���������������
করোনাকালে ক্রিকেট ও মনের জন্য স্যালাইন: ৪-১ জিততে চাই
এটা বড় কিছু না কিন্তু আমাদের কাছে বড় কারণ আমার জীবনে বিজয় কম। সাধারণ মানুষ যেখানে বিজয় পাবে সেটাই জড়িয়ে ধরবে কারণ এটা তার সব। এজন্য এই বিজয়টা চাই কারণ এটা রাজনীতির নয়, খেলার, কোনো দলের নয়। এখানে সবাই এক দলের, আমাদের দলে। আমরা সবাই সেই দলের অংশ। আমাদের এই ফাটা, চেরা, চৌচির সমাজের ভেঙে পড়া চেহারার বদলে কয়েক ঘণ্টা ‘আমরা’ কথাটা বাস্তব হবে। এটা রাজনীতিতে, অর্থনীতিতে কোনো দিন হবে না, ওটা পারবে কোনো যৌথ কিছু, যাতে দলাদলি নেই। যেমন পারবে আমাদের ক্রিকেট দল।
তোষামোদ বনাম গালিগালাজ আর কত?
প্রতিদিন খবর আসে আমাদের পচে যাবার। এসব খবর পড়তে আর ভালো লাগে না। প্রতিদিন খুন, জখম, পরকীয়া, বাটপারি, বেইমানি, ধর্ষণ ছাড়া কোনো খবর প্রায় থাকেই না বললেই চলে। আর আছে কলামবিদ যারা বলে দেশের কোনো আশা নেই, কোনো ভরসা নেই। অথবা বলে এর চেয়ে সোনার দেশ আর হয় না। শুনতে শুনতে ক্লান্তি এসে গেছে সবার। ক্ষমতাবানরা বলে সব ভালো, বিরোধীরা বলে সব খারাপ। সুশীল সমাজ বলে এক দল মানুষ আছে, তারাও বলে এই কথা। এই মাইনকার চিপার মাঝখানে পরে পাবলিক এই ওপর তোলার কোনো কথা জানতে চায় না। সমাজের এই বিভাজন বিশাল। মানুষ আশা করতে চায় কিন্তুই প্রতিষ্ঠানগুলা থেকে নয়, না পক্ষের, না বিপক্ষের। ওপর তোলা ভাবে এক আর পাবলিক ভাবে এক।
আসল কথা হচ্ছে মানুষ নিজের কপালে নিজেই মারে কিন্তু অন্য এসে কিছু ভালো করবে এটা আর ভাবে না। তার আস্থা কম কারো প্রতি, তাই সে নিজে গড়েছে নিজের অবস্থা। যেমন কেউ অভিবাসী শ্রমিকদের অর্জনের ক্রেডিট নিতে পারবে না, ওটা যে যায় তার কৃতিত্ব নিজের। ঠিক তেমনিভাবে যত অর্জন প্রায় সবই সমাজের নিজস্ব। তারা মুরুব্বিদের গালি বা তোষামোদ কোনটাই পাত্তা দেয় না। জিজ্ঞাসা করে, কোন দল করে?
করোনা ও ক্রিকেট
করোনা আমাদের ভীষণ আঘাত করেছে কিন্তু আমরা শেষ হয়ে যাইনি। ভীষণ বিপদে আছি এটা ঠিক কিন্তু কাটিয়ে উঠব। আমরা এটা বারবার করেছি, তালিকা দেবার দরকার নেই এবং শেষ হয়ে যাবার আগে চলতে থাকবো। সাধারণ মানুষ কষ্টে দিশেহারা হয় না, তারা চলতেই থাকে।
এই জন্য আমাদের এই বড় বিজয়টা দরকার কারণ এতে এক দল জিতবে আর অন্য দল হারবে সেটা নেই, সবাই জিতবে। এই বিভক্ত বাংলাদেশে এই জন্য এই ক্রিকেট খেলা ও সিরিজ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে পড়েছে। আমাদের এই হারু হারু টিম যারা আমাদের চেয়ে দুর্বল জিম্বাবুয়ে ছাড়া কাউকে হারাতে পারছিল না বেশ কয় দিন ধরে তারাই অস্ট্রেলিয়ার সাথে পারছে। এটা এক অসাধারণ বাস্তবতা যার ঢেউয়ে আমাদের গ্লানি আর পরাজয়-ছোট আর বড়-ধুয়ে যাবে অনেক। আমাদের এক দেশ এক দলে। সেই দেশ আরে দলের নাম বাংলাদেশ। বিজয় চাই, এমন বিজয় যেন হুঙ্কার দিতে পারি, আমরা পারি।
লেখক: এডিটর এট লার্জ, ইউএনবি
ক্রিকেট :মুস্তাফিজ, সাকিব, আমরা, আমাদের চাচাতো ভাই ইত্যাদি
আমার খুব ঘনিষ্ট এক বন্ধু ভীষণ ক্রিকেট বিরোধী। সে প্রায় নীতিগত ভাবে বিরোধী। সে খুব নির্মম একটা অভিজ্ঞতার কথা বললো। এক হাসপাতালে রোগী আইসিউতে আর তার পাশেই ডাক্তার-নার্সরা খেলা দেখছেন এবং কেউ আউট হলে কিংবা চার-ছয় মারলে তারা জোরে হর্ষধ্বনি দিয়ে উঠছেন। এটা মোটেও গ্রহণযোগ্য নয়, ধিক্কার জানাই এমন ঘটনার। তবে এটা সচরাচর হাসপাতালে ঘটে না। কিন্তু ঘরে-অফিসে-ক্লাবে ক্রিকেট খেলার সময় এমন ঘটনা প্রায়ই ঘটছে। কথা হলো, ক্রিকেট আমাদের দরকার, তবে অবশ্যই তা শোভন আচরণের মাধ্যমে। কিন্তু ক্রিকেট কেন দরকার, এ প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক।
ক্রিকেট এখন কী ?
