ফরিদপুরে বীরাঙ্গনা মায়া রানীর নবনির্মিত ঘরে তার খোঁজ নিতে ছুটে গেছেন ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকার।
ফরিদপুর সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকতা মো. মাসুম রেজা জানান, সকাল ১১ টায় ফরিদপুর পৌরসভার শোভারামপুর এলাকার বাসিন্দা নিঃসন্তান মায়া রানীর দুয়ারে পৌঁছান জেলা প্রশাসক। সেখানে তিনি বীরঙ্গনা মায়া রানীর সার্বিক খোঁজ-খবর নেন। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে ফরিদপুর সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রাজ্জাক মোল্লা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুনঃ ফরিদপুরে আশ্রয়ণের সুবিধা ভোগীদের অন্যরকম ঈদ
অতুল সরকার বলেন, ‘মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী দেশব্যাপী ভূমিহীন গৃহহীনদের জন্য ভূমি প্রদান ও গৃহ নির্মাণ কার্যক্রম গ্রহণ করেছেন, তারই অংশ হিসেবে উপজেলা পরিষদের রাজস্ব তহবিল থেকে একটি ঘর করে দিতে পেরেছি। তিনি জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। তিনি আমাদের বীরাঙ্গনা। আমরা এই ঘর দিয়ে শুরু করলাম। ভবিষ্যতে তার জন্য আরও ভালো কিছু করার চেষ্টা করবো। তার যেন থাকা খাওয়া সমস্যা না হয় সেজন্য সব সময়ই আমাদের প্রশাসন যোগযোগ করবে।’
উল্লেখ্য মহান মুক্তিযুদ্ধে নিজ বাড়িতে ১৬ বছর বয়সে হানাদার বাহিনী ও স্থানীয় দোসরদের দ্বারা নির্যাতিত হন মায়া রানী সাহা। ফরিদপুর বর্ধিত পৌরসভার শোভারামপুরের বাসিন্দা মায়া রানী সাহা দীর্ঘদিন ধরে অসহায়ভাবে জীবন যাপন করছিলেন। খবর পেয়ে গণশুনানির সময় ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকার এর সাথে সাক্ষাত করে তার অসহায়ত্বের কথা জানান জেলা প্রশাসককে।
আরও পড়ুনঃ ফরিদপুরে কর্মহীনদের মাঝে আ’লীগের খাদ্য বিতরণ
পরে জেলা প্রশাসক ফরিদপুর সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাসুম রেজাকে নির্দেশনা প্রদান করেন মায়া রাণী সাহার বিষয়ে সরেজমিনে তদন্ত করে সুস্পষ্ট মতামতসহ জামুকায় প্রতিবেদন প্রেরণের জন্য। সেই নির্দেশনার আলোকে গত বছরের ১৪ জানুয়ারি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নেতৃত্বে উপজেলা বীরাঙ্গনা যাচাই বাছাই সংক্রান্ত গঠিত বিশেষ কমিটি প্রতিবেদন প্রস্তুত করে জামুকা বরাবর প্রেরণ করে। তারই প্রেক্ষিতে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে মায়া রাণী সাহাকে ৩৮০ নং গেজেটে বীরাঙ্গনা হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করা হয়।
আরও পড়ুনঃ ফরিদপুরে গৃহহীনের অভাব ঘুচবে ১৫৭২ পরিবারের
এদিকে বীরাঙ্গনা হিসেবে স্বীকৃতি পেলেও তার ছিলনা কোনো থাকার ঘর। মায়া রানী সাহার জরাজীর্ণ আবাসস্থল সেমি পাকা ভবনে রূপান্তরে ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নেন জেলা প্রশাসক অতুল সরকার। ফরিদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার তত্ত্বাবধানে একটি সেমি পাকা ঘর নির্মাণের কাজ শুরু করে মায়া রানী সাহার জরাজীর্ণ বসত ভিটায়। বর্তমানে নির্মাণ কাজ সমাপ্ত হয়েছে। এখন মায়ারানী এই নতুন ঘরে বাস করছেন।