বাংলাদেশ
রাজধানীতে ‘গ্যাস লিকেজ’ থেকে আগুন, একই পরিবারের ৪ জন দগ্ধ
রাজধানীর বাড্ডা এলাকার একটি ফ্ল্যাটে ‘গ্যাস লিকেজ’ থেকে আগুন লেগে দুই শিশুসহ একই পরিবারের চার সদস্য দগ্ধ হয়েছেন। বুধবার ভোরে বাড্ডার সাতারকুল এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন- আবু সাইদ (৩৮), তার স্ত্রী রেখা (২৯), তাদের মেয়ে সাফা (৯) ও ছেলে সাফিয়ান (৭)।
ফায়ার সার্ভিসের কন্ট্রোল রুমের ডিউটি অফিসার এরশাদ হোসেন জানান, ভোর সাড়ে ৩টার দিকে সাতারকুল এলাকায় তাদের ফ্ল্যাটে গ্যাস সরবরাহ লাইনের লিকেজ থেকে আগুনের সূত্রপাত হতে পারে।
তিনি জানান, খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে এক ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
আহতদের চিকিৎসার জন্য শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে নেয়া হয়েছে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন: গাজীপুরে ঝুটের গোডাউনের আগুন নিয়ন্ত্রণে
রাজধানীর কল্যাণপুরে বস্তিতে আগুন
রাজশাহীতে শতাধিক পানের বরজ আগুনে পুড়ে ছাই
টাঙ্গাইলে কিশোরকে গলা কেটে হত্যা, আটক ২
টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে এক কিশোরকে গলা কেটে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। বুধবার ভোরে উপজেলার কোকডহরা ইউনিয়নের কাগুজীপাড়া চকের একটি ডোবা থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় দুজনকে আটক করা হয়েছে।
নিহত কিশোরের নাম রাহাত (১৩)। সে একই এলাকার আগবানিরা গ্রামের শাহাদত হোসেনের ছেলে এবং বল্লা করোনেশন উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র।
স্থানীয়রা জানান, মঙ্গলবার রাত থেকে রাহাত নিখোঁজ ছিল। বুধবার ভোরে কাগুজীপাড়া চকের একটি ডোবায় গলাকাটা অবস্থায় রাহাতের লাশ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেন। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়।
কালিহাতী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোল্লা আজিজুর রহমান জানান, কে বা কারা মঙ্গলবার রাতের কোনো এক সময় রাহাতকে গলা কেটে হত্যা করে লাশ ওই চকে ফেলে রেখে যায়। আমরা তদন্ত শুরু করেছি। সন্দেহভাজন দুজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন বলেও জানান ওসি।
আরও পড়ুন: চুয়াডাঙ্গায় মাদরাসাছাত্রীর আত্মহত্যায় প্ররোচনা মামলার আসামি গ্রেপ্তার
গাজীপুরে স্ত্রী-সন্তানকে কুপিয়ে হত্যা, স্বামী গ্রেপ্তার
রিকশাচালকের বিরুদ্ধে ‘স্ত্রী-ছেলেকে কুপিয়ে হত্যা’র অভিযোগ
দেশে করোনা শনাক্তের হার কিছুটা বেড়েছে
দেশে মহামারি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় একজনের মৃত্যু হয়েছে। এসময় নতুন শনাক্ত হয়েছে আরও ১৩৪ জন। দেশে এ পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ২৯ হাজার ১১৮ জন এবং মোট শনাক্তের সংখ্যা ১৯ লাখ ৫০ হাজার ৯৮০ জনে পৌঁছেছে।
বুধবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর করোনা বিষয়ক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানিয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ১০ হাজার ৫২১ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এইদিন শনাক্তের হার এক দশমিক ২৭ শতাংশ। এর আগে মঙ্গলবার দেশে করোনা শনাক্তের হার ছিলো এক দশমিক ১১ শতাংশ।
দেশে মোট পরীক্ষায় এ পর্যন্ত শনাক্তের হার ১৪ দশমিক ১৯ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় মোট মৃত্যুর হার এক দশমিক ৪৯ শতাংশ।
