বাংলাদেশ
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তথ্য-প্রযুক্তিনির্ভর সেবার মান বাড়িয়েছে: মন্ত্রী
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন বলেছেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তথ্য-প্রযুক্তিনির্ভর সেবা এবং সেবার মান বৃদ্ধি করেছে।
রবিবার বিকেলে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আইসিটি উইং আয়োজিত ৫ম জাতীয় ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কথা বলেন। সরকারি সফরে তুরস্কে অবস্থান করায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ অনুষ্ঠানে ভার্চ্যুয়ালি অংশগ্রহণ করেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ড. মোমেন বলেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় ইতোমধ্যে 'দূতাবাস' অ্যাপ চালু করেছে। ফলে ঘরে বসেই মোবাইল ফোনের মাধ্যমে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন সেবা গ্রহণ করা সম্ভব হচ্ছে।
তিনি বলেন, বিদেশে বাংলাদেশের মিশনগুলোর সঙ্গে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দৈনন্দিন যোগাযোগের জন্য 'বৈঠক' নামক ভার্চ্যুয়াল প্লাটফর্ম ব্যবহার শুরু করেছে। সরকার ইতোমধ্যে ই-পাসপোর্ট চালু করেছে এবং ভবিষ্যতে ই-ভিসা চালু করা হবে বলেও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
আরও পড়ুন: নারীদের আত্মনির্ভরশীল করতে সরকার নানা পদক্ষেপ নিয়েছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তথ্যপ্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহারের মাধ্যমে সেবাপ্রত্যাশীদের কাঙ্ক্ষিত সেবা দেয়াকে পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিচ্ছে। প্রশাসনিক ও কনস্যুলার সেবাকে সেবাপ্রত্যাশীদের কাছে আরও সহজকরণের জন্য মন্ত্রণালয়ের ৬২টি সেবাকে মাইগভ প্ল্যাটফরমের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ইউনিয়ন ও গ্রাম পর্যায়ের মানুষ ঘরে বসেই যাতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সেবা গ্রহণ করতে পারে সেজন্য উক্ত সেবাসমূহকে জাতীয় কল সেন্টার ৩৩৩ এবং ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের মাধ্যমে প্রদানের প্রক্রিয়া চলমান। এছাড়াও মন্ত্রণালয়ের সেবা সহজীকরণের লক্ষ্যে এটুআই প্রকল্পের সহযোগিতায় বিদেশস্থ সকল বাংলাদেশি মিশনের জন্য সমরূপ ওয়েবসাইট নির্মাণ করা হয়েছে বলে তিনি জানান। বর্তমান সরকারের নির্বাচনী ইশতেহারের অনুকরণে সফলভাবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, রোবটিক্স, বিগ ডাটা, ব্লকচেইন, আইওটি-সহ ভবিষ্যৎ প্রযুক্তির বিকাশ ঘটানো এবং ডিজিটাল যুগে বিশ্ব পরিমন্ডলে অগ্রগামী ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়ার ব্যাপারে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্র সচিব (সিনিয়র সচিব) মাসুদ বিন মোমেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের গৃহীত উদ্যোগগুলো তুলে ধরেন এবং ভবিষ্যতের জন্য ‘শেখ হাসিনা নিউরাল নেটওয়ার্ক’ তৈরিসহ বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণের অভিপ্রায় ব্যক্ত করেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (পশ্চিম ও আইসিটি) শাব্বির আহমেদ চৌধুরী পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আইসিটি ভিত্তিক সাতটি গৃহীত উদ্যোগের কথা উল্লেখ করেন।
আরও পড়ুন: সম্পর্কে প্রভাব পড়বে কিনা যুক্তরাষ্ট্রের ওপর নির্ভর করবে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
এটুআই এর প্রকল্প পরিচালক ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ুন কবির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং এটুআই এর স্ট্র্যাটেজিক পার্টনারশিপের অভিপ্রায় ব্যক্ত করেন। বেসিসের প্রেসিডেন্ট সৈয়দ আলমাস কবির তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ক্ষেত্রে পাঁচ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, আইসিটি বিভাগ ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করার সংকল্পের কথা জানান।
