‘অর্থহীন’ আখ্যা দিয়ে নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠন নিয়ে বঙ্গভবনে চলমান সংলাপে অংশ না নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আ স ম আবদুর রবের নেতৃত্বাধীন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি)।
শুক্রবার রাজধানীর উত্তরায় নিজ বাসভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের সভাপতি আ স ম আবদুর রব এ ঘোষণা দেন।
এসময় তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন গঠন একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের সমাধান নয়। সঙ্গত কারণেই জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল সংলাপে অংশ নিচ্ছে না।’
রব বলেন, নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যবস্থা ও দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য নির্বাচন কমিশনের ওপর নয়, 'জাতীয় সরকার' গঠনের প্রক্রিয়া নিয়ে সংলাপ হতে হবে।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকার সংবিধানের চেতনা ও সংকল্পের প্রতিনিধিত্ব না করায় অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলনরত নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে নতুন করে মামলা দায়ের এবং পুরনো মামলায় আবারও গ্রেপ্তার শুরু করেছে। তাই শুধু নির্বাচন কমিশন গঠনই নিরপেক্ষ নির্বাচনের নিশ্চয়তা নয়।
আরও পড়ুন: ইসি নিয়ে সংলাপ: রাষ্ট্রপতির সঙ্গে ইসলামী ফ্রন্ট ও জমিয়তে উলামায়ের বৈঠক
সোমবার বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের সঙ্গে বৈঠকে যোগ দেয়ার কথা ছিল জেএসডি (রব)।
জ্যেষ্ঠ এই নেতার অভিযোগ, ‘নির্বাচন প্রশ্নে রাষ্ট্রপতি, সরকার ও নির্বাচন কমিশন সংবিধান লঙ্ঘনের সঙ্গে জড়িত। যারা সংবিধান লঙ্ঘন করেছে তাদের জাতির কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত।’
বর্তমান নির্বাচন কমিশন রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নিযুক্ত উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই পক্ষপাতমূলক আচরণের মাধ্যমে দেশের নির্বাচনী ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে জাতির সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করা হয়েছে।
জাসদ সভাপতি বলেন, বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অপসারণ চেয়ে ২০১৯ সালে দেশের ৪২ জন বিশিষ্ট নাগরিক রাষ্ট্রপতির কাছে চিঠি দিয়েছিলেন। কিন্তু রাষ্ট্রপতি কোনো ব্যবস্থা নেননি।
দলীয় সরকারের অধীনে দেশে নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয় মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘সুতরাং, একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের নিশ্চয়তা এখন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ লক্ষ্যে আমরা ইতোমধ্যে জাতীয় সরকারের প্রস্তাবনা পেশ করেছি। ’
গত ২০ ডিসেম্বর নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা শুরু করেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। রাষ্ট্রপতি ইতোমধ্যেই বঙ্গভবনে ২৮টি দলকে আলোচনায় যোগ দেয়ার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: ইসি নিয়ে সংলাপ: ৩ দফা দাবি গণফোরাম ও বিকল্পধারার
এর আগে বিএনপি, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি) আলোচনায় না আসার সিদ্ধান্ত নেয়।
কে এম নুরুল হুদার নেতৃত্বাধীন বর্তমান ইসির মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি।
সংবিধান অনুযায়ী বর্তমান ইসির মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে।
আরও পড়ুন: নির্বাচনের সংলাপ বর্জন করলেই সব সমস্যার সমাধান হবে না: গণ ফ্রন্ট