এদিকে ২৪ ঘণ্টায় করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন আরও ৯২১ জন। এ নিয়ে দেশে মোট সুস্থ ব্যক্তির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৮ লাখ ৭৩ হাজার ৭৬৬ জনে। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯৬ দশমিক চার শতাংশ।
আরও পড়ুন: করোনায় ফের মৃত্যূশূন্য দেশ
বিশ্ব পরিস্থিতি
যুক্তরাষ্ট্রের জনস্ হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, বুধবার সকাল পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে করোনায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৪৭ কোটি ৩৯ লাখ ৪২ হাজার ৭৭৫ এবং মোট মৃতের সংখ্যা ৬০ লাখ ৯৮ হাজার ২৭৭ জনে দাঁড়িয়েছে।
করোনায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ আমেরিকায় এখন পর্যন্ত মোট শনাক্তের সংখ্যা সাত কোটি ৯৮ লাখ তিন হাজার ৪৪৩ জন এবং মৃত্যুবরণ করেছে ৯ লাখ ৭৩ হাজার ২১৩ জন।
এদিকে, দক্ষিণ আমেরিকার দেশ ব্রাজিলে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ছয় লাখ ৫৮ হাজার পাঁচ জনে। দেশটিতে এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছে দুই কোটি ৯৬ লাখ ৯১ হাজার ৬৪১ জন। মৃত্যুর দিক দিয়ে দেশটির অবস্থান দ্বিতীয়।
বাংলাদেশের প্রতিবেশি দেশ ভারতে মোট চার কোটি ৩০ লাখ ১০ হাজার ৯৭১ জনের সংক্রমণ চিহ্নিত হয়েছে। একই সময়ে মৃত্যু সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে পাঁচ লাখ ১৬ হাজার ৫৭৪ জনে।
আরও পড়ুন: করোনায় মৃত্যু ২, শনাক্ত ১০৮
করোনার প্রকোপ কমায় ভারতজুড়ে হোলি উদযাপিত
ছাত্রকে বলাৎকারের দায়ে মাদরাসা শিক্ষকের যাবজ্জীবন
খাগড়াছড়িতে এক মাদরাসা ছাত্রকে (১০) বলাৎকারের দায়ে এক শিক্ষককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে ভুক্তভোগীর পরিবারকে ৩০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
বুধবার দুপুরে খাগড়াছড়ির নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. আবু তাহের এই রায় দেন।
সাজাপ্রাপ্ত হাফেজ মো. নোমান মিয়া ওরফে রোমান (২২) দীঘিনালার ছোট মেরুং এলাকার বাসিন্দা।
আরও পড়ুন: ছাত্রকে বলাৎকারের অভিযোগে মাদরাসা শিক্ষক গ্রেপ্তার
আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালে খাগড়াছড়ির দীঘিনালার ছোট মেরুং আল ইকরা হিফজুল কোরআন মাদরাসায় হাফেজ মো. নোমান মিয়া ওই মাদরাসাছাত্রকে (১০) বলাৎকার করে। এই ঘটনায় ভুক্তভোগীর পরিবার একই বছরের ২৩ আগস্ট দীঘিনালা থানায় মামলা করেন।
এরপর ২০১৮ সালের ২২ মে চার্জশিট গঠন করা হয়। মামলা চলাকালীন মোট ১২ জনের স্বাক্ষ্য প্রদান, যুক্তি তর্ক উপস্থাপন শেষে আদালত এ রায় দেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বিধান কানুনগো রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে বলেন, এমন রায় সমাজে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।
আরও পড়ুন: বিশ্বনাথে শিশুকে বলাৎকারের অভিযোগে কিশোর গ্রেপ্তার
শাহ আমানতে সাড়ে ৮ লাখ শলাকা সিগারেট জব্দ, আটক ২
চট্টগ্রামের শাহ আমানত বিমানবন্দরে আট লাখ ৮০ হাজার শলাকা (পিস) সিগারেট ও ৪০ পিস ড্রাই টোবাকো জব্দ করেছে কাস্টম হাউসের এয়ারপোর্ট ও এয়ারফ্রেইট ইউনিট। এসময় সংযুক্ত আরব আমিরাতের শারজাহ থেকে আসা দুই যাত্রীকে আটক করা হয়েছে।
আটক ব্যক্তিরা হলেন, মোহাম্মদ তৈয়ব ও মো. হারুন রশিদ।
বুধবার চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের ডেপুটি কমিশনার সালাউদ্দিন রিজভী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে গুদাম থেকে টিসিবির পণ্য জব্দ, ৩ ব্যবসায়ী আটক
