বিশেষ সংবাদ
বেনাপোল কাস্টমসে ৬ মাসে ৫০৯ কোটি টাকা রাজস্ব ঘাটতি
বেনাপোল কাস্টমস হাউসে চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে ৫০৯ কোটি টাকা রাজস্ব কম আদায় হয়েছে। রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল আড়াই হাজার কোটি টাকা, সেখানে আদায় করা হয়েছে এক হাজার ৯৯১ কোটি টাকা।
২০১৯-২১ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসের চেয়ে একশ এক কোটি টাকা বেশি আদায় হয়েছে। ওই সময়ে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল এক হাজার ৮৮৯ কোটি টাকা।
একই সময়ে পণ্য আমদানি হয়েছে ১১ লাখ ৫৩ হাজার ৩৪ মেট্রিক টন। আর রপ্তানি হয়েছে দুই লাখ ৭৬ হাজার তিন মেট্রিক টন। গত বছরের চেয়ে আমদানি কিছুটা কমলেও রপ্তানির পরিমাণ বেড়েছে। তবে ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে আমদানি হয়েছিল ১১ লাখ ৭৩ হাজার ৩২ মেট্রিক টন এবং রপ্তানি হয়েছিল এক লাখ ৭৬ হাজার ২৯৬ মেট্রিক টন।
আরও পড়ুন: সংযোগ সড়ক না থাকায় কাজে আসছে না ৩১ লাখ টাকার সেতু
এর জন্য সুষ্ঠুভাবে বাণিজ্য সম্পাদনে অবকাঠামো উন্নয়ন না হওয়ায় এবং ভারতে পার্কিং ও বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের হয়রানিসহ আর্থিক ক্ষতিগ্রস্তের কারণে ব্যবসায়ীরা এই বন্দর ছেড়ে চলে যাচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
বেনাপোল কাস্টমস সূত্র জানায়, চলতি বছর আমদানি পণ্য থেকে ছয় হাজার ২৪৫ কোটি টাকা রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এর আগে ২০২০-২১ অর্থবছরে বেনাপোল বন্দরে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ছয় হাজার ২৪৪ কোটি ৬২ লাখ টাকা। অর্থবছর শেষে আদায় হয়েছিল চার হাজার ১৪৩ কোটি টাকা। বছরটিতে রাজস্ব আয়ের গ্রোথ অন্যান্য সময়ের চাইতে বেশি হলেও দুই হাজার ৫৭ কোটি টাকা ঘাটতি ছিল।
এছাড়া ২০১৯-২০ অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ঘাটতি ছিল তিন হাজার ৩৯২ কোটি টাকা। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ঘাটতি এক হাজার ১৪৫ কোটি টাকা। ২০১৭-১৮ তে ১৭৯ কোটি ৬৪ লাখ টাকা ঘাটতি।
অপরদিকে চলতি বছরে এত বড় অংকের লক্ষ্যমাত্রা আদায় নিয়ে সব মহলে সংশয় রয়েছে। তারা বলছেন, রাজস্ব আয় বাড়াতে হলে বাণিজ্য সম্প্রসারণে কাস্টমস ও বন্দরে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো উন্নয়ন করতে হবে। তা না হলে কখনও এত বড় অংকের রাজস্ব আদায় সম্ভব হবে না।
আরও পড়ুন: ইঁদুরের গর্তে দু-মুঠো খেয়ে বাঁচার স্বপ্ন!
সংশ্লিষ্টরা বলেন, যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়াতে দুই দেশের ব্যবসায়ীদের এ পথে বাণিজ্যে আগ্রহ বেশি। তবে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো না থাকায় ব্যবসায়ী চাহিদা মত পণ্য আমদানি করতে পারেন না। এতেই বার বার রাজস্ব আয়ে ধস নামছে।
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক জানান, চলতি অর্থবছরে এত বড় অংকের রাজস্ব আদায় কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। কারণ একদিকে করোনা পরিস্থিতি ও অন্য দিকে সুষ্ঠুভাবে বাণিজ্য সম্পাদনে অবকাঠামো উন্নয়ন না হওয়ায় ক্ষোভ রয়েছে ব্যবসায়ীদের। ভারতীয় ব্যবসায়ীরাও বেনাপোল বন্দরের অব্যবস্থাপনা নিয়ে অনেকবার বিভিন্ন কর্মসূচি দিয়ে বাণিজ্য বন্ধ করেছেন। আবার ভারতের কালিতলায় অবৈধভাবে পার্কিংয়ের নামে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের হয়রানিসহ আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। যেকারণে অনেক ব্যবসায়ী এই বন্দর ছেড়ে চলে গেছে।
