বাংলাদেশ
ভারতে সাজাভোগ শেষে দেশে ফিরল ৫ শিশুসহ ২১ বাংলাদেশি
অবৈধ পথে ভারত গিয়ে বিভিন্ন মেয়াদে সাজাভোগ শেষে দেশে ফিরল পাঁচ শিশুসহ ২১ বাংলাদেশি নারী-পুরুষ। শুক্রবার সন্ধ্যায় বিশেষ ট্রাভেল পারমিটের মাধ্যমে বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে ভারতের পেট্রাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশ তাদেরকে বেনাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন।
ভারতে পাঁচ বছর সাজাভোগ করেছে বলে ভুক্তভোগীরা জানায়। পরে বেনাপোল পোর্ট থানা থেকে জাস্টিস অ্যান্ড কেয়ার সাত জন, রাইটস যশোর সাত জন এবং মহিলা আইনজীবী সমিতি নামে তিনটি এনজিও সংস্থা তাদের গ্রহণ করে পরিবারের কাছে হস্তান্তরের জন্য শেল্টার হোমে নিয়ে যায়।
ফেরত আসাদের মধ্যে ১০ জন নারী, ছয় জন পুরুষ ও পাঁচজন শিশু রয়েছে। তাদের বয়স ৭ থেকে ৩৫ বছরের মধ্যে। তারা বাগেরহাট, খুলনা, বরগুনা, নড়াইল, মুন্সিগঞ্জন, ঢাকা ও কক্সবাজার জেলার বাসিন্দা।
জাস্টিস অ্যান্ড কেয়ারের প্রতিনিধি রোকেয়া বেগম বলেন, বিভিন্ন সময়ে দালালের খপ্পরে পড়ে ভালো কাজের আশায় তারা ভারতে যায়। এরপর কলকাতাসহ বিভিন্ন এলাকায় বাসা-বাড়িতে কাজ করার সময় তারা ভারতীয় পুলিশের হাতে আটক হয়। সেখান থেকে এম এম রেসকিউ, সংলাপ, তালাশ নামের এনজিও সংস্থা তাদেরকে পুলিশের হাত থেকে ছাড়িয়ে নিজেদের শেল্টার হোমে রাখে। পাঁচ মাস থেকে শুরু করে কেউ কেউ ছয় বছর পর দেশে ফিরেছে।
আরও পড়ুন: ওমিক্রন কড়াকড়িতে বেনাপোলে যাত্রী যাতায়াত কমেছে
বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাজু আহম্মেদ বলেন, এসব নারী পুরুষরা সীমান্তের অবৈধ পথে বিভিন্ন সময়ে ভারতে যায়। ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে কাজ করার সময় সেই দেশের পুলিশের হাতে আটক হয়। এরপর আদালতের মাধ্যমে তারা জেলহাজতে যায়। পরে ভারতের এম এম রেসকিউ, সংলাপ ও তালাশ’ নামে বেসরকারি এনজিও সংস্থা তাদের জেল থেকে ছাড়িয়ে নিজেদের শেল্টার হোমে রাখে। সেখানে বছর থাকার পর ভারত সরকারের দেয়া বিশেষ ট্রাভেল পারমিটের মাধ্যমে আজ দেশে ফিরেছে।
তিনি জানান, ইমিগ্রেশনের আনুষ্ঠানিকতা শেষে তাদের বেনাপোল পোর্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। সেখান থেকে জাস্টিস অ্যান্ড কেয়ার, রাইটস যশোর ও মহিলা আইনজীবী নামের এনজিও সংস্থা তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করার জন্য সন্ধ্যায় থানা থেকে নিজম্ব শেল্টার হোমে নিয়ে গেছেন।
আরও পড়ুন: বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে ডিজেল পাচার ঠেকাতে কঠোর নজরদারি বিজিবির
বেনাপোল স্থলবন্দর থেকে ৪টি বোমা উদ্ধার
কোভ্যাক্সিন নিয়ে গ্যাভি ও ভারত বায়োটেকের মধ্যে আলোচনা চলছে
করোনাভাইরাস প্রতিরোধী ভ্যাকসিন কোভ্যাক্সিন নিয়ে গ্লোবাল ভ্যাকসিন অ্যালায়েন্স (গ্যাভি) ও ভ্যাকসিন উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ভারত বায়োটেকের মধ্যে আলোচনা চলছে। গ্যাভির একজন মুখপাত্র বৃহস্পতিবার সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
গ্যাভির ওই মুখপাত্র এক ই-মেইল বার্তায় বলেছেন, আমরা সামগ্রিক চাহিদা বিবেচনা করে (ভারত বায়োটেক) এর সঙ্গে আলোচনা করছি। আমরা ২০২২ সালে কোভ্যাক্সিন এর পোর্টফোলিও করছি৷ তবে, এখনই আমরা কোভ্যাক্সের সঙ্গে কোভ্যাক্সিন সরবরাহ নিয়ে কোনো চুক্তি করছি না।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নভেম্বরে ভারতের প্রথম দেশীয় করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন কোভ্যাক্সিনকে জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে। গ্লোবাল এজেন্সি অনুমোদিত ১০টি ভ্যাকসিনের মধ্যে তিনটি ভারতে ব্যাপকভাবে উৎপাদিত।