বিমানবন্দর সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার (২২ মার্চ) রাত পৌনে ৮টায় এয়ার এরাবিয়ার জি-৯৫২২ নামের একটি ফ্লাইট শারজাহ থেকে আসে। এসময় নিয়ম অনুযায়ী যাত্রীদের লাগেজ স্ক্যানিং করার সময় যাত্রী মোহাম্মদ তৈয়ব ও মো. হারুনুর রশীদের ব্যাগ তল্লাশি করা হলে এসব অবৈধ মালামাল পাওয়া যায়। এর মধ্যে মোহাম্মদ তৈয়বের কাছ থেকে ২৪০ মিনি কার্টুন সিগারেট ও ৪০ পিস ড্রাই ট্যোবাকো এবং মোহাম্মদ হারুন রশীদের কাছ থেকে ২০০ মিনি কার্টনে ইজি ব্রান্ডের সিগারেট ও ২৫০ পিস ড্রাই ট্যোবাকো (পারফিউম সল্ট নিকোটিন) পাওয়া যায়। এ সময় তাকে আটক করা হয়।
সালাউদ্দিন রিজভী জানান, শর্তসাপেক্ষে আমদানিযোগ্য উচ্চ শুল্কের এসব পণ্য বেআইনিভাবে বহন করে ১৩ লাখ টাকা রাজস্ব ফাঁকির চেষ্টা হয়েছিল। শুল্ক আইন ১৯৬৯ এবং প্রচলিত আইন ও বিধি অনুযায়ী আটক পণ্য রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ভুয়া এনআইডি-ড্রাইভিং লাইসেন্স তৈরি, আটক ৫
বাংলাদেশে অর্থনৈতিক সহায়তা অব্যাহত রাখার আশ্বাস নর্ডিক দেশগুলোর
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে তাদের সহায়তা অব্যাহত রাখার আশ্বাস দিয়েছে তিন নর্ডিক দেশ (ডেনমার্ক,নরওয়ে ও সুইডেন)।
বুধবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকে বাংলাদেশে নিযুক্ত ডেনিশ রাষ্ট্রদূত উইনি ইস্ট্রুপ পিটারসেন,নরওয়েজিয়ান রাষ্ট্রদূত এসপেন রিক্টর-সভেনডসেন এবং সুইডিশ রাষ্ট্রদূত অ্যালেক্স বার্গ ফন লিন্ডে এ কথা বলেন।
বাংলাদেশ ও নর্ডিক দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে তিন কূটনীতিক যৌথভাবে গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।
বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
বাংলাদেশ ও তিন নর্ডিক দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে রাষ্ট্রদূতরা প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানান। তারা বলেন, স্বাধীনতার পরপরই তাদের দেশগুলো ১৯৭২ সালে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিয়েছিল। তারা বাংলাদেশের অগ্রগতি, বিশেষ করে বঙ্গবন্ধুর পদাঙ্ক অনুসরণ করে বাংলাদেশের অর্জিত সামাজিক উন্নয়নের প্রশংসা করেন।
রাষ্ট্রদূতেরা ভূমিহীন ও গৃহহীনদের বাড়ি দেয়ায় প্রধানমন্ত্রীর ভূয়সী প্রশংসা করেন।
এসময় শেখ হাসিনা বলেন,বাড়ি দেয়ার প্রক্রিয়া চলছে। শেখ হাসিনা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে সমর্থন এবং যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনে সহায়তার জন্য তিন নর্ডিক দেশের অসামান্য ভূমিকার কথা স্মরণ করেন।
আরও পড়ুন: শতভাগ বিদ্যুতায়ন একটি যুগান্তকারী অর্জন: প্রধানমন্ত্রী
মাদক পাচার বন্ধে বিজিবি-বিএসএফের ঐক্যমত
সীমান্ত দিয়ে যেকোন ধরণের মাদক পাচার বন্ধে ঐক্যমতে পৌঁছেছেন বিজিবি ও বিএসএফের কর্মকর্তারা।
বুধবার বেলা ১১টায় দিনাজপুরের হিলিতে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) সেক্টর কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠকে তারা এ বিষয়ে একমত পোষণ করেন। হিলি সিপি বিজিবি ক্যাম্পের গোলঘরে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষে ১৫ সদস্যের নেতৃত্ব দেন বিজিবির দিনাজপুর সেক্টর কমান্ডার গোলাম মহিউদ্দিন খন্দকার এবং ভারতের পক্ষে ১৫ সদস্যের নেতৃত্ব দেন বিএসএফের রায়গঞ্জ সেক্টরের ডিআইজি এসএন ভাস্তব।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গাদের আবারও ‘বাঙালি সম্প্রদায়’ বলল মিয়ানমার