তবে বেনাপোল বন্দর উন্নয়ন ভারতে হয়রানি বন্ধ হলে এই বন্দর থেকে লক্ষ্য মাত্রার দ্বিগুণ রাজস্ব আয় কাস্টমসের পক্ষ্যে সম্ভব।
আমদানিকারক মামুন বাবু বলেন, ভারতের কালিতলায় পার্কিংয়ের নামে আমদানি পণ্যবোঝাই ট্রাক থেকে মোট অংকের চাঁদাবাজি করছে। চাঁদাবাজির পরও এসব ট্রাক দেশে প্রবেশে করতে প্রায় দুই মাস সময় লাগছে। প্রতিদিন ট্রাক প্রতি দুই হাজার রুপি দিতে হয়। তাই বেনাপোল বন্দর দিয়ে আমদানি কমিয়ে অন্য বন্দরে যেতে বাধ্য হচ্ছি।
আরও পড়ুন: বাঁশের সাঁকোই ৩০ হাজার মানুষের ভরসা
তিনি বলেন, বেনাপোল বন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা সন্তোষজনক নয়। আমদানিকারকদের নিজেদের দায়িত্ব নিয়ে বন্দরে পণ্য পাহাড়া দিতে হয়। বন্দর থেকে পণ্য চুরি, বারবার রহস্যজনক অগ্নিকাণ্ডে অনেক ব্যবসায়ী ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে ব্যবসা বন্ধ করেছেন অনেকেই। গত ৯ বছর ধরে আমদানি পণ্যে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ চাহিদা মত রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্র পূরণে ব্যর্থ হচ্ছেন।
ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের ডাইরেক্টর মতিয়ার রহমান জানান, ব্যবসায়ীরা যেখানে সুবিধা পাবেন সেখানেই আমদানি, রপ্তানি বাণিজ্যে আগ্রহী হবেন এটাই স্বাভাবিক। চট্টগ্রাম বন্দরে অনেক সুবিধা বিদ্যমান তাই ব্যবসায়ী দিন দিন সে পথে আমদানিতে ঝুঁকছেন। বেনাপোল বন্দর দিয়ে রাজস্ব আয় বাড়াতে হলে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে কাস্টমস ও বন্দরে বৈধ সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে।
বেনাপোল কাস্টমস হাউজের কমিশনার আজিজুর রহমান বলেন, শুধুমাত্র ভারতের কালিতলায় অবৈধভাবে আমদানিবাহী গাড়ি আটকিয়ে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা আদায় করা হচ্ছে। তাছাড়া গত আড়াই মাস বেনাপোল বন্দর দিয়ে সোয়াবিন এক্সট্রাক্ট রপ্তানি বেড়ে যাওয়ায় আমদানি কমে গেছে।
আরও পড়ুন: বাগেরহাটে এবার মিলল সাড়ে ছয়শ’ বছর আগের তৈজসপত্র!
তিনি বলেন, বেনাপোল বন্দরে পর্যাপ্ত সুবিধা না থাকায় বাণিজ্য সম্প্রসারণ হচ্ছে না। এতে কয়েক বছর ধরে রাজস্বের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে। তারপরও চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে আমরা গত বছরের চেয়ে বেশি রাজস্ব আদায় করেছি। প্রবৃদ্ধির হারও বেশি।
সংযোগ সড়ক না থাকায় কাজে আসছে না ৩১ লাখ টাকার সেতু
কুড়িগ্রাম সদরের মোগলবাসা ইউনিয়নের ৩১ লাখ ৫০ হাজার টাকা ব্যয়ে সিতাইঝাড় সেতুটি নির্মিত হয়। কিন্তু দুই পাড়ের সংযোগ সড়ক না থাকায় গত চার বছর ধরে সেতুটি অকেজো হয়ে পড়ে আছে। সংযোগ সড়কের অভাবে তিন ইউনিয়নের শত শত মানুষ সেতু দিয়ে চলাচল করতে না পারায় আক্ষেপ প্রকাশ করেছেন অনেকে।
আরও পড়ুন: ইঁদুরের গর্তে দু-মুঠো খেয়ে বাঁচার স্বপ্ন!
প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস সূত্র জানায়, কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার মোগলবাসা ইউনিয়নের সিতাইঝাড় গ্রামের হাদের গোয়ালের বাড়ির পেছনে ত্রাণ ও পুর্নবাসন কেন্দ্রের অর্থায়নে ৩১ লাখ ৫০ হাজার টাকা ব্যায়ে নির্মিত এই সেতুটি। সেতুর কাজ শেষ হওয়ার আগেই বন্যার পানিতে দুই পাড়ের সংযোগ সড়ক বিছিন্ন হয়ে যায়।
ইঁদুরের গর্তে দু-মুঠো খেয়ে বাঁচার স্বপ্ন!