ভারতে প্রায় ১৮০ মিলিয়ন কোভ্যাক্সিন ডোজ কোভ্যাক্সিন দেয়া হয়েছে এবং তিন মিলিয়নেরও বেশি ডোজ কোভ্যাক্সিন রপ্তানি বা উপহার হিসেবে দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: করোনায় কমেছে মৃত্যু, শনাক্ত বেড়ে ৫.৬৭ শতাংশ
গ্যাভি বলেছে, বিশ্বের বৃহত্তম ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারক সিরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া (এসআইআই) এর সঙ্গেও তারা নোভোভ্যাক্স ভ্যাকসিন বিষয়ে আলোচনা করছে। সিরামের থেকে গ্যাভির ৩০০ মিলিয়ন ডোজ টিকা নেয়ার একটি অর্ডার দেয়ার কথা রয়েছে।
সিরাম ইনস্টিটিউটে কয়েক মিলিয়ন ডোজ নোভোভ্যাক্স তথা কোভোভ্যাক্স’র মজুদ রয়েছে। সম্পতি এক দ্বিপক্ষীয় চুক্তির ভিত্তিতে নয় মিলিয়নেরও বেশি ডোজ টিকা ইন্দোনেশিয়ায় পাঠিয়েছে সিরাম।
এছাড়াও সিরাম অ্যাস্ট্রাজেনেকা ও কোভ্যাক্সেরও বড় সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান।
গত বছরের এপ্রিল মাসে নিজেদের নাগরিকদের টিকা দেয়ার জন্য সিরাম ইনস্টিটিউট টিকা রপ্তানি বন্ধ ঘোষণা করলেও, অক্টোবর মাস থেকে পুনরায় টিকা রপ্তানি শুরু করেছে।
এই প্রতিষ্ঠানটি এখনও পর্যন্ত মোট এক বিলিয়নেরও বেশি ডোজ দান বা বিক্রি করেছে।
বিশ্বের বৃহত্তম ভ্যাকসিন তৈরিকারী দেশ ভারতের বছরে প্রায় ৫ বিলিয়ন করোনার ভ্যাকসিন তৈরি করার ক্ষমতা রয়েছে।
আরও পড়ুন: বিশ্বজুড়ে করোনায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৩০ কোটি ছাড়ালো
ভারতে একদিনে করোনা আক্রান্ত ৯১ হাজার, মৃত্যু ৩ শতাধিক
দেশ বিরোধী সক্রিয় অপশক্তিগুলোর ব্যাপারে সজাগ থাকার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশের জনগণের ভাগ্য নিয়ে কেউ যাতে ছিনিমিনি খেলতে না পারে এবং দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের অসামান্য যাত্রা বন্ধ করতে পারে সেজন্য সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।
তিনি বলেন,‘মানুষের ভাগ্য নিয়ে কেউ যাতে ছিনিমিনি খেলতে না পারে, সেদিকে আমাদের সকলকে সজাগদৃষ্টি রাখতে হবে। আমাদের উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে কোনোভাবেই ব্যাহত হতে দেয়া যাবে না।’
শুক্রবার একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর গঠিত তার বর্তমান সরকারের তৃতীয় বার্ষিকী এবং বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের চার বছরে পদার্পণ উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
রাষ্ট্রায়ত্ত বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতার একযোগে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ প্রচার করে।
২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে তার দল আওয়ামী লীগের বিপুল বিজয়ের পর ২০১৯ সালের ৭ জানুয়ারি টানা তৃতীয় মেয়াদে সরকার গঠন করেন শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের মহাসড়ক বেয়ে দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। এটা অনেকেরই সহ্য হবে না বা হচ্ছে না। দেশ-বিদেশে বসে বাংলাদেশ বিরোধী শক্তি, স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি তাই নানা ষড়যন্ত্র করছে এই অগ্রযাত্রাকে রুখে দেওয়ার জন্য।’
