বাংলাদেশ
ডেঙ্গু আক্রান্ত আরও ২৭
এডিশ মশাবাহিত ডেঙ্গু রোগের প্রাদুর্ভাব দিন দিন বাড়ছে। সারাদেশে বিভিন্ন হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত ১১০ রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন এবং নতুন আক্রান্ত আরও ২৭ রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
মঙ্গলবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম জানিয়েছে, সকাল ৮টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় নতুন ডেঙ্গু রোগীর মধ্যে ২৭ জনই ঢাকা বিভাগের।
ঢাকার ৪৭টি সরকরি ও বেসরকারি হাসপাতালে ১০৬ জন ভর্তি আছেন। ঢাকার বাইরে ভর্তি আছেন চারজন ডেঙ্গু রোগী।
সরকারি প্রতিবেদন অনুযায়ী, বছরের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত ৮০৮ ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন। অন্যদিকে, চিকিৎসা শেষে ৬৯৭ জন হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। তাছাড়া এই বছরে এখন পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে।
আরও পড়ুন: বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত সাড়ে ৫৪ কোটির কাছাকাছি
করোনা সংক্রমণ বাড়ছে, শনাক্তের হার ১০ শতাংশ ছাড়াল
সিলেটে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি
গত তিনদিন বৃষ্টি কম হওয়ায় সিলেটের সুরমা, ধলাই, পিয়াইন, সারি ও লোভা নদীর পানি অপরিবর্তিত রয়েছে। একই সঙ্গে তীরবর্তী উপজেলাগুলোতে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতির দিকে। তবে ভারতের আসামের পাহাড়ি এলাকায় বৃষ্টিপাত হওয়ায় কুশিয়ারা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় মঙ্গলবার সিলেটের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে, এতে হাজার হাজার মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, কুশিয়ারা নদীর ডাইকের বিভিন্ন স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙন ও ডাইক উপচে পানি ঢুকে জেলার জকিগঞ্জ, ফেঞ্চুগঞ্জ, বিয়ানীবাজার, বালাগঞ্জ, ওসমানীনগর ও গোলাপগঞ্জ মোট ছয়টি উপজেলার বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। তবে পানিবন্দি মানুষকে উদ্ধারে এখনো সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড, পুলিশ ও বিজিবি কাজ করে যাচ্ছে।
আরও পড়ুন: যমুনায় পানি বাড়ায় সিরাজগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, বাঁধ ভেঙে ৫ গ্রাম প্লাবিত
জানা গেছে, দুদিন ধরে কুশিয়ারা নদীর পানি ধীরগতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছিল। কিন্তু রবিবার থেকে অস্বাভাবিকভাবে পানি বৃদ্ধি পাওয়া শুরু হয়েছে। ফলে রবিবার থেকে সোমবার পর্যন্ত কুশিয়ারা তীরবর্তী উপজেলাগুলোর বিভিন্ন স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এক মাসের পূর্বের বন্যার সময় যেসব স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছিল, তার পাশাপাশি নতুন নতুন স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন স্থানে ডাইকের ওপর দিয়ে পানি লোকালয়ে প্রবেশ করা শুরু করেছে। ফলে কুশিয়ারা তীরবর্তী উপজেলাগুলোতে লাখ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।
এসব উপজেলাগুলোতে বন্যা পরিস্থিতির চরম অবনতি ঘটেছে। কুশিয়ারা তীরবর্তী জকিগঞ্জ উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য মতে, সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত জকিগঞ্জ উপজেলার ৩৯টি স্থান দিয়ে পানি প্রবেশ করছিল। এর মধ্যে সুলতানপুর ইউনিয়নের ভক্তিপুর, সদর ইউনিয়নের রারাই, বীরশ্রীর সুপ্রাকান্দি, কাজলসারের বড়বন্দ এলাকায় সবচেয়ে বেশি ভাঙন দেখা দিয়েছে। বর্তমানে উপজেলার লাখো মানুষ পানিবন্দি, পাশাপাশি পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় নতুন করে আরও ভাঙনের আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলায় কুশিয়ারা নদী ও তীরবর্তী এলাকা পানিতে একাকার হয়ে গেছে। বানের পানিতে উপজেলা সদরসহ ৬০ শতাংশ এলাকা প্লাবিত হয়েছে।