মাগুরার চার উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় মাঠের খেতে নারীরা ছুটে চলেছেন ইঁদুরের গর্তের সন্ধানে। গর্তের সন্ধান মিললেই শুরু হয় খোঁড়া ধান শীষ সংগ্রহের আশায়। সেই শীষ মাড়িয়ে বের করা হবে ধান। সেই ধান সিদ্ধ করে বানানো হবে চাল। যা দিয়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে দু-বেলা দু-মুঠো খেয়ে বেঁচে থাকার চেষ্টা।
অগ্রহায়ণের শুরু থেকে পৌষের মাঝামাঝি পর্যন্ত আমন খেতে ধান সংগ্রহের কাজ করে বাগদি (বর্গক্ষত্রিয়) সম্প্রদায়ের এক দল নারী। জীবিকার অন্বেষণে প্রতি পদে নানাবিধ ঝুঁকি মোকাবিলা করতে হয় তাদের। আমনের মৌসুম শুরু হলেই ইঁদুরের গর্তের সন্ধানে নেমে পড়ে দল বেঁধে। প্রচণ্ড শীত ও কুয়াশা উপেক্ষা করে প্রতিদিন মাগুরা সদর উপজেলার নন্দীপাড়া থেকে ছুটে আসেন মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার বড়বিলা মাঠে। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে কঠোর সংগ্রাম।
আরও পড়ুন: ইঁদুরের গর্তের ধান সংগ্রহে মেতেছে রাণীশংকৈলের শিশুরা
শুক্রবার উপজেলার বড়বিলা মাঠে সরেজমিনে দেখা যায়, ধান খেতে এক দল নারী খুঁজে বেড়াচ্ছে ইঁদুরের গর্ত। কারো হাতে কোঁদাল, কারো হাতে খন্তা, আবার কারো হাতে বস্তা। আমন খেতে ইঁদুরের জমানো ধানে ভাগ বসাচ্ছে ওরা। এমনকি খেতে পড়ে থাকা ধানের শীষের মালিকানাও তাদের। প্রতিদিন এখন বড়বিলার মাঠে চোখে পড়ে এ দৃশ্য। প্রতিদিনই তারা দল বেঁধে ছুটে চলে ফসলের মাঠে। একটি মুহূর্ত যেন দম ফেলানোর সময় নেই। ইঁদুরের গর্ত কিংবা ঝরে পড়া ধান দেখলেই তাদের চোখে-মুখে ফুঁটে ওঠে সোনালি হাসি।
ইঁদুরের গর্তের ধান সংগ্রহ করতে আসা দূর্গা রানী বিশ্বাস বলেন, ‘বছরের অন্য সময় আমরা হাট-বাজারে কাজ করি। অন্যের খেতে দিনমজুরী দিয়ে, খালে-বিলে মাছ ও কুচে ধরে তা বিক্রি করে সংসার চালাই। আর এই সময় ইঁদুরের গর্ত থেকে ধান সংগ্রহ করি। প্রতি মৌসুমে ৮ থেকে ১০ মণ ধান পাওয়া যায়।’
আরও পড়ুন: ইঁদুরের গর্তে শিশুদের হানা
চিত্রা রানী বিশ্বাস বলেন, ‘অনেক গর্তেই ধান থাকে না। আবার ভাগ্য ভালো হলে অনেক গর্তেই ধান পাওয়া যায়। তখন বড় আনন্দ লাগে। আবার অনেক গর্তেই ইঁদুরের বদলে সাপ থাকে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আমরা এ কাজ করি। তাই গর্তে খুব সাবধানে হাত ঢোকাতে হয়। প্রথম প্রথম ইন্দুরের গর্তে হাত দিতি সাহস পেতাম না। যদি পোঁকামাকড় থাকে। তবু ভয়ে ভয়ে একদিন হাত ঢুকাই। খসখস শব্দ হলি ভয় পাই।’
দার্জিলিং জাতের কমলা চাষে সফল ঠাকুরগাঁওয়ের জুয়েল
ঠাকুরগাঁও জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার বীরহলি গ্রামের আবু জাহিদ ইবনুল ইকরাম জুয়েল, কোষারাণীগঞ্জ ইউনিয়নের মালঞ্চা গ্রামে তিন বিঘা জমির ওপরে ভারতীয় দার্জিলিং জাতের কমলার বাগান করেছেন। বাগানটিতে রয়েছে আড়াইশ গাছ। সপ্তমবারের মতো তার বাগানের গাছ থেকে কমলা সংগ্রহ করা হচ্ছে। ১০ বছর আগে চারা গুলো জেলা হর্টিকালচার থেকে প্রতি চারা ৫টাকা করে ক্রয় করেছিলেন তিনি। যদিও তার এই বাগান করার ইচ্ছা ছিল না। শুধুমাত্র হর্টিকালচার সেন্টারের কর্মকর্তাদের তাগিদে তিনি এই চারাগুলো কিনেছিলেন। এখন সেই আড়াইশ গাছ থেকে বাৎসরিক ১০ থেকে ১২ লাখ টাকার কমলা বিক্রির আশা করছেন উদ্যোক্তা জুয়েল।বাগানের গাছের ডালে থোকায় থোকায় ঝুলছে বড় বড় কমলা। কমলার ভারে নুয়ে পড়েছে গাছের ডালপালা। এ যেন এক নয়নাভিরাম দৃশ্য। আর এই দৃশ্য দেখতে স্থানীয়দের মতো প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে হাজারো মানুষ আসছেন এই বাগানে।
বাগানেই বিক্রি হচ্ছে এসব কমলা। তাছাড়া এখানকার কমলা স্থানীয় বাজারের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি সরবরাহ হচ্ছে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়। এই কমলার বাগানটি হওয়ার ফলে যেমন পুষ্টি ও ভিটামিনের চাহিদা পূরণ হচ্ছে, তেমনি অনেকের কর্মসংস্থান হয়েছে।আরও পড়ুন: গোদাগাড়ীতে টমেটো চাষে কৃষকের রঙিন হাসি
বাঁশের সাঁকোই ৩০ হাজার মানুষের ভরসা
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের বারো মাসিয়া নদীর ওপর নড়োবড়ো বাঁশের সাঁকোয় ছয়টি গ্রামের ৩০ হাজার মানুষের চলাচলের একমাত্র ভরসা। প্রায় ৪০ বছর ধরে তারা এভাবে নদী পারাপার করে আসছে। জনপ্রতিনিধিরা সেতু নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিলেও বাস্তবায়ন না হওয়ায় স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
জানা গেছে, ফুলবাড়ী উপজেলার নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের বারো মাসিয়া নদীর ওপর নড়বড়ে বাঁশের সাঁকোটি নিজেদের উদ্যোগে তৈরি করেছে গ্রামের মানুষ।
আরও পড়ুন: বাগেরহাটে এবার মিলল সাড়ে ছয়শ’ বছর আগের তৈজসপত্র!