প্রধানমন্ত্রী তার ভাষণে আরও বলেন, ‘মিথ্যা-বানোয়াট-কাল্পনিক তথ্য দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। বিদেশে আমাদের উন্নয়ন সহযোগীদের ভুল বোঝানোর চেষ্টা করছে।’
তিনি বলেন, ‘জনগণই ক্ষমতার উৎস। আমরা জনগণের ক্ষমতায় বিশ্বাস করি। তাই জনগণের সঙ্গেই আমাদের অবস্থান।’
দুর্নীতি ও জঙ্গিবাদ
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছি। দুর্নীতিবাজ যে দলেরই হোক আর যত শক্তিশালীই হোক, তাদের ছাড় দেয়া হচ্ছে না এবং হবে না। এ ব্যাপারে দুর্নীতি দমন কমিশন স্বাধীনভাবে তাদের দায়িত্ব পালন করছে। তবে এই ব্যাধি দূর করতে সামাজিক সচেতনতা তৈরি করা প্রয়োজন।’
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমরা কঠোর হস্তে জঙ্গিবাদের উত্থানকে প্রতিহত করেছি। বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। এখানে সকল ধর্ম-বর্ণের মানুষ পারস্পরিক সহনশীলতা বজায় রেখে বসবাস করে আসছেন এবং ভবিষ্যতেও করবেন।’
আরও পড়ুন: নৌবাহিনীতে আরও আধুনিক যুদ্ধজাহাজ সংযোজন করা হবে: প্রধানমন্ত্রী
অর্থনৈতিক অগ্রগতি
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিগত ১৩ বছরে বাংলাদেশ অনেক দূর এগিয়েছে। দারিদ্র্য দূরীকরণ, স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নয়ন, মাতৃমৃত্যু-শিশুমৃত্যুর হার হ্রাস, গড় আয়ু বৃদ্ধি, নারীর ক্ষমতায়ন, শিক্ষার হার বৃদ্ধিসহ নানা আর্থ-সামাজিক সূচকে বাংলাদেশ আজ দক্ষিণ এশিয়ায় নেতৃত্ব দিচ্ছে।
জনগণ তার ওপর আস্থা রাখায় এই অগ্রগতি সম্ভব হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এটা সম্ভব হয়েছে আমাদের উপর আস্থা রাখার ফলে। পর পর তিনবার রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ দিয়ে আপনারা উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে সহায়তা করেছেন। এ ধারাবাহিকতা অব্যাহত রেখে আমরা একটি কল্যাণকামী, উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি যাতে ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ উন্নত দেশগুলোর কাতারে সামিল হতে পারে। এজন্য অতীতে যেমন আপনারা আমাদের সঙ্গে ছিলেন, ভবিষ্যতে আমাদের সঙ্গে থাকবেন, এ আশাবাদ ব্যক্ত করছি।’
শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘আমাদের বর্তমান এবং আগামী দিনের সকল কার্যক্রমের লক্ষ্য হচ্ছে নতুন প্রজন্মের জন্য একটি সম্ভাবনাময় ভবিষ্যত বিনির্মাণ। অফুরন্ত জীবনীশক্তিতে বলীয়ান তরুণ প্রজন্মই পারে সকল কূপমণ্ডুকতা এবং প্রতিবন্ধকতা দূর করে একটি প্রগতিশীল অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়তে। যে বাংলাদেশের স্বপ্ন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেখেছিলেন। তারুণ্যের শক্তিই পারবে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন করতে। আমার দৃঢ় বিশ্বাস আমাদের প্রজন্মের পর প্রজন্ম এগিয়ে যাবে মাথা উঁচু করে ভবিষ্যতের পানে।’
আরও পড়ুন: জনগণের ভাগ্য নিয়ে কাউকে ছিনিমিনি খেলতে দেয়া হবে না: প্রধানমন্ত্রী
ওমিক্রন কড়াকড়িতে বেনাপোলে যাত্রী যাতায়াত কমেছে
ভারতে করোনার নতুন ধরন ওমিক্রনের সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রতিরোধ ব্যবস্থা নিতে নানান কঠোরতায় বেনাপোল আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট দিয়ে আবারও পাসপোর্টধারী যাত্রী যাতায়াত কমেছে।
আরও পড়ুন: বেনাপোল বন্দর দিয়ে ১২০ মেট্রিক টন বিস্ফোরক আমদানি