আরও পড়ুন: পাহাড়ি ঢলে মুহুরী নদীর বাঁধ ভেঙে ফুলগাজীর ৪ গ্রাম প্লাবিত
বালাগঞ্জ উপজেলার অবস্থাও একই। কুশিয়ারা নদীর ডাইক ভেঙে ও ওপর দিয়ে পানি প্রবেশ করে বাড়িঘর, হাটবাজার ও রাস্তাঘাট প্লাবিত হয়েছে। বন্যার পানিতে তলিয়ে গিয়ে বালাগঞ্জ-খছরুপুর ও ফেঞ্চুগঞ্জ-বালাগঞ্জ সড়ক দিয়ে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। তাছাড়া বন্যার কারণে জেলা সদরের সঙ্গে এখনো বিয়ানীবাজার উপজেলার সড়ক যোগাযোগ ঠিকে থাকলেও যে কোনো সময় তা বিচ্ছিন্ন হওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
সোমবার সারাদিন বিয়ানীবাজার উপজেলার বন্যাকবলিত এলাকায় পানি বৃদ্ধির পাশাপাশি নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। উপজেলার চারখাই, আলীনগর, শেওলা, দুবাগ, কুড়ারবাজার ও থানাবাজারসহ বিভিন্ন এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। উপজেলার লাখো মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।
ওসমানীনগর উপজেলার বন্যা পরিস্থিতিও ভয়াবহ হয়ে ওঠেছে। উপজেলার গোয়ালাবাজার, তাজপুর, দয়ামীর, বুরঙ্গা, সাদিপুর, পশ্চিম পৈলনপুর, উসমানপুর ও উমরপুর ইউনিয়নের পুরোটাই পানিতে তলিয়ে গেছে। কুশিয়ারা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় সময় সময় বন্যা পরিস্থিতিরও অবনতি ঘটছে।
গোলাপগঞ্জ উপজেলার সুরমা তীরবর্তী বাঘাসহ কয়েকটি ইউনিয়নে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে কুশিয়ারা তীরবর্তী এলাকায় অবনতি হয়েছে। উপজেলার শরীফগঞ্জ, বাদেপাশা, ঢাকাদক্ষিণ, আমুড়া ও ভাদেশ্বর ইউনিয়নে বন্যা পরিস্থিতির বেশ অবনতি হয়েছে। পানি বৃদ্ধি পেয়ে কুশিয়ারা তীরবর্তী ইউনিয়নগুলোর নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
আরও পড়ুন: গাইবান্ধায় নদ-নদীর পানি বেড়েছে, নিচু এলাকা প্লাবিত
সুরমা নদীর তীরবর্তী সিলেট নগরী, সদর, বিশ্বনাথ ও কানাইঘাট উপজেলার বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। সিলেট নগরীর উঁচু এলাকা থেকে পানি নেমে গেছে। নদী তীরবর্তী এলাকায় এখনো লাখো মানুষ পানিবন্দি রয়েছেন। বাকি উপজেলাগুলোতেও লাখ লাখ মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় দিনাতিপাত করছেন। ধলাই, পিয়াইন, সারি ও লোভা নদীর পানি কমায় জেলার কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট ও জৈন্তাপুর উপজেলার বন্যা কবলিত এলাকার পানি কিছুটা কমেছে। তবে পানি কমার গতি খুবই ধীর বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। এই তিন উপজেলার এখনও ৯০ ভাগ এলাকা প্লাবিত রয়েছে।
দুশ্চিন্তার কিছু নেই, বন্যা দুর্গতদের পুনর্বাসন করবে সরকার: সিলেটে প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারের পক্ষ থেকে খাদ্য ও ওষুধসহ সব ধরনের প্রয়োজনীয় সহায়তা দেয়ার আশ্বাস দিয়ে জনগণকে উদ্বিগ্ন না হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
একই সঙ্গে দেশের মধ্য ও দক্ষিণাঞ্চলে আরও বন্যার আশঙ্কা থাকায় যেকোনো সংকট মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
মঙ্গলবার সিলেট সার্কিট হাউসে জনপ্রতিনিধি, সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: হেলিকপ্টার থেকে ছোড়া ত্রাণ নিতে গিয়ে আহত একজনের মৃত্যু
শেখ হাসিনা দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, তার সরকার সমগ্র সিলেট অঞ্চলের পাশাপাশি দেশের অন্যান্য অঞ্চলে বর্তমান বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় সকল পদক্ষেপ নিয়েছে।
