রাজনীতি
ফেনীতে ছাত্রলীগ-ছাত্রদলের সংঘর্ষের ঘটনায় ২২৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা
ফেনী শহরের শহীদ শহীদুল্লাহ কায়সার সড়কে বিএনপির মিছিলে সংঘর্ষের ঘটনায় ২২৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে পুলিশ। মামলায় উল্লেখিত ২৪ আসামিদের মধ্যে সবাই বিএনপি ও তাদের অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মী।
শুক্রবার রাতে ফেনী মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সিরাজ মিয়া কর্তব্য কাজে বাধা ও বিস্ফোরক আইনে মামলাটি করেন। মামলায় অজ্ঞাত পরিচয়ে আরো ২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
ফেনী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নিজাম উদ্দিন মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, আসামিদের মধ্যে সদর উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব আমান উদ্দিন কায়সার সাব্বির, জেলা যুবদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বেলাল হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক নঈম উল্যাহ চৌধুরী বরাত, স্বেচ্ছাসেবক দল সভাপতি সাইদুর রহমান জুয়েল, সহ-সভাপতি জাহিদুল ইসলাম শিমুল, সাধারণ সম্পাদক এসএম কায়সার এলিন, ছাত্রদলের সভাপতি সালাহউদ্দিন মামুন, সাধারণ সম্পাদক মোরশেদ আলম মিলন, সদর উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক মাস্টার নিজাম উদ্দিন, যুগ্ম-আহ্বায়ক ফরিদুল ইসলাম রাহাত ও দিদারুল আলম, পৌর যুগ্ম-আহ্বায়ক নুর ইসলাম, জেলা ছাত্রদলের সহ-সভাপতি কাজী জামশেদুর রহমান ফটিক, যুগ্ম-সম্পাদক কাজী নজরুল ইসলাম দুলাল, সাংগঠনিক সম্পাদক জাকির হোসেন রিয়াদ, সদর উপজেলা সদস্য সচিব নজরুল ইসলাম, পৌর আহ্বায় তাজুল ইসলাম পাভেল, সদস্য সচিব ইব্রাহিম হোসেন ইবু রয়েছেন।
প্রসঙ্গত, জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি, পরিবহন খাতে ভাড়া বৃদ্ধি, সকল পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি, অসহনীয় লোডশেড়িং ও ভোলায় হত্যার প্রতিবাদে ফেনী জেলা বিএনপির উদ্যোগে শুক্রবার বিকালে ফেনীতে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি শহরের ইসলামপুর রোড়স্থ ফেনী জেলা বিএনপির কার্যালয় থেকে বের হয়ে শহরের ট্রাংক রোডে গেলে ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নেতাকর্মীরা হামলা করে। বিএনপির নেতাকর্মীরাও পাল্টা হামলা করে। পুলিশ বিএনপি নেতাকর্মীদেরকে ধাওয়া করে। এতে ত্রিমুখী সংঘর্ষে বিএনপির কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়। বিএনপি ও ছাত্রলীগ-যুবলীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে মধ্যে ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। পুলিশ পরিস্থিতি শান্ত করতে ১৫ রাউন্ড গুলিবর্ষণ করে।
পড়ুন: বিএনপির পেট্রোলবোমা সন্ত্রাসীরা ফের মাঠে, প্রতিরোধ করতে হবে: তথ্যমন্ত্রী
বঙ্গবন্ধু হত্যার ষড়যন্ত্রকারীদের খুঁজতে কমিশনের রূপরেখা প্রস্তুত: আইনমন্ত্রী
বিএনপির পেট্রোলবোমা সন্ত্রাসীরা ফের মাঠে, প্রতিরোধ করতে হবে: তথ্যমন্ত্রী
বিএনপির পেট্রোলবোমা সন্ত্রাসীরা আবারও মাঠে নেমেছে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেছেন, পেট্রোলবোমা সন্ত্রাসীদের প্রতিরোধ করতে হবে এবং তাড়িয়ে দিতে হবে।
তিনি বলেন, বিএনপির সমাবেশে আমরা কখনও বাধা দিইনি, দেবো না, তারা নিজেরা নিজেরাই মারামারি করে। কিন্তু যদি পেট্রোলবামা বাহিনীদের দেখি, তখন কিন্তু আমরা বসে থাকব না, প্রতিরোধ গড়ে তুলব।