উল্লেখ্য, সপ্তাহব্যাপী নানা আয়োজনের ধারাবাহিকতায় ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবস উপলক্ষে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ‘বাংলাদেশ ইন ২০৪১: এ ড্রিম ইন মেকিং’ শীর্ষক একটি বৈশ্বিক অণুগল্প প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। এতে বিভিন্ন দেশ থেকে বিভিন্ন ভাষায় শতাধিক অনুগল্প জমা হয়। এছাড়াও মন্ত্রণালয়ের নবীন কর্মকর্তাদের জন্য একটি বিতর্ক প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। এ অনুষ্ঠানে মাইগভ প্ল্যাটফর্মের অধীনে মন্ত্রণালয়ের কন্স্যুলার ও প্রশাসনিক সেবা সেবাপ্রত্যাশী নাগরিকদের ব্যবহারের উন্মুক্ত করা হয়।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক (আইসিটি) ড. সৈয়দ মুনতাসির মামুনের সঞ্চালনায় হাইব্রিড ফরম্যাটে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে বিভিন্ন দেশে নিয়োজিত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত, বিদেশে বাংলাদেশ মিশনগুলোর কর্মকর্তা এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা অংশগ্রহণ করেন।
আরও পড়ুন: ঢাকা ও দিল্লির সম্পর্ক অন্যদের জন্য দৃষ্টান্ত : পররাষ্ট্রমন্ত্রী
দেশে বৈষম্য বৃদ্ধি পাচ্ছে: পরিকল্পনামন্ত্রী
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত এক আন্তর্জাতিক সভায় পরিকল্পনা মন্ত্রী মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান বলেন, ‘বাংলাদেশে দিনে দিনে বৈষম্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। এটা অস্বীকার করার উপায় নেই। তবে এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী চিন্তিত। প্রধানমন্ত্রী এখন আমাদের শেষ ভরসা।’
রবিবার জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের জহির রায়হান মিলনায়তনের সেমিনার কক্ষে আন্তর্জাতিক জন-ইতিহাস ইনস্টিটিউট আয়োজিত ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এন্ড হিজ লিগ্যাসি’- শীর্ষক দুই দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক কনফারেন্সের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
এসময় তিনি আরও বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু ছিলেন অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গঠনের স্বপ্নদ্রষ্টা। সেকারণেই এখন কোন পূজা মন্ডপে কিংবা ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে সাম্প্রদায়িক হামলা হতে দেখলে আমাদের কষ্ট লাগে।’
আরও পড়ুন: নেতিবাচক রাজনীতি থেকে বিএনপিকে বেরিয়ে আসার আহ্বান পরিকল্পনামন্ত্রীর
এর আগে বেলা ১২ টায় কনফারেন্সের উদ্বোধন করেন উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম।
উদ্বোধনী বক্তব্যে উপাচার্য বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সাধারণ মানুষের নেতা ছিলেন। মাটির সঙ্গে যাদের সম্পর্ক তিনি সবসময় তাদের কথা বলতেন। বঙ্গবন্ধুকে জানতে হলে তাঁর চিন্তা ও কর্মকে সাধারণের মাঝে ছড়িয়ে দিতে হবে। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে যত বেশি পাঠ করা হবে ততই বাঙালি ভেতর থেকে পরিবর্তিত হবে, মানুষ হবে।’
এছাড়াও এসময় সম্মানিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. পবিত্র সরকার।
আরও পড়ুন: আ. লীগ একটি রাজনৈতিক দল নয়, রাজনৈতিক আন্দোলন: পরিকল্পনামন্ত্রী
শেখ হাসিনা একজন স্ট্রং ক্লাইমেট ফাইটার: পরিকল্পনামন্ত্রী
গাজীপুরে ঝুট গুদামে আগুন
গাজীপুরের আমবাগ এলাকায় ঝুট গুদামে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। ফায়ার সার্ভিসের চারটি ইউনিট প্রায় তিন ঘন্টা চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
স্থানীয়রা জানায়, নগরের আমবাগ এলাকার হালিম মিয়ার একটি গোডাউন থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। পরে আগুনে ছয়টি ঝুটের গুদামসহ পাশে থাকা একটি বসতবাড়িতে ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয়রা আগুন নেভাতে ব্যর্থ হয়ে ফায়ার সার্ভিসে খবর দেয়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের চারটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে।
গাজীপুর ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক আব্দুল হামিদ জানায়, রবিবার দুপুর ২টায় খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণের কাজ শুরু করে পরে প্রায় তিন ঘন্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। তবে আগুন লাগার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।
আরও পড়ুন: দিনাজপুরে অগ্নিকাণ্ডে ১৫ ঘর ভস্মীভূত!