এর আগে সকাল সাড়ে ১০টায় বিএসএফের প্রতিনিধি দল হিলি চেকপোস্ট দিয়ে বাংলাদেশে আসেন। এসময় সেখানে তাদের ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান বিজিবির কর্মকর্তারা।
বিজিবির দিনাজপুর সেক্টর কমান্ডার গোলাম মহিউদ্দিন খন্দকার জানান, করোনার কারণে আমাদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে আলোচনা বন্ধ ছিল। এখন হচ্ছে। আমরা বর্ডার ইস্যু ও বিভিন্ন ধরনের মাদক সহ অবৈধ পারাপার বন্ধ নিয়ে আলোচনা করেছি। বিএসএফকে বলেছি বাংলাদেশে মাদক পাচার বন্ধে তারা যেনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়।
তিনি আরও বলেন, বিএসএফও তাদের কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছে। উভয়ে সীমান্তে যেকোন ধরনের অপরাধ রোধে একমত হয়ে কাজ করব। আমাদের মধ্যে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা নিপীড়নকে ‘গণহত্যা’ ঘোষণা: যুক্তরাষ্ট্র প্রত্যাবাসনে সহায়তা করবে প্রত্যাশা ঢাকার
কার্বন নিঃসরণ হ্রাস ও লিঙ্গ সমতা ভিত্তিক টেকসই বিশ্ব নিশ্চিতের আহ্বান প্রতিমন্ত্রীর
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণ এবং প্রতিশ্রুতির আন্তরিক বাস্তবায়নের মাধ্যমেই কার্বন নিঃসরণ হ্রাস ও লিঙ্গ সমতা ভিত্তিক টেকসই বিশ্ব নিশ্চিত হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন নারী ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা।
মঙ্গলবার রাতে জাতিসংঘ সদর দপ্তরের সাধারণ পরিষদ হলে কমিশন অন দ্যা স্টাটাস অব উইমেন (সিএসডব্লিউ) এর ৬৬তম অধিবেশনে এক বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সিএসডব্লিউ-এর এবারের প্রতিপাদ্য হলো, ‘জলবায়ু পরিবর্তন, পরিবেশ ও দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস নীতি ও কর্মসূচিসমূহের প্রেক্ষাপটে লিঙ্গ-সমতা অর্জন এবং সকল নারী ও মেয়েদের ক্ষমতায়ন’।
আরও পড়ুন: কার্বন নিঃসরণ কমাতে ঐক্যমতে পৌঁছেছে বাংলাদেশসহ বিশ্বের ১৩৪ দেশ
প্রতিমন্ত্রী সিএসডব্লিউতে পাঁচ সদস্যের বাংলাদেশ দলের প্রতিনিধিত্ব করছেন। প্রতিনিধিদলে রয়েছেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা।
প্রতিমন্ত্রী বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে সৃষ্ট বাংলাদেশের নাজুক পরিস্থিতি ও দুর্যোগ ঝুঁকির উপর আলোকপাত করেন এবং এক্ষেত্রে নারী ও মেয়েদের অসামঞ্জস্যপূর্ণ প্রভাবের কথা তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, বৈশ্বিক জলবায়ু ঝুঁকি সূচক ২০২১ অনুযায়ী বাংলাদেশের অবস্থান ৭ম, যদিও বৈশ্বিক কার্বন নিঃসরণে আমাদের অবদান মাত্র ০.৪৭ শতাংশেরও কম।
ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরাম-এর ৫৫ সদস্যের নেতা হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কপ-২৬ সম্মেলনে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব থেকে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর বেঁচে থাকার জন্য অর্থায়ন নিশ্চিতের উপর জোর দেয়ার যে আহ্বান জানিয়েছিলেন তা তুলে ধরে প্রতিমন্ত্রী বলেন, জলবায়ুর বিরূপ প্রভাবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হলো নারীরা।
আরও পড়ুন: জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় বৈশ্বিক সচেতনতা জরুরি: জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী
লিঙ্গ সংবেদনশীল জলবায়ু কর্মসূচি, অভিযোজন, প্রশমন, ও দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস নিশ্চিত করার করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকার গৃহীত বিভিন্ন আইন, নীতি, ও কর্মসূচিসমূহের কথা উল্লেখ করেন নারী ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী।