শনিবার দুপুরে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আলোচনা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সমসাময়িক প্রসঙ্গে তিনি এসব কথা বলেন।
'তেলের দাম বাড়াতে বিএনপি এখন বর্ষাকালের পুঁটি আর মলা মাছের মতো একটু লাফাচ্ছে, যার কোনো প্রয়োজন নেই' উল্লেখ করে সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, 'ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর সমগ্র পৃথিবীতে তেলের দাম দ্বিগুণ হয়েছে। ৬০ ডলারের তেল ১৭০ ডলারে গিয়েছে। এখন সেটি ১৩৮-৪০ ডলার। দ্বিগুণের চেয়ে বেশি। আমাদের দেশে দ্বিগুণ নয়, সব মিলিয়ে ৩৮-৪০ শতাংশ বাড়িয়ে পশ্চিমবঙ্গের সমান করেছি। বিশ্ববাজারে তেলের দাম স্থিতিশীলভাবে কমলে আবার দাম সমন্বয় করা হবে।'
আরও পড়ুন: বিএনপির মিছিলের হারিকেন থেকে পেট্রোল বোমার শঙ্কায় জনগণ: তথ্যমন্ত্রী
ড. হাছান বলেন, 'কাগজে দেখলাম বিএনপি মহাসচিব বলেছেন, সরকার না কি বিদেশিদের চাপে কোনো সমাবেশে বাধা দিচ্ছে না। অথচ আমাদের নেত্রী ক’দিন আগেও বলেছেন, আমরা বিএনপির কোন সমাবেশে বাধা দেব না এবং আমরা দেইনি। কিন্তু গতকাল তারা নিজেরাই মারামারি করে নিজেদের সমাবেশ পন্ড করে দিয়েছে। সমাবেশ ডাকলে যারা নিজেরাই চেয়ার ছোঁড়াছুঁড়ি, মারামারি করে সমাবেশ পন্ড করে, সেখানে বাধা দেয়ার দরকার নেই। ভবিষ্যতেও দেখবেন যখনই বিএনপি সমাবেশ ডাকবে তখনই নিজেরা সমাবেশ পণ্ড করে দেবে।'
অতীতের দিকে তাকিয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান বলেন, '২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট বিএনপির সময়ে সারাদেশের ৫০০ জায়গায় বোমা ফাটানো হয়েছিল। আগামী ১৭ আগস্ট সমগ্র বাংলাদেশে ইউনিয়ন পর্যায়ে বিএনপির নৈরাজ্য এবং দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে সমাবেশ হবে। রাঙ্গুনিয়ার নেতাকর্মীরাও এতে অংশ নেবে।'
আরও পড়ুন: জিয়াউর রহমান ১৫ আগস্ট হত্যাকাণ্ডের অন্যতম প্রধান কুশীলব: তথ্যমন্ত্রী
জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে মন্ত্রী হাছান বঙ্গবন্ধুর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে বলেন, 'বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের সেবচেয়ে বড় সুবিধাভোগী হচ্ছে জিয়াউর রহমান এবং তার পরিবার। বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার সংরক্ষিত প্রসিডিংয়ে আসামি এবং সাক্ষীরা তাদের জবানবন্দিতে সবিস্তারে বলেছেন কখন কোথায় কিভাবে জিয়াউর রহমানের সঙ্গে দেখা করেছিল, তিনি কিভাবে ষড়যন্ত্রের সঙ্গে যুক্ত ছিল। বঙ্গবন্ধু হত্যার পর খোন্দকার মোস্তাক তার অন্যতম ঘনিষ্ঠ সহচর ও বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের অন্যতম কুশীলব বলেই জিয়াউর রহমানকে সেনাবাহিনী প্রধান করে। সেই জিয়া বন্দুকের নল উঁচিয়ে ক্ষমতা দখল করে, ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট বিলিয়ে দল গঠন করে এবং সেই ধারাবাহিকতাই বিএনপি বয়ে চলেছে।'
রাঙ্গুনিয়ায় এডভোকেট নুরুচ্ছফা তালুকদার পৌর অডিটোরিয়ামে উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আবদুল মোনাফ সিকদারের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার শামসুল আলম তালুকদার ও যুগ্ম সম্পাদক ইকবাল হোসেনের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন উপজেলা চেয়ারম্যান স্বজন কুমার তালুকদার, এমরুল করিম রাশেদ, শেখ ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী প্রমুখ।
আরও পড়ুন: বিদেশিদের কাছে নয়, জনগণের কাছে যান: বিএনপিকে তথ্যমন্ত্রী