সিলেট অঞ্চলে টানা তৃতীয়বারের মতো বন্যা হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সরকার পরিস্থিতি মোকাবিলায় যথাযথভাবে কাজ করছে।
চলমান বন্যাকে নতুন কিছু নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের জনগণকে এমন প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যেই জীবনযাপন করতে হচ্ছে।
দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শনে প্রধানমন্ত্রী
হেলিকপ্টার থেকে ‘লো-ফ্লাই মুডে’ মঙ্গলবার সিলেট, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোণা ও তৎসংলগ্ন এলাকার বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি লো-ফ্লাই মুড বা নিচু হয়ে উড়েছিল। এতে তিনি দুর্গত এলাকা প্রত্যক্ষ করেন।
পরে প্রধানমন্ত্রী সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে সিলেট সার্কিট হাউসে যান। যেখানে বিভাগীয়, জেলা প্রশাসন ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করার কথা রয়েছে।
এর আগে, বন্যার পানিতে বিস্তীর্ণ এলাকা সমুদ্রে পরিণত হওয়ায় বিশেষ করে সিলেটের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বন্যার্তদের সরিয়ে নিতে এবং অসহায় মানুষকে সহায়তার জন্য বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা করতে কর্তৃপক্ষ সেনাবাহিনীর প্রতি আহ্বান জানায়, একইসাথে নৌবাহিনী ও বিমান বাহিনীর ইউনিটগুলোকে ডাকা হয়েছে।
শনিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সরকার ১৫ থেকে ১৮ জুন বন্যাকবলিত জেলাগুলোর জেলা প্রশাসকদের তাৎক্ষণিক মানবিক সহায়তা হিসেবে নগদ ২২.৫ মিলিয়ন টাকা, ৪০০ মেট্রিক টন চাল এবং ৪১ হাজার প্যাকেট শুকনো ও অন্যান্য খাবার বরাদ্দ দিয়েছে।
পড়ুন: সরকারের নিষ্ক্রিয়তায় বন্যার্তরা ত্রাণের জন্য হাহাকার করছে: বিএনপি
সিলেটে কমছে বন্যার পানি, বাড়ছে দুর্ভোগ
বাংলাদেশে গ্লোবাল ইউনিভার্সিটি সিস্টেম সামিট অনুষ্ঠিত
বাংলাদেশের পরীক্ষিত বন্ধু কানাডা এবার বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য নতুন সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে। এ লক্ষ্যে কানাডার নামকরা ৬টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দেশের শিক্ষার্থীরা বৃত্তিসহ কানাডায় পড়ার সুযোগ পাবেন।
এ সংক্রান্ত এক সামিট রবিবার (১৯ জুন) রাজধানীর একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
গ্লোবাল ইউনিভার্সিটি সিস্টেমের (গাস) সহযোগিতায় অনুষ্ঠিত এই সামিটে কানাডার নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
সংশ্লিষ্টদের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
সামিটে অংশ নেয়া প্রতিনিধিরা জানান, বিশ্বের সবচেয়ে বড় এডুকেশন নেটওয়ার্ক গাস এর রয়েছে নিজস্ব ৩৮টি বিশ্ববিদ্যালয়। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে বাংলাদেশে কাজ করে কানাডার ৬টি প্রতিষ্ঠান। এসব প্রতিষ্ঠানে সকল ধরনের সুযোগ সুবিধা পাবেন বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা।
সামিটে গাস এর ডিরেক্টর নাটছায়া উইয়ারাট বলেন, কানাডা যেহেতু একটি উন্নত দেশ তাই সবারই আগ্রহ থাকে এখানে থাকায় ও আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাড়ালেখা করার। কানাডার এই ৬টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যারা ভর্তি হবে তারা বিভিন্ন সুযোগ সুবিধার পাশাপাশি খুব কম খরচে কানাডায় পড়ার সুযোগ পাবেন।
এতে পড়ালেখা শেষ করে তাদের কানাডায় থাকার সুযোগও তৈরি হতে পারে বলে জানান নাটছায়া।