এদিকে, ভারত যেতে সড়ক পথে ভিসার আবেদন করলেও মিলছে আকাশ পথের ভিসা। একদিকে আকাশ পথে বিমান ভাড়া তিন গুণেরও বেশি আবার এক সপ্তাহের আগে মিলছে না টিকিট। সেই সাথে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে প্রতিদিনই বাড়ছে করোনা রোগীর সংখ্যা। সেই সাথে ডবল ডোজ টিকা নেয়ার পরও একবার ভারতে যেতে দুই বার করোনা পরীক্ষা করাতে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার টাকা খরচ হয়। নেগেটিভ রিপোর্ট নিয়ে এলেও চেকপোস্টে নানাভাবে অর্থ আদায়ে ভোগান্তিতে পড়তে হয় পাসপোর্টযাত্রীদের।
এতে জরুরি প্রয়োজনে সময় মতো যাতায়াত করতে না পেরে চিকিৎসা, ব্যবসা ও শিক্ষাখাত বিভিন্নভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে পাসপোর্টযাত্রীরা। গত সপ্তাহে দিনে যাত্রী যাতায়াতের পরিমাণ তিন হাজারের কাছাকাছি থাকলেও এখন তা কমে দাঁড়িয়েছে হাজারের মত।
চলতি সপ্তাহের প্রথম পাঁচদিনে বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে ভারতে যাতায়াত করেছেন পাঁচ হাজার ৬৮৭ জন। এর মধ্যে ভারতে গেছে দুই হাজার ২৬৭ জন ও ভারত থেকে এসেছে তিন হাজার ৪২০ জন।
আরও পড়ুন: টানা ৪ দিন বন্ধের পর বেনাপোল বন্দরে আমদানি-রপ্তানি শুরু
জানা গেছে, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশে বেনাপোল ইমিগ্রেশনে যাত্রীদের স্ক্রিনিং করা হচ্ছে। ভারত ফেরত ১২ বছরের বেশি বয়সী যাত্রীদের র্যাপিড এন্টিজেন টেস্ট করা হচ্ছে। মেডিকেল ও বিজনেস ভিসা (আমদানি রপ্তানি ডকুমেন্ট) ছাড়া কাউকে ভারতে প্রবেশ করতে দিচ্ছে না দেশটির ইমিগ্রেশন। বেশ কয়েকদিন থেকে ভারত থেকে আসা সকল যাত্রীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উচ্চ মহলের প্রতিনিধিরাও বেনাপোল চেকপোস্ট পরিদর্শন করে স্বাস্থ্য কর্মীদের ভারত ফেরত পাসপোর্টধারী যাত্রীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষায় নতুন নির্দেশনা দিয়েছেন।
ব্যবসায়ী শামিম বলেন, ব্যবসায়ীক কাজে মাঝে মধ্যে ভারত যেতে হয়। এখন ভারতীয় ইমিগ্রেশনের কড়াকড়িতে ইচ্ছে মত যাওয়া যাচ্ছে না। এতে ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশন স্বাস্থ্য কেন্দ্রের মেডিকেল অফিসার শুভঙ্কর কুমার মন্ডল বলেন, ওমিক্রন সংক্রমণ রোধে ভারত ফেরত সন্দেহভাজন যাত্রীদের করোনার র্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষা করা হচ্ছে। গত ১৫ দিনে ভারত ফেরত সন্দেহভাজন ৬৪ জন বাংলাদেশিকে পরীক্ষা করে চার জনের করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে। আক্রান্তদের রাখা হয়েছে যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা রেড জোনে।
আরও পড়ুন: বেনাপোল বন্দরকে ঘিরে সক্রিয় শক্তিশালী চোরাচালান সিন্ডিকেট
বেনাপোল বন্দরের ডেপুটি ডাইরেক্টর (ট্রাফিক) আব্দুল জলিল বলেন, বর্তমানে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে স্থলপথে যাত্রী সংখ্যা মারাত্মকভাবে হ্রাস পেয়েছে। গত পাঁচ দিনে বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে ভারতে যাতায়াত করেছেন পাঁচ হাজার ৬৮৭ জন। এর মধ্যে ভারতে গেছে দুই হাজার ২৬৭ জন ও ভারত থেকে এসেছে তিন হাজার ৪২০ জন। ওমিক্রন সংক্রমণ রোধে সরকারের নির্দেশ অনুযায়ী স্বাস্থ্য সুরক্ষা জোরদার করেছে বেনাপোল চেকপোস্টসহ বন্দরেও।
আবাসিক হোটেলে অসামাজিক কার্যকলাপ, ৭ নারীসহ আটক ১৫
কুমিল্লায় একটি আবাসিক হোটেল থেকে অসামাজিক কাজে লিপ্ত থাকার অভিযোগে সাত জন নারীসহ ১৫ জনকে আটক করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার গভীর রাতে জেলার আদর্শ সদর উপজেলার আলেখারচর এলাকায় তাদের আটক করা হয়। শুক্রবার দুপুরে তাদেরকে আদালতে সোপর্দ করা হয়।