বঙ্গবন্ধু হত্যার ষড়যন্ত্রকারীদের খুঁজতে কমিশনের রূপরেখা প্রস্তুত: আইনমন্ত্রী
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যায় জড়িত ষড়যন্ত্রকারীদের খোঁজার বিষয়ে কমিশনের রূপরেখা প্রস্তুত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক। তিনি বলেন, চলতি বছরের শেষ নাগাদ হয়তো এই কমিশন চালু করা যাবে।
শনিবার রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় কর্তৃক আয়োজিত কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্য শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
‘এস্টাবলিশ পাইলট প্রসেস টু ক্লাসিফাই কেসেস ইন কনসালটেশন উইথ দ্যা জাজেস অব দ্যা লেবার কোর্টস উইথ আ ভিউ টু এড্রেসিং কেস ব্যাকলগস’ শিরোনামে এই কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।
কমিশনের অগ্রগতির বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে আনিসুল হক বলেন, ‘কমিশন গঠন ও তার কার্যপ্রণালীর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কোভিড যায় যায় করে যায় না। জনগণ বৈশ্বিক পরিস্থিতি অনুধাবন করছেন। এখন অর্থনৈতিক ব্যাপারেও কিছু সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে। নিশ্চিয়ই বর্তমান পরিস্থিতিতে যেসব পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে সেগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এগুলো ‘প্রাওটাইজ’ করতে হচ্ছে। সেজন্য হয়তো কমিশনের রূপরেখার ব্যাপারে নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে যে আলাপ আলোচনা করা দরকার সেটা হয়ে ওঠেনি।
তিনি আশা প্রকাশ করেন, কিছু দিনের মধ্যে এই আলোচনা করতে পারবেন এবং এই বছর শেষ হওয়া নাগাদ কমিশন চালু করতে পারবেন।
তিনি বলেন, ‘উইচ হান্টিং’ বা প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা হিসেবে এই কমিশন গঠন করা হবে না। ১৯৭৫ সালের বাংলাদেশের ভবিষ্যতকে বদলে দেয়ার জন্য যে কলঙ্কিত প্রচেষ্টা নেয়া হয়েছিল, যে নৃসংস হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছিল তার সঙ্গে কারা কারা জড়িত ছিল, নতুন ও ভবিষ্যত প্রজন্মকে সেটা জানানোর জন্যই এই কমিশন গঠন করা হবে। এছাড়া কাদের কাদের ব্যাপারে তাদের সাবধানতা অবলম্বন করা দরকার সেটা জানানোও এই কমিশনের উদ্দেশ্য।
কমিশন কেমন হবে এমন প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে হবে। তিনি বলেন, ‘আমার যে রূপরেখা সেটা যদি উনি (প্রধানমন্ত্রী) একটু পরিবর্তন করতে চান, তার আগে আমি যদি ওটা বলে দিই তাহলে আমার মনে হয় সংসদীয় পদ্ধতির সরকারের যে উদ্দেশ্য ও আদর্শ সেটার ব্যাঘাত হয়।’
আনিসুল হক বলেন, তিনি যে রূপরেখা তৈরি করেছেন সেটা্তেই এগিয়ে যাবেন।
মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর খুনিদের ফিরিয়ে না আনা পর্যন্ত আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। আওয়ামী লীগ সরকার ছাড়া অন্যান্য সরকার ক্ষমতায় থাকার কারণে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের ফিরিয়ে আনতে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। সেই সমস্যাগুলো একটা একটা করে শেষ করতে হচ্ছে। সেজন্য তাদের তাড়াতাড়ি ফিরিয়ে আনা যাচ্ছে না।
সরকার ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা মামলাকে অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে দেখছে। কারণ এই মামলা ১৪ বছর পর নিম্ন আদালতে নিষ্পত্তি হয়েছে। এখন এটি উচ্চ আদালতে তড়িৎ শুনানি করে এর পরিসমাপ্তি ঘটানো হবে।
আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিরোধ যোদ্ধাদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিতে রুল
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. সেলিনা আক্তারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান, শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. ফারুক, অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের সচিব মো. মইনুল কবির, আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সারওয়ার, আইএলও বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর টুমো পোটিআইনেন প্রমুখ বক্তব্য দেন।
আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের বিষয়ে তদন্ত কমিশন চেয়ে হাইকোর্টে রিট
এটা জনগণের সঙ্গে তামাশা, মোমেনের মন্তব্য নিয়ে বিএনপি
বিশ্বের অন্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের মানুষ সুখে আছে, বেহেস্তে আছে, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের এমন উক্তি জনগণের সঙ্গে তামাশা বলে মন্তব্য করেছে বিএনপি।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘দেশের মানুষ যখন প্রতি মুহূর্তে ভোগান্তি পোহাচ্ছে, কষ্ট করছে, সেই সময়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বললেন, (মানুষ) বেহেশতে আছে, এটা হাস্যকর।’
শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে ফখরুল বলেন, ‘পররাষ্ট্রমন্ত্রী আগেও এমন কিছু হাস্যকর মন্তব্য করেছেন। কিন্তু জনগণের সঙ্গে এরকম পরিহাস করার কোনো অধিকার উনার নেই।’
তিনি বলেন, আমি দুঃখিত ব্যক্তিগত পর্যায়ে কথা বলছি। ইদানীং উনার (পররাষ্ট্রমন্ত্রী) চেহারার মধ্যে যেটা ফুটে উঠেছে…ক্ষিপ্ত হয়েছেন; বেশিরভাগ মন্ত্রীদের যেটা হয়েছে…প্রচুর লুটপাট হচ্ছে। সেই লুটপাটের কারণে তারা জনগণের সঙ্গে পরিহাস, তামাশা শুরু করেছে।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ও চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ইসমাইল জবিউল্লাহ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে শুক্রবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন সিলেটে সাংবাদিকদের বলেন, বিশ্ব মন্দার মধ্যেও বাংলাদেশের মানুষ অন্য অনেক দেশের তুলনায় সুখে আছে, বেহেশতে আছে।
পড়ুন: বোয়ালখালীতে ছাত্র ইউনিয়নের মানববন্ধনে ছাত্রলীগের হামলা, আহত ১০
জ্বালানি খাতের দুর্নীতি নিয়ে শ্বেতপত্র প্রকাশের আহ্বান জিএম কাদেরের
বোয়ালখালীতে ছাত্র ইউনিয়নের মানববন্ধনে ছাত্রলীগের হামলা, আহত ১০
চট্টগ্রামের বোয়ালখালীতে ছাত্র ইউনিয়নের মানববন্ধনে ছাত্রলীগ হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ছাত্র ইউনিয়নের ১০ জন নেতাকর্মী আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। শনিবার দুপুরে কানুনগোপাড়া স্যার আশুতোষ সরকারি কলেজ গেটে এ ঘটনা ঘটে।
বোয়ালখালী উপজেলা ছাত্র ইউনিয়নের যুগ্ম আহ্বায়ক ইয়াছিন আরাফাত জানান, স্যার আশুতোষ সরকারি কলেজের বহুমুখী সংকট নিরসনের দাবিতে মানববন্ধনের আয়োজন করা হলে ছাত্রলীগ নেতা শিমুল সরদারের নেতৃত্বে হামলা চালানো হয়।
সংঘর্ষে আহতরা হলেন-ছাত্র ইউনিয়ন কলেজ শাখার আহ্বায়ক হিমেল চৌধুরী, দক্ষিণ জেলা যুব ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অনুপম বড়ুয়া,বোয়ালখালী কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি সাইফুদ্দিন সাইফ, দক্ষিণ জেলা ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি সাজ্জাদ হোসেন,দক্ষিণ জেলা যুব ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সেহাব উদ্দিন সাইফু, ছাত্র ইউনিয়ন সদস্য ইয়াছিন, অমিত, রাশেদ। বাকিদের নাম জানা যায়নি।