সামিটে গাস কানাডা কলেজের সিনিয়র বিজনেস ডেভেলপমেন্ট ম্যানেজার ফর সাউথ এশিয়ার সুজন দাস, ফ্লেমিং কলেজের সাউথ এশিয়ার এসোসিয়েট ডি স্বন্দীপ যাদপ, নায়াগ্রা কলেজ টরেন্টো'র বিজনেস ডেভেলপমেন্ট ম্যানেজার ওয়ালিদ জাহান, বাংলাদেশ-ইউনিভার্সিটি কানাডা ওয়েস্ট এর কান্ট্রি ম্যানেজার ওয়াহেদ সালমানসহ বাংলাদেশ ও কানাডার প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
পড়ুন: স্কুল, কলেজগুলোকে বন্যার আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হবে: মাউশি
বন্যায় আটকে পড়া শাবিপ্রবি ছাত্রীদের উদ্ধারে বিজিবি
সাবেক কূটনীতিক মহিউদ্দিনের মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রীর শোক
মহান মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, সাবেক সচিব, কূটনীতিক ও বিশিষ্ট কলামিস্ট মহিউদ্দিন আহমেদের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সোমবার এক শোক বার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় ইউরোপের পাকিস্তান দূতাবাসগুলোতে কর্মরত বাঙালি কূটনীতিকদের মধ্যে মহিউদ্দিন আহমেদ প্রথম পক্ষ ত্যাগ করে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে অবস্থান নেন। ১৯৭১ সালে তিনি লন্ডনের পাকিস্তান হাইকমিশনের দ্বিতীয় সচিবের পদ ছেড়ে দিয়ে যুক্তরাজ্যে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে সার্বক্ষণিক কাজ করেছেন। মহান মুক্তিযুদ্ধে তাঁর অবদান জাতি সব সময় শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবে।
প্রধানমন্ত্রী মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
পড়ুন: আব্দুল গাফ্ফার চৌধুরীর মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রীর শোক
সাবেক রাষ্ট্রদূত মহিউদ্দিন আহমেদ’র মৃত্যুতে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর শোক
বন্যায় দুর্ভোগ কমাতে সব ব্যবস্থা নিয়েছে সরকার: প্রধানমন্ত্রী
চলমান বন্যার প্রকোপ মোকাবিলা ও ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের দুর্ভোগ কমাতে সরকার যথেষ্ট ব্যবস্থা নিয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘এবার (বন্যার) প্রকোপ কিছুটা তীব্র। এটি কিছু সময়ের জন্য থাকতে পারে। সেপ্টেম্বর পর্যন্ত থাকতে পারে।’
সোমবার প্রধানমন্ত্রীর সংসদ ভবনের কার্যালয়ে জাপানের রাষ্ট্রদূত নাওকি ইতো দেখা করতে গেলে এসব কথা বলেন শেখ হাসিনা।
বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বন্যা কবলিত এলাকার মানুষের দুর্ভোগ কমাতে সরকার সব কিছু করছে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের এই প্রকৃতির সঙ্গেই বাঁচতে হবে। বন্যা দুর্গতদের সব ধরনের সহায়তা দেয়ার জন্য আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি।’
আরও পড়ুন: সিলেটে কমছে বন্যার পানি, বাড়ছে দুর্ভোগ
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সময় থেকে জাপান উন্নয়নের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহায়তা দিয়ে আসছে।
দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া নিয়ে তিনি বলেন, এটা দীর্ঘদিন ধরে সেনানিবাসে সীমাবদ্ধ ছিল। প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে তারা (সামরিক শাসকরা) শাসন করেছে। সেখান থেকে আমরা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করেছি।
তিনি বলেন, দেশে গণমাধ্যম স্বাধীন। বাংলাদেশে ৩৩টি টিভি চ্যানেল চালু আছে।
তিনি বলেন, ‘এর আগে শুধু রাষ্ট্র পরিচালিত বাংলাদেশ টেলিভিশনই কাজ করত।’
পদ্মা সেতু প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ২০০১ সালের ৪ জুলাই তিনি প্রথম সেতুটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। পরবর্তীতে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় না আসা পর্যন্ত কাজটি এগোয়নি।