আমার আসলে ক্রিকেট খেলা হিসেবে ভালো লাগে কিনা বলতে পারব না। খুব একটা না বোধ হয়। আগে শুধু টেস্ট ক্রিকেট ছিল, পাঁচ দিন ধরে তা দেখার সুযোগ পেত কেবল ছাত্র, বেকার ও অবসরপ্রাপ্তরা। এটা তাদেরই খেলা, ধুক্কুর, ধুক্কুর করে চলছে তো চলছেই কোন শেষ নেই। খুবই বিরক্তিকর। তা-ও নাকি এটা পূর্বের চেয়ে অনেক ভালো। আগে খেলা চলতো রেজাল্ট না হওয়া পর্যন্ত। খাইছে, কি কয় ?
অতএব যাদের কোনো কাজ নেই এটা তাদের খেলা, কিন্তু এখন আর আগের সেই অবস্থা নেই। এই খেলাকে একদিনের, টি-টোয়েন্টি ইত্যাদি নানা সংস্করণে সময় উপযোগী করে ফেলা হয়েছে।
টি-টোয়েন্টি আনন্দের উপকরণ, মেরে পিটিয়ে তক্তা বানিয়ে, পাগলের মতো দৌঁড়িয়ে, মাত্র কয়েক ঘন্টায় খেলা শেষ। ভালো মন্দ বোঝার সময় থাকে না। আমাদের আজকের জীবনের গতির সাথে মেলে। উত্তেজনা, আনন্দ, সবই পাওয়া যায় অল্প সময়েই।
ভালো লাগার রহস্যটা কী ?
সব চেয়ে ভালো লাগে একটা বিষয়, আমার পতাকা। যখন দেশের জার্সি পরে দেশের ছেলে-মেয়েরা খেলে, আসলে তখন আমার দেশ খেলে। অতএব যখন জিতে, আমার দেশ জিতে। আমরা তো খেলার এত নিপুণ পর্যবেক্ষক নই, আমরা আম-দর্শক, কোন খেলায় দেশ জিতছে দেখতে আমাদের ভালো লাগে, গর্ব হয়। কারণ আমাদের জেতার পরিসর, সুযোগ তো কম। তাই ক্রিকেট আর খেলা থাকে না, এটা হয়ে ওঠে দেশপ্রেমের একটা অংশ, গৌরব সন্ধানের উপায়। অর্থাৎ সব কিছুরই মূলে কিন্তু সেই দেশ।
খারাপ লাগে কেন ?
মুস্তাফিজ যখন ওভারে মাত্র ১ রান দিয়ে বিজয়ের পথ সুগম করে দেয়, বিদেশিরা বাধ্য হয়ে তাকে ‘জাদুকর’ বলে। তখন ভালো লাগে। কিন্তু সাকিবের এক ওভারে ৫ ছক্কা খারাপ লাগে। মনে হয় আমাদের বুকের ওপর পাথর মারলো কেউ, সাকিবের কষ্ট তখন আমাদের সবার হয়ে যায়। অনেকে বলবে, এটা তো নিছক খেলা, আমি বলবো, খেলা ঠিক কিন্তু এটা তো আমার পরিচিতি, এটা কোনোদিনই শুধু খেলা নয় আমার জন্য।
দেশে এখন বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া টি-টোয়েন্টি সিরিজ চলছে। টানা তিনটিতে জিতে আমরা সিরিজ জয় নিশ্চিত করেছি। কিন্তু শনিবার চতুর্থ ম্যাচে হারার পর মনে হয়েছে ব্যাটসম্যানদের আরো দায়িত্ব নিতে হবে। আর একটা কথা, বিজয়ের পর আমরা যেন আত্মতুষ্টিতে না ভুগি। তবে বলে লাভ নেই, এটা আমাদের অনেক হয়।
সোমবার সিরিজের শেষ খেলা, জিতলে খুশিতে সবাই আত্মহারা হবে জানি। তবে হারার জন্য অনেকেই মনে মনে প্রস্তুতি নিচ্ছে। সব কথার শেষ কথা, দেখা যাক !
লেখক: এডিটর এট লার্জ, ইউএনবি
পরীমণিকে কি মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড দেয়া হবে?
বাংলাদেশে করোনা ও ডেঙ্গুর খবর নিয়ে ভারাক্রান্ত মিডিয়া কৃতজ্ঞতার স্মারক হিসেবে পরীমণিকে একটা অ্যাওয়ার্ড দিতে চায়, এরকম শোনা যাচ্ছে! এটি হয়তো গুজব। তবে এটি ঠিক যে তিনি না থাকলে মিডিয়া কী নিয়ে রিপোর্ট করতো? ধন্যবাদ পরীমণি আপা! কতগুলো লোকের চাকরি টিকলো। না হলে করোনার সংখ্যা রিপোর্ট করে আর কতদিন পাবলিক ভুলানো যায়!