আরও পড়ুন: মাগুরায় দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত ১৫
কলেজ ছাত্র ইউনিয়নের আহ্বায়ক হিমেল চৌধুরী জানান, দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত স্যার আশুতোষ সরকারি কলেজে শিক্ষা সংকট, ভবন সংকটসহ বিভিন্ন সংকট নিরসনের দাবি জানিয়ে কলেজ ছাত্র ইউনিয়ন মানববন্ধন করছিল। এসময় কলেজের শিক্ষার্থীরা অংশ নিতে চাইলে কলেজ ছাত্রলীগের নেতারা তাতে বাধা দেন। একপর্যায়ে চলমান মানববন্ধনে কাঠ ও লোহার পাইপ নিয়ে কলেজ ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক শিমুল সর্দার, রয়েল দেবনাথ ও মো. কাইয়েুমের নেতৃত্বে অতর্কি তভাবেহামলা চালায়। তারা এলোপাতাড়ি মারধর শুরু করেন, এসময় বেশ কয়েকজনের মোবাইলও ছিনিয়ে নেয়া হয়।
অভিযোগের বিষয়ে ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক শিমুল সর্দার বলেন, কোনে হামলার ঘটনা ঘটেনি। ছাত্র ইউনিয়ন মানববন্ধনের নামে কলেজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করে আসছিল। আমরা তাদের মানববন্ধন থেকে সরিয়ে দিতে চাইলে ধাক্কাধাক্কি হয়েছে।
আরও পড়ুন: রাজধানীতে বিলবোর্ড ভেঙে জবি শিক্ষার্থী আহত
বোয়ালখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুর রাজ্জাক বলেন, কলেজের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে ছাত্র ইউনিয়ন মানববন্ধন করতে চাইলে ছাত্রলীগের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়েছে। তবে হামলার মতো কোনো ঘটনা ঘটেনি। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত আছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন আছে।
জ্বালানি খাতের দুর্নীতি নিয়ে শ্বেতপত্র প্রকাশের আহ্বান জিএম কাদেরের
জ্বালানি খাতের দুর্নীতি নিয়ে শ্বেতপত্র প্রকাশের দাবি জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের। তিনি বলেন, ‘দেশের মানুষ জানতে চায় জ্বালানি খাতে বছরে কত হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে। দুর্নীতির সঙ্গে কারা জড়িত?’
রাজধানীর মিরপুর এলাকার জাতীয় চিড়িয়াখানা রোডের ঈদগাহ মাঠে জাতীয় পার্টির মিরপুর ও শাহ আলী থানা ইউনিটের কাউন্সিলে বক্তব্যে জিএম কাদের এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতদের বিচারের আওতায় আনতে তাদের তালিকা প্রকাশ করতে হবে।
তিনি জানান, যারা প্রতিবছর হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করছেন তাদের তালিকাও তারা জানতে চান। অর্থ পাচারকারীদের বিচারের আওতায় আনা উচিত।
গত বছর বাংলাদেশ থেকে সুইস ব্যাংকে চার লাখ কোটি টাকা জমা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান। অর্থ পাচারকারীদের তথ্য প্রকাশ না করে সরকার নিজেকে প্রশ্নের মুখে ফেলছে।
সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতিবাজ ও অর্থ পাচারকারীদের পক্ষ নেয়ার অভিযোগ করেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, সাধারণ মানুষ মনে করে বর্তমান সরকার প্রভাবশালী ব্যক্তি ও ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের বাঁচাতে দুর্নীতির তথ্য প্রকাশ করছে না।
ড. জিএম কাদের বলেন, জাতীয় পার্টি দেশের স্বার্থের কথা বললে ক্ষমতাসীন দলের কিছু নেতা এর মধ্যে ষড়যন্ত্র খোঁজেন।
দেশ শ্রীলঙ্কার মতো ব্যর্থ রাষ্ট্র হতে চলেছে বলে মন্তব্য করে তিনি নেতা বলেন, আমাদের বোকা বলা হচ্ছে। কিন্তু কেন সারা দেশে এখন লোডশেডিং হচ্ছে? ডলারের দাম কেন এত বেড়েছে? জ্বালানির দাম এত বেড়েছে কেন?