কক্সবাজারে বিশ্বের দীর্ঘতম প্রাকৃতিক সমুদ্র সৈকত থাকায় তার সরকার কক্সবাজারকে পর্যটনের জন্য উন্নত করতে চায় বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
রাষ্ট্রদূত নাওকি ইতো প্রধানমন্ত্রীকে তার দেশে আমন্ত্রণ জানিয়ে বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী যদি এই বছরের নভেম্বরের কোনো সময় জাপানে সফর করেন তাহলে তারা খুশি হবেন।
তিনি বলেন, জাপান বাংলাদেশের উন্নয়ন কাজে সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে।
এ প্রসঙ্গে রাষ্ট্রদূত বলেন, মেট্রোরেল উদ্বোধনের জন্য তিনি অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি, আড়াই লাখ মানুষ পানিবন্দি
আগামী বছর থেকে জাপানি কোম্পানি আড়াইহাজার বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে কাজ শুরু করবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
আজ বিশ্ব শরণার্থী দিবস পালিত হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, জাপান রোহিঙ্গা শরণার্থীদের দ্রুত প্রত্যাবাসন চায়।
এ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের জন্য সরকার উন্নত সুযোগ-সুবিধা দিয়েছে।
এ সময় মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস উপস্থিত ছিলেন।
চট্টগ্রামে বাসে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, গ্রেপ্তার ৪
চট্টগ্রামে বায়েজিদ বোস্তামি থানার অক্সিজেন মোড় এলাকায় বৃষ্টির মধ্যে গন্তব্যে পৌঁছে দেয়ার কথা বলে এক নারীকে বাসে তুলে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে বাসটির চালকসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
রবিবার দুপুরের দিকে অক্সিজেন মোড়ে এ ঘটনা ঘটে বলে পুলিশ জানায়।গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন- বাসের চালক বাঁশখালী বানিগ্রাম এলাকার আবুল কাশেমের ছেলে নুরুল আলম (৩০), চালকের সহকারী ভুজপুর থানা নতুনপাড়া এলাকার মোখলেছুর রহমানের ছেলে রবিউল (২৩), বাসের সুপারভাইজার ও খাগড়াছড়ি জেলার মাটিরাঙ্গা এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ রাজু (২৬) এবং ভুজপুর থানার নারায়ণহাট ইউনিয়নের আবুল কালামের ছেলে মো. শাহাদাত (২২)।
ভুক্তভোগী ওই নারী জানিয়েছে, সেসময় বাইরে প্রচুর বৃষ্টিপড়ার কারণে তার চিৎকার কেউ শুনতে পায়নি। প্রায় একঘন্টা পর বৃষ্টি থেমে গেলে তিনি চিৎকার করতে থাকায়, তাকে বাস থেকে নামিয়ে দেয় অভিযুক্তরা।সোমবার বিকালে বায়েজিদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামরুজ্জামান বলেন, ‘গতকাল রবিবার দুপুরে ভুক্তভোগী নারী বায়েজিদ ছিন্নমূলে তার চাচার বাসা থেকে রিকশাযোগে অক্সিজেন মোড়ে পৌঁছান। সেসময় ভারী বৃষ্টি হচ্ছিল। ওই নারী অক্সিজেন রেলবিটের পাশে একটি ছাউনির নিচে আশ্রয় নেন। এ সময় সেখানে পার্ক করে রাখা একটি বাসের চালক ও সহকারীরা নারীকে দেখে কোথায় যাবেন জিজ্ঞেস করেন। ওই নারী কোর্ট বিল্ডিং যাওয়ার কথা বলেন। বাসটি কোর্ট বিল্ডিং যাবে বলে ওই নারীকে বাসে তোলেন তারা। এরপরই ওই নারী অভিযুক্ত চারজনের দ্বারা সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন।’তিনি আরও জানান, ‘এরপর ভুক্তভোগী নারী তাৎক্ষণিক অক্সিজেন পুলিশ বক্সে এসে ট্রাফিক পুলিশকে ঘটনাটি জানান। পরে ট্রাফিক সার্জেন্ট ঘটনাস্থলে গিয়ে ধর্ষণের ঘটনায় ব্যবহৃত বাসটি জব্দ এবং শাহাদাত নামে একজনকে আটক করে।পরে রবিবার রাত সাড়ে ১১টা থেকে দেড়টা পর্যন্ত পুলিশ অভিযান চালিয়ে হাটহাজারী বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে অভিযুক্ত বাসচালক নুরুল আলম ও সুপারভাইজার রাজু এবং ফটিকছড়ি থেকে রবিউলকে আটক করে।’এই ঘটনায় ভুক্তভোগী নারীর স্বামী বাদী হয়ে চারজনের নামে বায়েজিদ থানায় একটি মামলা করেছেন বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: খুলনায় গৃহবধূকে ‘সংঘবদ্ধ ধর্ষণ’