সাঁকোর পশ্চিম পাড়ে রয়েছে পশ্চিম কান্তাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ঝাউকুটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চর গোরুকমন্ডপ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়,ফয়জুল উলুম মাদরাসা, গোরুকমন্ডপ কমিউনিটি ক্লিনিক। পূর্ব পাশে রয়েছে পশ্চিম ফুলমতি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বালাহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নাওডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বালার হাট আর্দশ স্কুল অ্যান্ড কলেজ, নাওডাঙ্গা স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও পশ্চিম ফুলমতি উচ্চ বিদ্যালয় ও কমিউনিটি ক্লিনিক। নদীর দুপাশে গ্রামগুলোর যোগাযোগের সংযোগস্থল হওয়ায় এ সাঁকো দিয়ে হাজারও মানুষ প্রতিদিন যাতায়াত করেন। এতে হরহামেশাই দুর্ঘটনা ঘটে।
রোগী থাকলে দুর্ভোগের মাত্রা বেড়ে যায় কয়েকগুণ। অবহেলিত এ অঞ্চলের মানুষদেরকে ভোটের সময় জন প্রতিনিধিরা সেতু নির্মাণের আশ্বাস দিয়ে আসলেও তা বাস্তবায়ন করেনি। এমন অভিযোগ দু’পারে মানুষের। ফলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে কান্তাপাড়া, ঝাউকুটি চরগোরুক, পশ্চিম ফুলমতি, জামাকুটি ,কলাবাগা গ্রামের অধিবাসীরা। মানুষগুলোর ভাগ্য পরিবর্তন সম্ভাবনা থাকলেও প্রধান বাধা এ বারো মাসিয়া ইন্দুর ঘাটের বাশেঁ সাঁকো। নিজের চাহিদায়মতে চাঁদা সংগ্রহ করে বাঁশের সাকোঁটি তৈরি করা হয়েছে।
নাওডাঙ্গা স্কুল অ্যান্ড কলেজ দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী নুর মোহাম্মদ আলী বলে, ‘এই সাঁকো দিয়ে চলাচল করতে আমাদের খুব কষ্ট হয়। একবার পা পিচলে পড়ে আহত হয়েছি। এখানে একটা ব্রিজ হলে ভালোই হতো।’
আরও পড়ুন: লাল বাঁধাকপি চাষ: বদলে দিয়েছে কৃষক বেলালের ভাগ্য
পশ্চিম ফুলমতি গ্রামের মীর হোসেন বলেন, ‘একটি সেতুর অভাবে ৪০ বছর ধরে জীবনের সঙ্গে যুদ্ধ করে বেঁচে আছি। সুস্থ মানুষ সাঁকো দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে প্রায়ই দুর্ঘটনায় পড়ছেন, অসুস্থদের অবস্থা বলার মতো নয়। বেশি সমস্যা হয় প্রসূতিদের নিয়ে। জন প্রতিনিধিরা কথা দিয়ে ভোট নেন। ভোট পার হলে তারা আর খোঁজ রাখেন না।’
বাগেরহাটে এবার মিলল সাড়ে ছয়শ’ বছর আগের তৈজসপত্র!