এছাড়া বাংলাদেশের জলবায়ু নাজুক অঞ্চলসমূহে নারীদের অভিযোজন ও প্রতিকূলতা মোকাবিলা করে ঘুরে দাঁড়ানোর সামর্থ্য অর্জনে গৃহীত জলবায়ু ও লিঙ্গ-সংবেদনশীল বাজেট, লিঙ্গ-সংবেদনশীল কোস্টাল অভিযোজন প্রকল্প, সামাজিক বনায়ন কর্মসূচি, জাতীয় রেজিলিয়েন্স কর্মসূচিসহ অন্যান্য পদক্ষেপের কথাও উল্লেখ করেন প্রতিমন্ত্রী।
সাইক্লোন প্রস্তুতি কর্মসূচি’তে ৩৮ হাজার নারী স্বেচ্ছাসেবী অন্তর্ভূক্তিকরণের উদাহরণ তুলে ধরে তিনি বলেন, এরফলে এই কর্মসূচিটি জাতিসংঘের পাবলিক সার্ভিস অ্যাওয়ার্ড ২০২১ অর্জন করেছে যা দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসে লিঙ্গসমতার অনন্য উদাহরণ।
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, এ জাতীয় প্রকল্পসমূহ নারী ও মেয়েদের দুর্যোগ পূর্ববর্তী হুইসেল ব্লোয়ার হিসেবে কাজ করার ক্ষমতাকে সুদৃঢ় করবে, সম্পদ রক্ষা করবে, এবং জীবিকা, ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যক্রমে বৈচিত্র আনবে। জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোতে নারী ও মেয়েরা যে সকল চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে তা কাটিয়ে উঠতে আর্থিক, কারিগরি ও প্রযুক্তিগত সম্পদের সরবরাহ নিশ্চিত করার আহ্বান জানান প্রতিমন্ত্রী।
এছাড়া তিনি ‘সমতার নীতি’ ও ‘লিঙ্গ-জলবায়ু ন্যায়বিচার’ চালু করার উপরও জোর দেন।
আরও পড়ুন: জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বাংলাদেশে সহায়তা বাড়াবে জার্মানি
চুয়াডাঙ্গায় মাদরাসাছাত্রীর আত্মহত্যায় প্ররোচনা মামলার আসামি গ্রেপ্তার
চুয়াডাঙ্গায় মাদরাসাছাত্রী মাসুমা খাতুন (১৮) আত্মহত্যায় প্ররোচনা মামলার একমাত্র আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। জেলার আলমডাঙ্গা উপজেলার মুন্সিগঞ্জ এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
মঙ্গলবার দুপুরে এক প্রেস বিফিংয়ে এ তথ্য নিশ্চিত করেন চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন।
গ্রেপ্তার আবুল কালাম ওরফে দা কালাম (২৪) চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার আরামপাড়া গোরস্থান এলাকার মোবারক হোসেনের ছেলে।
পুলিশ জানায়, গত রবিবার সন্ধ্যায় চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার হকপাড়ায় বাড়ি থেকে মাদরাসাছাত্রী মাসুমা খাতুনের গলায় ফাঁস দেয়া মরদেহ উদ্ধার করা হয়। মাসুমা রেলবাজার আলিয়া মাদরাসার আলিম প্রথম বর্ষের ছাত্রী ছিল।
এ ঘটনায় মৃত ছাত্রীর বাবা আমিনুল ইসলাম বাদী হয়ে ওই দিন রাতেই আবুল কালামকে আসামি করে সদর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়, বিবাহিত হয়েও কালাম বেশ কিছুদিন ধরে মাসুমাকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে আসলেও তাতে রাজি ছিল না মাসুমার পরিবার। পরে কালাম মাসুমাকে তার সঙ্গে পালিয়ে যাওয়ার জন্য চাপ দিতে থাকে। একপর্যায়ে মাসুমাকে প্রকাশ্যে মারধর ও গালমন্দ করে কালাম। অপমান সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করে মাসুমা।
চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন বলেন, আসামি জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে।
তিনি বলেন, কালামের বিরুদ্ধে ২০২০ সালে ছাত্রলীগ নেতা জোবায়ের রিগান ও তার মামা কৃষক লীগ নেতা মহসীন রেজাকে হত্যাচেষ্টাসহ অর্ধডজন মামলা রয়েছে।
পড়ুন: চুয়াডাঙ্গায় বখাটের উত্ত্যক্তের জেরে মাদরাসা ছাত্রীর আত্মহত্যা!
