রাজনীতি
করোনায় হারিছ চৌধুরীর মৃত্যু, জানা গেলো তিনমাস পর
করোনায় আক্রান্ত হয়ে লন্ডনের একটি হাসপাতালে মারা গেছেন বিএনপি নেতা হারিছ চৌধুরী।
মৃত্যুর প্রায় তিন মাস পর মঙ্গলবার নিজের ফেসবুক স্ট্যাটাসে হারিছ চৌধুরীর মৃত্যুর খবর জানান তার চাচাতো ভাই ও সিলেটের কানাইঘাট উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী।
আশিক চৌধুরী জানান, হারিছ চৌধুরী গত বছরের আগস্টের মাঝামাঝি লন্ডনে করোনায় আক্রান্ত হন। হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে তিনি বাসায় ফেরেন। কয়েকদিন পর তার করোনা রিপোর্ট নেগেটিভও আসে।
করোনার ধকল সাময়িকভাবে কাটিয়ে উঠলেও তার ফুসফুস মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফুসফুসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় এক পর্যায়ে তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে যুক্তরাজ্যের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান হারিছ চৌধুরী।
আরও পড়ুন: বিএনপির সমাবেশ বন্ধ করতে নতুন বিধিনিষেধ: রিজভী
হারিছ চৌধুরীর মৃত্যুর সংবাদ তার মেয়ে মুন্নু চৌধুরী ফোনে দেশে জানিয়েছেন বলে জানান আশিক চৌধুরী।
আশিক চৌধুরী জানান, লন্ডনে দাফন করা হয়েছে হারিছ চৌধুরীকে। তবে লন্ডনের কোন এলাকায় তিনি মারা গেছেন-তা তার জানা নেই বলে জানান আশিক চৌধুরী।
উল্লেখ্য, চারদলীয় জোট সরকারের আমলে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক সচিব ছিলেন হারিছ চৌধুরী। সে সময়ের প্রভাবশালী এই নেতা, বিএনপি ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পরই দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান। সে সময় তার বিরুদ্ধে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। ২০১৮ সালে ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা মামলার রায়ে যাবজ্জীবন সাজা হয় হারিছ চৌধুরীর।
১১ জানুয়ারী মঙ্গলবার আশিক চৌধুরী ফেসবুক স্ট্যাটাসে লেখেন- ‘ভাই বড় ধন, রক্তের বাঁধন’। নিজের ছবির সঙ্গে হারিছ চৌধুরীর একটি ছবি যুক্ত করে তিনি এই স্ট্যাটাস দেন। এরপর স্ট্যাটাসের নিচে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা ইন্নালিল্লাহি...রাজিউন লিখে কমেন্ট করতে থাকেন। অনেকে হারিছ চৌধুরীকে নিয়ে আফসোসও করেন।
আরও পড়ুন: ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিএনপি-ছাত্রলীগের সমাবেশ, ১৪৪ ধারা জারি
জানা গেছে, স্ত্রী ও ছেলে-মেয়ে নিয়ে হারিছ চৌধুরী যুক্তরাজ্যে থাকতেন। তার ছেলে জনি চৌধুরী পেট্রোলিয়াম ইঞ্জিনিয়ার। আর মেয়ে মুন্নু চৌধুরী ব্যারিস্টার। আগে থেকেই হারিছ চৌধুরী ব্ল্যাড ক্যান্সারসহ নানা জটিল রোগে আক্রান্ত ছিলেন। ২০০২ সালে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে একবার রক্ত পরিবর্তন করে আসেন। দেশ ছাড়ার পর তিনি যুক্তরাজ্যে আরেকবার রক্ত পরিবর্তন করেন বলে জানা গেছে।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, আক্রান্ত হওয়ার আগে হারিছ চৌধুরী করোনার দুই ডোজ ভ্যাকসিন নিয়েছিলেন। এরপরও তিনি আক্রান্ত হন। করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর তার শরীরের রক্তে অক্সিজেনের পরিমাণ কমে যায় এবং পুরো ফুসফুস সংক্রমিত হয়ে পড়ে। ফলে করোনা নেগেটিভ হওয়ার পরও তিনি ফুসফুস জটিলতায় ভূগছিলেন।
জানা যায়, ২০০৭ সালে দেশে জরুরি অবস্থা জারির সপ্তাহখানেক পর স্ত্রীকে নিয়ে গ্রামের বাড়ি সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার দর্পনগরে বেড়াতে আসেন হারিছ চৌধুরী। ওই রাতেই যৌথবাহিনী তার বাড়িতে অভিযান চালায়, তবে তাকে পায়নি। এরপর কয়েক দিন সিলেটের বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপনে থেকে ২০০৭ সালের ২৯ জানুয়ারি জকিগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে পালিয়ে যান বিএনপি সরকারের দাপুটে এই নীতিনির্ধারক।
আরও পড়ুন: বৃহত্তর ঐক্য গড়তে সরকারবিরোধী দলের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা বিএনপির