কোতয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কমল কৃষ্ণ ধর জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক সংলগ্ন জেলার আদর্শ সদর উপজেলার আলেখারচর এলাকার বৈশাখী হোটেলে অভিযান পরিচালনা করা হয়। এসময় ওই হোটেলের বিভিন্ন কক্ষ তল্লাশি করে আপত্তিকর অবস্থায় সাত জন নারীসহ ১৫ জনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়।
অসামাজিক কার্যক্রমসহ হোটেলগুলোতে এ ধরণের কার্যক্রম বন্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে ওসি জানান।
আরও পড়ুন: কুমিল্লায় ট্রলার ডুবিতে নারী-শিশুসহ ৩ জনের মৃত্যু
ভাইরাল হওয়া ফোনালাপ এডিটেড: দাবি কুমিল্লার আ.লীগ নেতার
কুমিল্লায় বাস-কাভার্ডভ্যান সংঘর্ষে চালক নিহত, আহত ৭
ফেলানী হত্যার ১১ বছর: ন্যায় বিচারের প্রতীক্ষায় পরিবার
কুড়িগ্রাম সীমান্তে কিশোরী ফেলানী হত্যার ১১ বছরেও ন্যায় বিচার পায়নি তার পরিবার। ২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি ভোরে জেলার ফুলবাড়ী উপজেলার অনন্তপুর সীমান্ত দিয়ে বাবা নুর ইসলামের সাথে ভারত থেকে বাংলাদেশে ফিরছিলেন ফেলানী। এসময় মই বেয়ে কাঁটাতার পেরোনোর সময় ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) সদস্য অমিয় ঘোষের গুলিতে নিহত হয় ফেলানী। বাবা নুর ইসলাম প্রাণে বেঁচে গেলেও মেয়ে ফেলানীর মরদেহ দীর্ঘ সময় ঝুলে থাকে কাঁটাতারে।
পরে এ নিয়ে দেশ-বিদেশে সমালোচনার ঝড় উঠলে ২০১৩ সালের ১৩ আগস্ট ভারতে ১৮১ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের সদর দফতরে স্থাপিত জেনারেল সিকিউরিটি ফোর্স আদালতে ফেলানী হত্যার বিচার শুরু হয়। ওই বছরের ৬ সেপ্টেম্বর অভিযুক্ত বিএসএফ সদস্যকে নির্দোষ ঘোষণা করে রায় দেয় নিজ বাহিনীর আদালত।
ফেলানীর বাবা-মা রায় প্রত্যাখ্যান করলে ২০১৪ সালের ২২ সেপ্টেম্বর পুনর্বিচার কার্যক্রম শুরু করে ভারত। পরের বছর ২ জুলাই অভিযুক্তকে আবারও নির্দোষ ঘোষণা করে রায় দেয়া হয়।
এরপর ফেলানী হত্যার ন্যায় বিচারের আশায় ভারতের সুপ্রিম কোর্টে যৌথভাবে রিট আবেদন করেন ফেলানীর বাবা ও মানবাধিকার সংগঠন সুরক্ষা মঞ্চ। পরবর্তীতে ২০১৫ সালে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে গঠিত পূর্ণাঙ্গ ব্রেঞ্চ রিট আবেদনটি গ্রহণ করলেও একাধিকবার শুনানির তারিখ পরিবর্তন হওয়ায় এখনও ন্যায় বিচার পায়নি ফেলানীর পরিবার।
ফেলানীর মা জাহানারা বেগম বলেন, মেয়ে হত্যার বিচার চেয়ে মানবাধিকার সংস্থাসহ অনেকের কাছে আমারা গিয়েছি, কিন্তু ১১ বছরেও ন্যায় বিচার পেলাম না।
আরও পড়ুন: সীমান্ত হত্যার প্রতিবাদে ফেলানীর বাড়িতে আলোকচিত্র প্রদর্শনী
বাবা নুর ইসলাম বলেন, দুই দুই বার কুচবিহারে গিয়ে সাক্ষ্য দিয়েছি। বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষের নৃশংসতার বর্ননা দিয়েছি। তারপরও ন্যায্য বিচার পাইনি। তবে ভারতের সুপ্রীম কোর্টে ন্যায় বিচার পাওয়ার আশা ছাড়িনি।
ফেলানী হত্যাকাণ্ডে পিতা নুর ইসরামের আইন সহায়তাকারী কুড়িগ্রাম পাবলিক প্রসিকিউটর এস এম আব্রাহাম লিংকন জানান, একাধিকবার তারিখ বদলের পর ২০১৮ সালের ২৮ আগস্ট শুনানির তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছিল। ভারতরে সুপ্রিম র্কোটের বিচারপতি এন ভি রামানা ও বিচারপতি মোহন এম সান্তনা গৌদ্ধারকে নিয়ে গঠিত দ্বৈত বেঞ্চে শুনানির জন্য আইটেম নম্বর-৩ হিসেবে তালিকাভুক্ত থাকলেও শেষ পর্যন্ত তা হয়নি। অথচ সুপ্রিম র্কোট থেকে বিবাদীকে শোকজ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে তারা শোকজের জবাব দিয়েছেন। কিন্তু পরর্বতীতে আর শুনানি অনুষ্ঠিত হয়নি। বর্তমানে কার্যতালিকা থেকে বাদ পড়ে আছে রিটটি। করোনার কারণে রিটটির সর্বশেষ অবস্থা জানেন না তিনি।