সাজেকে অগ্নিকাণ্ড, ৪ রিসোর্ট ও ২ রেস্টুরেন্ট পুড়ে ছাই
মুগদা অগ্নিকাণ্ড: পরিবারের সর্বশেষ আহত সদস্যের মৃত্যু
এজাহার পরিবর্তনের মামলায় আত্মসমর্পণ করতে এসে ওসি শাকিল কারাগারে
রাজশাহীতে শ্রমিক নেতা নুরুল ইসলাম হত্যায় এজাহার পরিবর্তনের মামলায় আদালতে আত্মসমর্পণ করতে এসে কারাগারে গেলেন পুঠিয়া থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাকিল উদ্দিন আহমেদ।
হাইকোর্টের আদেশ অনুযায়ী রবিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজশাহী বিভাগীয় স্পেশাল জজ আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করেন ওসি শাকিল। পরে শুনানি শেষে আদালতের বিচারক ইসমত আরা জামিন আবেদন না মঞ্জুর করে ওসি শাকিলকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
ওসি শাকিলের আইনজীবী আসলাম সরকার জানান, হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী ওসি শাকিল উদ্দিন আহমেদ গত ৮ ডিসেম্বর আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। কিন্তু ওই দিন আদালতে পূর্ণাঙ্গ নথি না থাকায় শুনানি হয়নি। আজ রবিবার জামিন আবেদনের শুনানির দিন ধার্য ছিল। জামিন আবেদনের শুনানি শেষে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠিয়েছেন।
জানা যায়, হত্যাকাণ্ডের শিকার শ্রমিকনেতা নুরুল ইসলামের এজাহার পরিবর্তন করা হয়েছে বলে অভিযোগ করে তার মেয়ে নিগার সুলতানা হাইকোর্টে রিট করেন। এজাহার বদলের অভিযোগে প্রাথমিকভাবে সত্যতা মেলায় ওসি শাকিলকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়।
আরও পড়ুন: দিনাজপুরে ওসির নম্বর ক্লোনিং করে চাঁদা দাবি
একই সঙ্গে ওসিকে কেন সাময়িক বরখাস্ত করা হবে না এবং তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ কেন দেয়া হবে না তাও জানতে চাওয়া হয়েছিল রুলে। স্বরাষ্ট্রসচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক, দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান, রাজশাহীর পুলিশ সুপার ও পুঠিয়া থানার ওসিসহ সাত বিবাদীকে চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়।
নুরুল ইসলামকে হত্যার ঘটনায় তাঁর মেয়ে নিগার পুঠিয়া থানায় আবদুর রহমানসহ আটজনের নাম উল্লেখ করে এজাহার দাখিল করেছিলেন। পরে ওসি শাকিল উদ্দিন এজাহার সংশোধন করতে বলেন। পরে এজাহার সংশোধন করে দাখিল করা হয়। এ বিষয়ে পদক্ষেপ না নেয়ায় নিহত ব্যক্তির স্ত্রী রাজশাহীর আদালতে একটি মামলা করেন। তখন পুলিশ একটি এজাহার দাখিল করে।
এই এজাহার অনুসারে, অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা হয়। তবে আসামি হিসেবে ওই আটজনের নাম নেই। যে এজাহার নথিভুক্ত হয়েছে, তা নিগারের নয়। নিগারের দাখিল করা এজাহার বদলে দেয়া হয়। এ ছাড়া ওসির বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অনিয়মের অভিযোগ এবং ফৌজদারি মামলাও রয়েছে। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করে কোনো ফল না পেয়ে নিগার হাটকোর্টে রিটটি করেন।
আরও পড়ুন: বিবস্ত্র করে নির্যাতনে বেগমগঞ্জে ওসিসহ ৩ পুলিশকে বরখাস্তের রায় স্থগিত
নোয়াখালীতে নারীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন: ওসিসহ ৫ জনকে বরখাস্তের নির্দেশ
লক্ষ্মীপুরে এসএসসি পরীক্ষায় শর্ট সিলেবাসের দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ
লক্ষ্মীপুরে ৩০ শতাংশ শর্ট সিলেবাসে এসএসসি পরীক্ষা নেয়ার দাবিতে বিক্ষোভ, মানববন্ধন ও ঢাকা-লক্ষ্মীপুর সড়ক ঘন্টাব্যাপী অবরোধ করেছে শিক্ষার্থীরা। রবিবার দুপুরে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে এ কর্মসূচি পালন করে তারা।
পরে পুলিশ এসে লাঠিচার্জ করে শিক্ষার্থীদের অবরোধ তুলে দেয়।
জানা যায়, রবিবার বেলা ১১টার দিকে ২০২২ সালের শতাধিক এসএসসি পরীক্ষার্থী প্রেসক্লাব এলাকায় মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে। পরে ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে জেলা প্রশাসক কার্যালয় সামনে গিয়ে সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন শুরু করে। এসময় তারা ২০২১ সালের মতো সংক্ষিপ্ত ৩০ শতাংশ সিলেবাসে গ্রুপ ভিত্তিক তিনটি বিষয়ে পরীক্ষা নেয়ার দাবিতে বিক্ষোভ করতে থাকে। এক পর্যায়ে সড়ক অবরোধ করে সকল যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয় তারা। এতে দুর্ভোগে পড়েন ঢাকা-চট্টগ্রামগামী সাধারণ যাত্রীরা।