চট্টগ্রামে দুই সন্তানের জননীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, গ্রেপ্তার ৩
জাতিসংঘে বাংলাদেশের পরবর্তী রাষ্ট্রদূত ও স্থায়ী প্রতিনিধি আবদুল মুহিত
নিউইয়র্কে জাতিসংঘে বাংলাদেশের পরবর্তী রাষ্ট্রদূত ও স্থায়ী প্রতিনিধি হিসেবে মুহাম্মদ আবদুল মুহিতকে নিয়োগ দিয়েছে সরকার।
তিনি এই পদে রাবাব ফাতিমার স্থলাভিষিক্ত হবেন।
ক্যারিয়ার কূটনীতিক মোহাম্মদ আবদুল মুহিত বিসিএসের (পররাষ্ট্র ক্যাডার) ১১তম ব্যাচের একজন কর্মকর্তা বলে সোমবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।
বর্তমানে তিনি অস্ট্রিয়ায় বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এবং ভিয়েনায় জাতিসংঘ ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থায় বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
এর আগে তিনি ডেনমার্কে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। কূটনৈতিক কর্মজীবনে মুহিত কুয়েত, রোম, দোহা ও ওয়াশিংটন ডিসির বাংলাদেশ মিশন এবং নিউইয়র্কে জাতিসংঘের স্থায়ী মিশন ও মন্ত্রণালয়ে বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেছেন।
মুহিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজবিজ্ঞানে বিএসএস ও এমএসএস ডিগ্রি অর্জন করেন।
তিনি কুয়েত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আরবি ভাষায় ডিপ্লোমা করেছেন। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি বিবাহিত ও দুই মেয়ের বাবা।
আহসান উল্লাহ’র শিক্ষার্থী সুবীর হত্যা দুই আসামির মৃত্যুদণ্ড হাইকোর্টে বহাল
আহসান উল্লাহ ইউনিভার্সিটির ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী সুবীর চন্দ্র দাস হত্যা মামলায় পলাতক আসামি ফরহাদ হোসেন সিজু ও মো. হাসানের মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে অপর দুই আসামি সফিক আহসান ওরফে রবিন ও শাওন ওরফে কামরুল হাসানের যাবজ্জীবন দণ্ড বহাল রাখা হয়েছে।
এ মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আসামিদের আপিলের শুনানি নিয়ে সোমবার বিচারপতি ভীষ্মদেব চক্রবর্তী ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
আদালতে আসামিদের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মনসুরুল হক চৌধুরী। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল হারুন অর রশিদ ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল জাহিদ আহমদ হিরো।
২০১৩ সালের ১২ জানুয়ারি আহসান উল্লাহ ইউনিভার্সিটির ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সপ্তম সেমিস্টারের শিক্ষার্থী সুবীর চন্দ্র দাসকে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে ডেকে নিয়ে যায় আসামিরা। পরে তাকে হত্যা করে লাশ গুম করার জন্য বুড়িগঙ্গা নদীতে ফেলে দেয়া হয়। এরপর ২১ জানুয়ারি সাভারের ভাকুর্তা ইউনিয়নের কোটালিয়াপাড়া এলাকার বুড়িগঙ্গা নদী থেকে সুবীরের লাশ উদ্ধার করা হয়।এ মামলার বিচার শেষে ২০১৬ সালের ২৬ অক্টোবর দুই জনের ফাঁসি ও দুই জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দেন বিচারিক আদালত। পরে নিয়ম অনুযায়ী এ মামলার ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে আসে। একই সঙ্গে কারাবন্দী যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামি আপিল করেন।
আরও পড়ুন: ডবল মার্ডার : বিশ্বনাথে একজনের মৃত্যুদণ্ড, ১১ জনের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা
নারায়ণগঞ্জে ধর্ষণের পর হত্যা, ৬ আসামির মৃত্যুদণ্ড