অ্যাডভোকেট আব্রাহাম লিংকন ন্যায্য বিচারের আশা ব্যক্ত করে বলেন, ‘জেনারেল সিকিউিরিটি ফোর্স কোর্টে বাদী ছিল বিএসএফ, আসামি ছিল বিএসএফ এবং বিচারকও ছিল বিএসএফ। ফলে ন্যায্য বিচার পাওয়া যায়নি। সুপ্রিম কোর্টে ন্যায্য বিচার পাওয়া যাবে। আর এই রিট নিস্পত্তি করতে সুপ্রিম কোর্ট যে পর্যবেক্ষণ দেবেন তাতে দু-দেশের সীমান্ত ব্যবস্থাপনায় ইতিবাচক প্রভাব রাখবে বলে প্রত্যাশা করছি।’
প্রসঙ্গত, ফেলানীর বাবা নুর ইসলাম পরিবার নিয়ে ভারতে থাকতেন এবং সেখানে ইট ভাটায় কাজ করতেন। কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীর রামখানার কলোনীটারী গ্রামে মেয়ে ফেলানীর বিয়ে ঠিক হয়েঠিল। তাই মেয়েকে নিয়ে বাংলাদেশে ফিরতে ২০১১ সালরে ৬ জানুয়ারি মেয়েকে নিয়ে রওনা হন বাংলাদেশে। ৭ জানুয়ারি এ হত্যাকাণ্ড ঘটে।
আরও পড়ুন: শিবগঞ্জ সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি যুবক নিহতের অভিযোগ
প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী: হিলি সীমান্তে বিএসএফকে বিজিবি’র মিষ্টি উপহার
করোনায় কমেছে মৃত্যু, শনাক্ত বেড়ে ৫.৬৭ শতাংশ
দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় মহামারি করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা আরও বেড়েছে, তবে কমেছে মৃত্যু। শুক্রবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আরও এক জনের মৃত্যু হয়েছে এবং শনাক্ত হয়েছে এক হাজার ১৪৬ জন। শনাক্তের হার ৫ দশমিক ৬৭ শতাংশ। দেশে এ পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৮ হাজার ৯৮ জনে। মোট শনাক্তের সংখ্যা ১৫ লাখ ৯১ হাজার ৯৩ জনে পৌঁছেছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার অধিদপ্তর জানায়, আগের ২৪ ঘণ্টায় সাতজনের মৃত্যু এবং এক হাজার ১৪০ জন আক্রান্ত হয়েছে। শনাক্তে হার ছিল ৪ দশমিক ৮৬ শতাংশ।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ২০ হাজার ২০৪ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। মোট পরীক্ষায় এ পর্যন্ত শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৬৮ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় মোট মৃত্যুর হার এক দশমিক ৭৭ শতাংশ।
এদিকে ২৪ ঘণ্টায় করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন আরও ১৭০ জন। এ নিয়ে দেশে মোট সুস্থ ব্যক্তির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৫ লাখ ৫০ হাজার ৫৩৪ জনে। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯৭ দশমিক ৪৫ শতাংশ।
আরও পড়ুন: ভারতে একদিনে করোনা আক্রান্ত ৯১ হাজার, মৃত্যু ৩ শতাধিক
বিশ্ব পরিস্থিতি
বিশ্বব্যাপী ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে আতঙ্কের মাঝে করোনা আক্রান্ত ও মৃত্যু সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ছে। যুক্তরাষ্ট্রের জনস্ হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, শুক্রবার সকাল পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে করোনায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৩০ কোটি ৯৫ হাজার ৪৮১ এবং মোট মৃতের সংখ্যা ৫৪ লাখ ৭২ হাজার ৩৯ জনে দাঁড়িয়েছে।=