বাগেরহাটে বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকাভুক্ত স্থাপনা বিখ্যাত মুসলিম শাসক খানজাহান (র.) বসতভিটায় মিলেছে ছয়শ’ বছর আগের প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন। বাগেরহাট ষাটগম্বুজ মসজিদ থেকে প্রায় ৪০০ মিটার দূরে এই স্থাপনায় আবার খনন শুরু করেছে প্রত্মতত্ত্ব অধিদপ্তর। খননের পর মাটির নিচ থেকে এবার বেরিয়ে এসেছে সুলতান ও মোগল আমলের বিভিন্ন তৈজপত্র।
এর আগে মাটির নিচ থেকে পঞ্চদশ শতকে নির্মিত খানজাহানের বাসভবনের বিভিন্ন কক্ষের ভিত্তি, প্রাচীর, গোলাকার কর্নার, বুরুজ (গুম্বজ), প্রাচীন রাস্তা, মুসলিম ঐতিহ্যবাহী প্রত্নতাত্ত্বিক গুরুত্বপূর্ণ পেইন্টিং ওয়্যার, স্টোন, ওয়্যার, পোরসোলাইন পাত্রের টুকরা ও পানি নিষ্কাশনের ড্রেনের সন্ধান পাওয়া গেছে।
প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ জানায়, ২০০১ সাল থেকে প্রায় ১০ একর আয়তনের ওই বসতভিটা খনন করছে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর। এর ধারাবাহিকতায় ২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বর এই অর্থবছরে পুনরায় খনন কাজ শুরু হয়। চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত খনন কাজ চলবে।
আরও পড়ুন: লাল বাঁধাকপি চাষ: বদলে দিয়েছে কৃষক বেলালের ভাগ্য
প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর জানায়, ১৯৮৫ সালে জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সাস্কৃতিক বিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কো খানজাহান (র.) নির্মিত ষাটগম্বুজ মসজিদসহ ১৭টি স্থাপনা বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকাভুক্ত করে। এর মধ্যে খানজাহানের বসতভিটা অন্যতম। বাগেরহাট সদরের সুন্দরঘোনা গ্রামে এই বসতভিটা খননের জন্য ১৯৯৭ সালে ৯ একর ৬৭ শতক জমি অধিগ্রহণ করে সরকার। ২০০১ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে খনন কাজ চলছে।
গোদাগাড়ীতে টমেটো চাষে কৃষকের রঙিন হাসি
টমেটো উৎপাদনে দেশব্যাপী সুখ্যাতি রয়েছে রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার। টমেটোর মৌসুমে অন্তত কয়েকশো কোটি টাকার বাণিজ্য হয় গোদাগাড়ীতে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবারও এ উপজেলায় ব্যাপক হারে টমেটোর ফলন হয়েছে।
প্রায় দুই দশক ধরে এই উপজেলায় টমেটো চাষ হচ্ছে। প্রতি মৌসুমেই বিপুল পরিমাণ টমেটো উৎপন্ন হয় এখানে। দাম ভালো থাকায় এবারও লাভের মুখ দেখছেন কৃষকরা।
উপজেলার কয়েক হাজার চাষি শুধু টমেটো চাষ করেই স্বাবলম্বী হয়েছেন।
চলতি মৌসুমে টমেটোর আশানুরূপ ফলন হওয়ায় এবং ভালো দাম পাওয়ায় হাসি ফুটেছে কৃষকের মুখে। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে টমেটো ছড়িয়ে পড়ছে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়।
আরও পড়ুন: লাল বাঁধাকপি চাষ: বদলে দিয়েছে কৃষক বেলালের ভাগ্য
বাগেরহাটে ১২ থেকে ১৭ বছরের শতভাগ শিক্ষার্থীর টিকাদান সম্পন্ন
সারাদেশে গেল কয়েক সপ্তাহ ধরে করোনা সংক্রমণ দ্রুত বাড়ছে। করোনার নতুন ধরন ওমিক্রনের প্রাদুর্ভাবে যেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ না করতে হয় সে জন্য সব শিক্ষার্থীকে টিকার আওতায় নিয়ে আসার ঘোষণা দিয়েছে সরকার। এছাড়া টিকা না নেয়া শিক্ষার্থীরা ক্লাসে যেতে পারবে না বলেও জানানো হয়েছে। সরকারি এ ঘোষণা অনুযায়ী বাগেরহাট জেলার শিক্ষার্থীরা আগ্রহ চিত্তে করোনার টিকা নিয়েছেন। জেলার ৯টি উপজেলার ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সের শতভাগ শিক্ষার্থী ইতোমধ্যে করোনার প্রথম ডোজ টিকা নিয়েছেন।
বাগেরহাট জেলা সিভিল সার্জন ডা. জালাল উদ্দিন আহম্মেদ জানান, জেলায় ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সী মোট এক লাখ ৩৬ হাজার ৬৫১ জন শিক্ষার্থীকে টিকা দেয়ার টার্গেট নেয়া হয়। কিন্তু এ পর্যন্ত ওই বয়সের এক লাখ ৪১ হাজার ৩০৮ জনকে প্রথম ডোজ টিকা দেয়া হয়েছে। এর ফলে ১০৩ শতাংশ শিক্ষার্থীকে টিকা দেয়া হয়েছে। অতিরিক্ত চার হাজার ৬৫৭ জন ঝড়ে পড়া শিক্ষার্থী।