সংখ্যা রিপোর্টিং কি?
করোনার অনেকগুলো উপসর্গের একটি এটি। প্রতিদিন কতজন শনাক্ত হলো, কতজন মারা গেলো এবং এটি সপ্তাহ, মাস , তিন মাস বা ছয় মাসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি কিনা। ব্যাস! রিপোর্টিং হয়ে গেলো, আর কিছু লাগে না।
আর যদি আরেকটু উন্নত রিপোর্ট করতে হয় তাহলে দুই এক্সপার্টকে ফোন দেয়া হবে। তারা একটা মতামত দেবেন এবং ওই সংখ্যা রিপোর্ট তখন হালাল রিপোর্ট হয়ে যাবে। ঘর থেকে নড়তেও হবে না।
শুধু বাংলাদেশের মিডিয়ার দোষ কী? গোটা সেক্টরেই চলছে এই সংকট। সাংবাদিকের চেয়ে পত্রিকার সংখ্যা বেশি হলে এটা হতে বাধ্য। যেন পত্রিকা বের করাটাই প্রধান কথা, কী লেখা বা বলা হচ্ছে, সেটা নয়।
লোকদের ইজ্জত রক্ষা অভিযান?
পরীমণিদের সম্পর্কে যে রিপোর্টগুলো হচ্ছে তাতে বোঝা যাচ্ছে যে ঢাকার বিত্তবান শ্রেণির সন্তানরা অনেকেই এই নারীকুলের বন্ধু-বান্ধব ছিল। তাদের বাসাতেই তারা আসতো, মদ-ইয়াবা সেবন করতো এবং তার ফলে ‘দুর্বল’মুহূর্তে কী সব হতো! যে দৃশ্য ভিডিও করে ব্ল্যাকমেইল করা হতো। তাই ধারণা করা যায় যে এটা বড়লোকদের ইজ্জত রক্ষা অভিযান। তবে এটা হতেই পারে। বাংলাদেশের ফিউচার এই সব তরুণদের নিয়ে কর্তৃপক্ষ চিন্তিত তো হবেনই!
তবে একটি রিপোর্ট এসেছে যাতে বলা হচ্ছে কোন এক ব্যাংকের প্রধান ওই সব পার্টিতে গিয়ে ‘দুর্বল’ হয়ে যান এবং যথারীতি ছবিসহ দাবিনামা পান। তিনি অভিযোগ দেন এবং তারপরই সিদ্ধান্ত হয় অভিযান চালানোর। তারপরের ঘটনাপ্রবাহ আমরা সবাই জানি।
তাহলে সাংবাদিকের প্রয়োজন কী?
পরীমণির ওপর যত রিপোর্ট হয়েছে, সেটা মিডিয়ার কাটতি বাড়িয়েছে। হিট বাড়ছে মানে ভালো নিউজ পোর্টাল। সেটা না হয় হলো, কিন্তু ‘পরীমণিরা কত খারাপ’ সেটা প্রমাণ করাই যদি রিপোর্টগুলোর উদ্দেশ্য হয়, তাহলে বলব পাবলিক খায় নাই। বরং পাবলিক জানতে চায় যারা মনোরঞ্জিত হতে এই মেয়েদের কাছে যেতেন তারা কারা?
একটি পত্রিকায় ৮টি রিপোর্ট পাওয়া গেলো। মানুষ গিলছে কারণ তার মধ্যে আছে ‘যৌনতার সুড়সুড়ি’, নিষিদ্ধ জীবনের সংবাদ এবং নেশার মাল-মশলা। এতে কি খুব একটা খাটতে হচ্ছে? পুলিশ বা অন্য যারা, তারাই তো সব তথ্য দিচ্ছে, তাদের ভাষ্যই তো কোন রকম ক্রসচেক ছাড়াই গণমাধ্যমে দেদারছে প্রকাশ হচ্ছে। তাহলে সাংবাদিকের প্রয়োজন কী?
আমাকে আজ একজন ফোন করে জানতে চাইলো, ‘পরীমণি নিয়ে যা হচ্ছে সেটা সম্পর্কে আপনার কী মত?’ উত্তরটাই এখানে লিখলাম। তাই বলছি পরীমণিকে একটা মেডেল দেয়া উচিত, আমাদের সাংবাদিকদের কাজটা আরও অনেক সহজ করে দেয়ার জন্য। মাঠে যাবার কী দরকার, যখন সব খবর বাসায় আসে!
লেখক: এডিটর এট লার্জ, ইউএনবি
বাবার হাতে স্যালুট!