করোনায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ আমেরিকায় এখন পর্যন্ত মোট শনাক্তের সংখ্যা পাচঁ কোটি ৮৪ লাখ ৪৬ হাজার ১৯ জন এবং মৃত্যুবরণ করেছে আট লাখ ৩৩ হাজার ৯৫২ জন।
এদিকে, দক্ষিণ আমেরিকার দেশ ব্রাজিলে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ছয় লাখ ১৯ হাজার ৬৫৪ জনে। দেশটিতে এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছে দুই কোটি ২৩ লাখ ২৮ হাজার ২৫২ জন। মৃত্যুর দিক দিয়ে দেশটির অবস্থান দ্বিতীয়।
বাংলাদেশের প্রতিবেশি দেশ ভারতে মোট তিন কোটি ৫২ লাখ ২৩ হাজার ৭৭০ জনের সংক্রমণ চিহ্নিত হয়েছে। একই সময়ে মৃত্যু সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে চার লাখ ৮২ হাজার ৯১১ জনে।
আরও পড়ুন: ভারত থেকে করোনা পজিটিভ নিয়ে দেশে ফিরলেন ২ বাংলাদেশি
সৌরভ গাঙ্গুলির পর তার মেয়েও করোনায় আক্রান্ত
সাতক্ষীরায় নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা: নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান ও পরাজিত প্রার্থী গ্রেপ্তার
সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলায় নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতার ঘটনায় থানায় পাল্টাপাল্টি মামলা হয়েছে। মামলার আসামি নৌকা প্রতীক নিয়ে নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান শাহনেওয়াজ ডালিম ও পরাজিত প্রার্থী অহিদুল ইসলামসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
শুক্রবার ভোরে উপজেলার খাজরা ইউনিয়নের গদাইপুর, খাজরাসহ বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার অন্যান্যরা হলেন- সাবেক চেয়ারম্যান রুহুল কুদ্দুস, গোলাম মোস্তফা, মোস্তাকিন মোল্যা ও গোলাম রাব্বি।
স্থানীয়রা জানায়, বুধবার শান্তিপূর্ণ ভোট শেষ হয়। পরদিন খাজরা ইউনিয়নের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান শহনেওয়াজ ডালিমের আনন্দ মিছিল থেকে অহিদুল ইসলামের বাড়ির দিকে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে তার সমর্থকরা। এ ঘটনার পর পরাজিত প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী অহিদুল ইসলামের বাড়ির ছাদের ওপর থেকে নব নির্বাচিত চেয়ারম্যান শাহনেওয়াজ ডালিম ও তার সহযোগীদের ওপর বৈধ অস্ত্র দিয়ে কয়েক রাউন্ড গুলিবর্ষণ করা হয়। এতে উভয় পক্ষের কমপক্ষে ১০ জন আহত হন। এর মধ্যে চার জন গুলিবিদ্ধ হন। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
আরও পড়ুন: সিরাজগঞ্জে গ্রেপ্তার ২, ইয়াবা জব্দ
আশাশুনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম কবির জানান, এ ঘটনায় শাহনেওয়াজ ডালিম তার প্রতিদ্বন্দ্বী ওহিদুল ইসলামসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।
অপরদিকে, অহিদুল ইসলামের প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট সাবেক চেয়ারম্যান রুহুল কুদ্দুস বাদী হয়ে শাহনেওয়াজ ডালিমসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।
এই দুই মামলায় নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান শাহনেওয়াজ ডালিম ও তার প্রতিদ্বন্দ্বী পরাজিত প্রার্থী ওহিদুল ইসলামসহ মোট ছয় জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শুক্রবার দুপুরে তাদেরকে সাতক্ষীরা আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: ফেনীতে হত্যা মামলায় ইউপি চেয়ারম্যান গ্রেপ্তার
স্বামীর যৌতুক মামলায় স্ত্রীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা!