জেলার ১৪টি টিকাদান কেন্দ্রে শিক্ষার্থীরা উৎসাহ ও উদ্দীপনার মধ্যে দিয়ে টিকা নিয়েছে। এখন পর্যন্ত ১১ হাজার ৬৬৯ জন শিক্ষার্থীকে দ্বিতীয় ডোজ দেয়া হয়েছে।
বাগেরহাট সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. প্রদীপ বকসী জানান, ৫ ডিসেম্বর থেকে ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সী শিক্ষার্থীদের টিকা দেয়া শুরু হয়। টিকাদান কর্মসূচির জন্য ব্যাপক প্রচারণা চালানো হয়। এখন দ্বিতীয় ডোজ দেয়া হচ্ছে।
আরও পড়ুন: করোনা টিকার বুস্টার ডোজে ফাইজারের পরিবর্তে মডার্না
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আজিজুর রহমান জানান, আমরা ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সী সব শিক্ষার্থীকে টিকার আওতায় এনেছি। এখন জানুয়ারি মাসের মধ্যে ১৮ বছরের ঊর্ধ্বে সব শিক্ষার্থীকে টিকার আওতায় আনতে প্রচেষ্টা চলছে।
বাগেরহাট জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা কামরুজ্জামান জানান, জেলার ১৮ বছরের ঊর্ধ্বে শিক্ষার্থীদের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। তালিকা অনুযায়ী, জেলায় ১৮ বছরের ওপরে ৩৩ হাজার ১১২ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। তাদের মধ্যে ২৯ হাজার ৫৩১ জন প্রথম ডোজ পেয়েছেন। বাকি তিন হাজার ৫৩১ জন অ্যাপের মাধ্যমে নিবন্ধন করেছেন।
জেলা প্রশাসন সব শিক্ষার্থীকে টিকাদান কর্মসূচির আওতায় নিয়ে আসায় অভিভাবক ও শিক্ষক সকলেই খুশি। টিকার গুরুত্ব সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের সচেতন করতে নেয়া পদক্ষেপেরও প্রশংসা করেন তারা।
জেলা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক চিত্তরঞ্জন পাল জানান, তার বিদ্যালয়ের এক হাজার ৩৩০ জন শিক্ষার্থীর সবাই প্রথম ডোজ টিকা নিয়েছে।
মঙ্গলবার বাগেরহাট সদর হাসপাতালের টিকা কেন্দ্রের সামনে দেখা যায়, লম্বা সারিতে ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সী শিক্ষার্থীরা করোনার টিকার- ফাইজার- দ্বিতীয় ডোজ নেয়ার জন্য অপেক্ষা করছে।
অপ্রিতা মহন্ত নামে জেলা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির এক ছাত্রী জানায়,নিবন্ধন করে মোবাইল ফোনে ক্ষুদেবার্তা (এসএমএস) পাওয়ার পর ৮ জানুয়ারি সে সদর হাসপাতাল কেন্দ্রে গিয়ে করোনার প্রথম ডোজ টিকা নিয়েছে। এখন সে নিয়মিত বিদ্যালয়ে যাচ্ছে।
দ্বিতীয় ডোজের জন্য সে অপেক্ষা করছে এবং ক্ষুদেবার্তা পেলেই দ্বিতীয় ডোজ টিকা নেয়ার কথা জানায় এই স্কুলছাত্রী।
শেখ আসাদুজ্জামান নামে এক অভিভাবক জানান, তার ছেলে সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণিতে পড়ে। এক মাস আগে ছেলে প্রথম ডোজ টিকা নিয়েছে। বাবা হিসেবে তিনি সচেতন হওয়ায় ছেলেকে সময় মতো টিকা দিতে উৎসাহিত করেছেন। ছেলের দ্বিতীয় ডোজ টিকার জন্য মঙ্গলবার সদর হাসপতাল কেন্দ্রে এসেছেন তিনি।
অনিতা বিশ্বাস, কোহিনুর বেগম, সুলতানা খাতুন, দেবাশীষ পাল, মোহন আলীসহ বেশ কয়েকজন অভিভাবক জানান, ১০ থেকে ১২ দিন আগে তাদের ছেলে-মেয়েরা প্রথম ডোজ টিকা পেয়েছে। তারা নিয়মিত স্কুল-কলেজেও যাচ্ছে।
করোনার কারণে দীর্ঘদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় তাদের ছেলে-মেয়েরা শিক্ষায় অনেক পিছিয়ে যাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তারা।
আরও পড়ুন: ঝুঁকিমুক্ত থাকতে দ্রুত টিকা নেয়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
৩১ জানুয়ারির মধ্যে সব শিক্ষার্থীকে টিকা দেয়া হবে: শিক্ষামন্ত্রী