আরও পড়ুন: এবার লক্ষ্মীপুরে ৭ মাদরাসাছাত্রের চুল কর্তন, অভিযুক্ত শিক্ষক আটক
পরে দুপুর ১২টায় লক্ষ্মীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পলাশ কান্তি নাথ, মিমতানুর রহমান ও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইমরান হোসেন ঘটনাস্থলে এসে শিক্ষার্থীদের লাঠিচার্জ করে ধাওয়া করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এসময় রাকিব, ওয়াসিম, সাদনামসহ পাঁচ শিক্ষার্থী আহত হন। তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
এর আগে তারা জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে শিক্ষামন্ত্রীর বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করে।
এদিকে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ নিয়ে পুলিশ ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বক্তব্য দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
আরও পড়ুন: লক্ষ্মীপুরে ৫০০ টাকার জন্য অটো চালককে পিটিয়ে ‘হত্যা’
লক্ষ্মীপুরে সন্ত্রাসী হামলায় আ’লীগ নেতা নিহত
সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ গড়ে তুলতে আমাদের ‘সৈনিকেরা’ প্রস্তুত: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘বাংলাদেশকে ২০৪১ সালের সমৃদ্ধশালী দেশ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য আমাদের সৈনিকেরা প্রস্তুত হয়েছে। ডিজিটাল বাংলাদেশে তরুণ প্রজন্ম তাদের প্রতিভা বিকাশের সুযোগ কাজে লাগিয়ে ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত বাংলাদেশ গড়ে তুলবে।’
রবিবার দুপুরে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবস-২০২১’ উদযাপন এবং ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ পুরস্কার’ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।তিনি গণভবন থেকে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আইসিটি মন্ত্রণালয় আয়োজিত মূল অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সের সাহায্যে ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন,‘আমি আজ বলতে পারি আমার আর কোনো দুশ্চিন্তা নাই। প্রযুক্তি শিক্ষায় এবং জ্ঞান ভিত্তিক যে সমাজ আমরা গড়তে চাই- আমাদের দেশটা সে পথে অনেকদূর এগিয়ে গেছে। সবচেয়ে বড় কথা হলো বাংলাদেশকে ২০৪১ সালের উন্নত বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য আমাদের সৈনিকেরা প্রস্তুত হয়েছে।’
ডিজিটাল সেক্টরে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ মোট ২৪ জন ব্যক্তি, দল ও সংস্থা এই পুরস্কার পেয়েছে। এর মধ্যে জাতীয় পর্যায়ে ১২টি এবং জেলা পর্যায়ে ১২টি পুরস্কার দেয়া হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে তথ্য প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক প্রাপকদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন। এসময় প্রধানমন্ত্রী যুবক ও অন্যান্য পুরস্কারপ্রাপ্তদের অভিনন্দন জানান।
আরও পড়ুন: সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সক্ষমতা অর্জন করেছি: প্রধানমন্ত্রী
ডিজিটাল যন্ত্রপাতি রপ্তানি
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সঠিকভাবে ডিজিটাল ডিভাইস উৎপাদন ও রপ্তানি করা গেলে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে তা তৈরি পোশাকসহ অন্য সব খাতকে ছাড়িয়ে যেতে পারে।
বর্তমানে পোশাক রপ্তানি বৈদেশিক মুদ্রার সবচেয়ে বড় উৎস উল্লেখ করে তিনি বলেন, তার সরকারের লক্ষ্য রয়েছে ডিজিটাল ডিভাইসের উৎপাদন ও রপ্তানি বৃদ্ধি করা এবং মেধাবী শিক্ষার্থীদের এই খাতে তাদের মেধা বিকাশের সুযোগ তৈরি করা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন,আমি মনে করি যদি আমরা এই ডিজিটাল ডিভাইসগুলো উৎপাদন এবং রপ্তানি করতে পারি। তবে এটা বাকি সব খাতকে ছাড়িয়ে যাবে। সরকারের লক্ষ্য রয়েছে ২০২৫ সালের মধ্যে ডিজিটাল ডিভাইস খাতে রপ্তানি আয় পাঁচ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত করার।
ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার জন্য আওয়ামী লীগের নির্বাচনী অঙ্গীকারের কথা বলতে গিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, তাদের লক্ষ্য ছিল কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা যাতে তরুণরা ঘরে বসে তাদের প্রতিভা বিকাশ করতে পারে এবং একই সঙ্গে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী তার আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়, আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এবং এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।
আরও পড়ুন: সব বাধা ভেঙে নারীদের এগিয়ে যাওয়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার প্রযুক্তির সাহায্যে বাংলাদেশের জনগণকে যে সেবা দিতে চেয়েছিল, তা ইতোমধ্যে দেয়া হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথের দাম ৪০০ টাকার নিচে নামিয়েছে, যা বিএনপি সরকারের সময় ছিল ৭৮ হাজার টাকা।
তিনি বলেন, আমরা ৫জি চালু করতে যাচ্ছি।
বাংলাদেশে ১৩ কোটি ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর পাশাপাশি ১৮ দশমিক ১৩ কোটি মোবাইল সিম ব্যবহার করা হয় উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, প্রতি ঘরে এখন ইন্টারনেট সেবা পাওয়া যাচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন। স্বাগত বক্তব্য দেন আইসিটি বিষয়ক সিনিয়র সচিব এনএম জিয়াউল আলম।
আরও পড়ুন: বিশ্বের ৪৩তম ক্ষমতাধর নারী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
কোভ্যাক্সের আওতায় ১২ লাখ অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা পেলো বাংলাদেশ
কোভ্যাক্স সুবিধার আওতায় বাংলাদেশকে করোনার অ্যাস্ট্রেজেনেকা টিকার ১২ লাখের বেশি ডোজ অনুদান হিসেবে দিয়েছে সুইজারল্যান্ড, সুইডেন ও নরওয়ে। রবিবার বিকালে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় এক অনুষ্ঠানে তিন দেশের রাষ্ট্রদূত প্রতীকীভাবে বাংলাদেশ সরকারের কাছে এ টিকা হস্তান্তর করেন।
বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের জ্যৈষ্ঠ সচিব লোকমান হোসেন মিয়া এ টিকা গ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (পশ্চিম) এবং অন্যান্য ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।
যৌথ বিবৃতিতে সুইডেন, সুইজারল্যান্ড ও নরওয়ের রাষ্ট্রদূতরা বৈশ্বিক মহামারিতে কার্যকর বহুপাক্ষিক সাড়াদানের গুরুত্ব তুলে ধরেন এবং নিরাপদ ও কার্যকর করোনার টিকায় দ্রুত সমান প্রবেশাধিকারের জন্য তাদের দেশের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।
দেশ তিনটি ‘অ্যাক্সেস টু কোভিড-১৯ টুলস অ্যাক্সিলারেটর’ উদ্যোগে তাদের সংযুক্ততা বজায় রেখে আর্থিক সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে এবং কোভ্যাক্স সুবিধায় টিকা দান করেছে।
মহামারির শুরুর পর থেকে তারা বাংলাদেশ জুড়ে বিভিন্ন ফ্রন্টলাইনের উদ্যোগে দ্বিপাক্ষিকভাবে অবদান রেখেছে এবং সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ও প্রত্যন্ত সম্প্রদায়ের কাছে পৌঁছেছে।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে করোনার অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকার ১২ লাখের বেশি ডোজ বরাদ্দ ও বিতরণের জন্য কোভ্যাক্স এর সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানান রাষ্ট্রদূতরা।
সুইডেন পাঁচ লাখ ৩৫ হাজার ২০০ ডোজ, সুইজারল্যান্ড চার লাখ ৪৬ হাজার ডোজ ও নরওয়ে দুই লাখ ৩৭ হাজার ৬০০ ডোজ টিকা অনুদান হিসেবে প্রদান করেছে।
বাংলাদেশ সরকারের কাছে টিকার চালান ও হস্তান্তরের আয়োজনের জন্য ইউনিসেফকেও ধন্যবাদ জানিয়েছেন রাষ্ট্রদূতরা।
আরও পড়ুন: চলতি মাসে কোভ্যাক্সের ৩৫ লাখ টিকা পাবে বাংলাদেশ: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
কোভ্যাক্সের ওপর নির্ভর রোহিঙ্গাদের টিকাদান
মাত্র এক সপ্তাহে যেভাবে বদলে গেলো মুরাদের জীবন!