বাবা কী করেন, মেয়ে কী করেন সেটা বিষয় নয়, বিষয়টা স্যালুট। বাবা কেবল নিজের মেয়েকে নয় গোটা বাংলাদেশের সকল কন্যাকে এই অভিবাদন জানিয়েছেন তার মেয়েকে স্যালুট করে। একই ভাবে মেয়ে স্বীকৃতি দিয়েছে বাবাকে। যারা ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া এই ছবিটি দেখেছেন সবার একই অনুভূতি। আমাদের দেশের মেয়ে, আমার দেশের বাবা। এটিই আমার দেশের চিরায়ত সত্য, কারণ সকল বিজয়ের পিছনে আছে সংগ্রাম। আর আমাদের ইতিহাস সংগ্রামের ইতিহাস।
যুদ্ধে স্যালুট
কয়েকদিন আগে আমাদের তৈরি একটি প্রামাণ্যচিত্র দেখিয়েছি আমার ফেসবুক পেজে। ‘যুদ্ধে নারী, যোদ্ধা নারী‘ শিরোনামে। ওতে আছে সেই সব নারীদের মধ্যে কয়েকজনের অভিজ্ঞতার বিবরণ। যারা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে, তার দাম প্রায় প্রত্যেককে দিতে হয়েছে অনেক চড়া ও নির্মমভাবে। কেউ হারিয়েছেন স্বামী। কেউ পাকিস্তানি আর্মির হাতে নির্যাতিত হয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারেননি, যেমন হালিমা খাতুন। নিপা লাহিড়ী বরং ভাগ্যবতী, রণক্ষেত্রে সেবা দেন করতে করতে শহীদ হয়েছেন। আরো কত নাম আছে , আমরা কয়েকজনের নাম এনেছি, কত নাম সবাই মিলে ভুলে গেছি।
সোহাগপুর কতদূর ? ( ১৯৭১)
যখন প্রথম সোহাগপুর (শেরপুর) যাই- যে গ্রামকে সবাই বলে বেওয়াদের (অসহায় বিধবা) গ্রাম- তখন মনে হয়েছিল, এত কষ্ট আর সংগ্রাম মানুষ ধারণ করে কীভাবে? পাকিস্তানি আর্মি গ্রামের সকল পুরুষ মানুষকে মেরে ফেলেছিল, শুধু নারী ও শিশুরা ছিল। স্বামী-পুত্রদের লাশ দাফন করার কী যে কষ্ট কেবল তারাই বোঝে যারা করেছে।
কিন্তু এই বেওয়ারা সংসার টিকিয়ে রেখেছে, ছেলে-মেয়েদের অনাহার থেকে রক্ষা করেছে। সবাই বেঁচে থেকেছে, কাজ করেছে বাজারে মিনতি হয়ে, যা পেয়েছে সেটা নিয়েই সংগ্রাম চলছে যুদ্ধের পরেও বহুদিন। এই সংগ্রাম মুক্তিযুদ্ধের সংগ্রামের সমান সমান, বাঁচার আর বাঁচাবার সংগ্রাম। বাংলাদেশের নারীর রক্তে সংগ্রাম, আমরা দেখিনা কারণ দেশকে আর তার মানুষদের দেখি নষ্ট চোখে!
সেবা, চাকরি, পড়াশোনা (২০২১ )
এবার আমার এক ছাত্রীর গল্প শোনাই। মেয়েটা ক্লাসে খুব ভালো ছিল, কিন্তু হঠাৎ পড়াশোনা থেকে উধাও হয়ে গেলো। এমন ছাত্রীকে সবাই খোঁজে, তাই বহু ডালপালা ঘুরে তাকে পেলাম। মেয়েটা তার কোভিড আক্রান্ত মা-বাবাকে দেখছে, যাদের দেখার কেউ নেই। চাকরি করে রোগীর সেবা করে পারছে না, ভালোভাবে পড়াশোনাও করতে পারছে না। বললাম, ‘বলোনি কেন ?’ উত্তরে বললো, ‘আপনি যদি ভাবেন আমি অ্যাডভান্টেজ নিচ্ছি।’ পরীক্ষা দিতে বললাম, ও রাজি হলো না। এ বছর এসে জানালো আবার ভর্তি হবে, মা- বাবা অনেক ভালো আগের চেয়ে। এ কেমন মানুষ, আমি তো ওকে সুযোগ করে দিতাম, সেটা জানে বলেই আসেনি।
আজ মেয়েরা স্যালুট পাবেই
প্রতিদিন কোনো না কোনো মেয়েকে ধরছে। মদ, ইয়াবা, ব্ল্যাকমেইল নানা অনুষঙ্গে এক অদ্ভুত নতুন নারীর অবয়ব নির্মিত হচ্ছে যেন। এতে না চাইলেও ভূমিকা রাখতে হচ্ছে মিডিয়াকে। যদিও এরা সমাজে সব সময় ছিল, তবু যেন আমরা নতুন করে দেখছি। এদের প্রতি মানুষের অবজ্ঞা, শ্লেষ সব আছে, কিন্তু কজন বলছে এদের মুরুব্বি কারা, টাকা দেয় কারা, সেই নষ্ট সমাজের কী নাম ?
আমরা ভাবি, এসবের ভিড়ে আমাদের স্যালুটগুলো ভেসে যাবে। কিন্তু আমি মাস্টার-সাংবাদিক, ৫০ বছর ধরে। আমি জানি আমাদের মেয়েরা আজ যে স্থানে এসেছে, ইতিহাসে কোনোদিন তারা আসেনি। যে যাই করুক আজ, আগের কাল শেষ। আজ মেয়েরা স্যালুট পাবেই, যতই মানুষ ঢিল ছুঁড়ুক! আমার মতো বাবারা এটা বোঝে সবচেয়ে বেশি।
লেখক: এডিটর এট লার্জ, ইউএনবি
হিরো কেন হিজড়া !