তারা বলছেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সঙ্গে অভিভাকদের মধ্যেও হতাশা কাজ করে। সরকারি নির্দেশনা মেনে তাদের ছেলে-মেয়েদের টিকা দেয়া হয়েছে। এখন স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিদ্যালয় চালু থাকলে ছেলে-মেয়েরা লেখাপড়া চালিয়ে যেতে পারবে-এমটাই প্রত্যাশা তাদের।
স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য মতে, বাগেরহাটে মোট জনসংখ্যা ১৭ লাখ ৪৪ হাজার ৪৩৭ জন। এর মধ্যে ৭০ শতাংশ মানুষ করোনার টিকা দেয়া হবে। সেই হিসাবে এ জেলায় ১২ লাখ ২১ হাজার ১০৫ জনকে করোনার টিকা দেয়া হবে।
এখন পর্যন্ত মোট ১০ লাখ সাত হাজার সাত জনকে করোনার প্রথম ডোজ টিকা দেয়া হয়েছে। আর দ্বিতীয় ডোজ দেয়া হয়েছে ছয় লাখ ৭৫ হাজার ৮৯৫ জনকে। শতকরা হিসাবে জেলার মোট জনসংখ্যার ৫৭ দশমিক ৭৩ শতাংশ এবং টার্গেট জনসংখ্যার ৮২ দশমিক ৪৭ শতাংশ মানুষ প্রথম ডোজ পেয়েছেন। এছাড়া জেলার মোট জনসংখ্যার ৩৮ দশমিক ৭৫ শতাংশ এবং টার্গেট জনসংখ্যার ৫৫ দশমিক ৩৫ শতাংশ দ্বিতীয় ডোজ পেয়েছেন।
সবার নজর নারায়ণগঞ্জে
নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনের (নাসিক) আর মাত্র একদিন বাকি থাকায়, সবার আগ্রহ এখন বাংলাদেশের ড্যান্ডি– নারায়ণগঞ্জের দিকে।
আগামী রবিবার (১৬ জানুয়ারি) তৃতীয়বারের মতো নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। তবে শুক্রবার মধ্যরাতের পর থেকে কোনো নির্বাচনী প্রচারণার অনুমতি দেয়া হবে না।
প্রথম নাসিক নির্বাচনে ২০১১ সালে ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী ‘বিদ্রোহী প্রার্থী’ হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিয়ে আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট প্রার্থী শামীম ওসমানকে এক লাখেরও বেশি ভোটে পরাজিত করেন। এটাই ছিল নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগের দুই দলের মধ্যে চিরস্থায়ী দ্বন্দ্বের সূচনা।
২০১৬ সালে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে আইভী আবার জয়ী হন। এর আগে ২০১৪ সালে শামীম ওসমান সংসদ সদস্য হন। তিনি আইভীকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন থেকে বঞ্চিত করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু দলের কেন্দ্রীয় কমান্ড তার নারায়ণগঞ্জ ইউনিটের সুপারিশকে পাশ কাটিয়ে আবারও আইভীকে মনোনয়ন দেয়।
এবার নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ২৭টি ওয়ার্ডে রাজনীতিবিদ ও তাদের সমর্থকরা প্রচারণা চালাচ্ছেন। নির্বাচনে জয়ের জন্য জোর প্রচারণা চালাতে দেখা যায় কাউন্সিলর প্রার্থীদের।
এবারের নাসিক নির্বাচনের মেয়র পদে সাতজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে ক্ষমতাসীন দলের মনোনীত প্রার্থী আইভীর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে মাঠে নেমেছেন অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার। তৈমুর একজন প্রবীণ বিএনপি নেতা, যিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন, কারণ বিএনপি বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচন বর্জন করছে।
দুই প্রার্থীর সমর্থকরাই নির্বাচনী মাঠে নেমেছেন। দুই প্রধান মেয়র প্রার্থী নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট করার জন্য একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করায় নির্বাচনী মাঠ উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে।
এছাড়া মেয়র পদে ব্যালটে সাতজনের নাম থাকলেও, শামীম ওসমান কী করেন বা কোন দিকে ঝুঁকেছেন, এই প্রশ্নকে ঘিরেও আলোচনার জন্ম হয়েছে। সব মিলিয়ে তাকেও নির্বাচনের হিসেব-নিকেশের বাইরে রাখা যাচ্ছে না।
চলতি সপ্তাহে আইভী অভিযোগ আনেন,তার প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী তৈমুর আসলে শামীম ওসমানের ভাই এবং বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সেলিম ওসমানের প্রার্থী হিসেবে মাঠে নেমেছেন।