মাত্র এক সপ্তাহ আগেও ডা. মুরাদ হাসান ছিলেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের ক্ষমতাধর প্রতিমন্ত্রী। কিন্তু আজ নিজের মুখ ঢাকার মতো কোনো জায়গাও খুঁজে পেলেন না তিনি।
নারী বিদ্বেষী বক্তব্য দিয়ে সময়ের ব্যবধানে মুরাদ একে একে মন্ত্রিত্ব, দলীয় পদ ও রাজনৈতিক আশ্রয় হারিয়েছেন; এমনটাই বিশ্বাস করেন রাজনীতি বিশ্লেষকরা।
তবে মন্ত্রিত্ব ও দলীয় পদ হারালেও মুরাদ এখনও একজন সংসদ সদস্য।
ব্যাপক সমালোচনার মধ্যে নিজেকে আড়াল করার জন্য মুরাদ দেশ ত্যাগ করেন। তবে তার এ চেষ্টাও ব্যর্থ হয়েছে। কানাডা ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে ঢুকার চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে রবিবার বিকালে দেশে ফিরে এসেছেন তিনি।
হযরত শাহাজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন পুলিশের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা ইউএনবিকে বলেন, মুরাদ বিকাল ৫টার দিকে ই কে ৫৮৬ নামে এমিরেটসের একটি ফ্লাইটে করে দেশে ফেরেন এবং সন্ধ্যা ৬টার দিকে বিমানবন্দরের অভ্যন্তরীণ টার্মিনাল দিয়ে বের হন তিনি। এ সময় গণমাধ্যমের দৃষ্টি এড়াতে জ্যাকেটের হুডি ও মাস্ক দিয়ে নিজের মুখ ঢেকে রাখেন তিনি।
আরও পড়ুন: মুরাদের বিরুদ্ধে সিলেটে মামলা, শুনানি ১৫ ডিসেম্বর
ইভ্যালির প্রতারণা: আগাম জামিন চেয়ে আবেদন মিথিলা ও শবনম ফারিয়ার
দেশের আলোচিত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির হয়ে প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে করা মামলায় আগাম জামিন চেয়ে আবেদন করেছেন অভিনেত্রী রাফিয়াত রশিদ মিথিলা ও শবনম ফারিয়া।
মিথিলার পক্ষে আইনজীবী নিয়াজ মোর্শেদ এবং ফারিয়ার পক্ষে করেন আইনজীবী জেসমিন সুলতানা পৃথক আবেদন দুটি দাখিল করেন।
আগামীকাল সোমবার বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি মো. আতোয়ার রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চে এই আবেদনের শুনানি হতে পারে।
আরও পড়ুন: ইভ্যালির সিইও রাসেলের বিরুদ্ধে সাতক্ষীরার আদালতে মামলা
এর আগে গত ৪ ডিসেম্বর সাদ স্যাম রহমান নামে ইভ্যালির এক গ্রাহক ধানমণ্ডি থানায় মামলাটি করেন। মামলায় ইভ্যালির এমডি মোহাম্মদ রাসেল, চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিন, তাহসান খান, রাফিয়াত রশিদ মিথিলা ও শবনম ফারিয়াসহ নয়জনকে আসামি করা হয়েছে।
এ মামলায় ইভ্যালির এমডি মোহাম্মদ রাসেল ও চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
মামলার অভিযোগের ব্যাপারে ধানমণ্ডি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকরাম আলী মিয়া জানান, মামলায় বাদী অভিযোগ করেন, আসামিরা তার তিন লাখ ১৮ হাজার টাকা আত্মসাতে সাহায্য করেছে। তার টাকা তিনি এখনো উদ্ধার করতে পারেননি। তাই তিনি বাধ্য হয়ে মামলা করেছেন।
আরও পড়ুন: ইভ্যালির গ্রাহকরা ৬ মাস পাওনার জন্য বোর্ডকে চাপ দিতে পারবেন না: হাইকোর্ট
ইভ্যালি পরিচালনায় বিচারপতি মানিককে প্রধান করে ৫ সদস্যের বোর্ড
মার্কিন নিষেধাজ্ঞা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে, জঙ্গীবাদ উদ্বুদ্ধ করতে: ওবায়দুল কাদের
মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) এবং সংস্থাটির সাবেক ও বর্তমান সাত কর্মকর্তার ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত এবং এটি দেশে জঙ্গীবাদ উদ্বুদ্ধ করবে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের একটি নিরাপত্তা বাহিনীর প্রতি তাদের (যুক্তরাষ্ট্র) এ নিষেধাজ্ঞা রাজনৈতিক ও একপেশে এবং বাংলাদেশকে নিজেদের দাসত্বের রাজ্যে সমর্পিত হতে বাধ্য করার ঘৃণ্য অপচেষ্টা বলে দেশের জনগণ মনে করে।’