হিরো আলমকে অনেকেই জানেন, চেনেন, নানা কারণে। তবে সবাই যে তাকে পছন্দ করেন তা নয়। কিছু মানুষ তো মনে করেন যে তিনি নিশ্চয় ‘গান বিরোধী কোনো চরমপন্থী দলের সদস্য’। বেশ বেসুরো কণ্ঠে গান গেয়ে থাকেন, অথচ সেগুলো পাবলিক শোনে। অনেকেই তাকে পছন্দ করে, অনেকেই মজা পাওয়ার জন্য তাকে শোনে, দেখে। তবে এটা ঠিক যে তিনি জনপ্রিয়, তার কাজকর্ম নজর কাড়ে। আর সেটাই তো চাই!
আলমের লাল শাড়ি
ইদানিং হিরো আলমকে লাল শাড়ি, চুড়ি-গহনা পরে ঘুরতে দেখা যাচ্ছে। বোঝাই যায় তিনি কোনো চমক দেখাবেন এবং সেটি হচ্ছে একটি মিউজিক ভিডিও। হিরো আলম জানিয়েছেন, এই ভিডিওর শিরোনাম ‘ভাইরাল বউ’। বানাচ্ছে সরদার প্রোডাকশন। ফেসবুকে এখন তার ছবি ঘুরছে।
ছবিতে দেখা যাচ্ছে, আলম লাল শাড়ির সঙ্গে লাল ব্লাউজ পরেছেন। কপালে লাল টিপ আর ঠোঁটে লাল লিপস্টিক। আর কাঁধে নিয়েছেন একটি লেডিস ব্যাগ। এ ব্যাপারে হিরো আলমের ভাষ্য, ‘আপনারা আমাকে নতুন রূপে দেখছেন। সবাই জানেন, হিজড়ারা কতটা অসহায়। তাদের সেই জীবনের গল্প নিয়ে এবারই প্রথম মেয়ে সেজে অভিনয় করছি। সামনে ভালো কিছু করার ইচ্ছা আছে। আপনাদের ভালোবাসা ও দোয়া চাই।’ বোঝা যাচ্ছে ‘হিজড়া আলমে’র সাহস আছে!
হিজড়া হয়ে রুজি !
তবে এটা ঠিক যে হিজড়াদের নিয়ে আমাদের ইদানিং আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে। তাদের নিয়ে বেশ কিছু সংগঠন কাজ করছে। শুধু তাই নয়, খবর এসেছে যে চাঁদপুরে বেশ কিছু যুবক হিজড়া হয়েছে এবং প্রতিদিন হিজড়াদের সংখ্যা বাড়ছে। বিভিন্ন সূত্রে জানা গেলো, এর পিছনে মূল কারণ অর্থনৈতিক। সেখানে ইউএনডিপি হিজড়াদের কল্যাণে একটি প্রকল্প নিয়েছে, তাই লাইন এত বড় হয়েছে। এই প্রথার ইতিহাস কিন্তু দীর্ঘদিনের। রাজ দরবারে চাকরির আশায় এক সময় স্বেচ্ছায় হিজড়া হয়েছে অনেকে। সেই ধারা এখনো চলছে কিছুটা হলেও।
রুজিই শেষ কথা ?
রুজির সংকট বড় সংকট। তাই যদি একটা ব্যবস্থা হয়ে যায়, সেই চিন্তা থেকে অনেকেই হিজড়া হতে রাজি হবে। এতে অনেকে গালি দিতে পারেন, কিন্তু এতে দোষের কী আছে ? চুরি, ডাকাতি, স্মাগলিং, দুর্নীতি, টাকা মেরে দেয়ার চেয়ে তো এইসব অনেক উত্তম।
বাংলাদেশের বহু মানুষ যারা বিদেশে পাড়ি জমায় তারা যে কী কষ্ট করে যায়, থাকে ও টাকা পাঠায়, যারা করে তারাই জানে। তারা নিজেরাই সেধে যায়, নিজেরাই দালাল সন্ধান করে, টাকা দেয়, কষ্ট করে। হিজড়া হতে বরং সাহস লাগে, কারণ কিছু তো খোয়াতে হয়। তবু এটা হচ্ছে।
যারা হিজড়া তারা অসহায় , যারা গান বানায় তারা অসহায়, যারা বিপদ জেনেও বিদেশ যেতে সাগর পাড়ি দেয় তারাও অসহায়... তবে এর মধ্যেও এক ধরণের সাহস আছে। যা করার দরকার করবো, তবু রুজির একটা ব্যবস্থা করতে হবে। তবে এর মধ্যে বিপদও আছে। কারণ একই যুক্তি দিয়ে অনেকে অপরাধ করে। তাহলে কি শেষ পর্যন্ত রুজিই শেষ কথা?
লেখক: এডিটর এট লার্জ, ইউএনবি
মদ + ইয়াবা + টাকা= ঢাকা ?