আরও পড়ুন: নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচন: স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে বিএনপি নেতার মনোনয়নপত্র সংগ্রহ
তার এই অভিযোগের পর থেকে নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগের বেশিরভাগ নেতাকর্মীকে আইভীর পক্ষে প্রচারণা চালাতে দেখা গেছে।
সোমবার শামীম বলেন, খেলা হবে এবং আমরা ১৬ জানুয়ারি জিতব।
তবে আইভী ওই দিনই বলেন, তৈমুরের কর্মকাণ্ড থেকে এটা পরিষ্কার হয়ে গেছে, যে তিনি শামীম ওসমানের মনোনীত প্রার্থী।
এই একই দাবি আইভী এর আগেও করেছিলেন, যার ফলে আওয়ামী লীগের হাইকমান্ড থেকে শামীম ওসমানকে নির্বাচনের আগে তার অবস্থান স্পষ্ট করতে বলা হয়।
বৃহস্পতিবার শামীম ওসমানের সমর্থন প্রসঙ্গে আইভী বলেন, আমি বলিনি তার সমর্থন লাগবে না। দল আমাকে মনোনয়ন দিয়েছে এবং দলের নেতা-কর্মী ও ভোটাররা আমাকে ভোট দেবেন। দু-একজন ভোট না দিলেও কোনো কিছু হবে না।
অন্যদিকে তৈমুর বলেন, নির্দিষ্ট কিছু লোক আমাকে সমর্থন করছে বলে আমার প্রতিপক্ষ সন্দেহ করছে এবং তারা আমার সুনাম নষ্ট করার চেষ্টা করছে।
তিনি আরও বলেন, এছাড়া আমার সমর্থক ও দলীয় নেতা-কর্মীদের বাড়িতে পুলিশ পাঠিয়ে হুমকি দেয়া হচ্ছে।
তৈমুরের সমন্বয়ক ও প্রচারণা ইনচার্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম রবিকে তার হিরাঝিলের বাসা থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
হ্যাটট্রিক করতে যাচ্ছেন
ব্যালটে অন্য ছয় প্রার্থীর উপস্থিতি সত্ত্বেও, আইভী যে নাসিক মেয়র হিসাবে ফেভারিট তাতে কোন সন্দেহ নেই। তিনি ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রচারণা চালাচ্ছেন। তিনি যেখানেই যাচ্ছেন তার সমর্থকদের ভালোবাসায় সিক্ত হচ্ছেন।
দেশের নির্বাচনী ব্যবস্থা যখন সংকটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে, তখন জনগণের কষ্টার্জিত ভোটে জনপ্রিয়তা ও নীতি উভয় পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে একজন সত্যিকারের জনপ্রতিনিধি হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন আইভী।
লাল বাঁধাকপি চাষ: বদলে দিয়েছে কৃষক বেলালের ভাগ্য
পাঁচ সদস্যের পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী বেলাল হোসেন একজন সফল সবজি চাষি। এ বছর তিনি নতুন সবজি লাল বাঁধাকপি রোপন করেছেন। উত্তর জেলা গাইবান্ধায় এই প্রথম লাল বাঁধাকপি চাষ হয়েছে এবং এটা বেশ লাভজনকও।
নতুন ও স্বাদের কারণে লাল বাঁধাকপি অনেক জনপ্রিয়। এটি সালাদ ও অন্যান্য তরকারির সঙ্গে ব্যবহার হয়ে থাকে।
সারা বছর অন্যান্য সবজি চাষের পাশাপাশি এবার নতুন বীজ রোপন করেছেন বেলাল। ফলনও ভালো, দামেও ভালো। প্রতি কপি পিস ৩০ থেকে ৪০ টাকা হিসাবে পাইকারী বিক্রি করেন। এর মধ্য থেকে অন্তত দুই লাখ টাকা লাভের আশা করেন তিনি।
আরও পড়ুন: চাঁদপুর-সিলেট আন্তনগর ট্রেন এখনও স্বপ্ন!
গাইবান্ধা জেলার ফুলছড়ি উপজেলার কঞ্চিপাড়া ইউনিয়নের ভাষারপাড়ায় বাড়ি কৃষক বেলাল হোসেনের। দুই মেয়ে আর স্ত্রীসহ পাঁচ জনের সংসার। নিজের জমি বলতে সামান্য। অন্যের জমি নিয়ে চাষাবাদ করেন।
পুরো পরিবার মাঠে কাজ করায় কামলা খরচটা কম হয়। বেলাল বলেন, ‘আমি জমিতে কাজ করি,আমার স্ত্রী শিল্পী বেগম, মেয়ে সিনথি আখতার, বন্যা বেগম, ছেলে সিহাব আলীসহ সবাই কাজ করে।’
তিনি বছরের অন্য সময় ফুলকপি, বাঁধাকপি, বেগুন, মরিচ, আলু, টমেটো, লাউ, শিম, ক্যাপসিকাম, মিষ্টি কুমড়াসহ সবজি চাষ করে বছরে অন্তত দুই লাখ টাকা আয় করেন। লাভের টাকায় তিনি বাড়িঘর করেছেন এবং মেয়েদের কলেজে পড়ালেখা শেখাচ্ছেন।
কৃষক বেলাল সব সময়ই নতুন ও ভিন্ন কিছু চাষ করতে চান। তাই যখনই ঢাকায় যান তখন তিনি বিভিন্ন বীজ ভাণ্ডারে খোঁজ করে ভিন্ন কিছু চাষ করার। আর এভাবেই তিনি জাপান থেকে আসা লালিমা বা লাল বাঁধাকপির একটি জাত খুঁজে পান। তাই তিনি আরও অর্থ উপার্জনের আশায় তার সবজি বাগানে সুন্দর ফসল চাষ করেছেন।