রবিবার সকালে সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে সেতুমন্ত্রী এসব মন্তব্য করেন।
১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে আমেরিকা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে সপ্তম নৌবহর পাঠিয়েছিল জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বাংলাদেশে খাদ্য সংকটের সময় ১৯৭৪ সালে কিউবার কাছে পাট বিক্রির অজুহাতে খাদ্যবাহী জাহাজ মাঝপথ থেকে ফিরিয়ে নিয়েছিল আমেরিকা।’
তিনি বলেন, ‘ ৭১'র গৌরবময় মুক্তিযুদ্ধ এবং ৭৫'র বঙ্গবন্ধুর হত্যাকান্ডের বিষয়ে আমেরিকার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্নচিহৃ ঝুলে আছে, তবুও বন্ধুত্বের প্রশ্নে স্পর্শকাতর এ বিষয়গুলোকে বাধা হয়ে দাঁড়াতে দেয়া হয়নি।’
আরও পড়ুন: দেশে গণতন্ত্রের বিকাশ অব্যাহত রয়েছে: ওবায়দুল কাদের
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘দ্বিপক্ষীয় এবং অভিন্ন ইস্যুসহ বহুপক্ষীয় ইস্যুতে দুই দেশ নিজ নিজ অবস্থান থেকে কাজ করছে।’
বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন লগ্নে যুক্তরাষ্ট্রের এমন একটি সিদ্ধান্তে আমরা বিস্মিত এবং ব্যথিত হয়েছি বলেও মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
র্যাব একটি এলিট ফোর্স হিসেবে কাজ করছে, সাম্প্রতিক জঙ্গিবাদ দমনে এই বাহিনী অত্যন্ত পেশাদারিত্বের পরিচয় দিয়ে কাজ করছে বলে দাবি করেন ওবায়দুল কাদের।
এ বাহিনীর কেউই আইনের উর্ধ্বে নয় উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জের ঘটনায় এ বাহিনীর কমপক্ষে সাতজন মৃত্যুদণ্ডে দন্ডিত হয়েছিল। কোন অভিযোগ থাকলে বাহিনী নিজে কিংবা মন্ত্রণালয় তদন্ত করে ব্যবস্থা নিচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘দুদক যে কোন তদন্ত কাজ চালিয়ে যেতে স্বাধীন ভূমিকা পালন করছে। কিন্তু ঢালাওভাবে অভিযোগ এনে একটি বাহিনীর প্রধান এবং সাবেক কর্মকর্তাদের চিহ্নিত করে নিষেধাজ্ঞা প্রদান অযৌক্তিক। প্রকৃতপক্ষে এ ধরনের সিদ্ধান্তই এক ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘন।’
সেতু মন্ত্রী বলেন, ‘ যুক্তরাষ্ট্র আজ মানবাধিকার নিয়ে কথা বলছে, আমরা তাদের দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে আগে পর্যবেক্ষণের অনুরোধ করছি। জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যু গোটা বিশ্বকে কাঁপিয়ে দিয়েছে, যা নিয়ে মার্কিন প্রশাসনকে কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হয়েছে। সেখানে দৃশ্যমান বর্ণবাদ বিরাজ করছে বলে অনেকেই মত প্রকাশ করেছিলেন।’
আরও পড়ুন: বিভাজন রেখা তৈরি করতে চায় বিএনপি ও তাদের দোসররা: ওবায়দুল কাদের
কৃষ্ণাঙ্গদের প্রতি বৈষম্য এবং নিপীড়ন প্রশ্নে খোদ জাতিসংঘ উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল জানিয়ে ওবায়দুল কাদের প্রশ্ন করেন, ‘মেক্সিকো-ইউএসএ সীমান্তে কতজন মারা গেছে? যেখানে বন্দুক হামলায় প্রতি বছর লাখো মানুষ মারা যায়, নির্বাচনে হেরে যেদেশের ক্যাপিটল হিল দখল করতে গিয়ে পাঁচজনের মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনা বিশ্ববাসী লক্ষ্য করেছে। বিশ্ববাসী দেখেছে মার্কিন গণতন্ত্রের স্বরূপ ও তাদের মানবাধিকারের চেহেরা।’
অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্র ও মানবাধিকার রক্ষার সূচকগুলো যুক্তরাষ্ট্রের দুর্বলতার কথা এমনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বারবার উল্লেখ করেছে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘খোদ এমনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের প্রতিনিধিকে আমেরিকা সফরে বাধা দেয়া হয়।
বঙ্গবন্ধুর কোন কোন খুনী এখনও আমেরিকায় লুকিয়ে আছে, যুদ্ধাপরাধীরাও সেদেশে পালিয়ে আছে জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক সিনেটর অব লেবার রবার্ট রেইচ এক টুইট বার্তায় বিশ্বকে জানিয়েছিলেন শুধু ২০২০ সালে সেদেশে বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ড ঘটেছে ৯৮৪টি।’
২০১৫ সালের পর থেকে এ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর দ্বারা বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ড ঘটেছে ছয় হাজার ৬০০ জন। প্রতিবছর সেখানে প্রায় এক হাজার মানুষ বিনা বিচারে মারা যায়, যা বিভিন্ন তথ্য থেকে জানা যায় বলে জানান ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, ‘যাদের দেশে বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ড নিয়ে সাধারণ মানুষ দিনের পর দিন বিভিন্ন সিটিতে রাস্তায় নামে, তাদের অন্যদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে কোন ধরনের বক্তব্য গ্রহনযোগ্য নয়।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমরা নিশ্চিত এ সিদ্ধান্তের গভীরে বাংলাদেশ বিরোধী কিছু ব্যক্তি ও অপশক্তির রাজনৈতিক উদ্দেশ্য থাকতে পারে।’
মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে সৃষ্ট বাংলাদেশের মানুষের বিরুদ্ধে কোন ষড়যন্ত্র অতীতেও কাজে আসেনি উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘শূন্যতা থেকে বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়িয়েছে আন্তর্জাতিক নানা ষড়যন্ত্র থাকা সত্বেও।’
আরও পড়ুন: সাম্প্রদায়িক শক্তির ব্যাপারে সতর্ক থাকার আহ্বান ওবায়দুল কাদেরের
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের যে অব্যাহত অগ্রযাত্রা তা অনেকেই মেনে নিতে পারছেন না, তারা এ জনপদ নিয়ে ষড়যন্ত্র করতে চায়।’
প্যালেস্টাইনে ইসরাইল যখন নির্বিচারে অবলা নারী, নিরপরাধ শিশুসহ শতশত ঘরবাড়ি ধ্বংস করে মিসাইল বোমা নিক্ষেপ করে মানবাধিকার লঙ্ঘন করে তখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতি ইসরাইলের পক্ষে থাকে, টু শব্দটাও উচ্চারণ করে না।
তিনি আরও বলেন, ‘ যারা মধ্যপ্রাচ্য, ইরাক, আফগানিস্তান, সিরিয়া, লিবিয়া, ইয়েমেনে মানুষের মৃত্যু এবং উদ্বাস্তু হওয়ার পিছনে দায়ী তারা আজকে বিশ্বকে মানবাধিকারের ছবক দিচ্ছেন।’
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ভিত্তি পারস্পরিক আস্থা এবং বিশ্বাস উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বাংলাদেশ আশা করে দুই দেশের জনগণের মধ্যকার বিদ্যমান সম্পর্ককে এগিয়ে নিতে মার্কিন প্রশাসন সিদ্ধান্ত গ্রহণে অধিকতর তথ্য নির্ভর এবং যত্নবান থাকবে।’
যে কোন ইস্যু এলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে আলাপ আলোচনা করে সুরাহার সুযোগ রয়েছে বলে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘তা না করে একপেশে কোন সিদ্ধান্ত বন্ধুপ্রতিম কোন দেশের প্রতি আস্থার বহিঃপ্রকাশ নয়।
ইতোমধ্যে মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে তলব করে বাংলাদেশ তার ক্ষোভ ও অসন্তোষের কথা জানিয়েছে।’