চাঁপাইনবাবগঞ্জে পুলিশের ওপর হামলা: ৩৮৫ জনকে আসামি করে মামলা
চাঁপাইনবাবগঞ্জে নির্বাচনে পরাজিত ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য প্রার্থীর সমর্থকরা পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় ৩৮৫ জনকে আসামি করে একটি মামলা হয়েছে।
শুক্রবার দুপুরে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর থানায় মামলাটি দায়ের করা হয়।
চাঁপাইনাবগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাফফর হোসেন জানান, সদর থানর উপপরিদর্শক (এসআই) ওসমান আলী বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেছেন। মামলায় ১৩৫ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ২৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে বিএনপি-পুলিশ সংর্ঘষ: শাহাদাতসহ ৭৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা
ওসি জানান, এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৫ জন আটক করা হয়েছে। তাদেরকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, বুধবার (৫ জানুয়ারি) অনুষ্ঠিত ইউপি নির্বাচনে জেলার সদর উপজেলার ঝিলিমইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডে ইউপি সদস্য নির্বাচিত হন শরিয়ত আলী। নির্বাচনে নিজেদের পরাজয় মেনে নিতে না পেরে পরাজিত প্রার্থী মনিরুল ইসলাম মনি ও আব্দুল কুদ্দুস সেরাতাল এক হয়ে তাদের শতাধিক সমর্থকসহ লাঠিসোটা নিয়ে বৃহস্পতিবার বিকালে শরিয়ত আলীর বাড়িতে হামলা চালায়। খবর পেয়ে পুলিশ বাধা দিতে যায় এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। এই সময় তারা ইটপাকেল ও লাঠিসোটা নিয়ে পুলিশের ওপর হামলা করে। পরে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনণে আনে।
হামলায় পাঁচ পুলিশ সদস্য আহত হন। এদের মধ্যে তিন জনকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
আরও পড়ুন: ঝিনাইদহে অপহরণ মামলা তুলে না নেয়ায় বাদীকে মারধর
খুলনায় ১১ জানুয়ারি থেকে রাত ৮টার পর মার্কেট-দোকান বন্ধ থাকবে
আগমী ১১ জানুয়ারি থেকে রাত ৮টার পরে খুলনা মহানগরীতে মার্কেট ও দোকান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকালে জেলা প্রশাসক মো. মনিরুজ্জামান তালুকদারের সভাপতিত্বে তাঁর সম্মেলনকক্ষে ‘খুলনা জেলা ও মহানগর করোনাভাইরাস প্রতিরোধ কমিটি’র সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক। প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র বলেন, ‘মানুষ স্বাস্থ্যবিধি মানলে করোনা নিয়ন্ত্রণে থাকবে। প্রতিবেশি দেশ ভারতে করোনা ভাইরাসের নতুন ধরণ এর বিস্তারের কারণে আমরা ঝুঁকির মধ্যে আছি। ভাইরাসের নতুন ধরণ ছড়িয়ে পড়ার আগেই আমাদের প্রস্তুতি নিয়ে সচেতন থাকতে হবে এবং স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। আগমী ১১ জানুয়ারি থেকে রাত ৮টার পরে নগরীতে মার্কেট-দোকান খোলা রাখা যাবে না। তবে নিত্য প্রয়োজনীয় কাঁচামাল পরিবহন ও কাঁচামালের আড়তের ক্ষেত্রে এসময়সীমা প্রযোজ্য নয়।’
আরও পড়ুন: খুলনায় ‘কিশোর গ্যাং’র ৫ সদস্য আটক
সভায় সিভিল সার্জন ডা. নিয়াজ মোহাম্মদ জানান, বর্তমানে খুলনা জেলায় করোনা শনাক্ত হওয়া একজন রোগী হাসপাতালে ভর্তি আছেন। করোনার শুরু থেকে এ পর্যন্ত জেলায় এক লাখ ৬১ হাজার সাতশত ২০টি পরীক্ষার বিপরীতে ২৮ হাজার ১৯ জন রোগীর করোনা শনাক্ত হয়। গত নভেম্বর মাসে জেলায় তিন জন করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। ডিসেম্বর মাসে করোনায় জেলায় কোনো প্রাণহানি হয়নি। তবে বর্তমান প্রেক্ষাপটে সকল স্থানে স্বাস্থ্যবিধি মানা ও মাস্ক পরিধাণের বিকল্প নেই। টিকা নেয়ার পরে করোনা আক্রান্ত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে মৃত্যুহার অনেক কম। তাই টিকা গ্রহণে সবাইকে উদ্বুদ্ধ করা প্রয়োজন।
সভায় খুলনা সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা লস্কর তাজুল ইসলাম, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহবুব হাসান, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আছাদুজ্জামান, খুলনা আঞ্চলিক তথ্য অফিসের উপ-প্রধান তথ্য অফিসার জিনাত আরা আহমেদ, খুলনা প্রেসক্লাবের সভাপতি এসএম নজরুল ইসলামসহ কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: খুলনায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার
নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ায় খুলনা শিশু হাসপাতালে রোগীর ভিড়