়িবাঁধ ৩২৫ কিলোমিটার। এর মধ্যে বিভিন্ন এলাকায় প্রায় দুই কিলোমিটার ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। এ বিষয়ে তারা সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছেন।
জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ বলেন, ‘ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করে তালিকা প্রস্তত করার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের নিদের্শনা দেয়া হয়েছে। সরকারিভাবে দুই হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বরাদ্দ পাওয়া গেছে। শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে উপজেলা তহবিল থেকে তাৎক্ষণিকভাবে শুকনো খাবার বিতরণের ব্যবস্থা করার জন্য বলা হয়েছে।’