আরও পড়ুন: জ্বালানি খাতের দুর্নীতি নিয়ে শ্বেতপত্র প্রকাশের আহ্বান জিএম কাদেরের
জনদুর্ভোগ নিয়ে সরকার খুব একটা চিন্তা করে না: জিএম কাদের
ভারতের সাথে বাংলাদেশের বন্ধুত্ব আরও সুদৃঢ় হবে: জিএম কাদের
জনতার ঢেউয়ে সরকার ভেসে যাবে: ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, ‘ফ্যাসিবাদী শাসক আওয়ামী লীগ সরকার জনরোষের সুনামিতে ভেসে যাবে।’
তিনি বলেন, ‘মানুষ জেগে ওঠায় তাদের (সরকারের) পতন অনিবার্য। রাজপথে জনতার যে ঢেউ উঠবে সেই ঢেউয়ের সুনামিতে এই ফ্যাসিবাদী ও দানবীয় আওয়ামী লীগ সরকার ভেসে চলে যাবে।’
শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের উদ্যোগে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি, বিদ্যুৎ সংকট, পুলিশের গুলিতে রাজনৈতিক নেতার মৃত্যু এবং বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে আয়োজিত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
দেশকে ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচাতে নিজ নিজ অবস্থান থেকে জনগণকে সংগঠিত করার জন্য তিনি বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান।
ফখরুল বলেন, ‘তারা (সরকার) বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক আত্মাকে ধ্বংস করেছে বলে জাতি এখন ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। সেই আত্মাকে পুনরুদ্ধার করার জন্য আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলন করতে হবে। আন্দোলনের কোনো বিকল্প নেই। এই সরকারকে সরাতে আমাদের রাজপথ দখল করতে হবে।’
তিনি বলেন, নতুন করে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে মানুষ এখন তাদের সংসার চালাতে চরমভাবে হিমশিম খাচ্ছে।
আরও পড়ুন: জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি: বৃহস্পতিবার নয়াপল্টনে ‘বিশাল শোডাউনের’ প্রস্তুতি বিএনপির
তিনি আরও বলেন, ‘দেশের অবস্থা কী তা এখন বলার দরকার নেই। কত ভাড়া বাড়ানো হয়েছে তা রাস্তায় বাস যাত্রীদের জিজ্ঞাসা করুন। রিকশাচালক, কৃষক ও শিক্ষকসহ সকল মানুষ চরম দুর্ভোগের মধ্য দিয়ে দিন কাটাচ্ছে।’
এই বিএনপি নেতা আরও বলেন, মধ্যবিত্ত মানুষ, যারা তাদের দুঃখ প্রকাশ করতে পারে না এবং পণ্যের অতিরিক্ত দাম বহন করতে পারে না, তারা জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির সবচেয়ে বেশি শিকার।
তিনি বলেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে বিভিন্ন দেশের চাপের কারণে সরকার এখন বিএনপিসহ অন্যান্য বিরোধী দল ও প্ল্যাটফর্মকে কোনো ঝামেলা ছাড়াই সমাবেশ ও রাজনৈতিক কর্মসূচি পালনের অনুমতি দিচ্ছে। ‘তারা এখন একটি গণতান্ত্রিক এবং বিনয়ী দল হওয়ার ভান করছে। এটা প্রতারণা ছাড়া আর কিছুই নয়। প্রতারণা তাদের চরিত্রের মধ্যে গেঁথে আছে।’
সরকার পরিকল্পিতভাবে দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করছে বলে অভিযোগ করেন বিএনপি নেতা।
আরও পড়ুন: আওয়ামী লীগকে আর ক্ষমতায় থাকতে দেয়া যাবে না: ফখরুল
ফখরুল আরও বলেন, ‘ব্যাপক লুণ্ঠনের কারণে ব্যাংকগুলো নিঃশেষ হয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকও লুট হয়েছে।’
তিনি বলেন, সরকার কিছুদিন আগে বাংলাদেশকে সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়ায় পরিণত করার স্বপ্ন দেখছিল, কিন্তু ডলারের রিজার্ভ কমে যাওয়ায় এখন ঋণ চাইছে। ‘তারা আমাদের সম্পদ চুরি ও ছিনতাই করেছে এবং বিপুল অর্থ বিদেশে পাচার করেছে। একটি আন্তর্জাতিক সংস্থার মতে, বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর ৮২৭ মিলিয়ন ডলার পর্যন্ত পাচার হচ্ছে।’
দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে একটি বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠান ও জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার পথ সুগম করতে সরকারকে পদত্যাগ, সংসদ ভেঙে দেয়া এবং নিরপেক্ষ প্রশাসনের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের আহ্বান জানান ফখরুল।