এরপর তিনি ওঠেন নানার বাড়ি ভারতের আসাম রাজ্যের করিমগঞ্জ জেলার বদরপুরে। এরপর পাকিস্তান হয়ে ইরানে তার ভাই আবদুল মুকিত চৌধুরীর কাছে পৌঁছান এমন খবরও চাউর হয়। ইরান থেকে কয়েক বছর আগে তিনি যুক্তরাজ্যে পরিবারের কাছে যান। সেখান থেকে ভারতে যাতায়াত করতেন এবং ব্যবসা-বাণিজ্য দেখভাল করতেন বলে একাধিক সূত্র বিভিন্ন সময় নিশ্চিত করেছে।
প্রসঙ্গত, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় ২০১৮ সালে যাবজ্জীবন সাজা হয় হারিছ চৌধুরীর। একই বছরের ২৯ অক্টোবর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় হারিছ চৌধুরীর সাত বছরের জেল ও ১০ লাখ টাকা জরিমানা হয়। এছাড়া সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া হত্যা মামলায় হারিছ চৌধুরী ও সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীসহ ২৮ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়।
‘খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে প্রয়োজনে রাজপথ রক্তে রঞ্জিত হবে’
খালেদা জিয়াকে জেলে রেখে স্লো পয়জনিং করে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু। তিনি বলেছেন, রাজপথকে প্রকম্পিত করে আমাদের নেত্রীকে মুক্ত করতে হবে। গুলি খেতে হবে, রাজপথ রক্তে রঞ্জিত করতে হবে।
বুধবার বিকেলে সিলেটের টুকেবাজার এলাকায় বিএনপির কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে খালেদা জিয়ার মুক্তি ও উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার সুযোগ দেয়ার দাবিতে সিলেট জেলা বিএনপি আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
টুকু বলেন, বাংলাদেশের মানুষের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়ায় খালেদা জিয়া আজ কারাবন্দী। তিনবারের সাবেক সফল প্রধামন্ত্রীকে নির্বাচনের বাইরে রাখতেই ষড়যন্ত্রমূলক মামলার ফরমায়েসী রায়ে সাজা দেয়া হয়েছে। খালেদা জিয়া আজ পর্যন্ত যত জায়গা থেকে যতবার নির্বাচন করেছেন, সবগুলো নির্বাচনে জয়লাভ করেছেন। আর খালেদা জিয়াকে যিনি বন্দী করে রেখেছেন তিনি নির্বাচনে সাদেক হোসেন খোকা ও মেজর মান্নানের কাছে পর্যন্ত পরাজিত হয়েছেন। আর পরাজিত হওয়ার পরে ঢাকায় আর নির্বাচন করেননি। জাতি সেই ইতিহাস ভুলে যায়নি।
আরও পড়ুন: বিএনপির সমাবেশ বন্ধ করতে নতুন বিধিনিষেধ: রিজভী
তিনি বলেন, শুধু উন্নয়ন-উন্নয়ন করেন। দেশে উন্নয়নের বন্যা বইয়ে দিয়েছেন। সাহস থাকলে একবার নিরপেক্ষ নির্বাচন দিয়ে দেখুন। নৌকার প্রার্থীদের জামানত বাজেয়াপ্ত হবে। আর কোন ষড়যন্ত্র বরদাস্ত করা হবেনা, খালেদা জিয়ার স্থায়ী মুক্তি ও উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর বিষয়টি রাজপথের আন্দোলনেই ফয়সালা হবে।
বিএনপির এই নেতা বলেন, খালেদা জিয়া মুক্তির আন্দোলনে যদি আমার দেশের মানুষের গুলি আমার শরীরে লাগে, তবে আমি গর্বিত শহিদ। প্রতীকী নয়, আসল কাফনের কাপড় পরে জেলের তালা ভেঙে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে এবং দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হবে।
আরও পড়ুন: ইসি গঠনের আগে সংলাপ তামাশা মাত্র: বিএনপি
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু আরও বলেন, খালেদা জিয়া জনগণের ভাষা বুঝতে পেরে সংসদীয় গণতন্ত্র উপহার দিয়েছেন। তিনি তত্ত্বাবধায়ক সরকার দিয়েছিলেন এবং এর পরের নির্বাচনে পরাজিত হয়ে বিরোধী দলীয় নেত্রী হয়েছিলেন। একেই বলে গণতন্ত্র। তিনি চাইলে সেদিন আন্দোলন দমিয়ে ক্ষমতায় থাকতে পারতেন। কিন্তু তিনি তা করেননি, কারণ তিনি গণতন্ত্রে বিশ্বাসী। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর বাংলাদেশের ইতিহাস পাল্টিয়ে দিয়েছে। আজকের ইতিহাসে একটামাত্র পাতা আছে, যে ওরা ছাড়া স্বাধীনতাযুদ্ধে আর কেউ যায় নি। তবে বাকীরা গিয়ে কী করেছে? মূলত এ দেশের খেঁটে খাওয়া মানুষ, লুঙ্গি পরে যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছে।
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কামরুল হুদা জায়গীরদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বিএনপির কেন্দ্রীয়, সিলেট বিভাগীয় ও জেলা-মহানগর বিএনপির শীর্ষস্থানীয় নেতারা বক্তব্য দেন।
এদিকে, বিএনপির পূর্ব ঘোষিত এই সমাবেশে সকাল থেকে দলে দলে বিএনপি ও অঙ্গ-সংগঠনের নেতাকর্মীরা আসতে শুরু করেন। বিকাল ৩টার দিকে কানায় কানায় ভর্তি হয়ে যায় টুকেরবাজারের মাঠ।