মাত্র কয়েকদিনের মধ্যে বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটলো। এর অনেকগুলোর মধ্যে বেশ কিছু মিল আছে। হেলেনা জাহাঙ্গীর, পিয়াসা, মৌ, একা... এদের কোনো না কোনো অপরাধে ধরা হয়েছে এবং বাড়িতে অভিযান চালানো হয়েছে। অভিযানে পুলিশ বিদেশি মদ, ইয়াবা এবং জুয়ার সরঞ্জাম জব্দের দাবি করেছে।
এসব সামগ্রী যাদের বাসায় পাওয়া যাচ্ছে তাদের কয়েকজনের মধ্যে বেশ কিছু মিল আছে। এরা সুশ্রী, তরুণী, কেউ মডেল, কেউ অভিনেত্রী, কেউ মিডিয়ার মানুষ। আমরা অনেকেই তাদের চিনি। নিজের কাজের জন্য যেমন তারা পরিচিত নিজস্ব পরিসরে, সম্পর্কের কারণেও অনেকে পরিচিত।
ঢাকার একটা দুনিয়া আছে, বড়লোকদের দুনিয়া, সেখানে তারা হাঁটা চলা করা মানুষ। সেলিব্রিটিদের সঙ্গে তাদের ওঠা বসা। সেখানে মদ, ইয়াবা ও অন্যান্য সব কিছুই চলে। ওদের সঙ্গে উঠতে বসতে চাওয়া মানুষের অভাব সেই। ভালো লাগবে না কেন সেখানে যেতে?
ইয়াবা আর মদ: ‘মাফ কইরা দেন ভাই’
বহু অপরাধ হয় ঢাকায়, দেশে। কিন্তু পুলিশের সবচেয়ে বড় সাফল্য মদ আর ইয়াবা উদ্ধারে। পুলিশ বলে ‘বিদেশি’ মদ পাওয়া গেছে। অপরাধটা বোঝা যায় না। ওটা কি বিদেশি হওয়াতেই অপরাধ ? মানে ব্যাপারটা কি দেশপ্রেমের ? একবার ভাবা যাক যদি পুলিশ বলে, অমুকের বাসায় দেশি মদের বোতল পাওয়া গেছে! তাহলে হয়তো গ্রেপ্তারের পর বড়লোক বা তাদের সঙ্গীরা আত্মহত্যা করতে পারেন অপমানে। তাই মনে হয় ধরা পরার পর বিদেশি মদ পাওয়া যায় তাদের বাড়ি থেকে ! ওটাই আভিজাত্য কেনার চিহ্ন আমাদের ‘হাইল্লা’ সমাজে!
আরও পড়ুন: হেলেনা জাহাঙ্গীর, সেফুদা ও কালো মিডিয়া
বেচারা ইয়াবা
যে দেশে প্রাতিষ্ঠানিক হিসেবে প্রায় এক কোটি নেশাখোর আছে , সেই দেশে প্রকৃত সংখ্যা কত নিজেরাই গুনে নেন। ইয়াবা তো রাস্তার পোলাপান, পাড়ার জুনিয়র মাস্তানও খায়। বুঝলাম এগুলো বিদেশি ইয়াবা কিন্তু যেখানে দেশের প্রায় ১০ শতাংশ মানুষ ইয়াবা খায়, সে দেশে এটা খুঁজে বের করলে কিছু আসে যায় না!
তাই এটা ধরা বাদ দেন। কিছু অন্য আইটেম খোঁজেন। পাবলিক বোর হয়ে যাচ্ছে ভাই! বরং কিছু বিদেশি বই, সংগীতের সিডি ইত্যাদি খুঁজে পেয়ে আমাদের চমকে দিন। মদ, ইয়াবার খবর শুনতে আর মজা লাগছে না! টাকা থাকলে খুচরার মতো যেগুলো মানুষের পকেটে আসে নেশার দ্রব্য হয়ে, তার কথা আর নাই বা বললেন।
পড়ুন: আওয়ামী লীগ নেত্রী হেলেনা জাহাঙ্গীর তিন দিনের রিমান্ডে
মিডিয়ার ওপর ইসরায়েলি বর্বরতার নিন্দা জানিয়েছে জাতীয় প্রেস ক্লাব
এরা কারা?
তবে যে কজনের নাম আসছে এই সপ্তাহে তারা প্রায় সবাই নারী। এটা সত্য তারা সুশ্রী। কিন্তু এরা কি স্বাধীনভাবে সফল মানুষ হিসেবে পরিচিত? এই সমাজে টাকায় রক্তের গন্ধ আছে , সেটা শুঁকতে শুঁকতে কেউ লাশ হয়, কেউ ঝুলে থাকে ফ্যান থেকে, কেউ বেছে নেয় বিষের বোতল। যে নারী টাকার জন্য জেলে যায় আর একই কারণে যে নারী বড়লোকের সঙ্গী হয়, তাদের মধ্যে আসলে কোনো তফাৎ নেই।
তাই দোষটা বরং ইয়াবা আর মাদককেই দেয়া হোক। ওদের তো বোধ-বুদ্ধি নেই!