তিনি অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগ আগামী নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার করে ফলাফল কারচুপি করে ক্ষমতায় আঁকড়ে ধরতে চাইছে। ‘ইভিএম প্রতারণার হাতিয়ার। ক্ষমতায় বসতে আওয়ামী লীগের কাছে ইভিএম ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই। ইভিএমের মাধ্যমে ধানের শীষে ভোট দিলে ভোট গণনা হবে নৌকায়। তাই তারা ইভিএম ব্যবহার করতে চায়।’
আরও পড়ুন: গণতন্ত্র মঞ্চকে স্বাগত জানাল বিএনপি
জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে ২ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা বিএনপির
রাজপথ দখলের হুমকির জন্য বিএনপির নিন্দা কাদেরের
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি পরিকল্পিত অরাজনৈতিক পন্থায় দেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করতে চায়।
শুক্রবার সকালে নিজ বাসভবনে এক ব্রিফিংয়ে কাদের এ কথা বলেন।
বিরোধী দল বিএনপি নেতাকর্মীদের রাস্তা দখলের নির্দেশ প্রসঙ্গে এই আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, সড়ক কারও পৈত্রিক সম্পত্তি নয়, রাস্তা জনগণের। তাই অতীতের মতো আবারও রাস্তা দখলের নামে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হলে জনগণ যোগ্য জবাব দেবে।
আওয়ামী লীগকে শিগগিরই রাজপথে দেখা যাবে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপির চিৎকার তাদের ব্যর্থতা আড়াল করার কৌশল মাত্র।
তিনি বলেন, বিএনপি আবারও জনগণের সম্পদ লুটপাটের সুযোগ সৃষ্টি করতে এবং হাওয়া ভবন তৈরি করে দেশের অপার সম্ভাবনাকে রুদ্ধ করতে ক্ষমতায় ফিরতে চায়।
তিনি আরও বলেন, জনগণ আর কখনও তাদের সেই সুযোগ দেবে না।
আরও পড়ুন: বিরোধী পক্ষকে দমন ও পীড়নের রাজনীতি আওয়ামী লীগ করে না: ওবায়দুল কাদের
আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, এ দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে ব্যর্থ বিরোধী দল হিসেবে বিএনপি নিজেই দেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করতে চায়।
রাজনৈতিক দল হিসেবে জনগণের ওপর বিএনপির কোনো আস্থা নেই বলে দাবি করেছেন ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, বিএনপির রাজনৈতিক মেরুদণ্ড খুবই নাজুক।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় আসতে চায় কিন্তু নির্বাচনে যেতে ভয় পায়।
সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর আর সংসদে যাননি বিএনপি মহাসচিব। এর পরিবর্তে তিনি দলের অন্যদের সংসদে পাঠিয়েছেন বলে জানান কাদের।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বিএনপি নেতাদের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কথা ভুলে যাওয়ার পরামর্শ দেন।
আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি বিএনপির জন্য বুদ্ধিমানের কাজ হবে বলে উল্লেখ করেন কাদের।
তিনি বলেন, সরকারের পদত্যাগ ও সংসদ ভেঙে দেয়ার দিবাস্বপ্ন দেখে কোনো লাভ নেই।
আরও পড়ুন: বিএনপি শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে আসবে: ওবায়দুল কাদের
বিএনপির আন্দোলনের কথা শুনলে মানুষ হাসে: ওবায়দুল কাদের
জনদুর্ভোগ নিয়ে সরকার খুব একটা চিন্তা করে না: জিএম কাদের
বর্তমান সরকারকে গণবিরোধী হিসেবে আখ্যায়িত করে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেছেন, সরকার এখন জনদুর্ভোগ নিয়ে কম মাথা ঘামায়।
তিনি বলেন, ‘সরকার দেশ পরিচালনায় সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। তারা জ্বালানি তেলের দাম বাড়িয়ে জনদুর্ভোগ বাড়িয়েছে’।
বৃহস্পতিবার জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের বনানী কার্যালয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে জিএম কাদের এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, তেলের ওপর ভ্যাট ও ট্যাক্স প্রত্যাহার করলে এবং বিগত বছরগুলোতে অর্জিত মুনাফা সমন্বয় করলে সরকারকে আর জ্বালানির দাম বাড়াতে হতো না।