রোহিঙ্গাদের আবারও ‘বাঙালি সম্প্রদায়’ বলল মিয়ানমার
রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা মুসলিম জনগোষ্ঠীর ওপর চালানো দমন-পীড়নকে ‘গণহত্যা’ হিসেবে ঘোষণা দেয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে রোহিঙ্গাদের জাতিগত হিসেবে গ্রহণ করতে অস্বীকার করে তাদের আবারও ‘বাঙালি সম্প্রদায়’ হিসাবে বর্ণনা করেছে মিয়ানমার।
মিয়ানমারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে রোহিঙ্গাদের ‘বাঙালি সম্প্রদায়’ বর্ণনা করে জানিয়েছে, মিয়ানমার কখনোই গণহত্যামূলক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়নি এবং কোনো জাতি, ধর্মীয় গোষ্ঠী বা অন্য কোনো গোষ্ঠীকে পুরোপুরি বা আংশিকভাবে ধ্বংস করে দেয়ার কোনো গণহত্যার সাথে যুক্ত নেই।
এতে বলা হয়, জাতিসংঘের সনদসহ গণহত্যার অপরাধ প্রতিরোধ ও শাস্তি সংক্রান্ত কনভেনশন এবং আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের (আইসিজে) সংবিধির একটি পক্ষ হিসেবে মিয়ানমার বিদ্যমান সব বাধ্যবাধকতাকে সম্মান করতে সম্পূর্ণরূপে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাদের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে শেয়ার করা বিবৃতিতে জানায়, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী তার বক্তব্যে যা তুলে ধরেছেন সেগুলো বাস্তবতা থেকে অনেক দূরে। তার বক্তব্যে দেয়া রেফারেন্সগুলো অবিশ্বস্ত এবং অপ্রত্যাশিত উত্স থেকে পাওয়া।
মিয়ানমার স্পষ্টভাবে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মন্তব্যকে প্রত্যাখ্যান করে জানিয়ে বলেছে, এর বিষয়বস্তু এবং বর্ণনাগুলো রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং একটি সার্বভৌম রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের শামিল।
পড়ুন: রোহিঙ্গা নিপীড়নকে ‘গণহত্যা’ ঘোষণা: যুক্তরাষ্ট্র প্রত্যাবাসনে সহায়তা করবে প্রত্যাশা ঢাকার
এদিকে, ফোরটিফাই রাইটসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ম্যাথিউ স্মিথ মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের ঘোষণাকে রোহিঙ্গা এবং মিয়ানমারের সকল মানুষের জন্য এবং গণহত্যা প্রতিরোধ ও প্রতিকারের ব্যাপক প্রচেষ্টার জন্য ‘ঐতিহাসিক’ অর্জন বলে অভিহিত করেছেন।
ম্যাথিউ স্মিথ বলেন, ‘গণহত্যা প্রতিরোধ করার জন্য বিশ্বনেতাদের অবশ্যই তা স্বীকার করতে হবে। মার্কিন সরকার আজকে ঠিক তাই করেছে।’
সোমবার ফোরটিফাই রাইটস বলেছে, জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলোর উচিত মিয়ানমারে রোহিঙ্গা গণহত্যার বিষয়টি প্রকাশ্যে স্বীকার করা এবং জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ বিষয়টি আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) উত্থাপন করে তার নিষ্পত্তি নিশ্চিত করা।
এর আগে মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলিম জনগোষ্ঠীর ওপর চালানো দমন-পীড়নকে ‘গণহত্যা’ হিসেবে ঘোষণা করে যুক্তরাষ্ট্র। সোমবার ওয়াশিংটনের ইউএস হলোকাস্ট মেমোরিয়াল মিউজিয়ামে এক অনুষ্ঠানে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন এ ঘোষণা দেন।
তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক চাপ সৃষ্টি এবং সম্ভাব্য আইনি পদক্ষেপের ভিত্তি স্থাপনের উদ্দেশ্যে এই ঘোষণা দেয়া হয়েছে।
ব্লিঙ্কেন বলেন, জাতিগত সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে ব্যাপক ও নিয়মতান্ত্রিক প্রচারণায় মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী বেসামরিক নাগরিকদের ওপর ব্যাপক নৃশংসতার নিশ্চিত বিবরণের ভিত্তিতে কর্তৃপক্ষ এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এই ঘোষণা মিয়ানমারের বর্তমান সরকারের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ বাড়াতে পারে। কারণ ইতোমধ্যে হেগের আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে ‘গণহত্যা’র অভিযোগের মুখোমুখি হচ্ছে জান্তা সরকার।
২০১৭ সালে মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা জাতিগত সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু হওয়ার পর ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে।
পড়ুন: মিয়ানমারে রোহিঙ্গা নিপীড়নকে ‘গণহত্যা’ ঘোষণা যুক্তরাষ্ট্রের