লেখক: এডিটর এট লার্জ, ইউএনবি
হেলেনা জাহাঙ্গীর, সেফুদা ও কালো মিডিয়া
কিছু দিন আগেও হেলেনা জাহাঙ্গীর নামটা কেউ কেউ জানতেন, আজ সবাই জানেন। তার বাসায় র্যাব তল্লাশি করেছে, কী সব পেয়েছে - মদ, হরিণের চামড়া, জুয়ার সামগ্রী ইত্যাদি। এরপর তার পরিচালিত জয়যাত্রা টিভি অফিসে অভিযান চালানো হয়, বেশ কিছু তথ্য পাওয়া যায় বলছে র্যাব। এটির কোনো বৈধ কাগজপত্র নেই বলে তারা জানিয়েছে। তার বিরুদ্ধে ‘রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের ব্ল্যাকমেইল’ করার অভিযোগ রয়েছে। তিনি রিমান্ডে আছেন, মামলা হয়ে গেছে, আগামী কয়েক মাস তার জেলে থাকার আশঙ্কাই বেশি। অথচ ক’দিন আগেও আওয়ামী লীগ নেত্রী/কর্মী হিসেবে পরিচিত ছিলেন, এখন তিনি একজন গ্রেপ্তার হওয়া অপরাধী।
পাবলিক কী ভাবছে?
পাবলিক কিছু ভাবছে না, তারা মজা পাচ্ছে কারণ তাদের ভাবাভাবিতে কিছু এসে যায় না। তিনি সরকারি দলের লোক, এটাই সবাই জানে, তাই তার পরিণতিতে অনেকেই আশ্চর্য। তাদের ধারণা, তিনি এমন কোনো বড় নেতা বা বড়লোক নন যে তার গ্রেপ্তার বা বাড়িতে অভিযান জাতীয় নিউজ হতে হবে। তাই সবার ধারণা, তিনি হয়তো বড় কাউকে খেপিয়েছেন, যার মাশুল দিতে হচ্ছে। সবার হয়তো মনে আছে তিনি তারকা পরিমনির বিরুদ্ধে অনেক কিছু বলেছিলেন সেই ঘটনার সময়। তখন তিনি বোট ক্লাবের মেম্বার ছিলেন। ওপর তলার বাসিন্দা। আজ তিনি জেলে, প্রায় মুরুব্বীহীন।
আঙ্গুলটা তাই তার জয়যাত্রা টিভির দিকে। র্যাব ইঙ্গিত করেছে যে ওই টিভি ব্ল্যাকমেইলিং করতো এবং এখানেই আসল বিপদ। এর আগেও জনৈক হোটেলবাসিনী ব্ল্যাকমেইলিং ব্যবসা করতে গিয়ে ধরা খেয়েছেন, সহজে বের হবেন বলে মনে হচ্ছে না। তার সহযোগীরাও যথেষ্ট ‘রাষ্ট্রীয় খাতির’ উপভোগ করেছেন। অতএব বোঝা দরকার, খুচরা পয়সা বাজে বেশি, কিন্তু শেষ কথা বলে হাজার টাকার নোট।
সেটা কি তার চাকরি বাকরি লীগ?
মনে হচ্ছে কথায় কথায় এই লীগ ওই লীগ করা কিছুটা কমবে এবার। তবে যে কারণে এগুলা হয় তার কারণ হচ্ছে লীগ ব্যবহার করে সুবিধা গ্রহণ, চাঁদাবাজি বা অন্য কিছু করা সহজ। সরকারি দলের ভাবমূর্তি এতে ক্ষুণ্ণ হয়। আর বিরোধী দল তো মাঠেই নেই , কেউ তাদের সিরিয়াসলিও নেয় না। সেফুদার সঙ্গে হেলেনার যোগাযোগটাও একটু হাস্যকর, কারণ তিনি একজন হাসির পাত্র, কেউ সিরিয়াসলি নেয় না।
তাহলে যে শিক্ষাটা পাওয়া গেলো তা হচ্ছে সুবিধার জন্য কে কী করতে পারবেন তার একটা সীমারেখা আছে, সেটা দল করেন আর নাই করেন। যারা এই লাইনের তারা জেনে নিন। কী ও কেন করবেন সেটা আপনাদের বিষয়। আমরা শাহেদ, সম্রাট, সাবরিনা ও অন্য নাম দেখে এটা বুঝি।
মিডিয়ার কালো ব্যবসা যারা করেন তারা সাবধান। আপনারা আজ সুখে আছেন কিন্তু কার গায়ে যে কখন হাত পড়ে এটা বুঝে করেন। ক্ষমতাধররা যখন ক্ষেপে যায় তখন কী হয় তার প্রমাণ দেখেন। উপরে উঠতে চাওয়া ভালো কিন্তু রাস্তা চেনা থাকা দরকার।
ঢাকার যত ক্লাব আছে - যার অনেকগুলোর মেম্বার হেলেনা। এতে এটা প্রমাণ হয় যে সব কিছু হচ্ছে যোগাযোগের তেজারতি। যতদিন এটা থাকবে, ততদিন এদের দেখতে হবে। কেউ ভালো চলছে, কেউ হোঁচট খাচ্ছে। পায়ের নিচে এই ওপরতলার কোনো মাটি নাই।
লেখক: এডিটর এট লার্জ, ইউএনবি
আরও পড়ুন: আওয়ামী লীগ নেত্রী হেলেনা জাহাঙ্গীর তিন দিনের রিমান্ডে
আ’লীগ নেত্রী হেলেনা জাহাঙ্গীর আটক
প্রদীপের নিচে যখন অন্ধকার