তিনি বলেন, ‘যে সরকার জনদুর্ভোগের কথা না ভেবে জ্বালানি তেলের দাম বাড়িয়ে মুনাফা করে, তারা জনগণের সরকার হতে পারে না। গণবিরোধী সরকার জনগণের দুঃখ-দুর্দশা বোঝে না।’
আরও পড়ুন: দেশে স্বৈরতন্ত্র প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পেয়েছে: জিএম কাদের
সরকার নানাভাবে মুনাফা করছে এবং উন্নয়ন ও মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের নামে লুটপাট করছে বলে এসময় অভিযোগ করেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান।
তিনি আরও বলেন, সরকার বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানের অর্জিত মুনাফার অর্থ ব্যাংকে রাখছে এবং এক চতুর্থাংশ বিভিন্ন অজুহাতে ঋণ নিয়ে সেই অর্থ বিদেশে পাচার করছে।
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘দেশে প্রজাতন্ত্রের নামে এক ব্যক্তির শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। দেশে এখন গণতন্ত্রের নামে স্বৈরাচারী শাসন চলছে। উন্নয়নের নামে দেশে ঘুষ-দুর্নীতির জোয়ার বইছে।’
অনুষ্ঠানে জিএম কাদেরকে ফুলের তোড়া দিয়ে জাতীয় পার্টিতে যোগ দেন সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম রব্বানী।
আরও পড়ুন: বাংলদেশের অবস্থা শ্রীলঙ্কার মতো হতে পারে: জিএম কাদের
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে বিপাকে মানুষ: জিএম কাদের
জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি: নয়াপল্টনে চলছে বিএনপির বিক্ষোভ সমাবেশ
জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি ও বিদ্যুৎ সংকটের প্রতিবাদে রাজধানীর নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিএনপির বিশাল সমাবেশ চলছে। বৃহস্পতিবার বেলা ১টা ৫০ মিনিটে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে বিএনপির ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর মহানগর শাখার আয়োজনে সমাবেশ শুরু হয়।
সকাল থেকেই দল ও সহযোগী সংগঠনের হাজার হাজার নেতাকর্মী জড়ো হয়ে সড়কের একপাশ অবরোধ করে।
বিজয়নগর ক্রসিং থেকে ফকিরাপুল পর্যন্ত রাস্তার অপর পাশ দিয়ে যানবাহন চলাচল করে। এতে যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ স্থায়ী কমিটির বিভিন্ন সিনিয়র নেতা সমাবেশে বক্তব্য রাখবেন।
এর আগে গত সোমবার জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির ফলে পরিবহন ভাড়া এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় সব পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে সমাবেশসহ দুই দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
চলমান লোডশেডিং এবং ভোলায় পুলিশের হাতে দলটির সহযোগী সংগঠনের দুই নেতা মৃত্যুর প্রতিবাদ করাও এই কর্মসূচির উদ্দেশ্য।
এছাড়া আগামীকাল শুক্রবার সারাদেশে দলের সকল মহানগর ও জেলা ইউনিট প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করবে।
সরকার গত শুক্রবার রাতে ডিজেল, অকটেন এবং পেট্রোলের দাম যথাক্রমে ৪২.৫ শতাংশ, ৫১.৭ শতাংশ এবং ৫১ শতাংশ বাড়িয়েছে। বর্তমানে প্রতি লিটার ডিজেল ১১৪ টাকা, অকটেন ১৩৫ টাকা ও পেট্রোল ১৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
নজিরবিহীন বিদ্যুৎ বিভ্রাট ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বিরুদ্ধে বিএনপি নেতাকর্মীরা দুই সপ্তাহ ধরে সারাদেশে বিক্ষোভ করছে এবং বিভিন্ন স্থানে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয়েছে।
গত ৩১ মে ভোলায় লোডশেডিংয়ের প্রতিবাদে করা বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনসমূহের এক মিছিলে পুলিশ গুলি চালায়, এতে স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা আব্দুর রহিম ঘটনাস্থলেই মারা যান এবং আরও অনেকে গুরুতর আহত হন।
পরে আহতদের মধ্যে একজন ভোলা জেলা জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সভাপতি নূরে আলম রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।