বিষয়টি অনেকদিন থেকেই আলোচিত হচ্ছিল এবং পশ্চিমের কিছু সংবাদ মাধ্যমে ছোট আকারের প্রতিবেদনও বেশ কিছুদিন আগে থেকেই প্রকাশিত হচ্ছিল। ২০২২ বিশ্বকাপ ফুটবলের স্বাগতিক দেশ কাতারের প্রসঙ্গ এখানে আমি উত্থাপন করছি। বড় মাপের যে দুটি অভিযোগের তীর দেশটির দিকে ধাবিত হতে দেখা যায় তা হচ্ছে যথাক্রমে, বিশ্বকাপ ফুটবলের স্বাগতিক দেশ হতে পারার প্রতিযোগিতায় বিশাল অঙ্কের অর্থ খরচ করে ফুটবলের বিশ্ব সংগঠন ফিফার সদস্যদের সংখ্যাগরিষ্ঠের ভোট নিশ্চিত করে নেয়া এবং স্বাগতিক দেশ নির্বাচিত হয়ে যাওয়ার পর চোখ ধাঁধানো নতুন বেশ কয়েকটি স্টেডিয়াম নির্মাণের প্রক্রিয়ায় দরিদ্র দেশগুলো থেকে নিয়ে আসা শ্রমিকদের প্রতি মানবেতর আচরণ প্রদর্শন। দ্বিতীয় প্রসঙ্গটি যেহেতু আমাদের সাথে সরাসরি সম্পর্কিত, ফলে সেদিকে এখানে আমি আলোকপাত করতে আগ্রহী, অন্য দিকটির উপর নয়।
শিক্ষায় তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের অনন্য উদাহরণ শিক্ষক বাতায়ন
বিশ্বব্যাপী আজ ৫ অক্টোবর পালিত হচ্ছে বিশ্ব শিক্ষক দিবস। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় হলো ‘শিক্ষক: ভবিষ্যত গঠনে পুনর্ভাবনা এবং সংকটে নেতৃত্ব প্রদান’। শিক্ষা খাতের আমূল পরিবর্তনে, শিক্ষা অবকাঠামো, পরিবেশ, উপকরণ, যাবতীয় প্রশিক্ষণ এবং শিক্ষা গ্রহণ ও প্রদানে সরকারের ডিজিটাল কর্মযজ্ঞ দেশের প্রান্তিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতেও এনেছে নতুন মাত্রা। ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ অনুযায়ী শিক্ষা মন্ত্রণালয়, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ এবং মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের বাস্তবায়নাধীন এবং ইউএনডিপি বাংলাদেশের সহায়তায় পরিচালিত এটুআই প্রোগ্রামের যৌথ উদ্যোগে প্রায় ৯ লাখ শিক্ষককে ‘শিক্ষক বাতায়ন’-এ অন্তর্ভুক্তকরণের কাজ চলছে। শিক্ষক বাতায়ন শিক্ষকদের জন্য তৈরি একমাত্র অনলাইন ওয়েব প্ল্যাটফর্ম, যার মাধ্যমে শিক্ষকরা তাদের তৈরিকৃত ডিজিটাল কন্টেন্ট, ছবি, ভিডিও আপলোড এবং ডাউনলোড করতে পারেন। শিক্ষায় উদ্ভাবনী সংস্কৃতির বিকাশে শিক্ষকরা আধুনিক ও মানসম্মত শিক্ষা শহর থেকে গ্রাম পর্যায়ে নিয়ে যেতে নিত্যনতুন উদ্ভাবনের গল্প শেয়ার করতে পারেন। এছাড়াও প্রতিষ্ঠান প্রধানরা নেতৃত্বের বিকাশ ও ভবিষ্যৎ শিক্ষা বাস্তবায়নে জানাতে পারেন নেতৃত্বের গল্প। শিক্ষায় তথ্য ও প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে শহরের মানসম্মত শিক্ষা উপকরণ চলে যাচ্ছে গ্রামের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে। গ্রামের প্রান্তিক এলাকা থেকে কোনো শিক্ষক বাতায়নের মাধ্যমে সমস্যা সমাধান পেয়ে যান শহর বা নগরের কোনো দক্ষ শিক্ষকের কাছ থেকে।
সুষম উন্নয়নে কন্যা ও পুত্র উভয়ের অধিকারে সমতা প্রয়োজন
লিঙ্গ বৈষম্য দূর করে কন্যা শিশুদের অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে আরও বেশি সোচ্চার হওয়ার জন্য বাংলাদেশ সরকার ২০০০ সালে ‘জাতীয় কন্যা শিশু দিবস’ ঘোষণা করেন। প্রতি বছর একটি প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি উদযাপিত হয়। যদিও করোনা পরিস্থিতে স্বাভাবিক সব কিছুতেই কিছুটা পরিবর্তন এসেছে তবুও এই পরিবর্তিত অবস্থাতেই জাতীয় কন্যা শিশু দিবস উদযাপন করা হচ্ছে। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘আমরা সবাই সোচ্চার, বিশ্ব হবে সমতার’।