বিএনপির সমাবেশকে ঘিরে সতর্ক অবস্থানে ছিল পুলিশ। সব ধরনের বিশৃঙ্খলা এড়াতে সমাবেশস্থলে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
আরও পড়ুন: ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিএনপি-ছাত্রলীগের সমাবেশ, ১৪৪ ধারা জারি
সমাবেশ বন্ধ করতে নয়, করোনা থেকে বাচঁতেই বিধিনিষেধ: হানিফ
আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ এমপি বলেছেন, ‘বিএনপির সমাবেশ বন্ধ করতে নয়, করোনা থেকে বাচঁতে বিধিনিষেধ দিয়েছে সরকার।’
বিএনপি নেতারা মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েছেন বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘করোনা প্রতিরোধের জন্য সরকার কিছু বিধিনিষেধ জারি করেছেন। সেটি নিয়ে বিএনপি বলছে, তাদের সমাবেশ বন্ধ করতে সরকারের এই বিধি-নিষেধ দিয়েছে। বিএনপি এসব কথা বলে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টির চেষ্টা করছে।’
বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় কুষ্টিয়া সরকারি মহিলা কলেজে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার উদ্বোধন ও একটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে হানিফ এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: ভ্যাকসিন নিয়ে বিএনপি নেতাদের বক্তব্য অরুচিকর: হানিফ
হানিফ আরও বলেন, আমরা পত্রিকা মারফত জানতে পেরেছি বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সস্ত্রীক করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এতেই বোঝা যাচ্ছে দেশে করোনার ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। ইতিমধ্যে করোনা শনাক্তের হার ১ শতাংশ থেকে বেড়ে ৭ শতাংশে দাঁড়িয়েছে এই মহামারি থেকে জাতিকে রক্ষা করার জন্য বিধি-নিষেধ দেয়া হয়েছে। নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচন প্রসঙ্গে মন্তব্য করতে গিয়ে হানিফ বলেন, জনগণের আস্থার প্রতীক নৌকার প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভি। নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়লাভ করবেন। করোনার নতুন ধরণ ওমিক্রন দুর্যোগ মোকাবেলায় সরকারের সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে বলে উল্লেখ করে হানিফ সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানান।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এদেশে যেহেতু নির্বাচন কমিশন আইন নেই। কিন্তু চলতি ২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে। এত দ্রুত সময়ে নির্বাচন কমিশন আইন তৈরি করা সম্ভব নয়। তাই বর্তমানে যে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা আছে সে অনুযায়ী নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের প্রক্রিয়া চলছে। সেক্ষেত্রে সব রাজনীতি দলের নৈতিক দায়িত্ব হলো- মহামান্য রাষ্ট্রপতির আহ্বানে সাড়া দিয়ে কমিশন গঠনে সহায়তা করা। কোন রাজনৈতিক দল চাইলে রাষ্ট্রপতির আহ্বানে সাড়া নাই দিতে পারেন তাই বলে নির্বাচন কমিশন গঠন থেমে থাকতে পারে না। এ সময় কলেজের শিক্ষক কর্মকর্তা, শিক্ষার্থী ও আওয়ামীলীগ দলের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: টিকা নিয়ে প্রমাণ করেছি বিএনপি মিথ্যাচারে লিপ্ত: হানিফ
খালেদা জিয়ার চিকিৎসার চেয়ে নেতা-কর্মীরা রাজনীতি নিয়ে বেশি ব্যস্ত: হানিফ
নেতার পাশে দাঁড়ানো নিয়ে মারামারি, ভেঙ্গে পড়লো মঞ্চ!
মঞ্চে অবস্থান নিয়ে কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতিতে চট্টগ্রামে বিএনপির সমাবেশে দুই গ্রুপের মধ্যে হাতাহাতি ও মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এতে কেউ আহত হয়নি।তবে হুড়োহুড়িতে সমাবেশের মঞ্চ ভেঙ্গে পড়েছে।
বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে উন্নত চিকিৎসার দাবিতে বুধবার দুপুরে কর্ণফুলী থানার সিডিএ আবাসিক মাঠে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপি আয়োজিত সমাবেশে এ ঘটনা ঘটে।
এ সময় দক্ষিণ জেলা বিএনপি নেতা সরওয়ার নিজামকে লাঞ্ছিত করে নেতাকর্মীরা।
কর্ণফুলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দুলাল মাহমুদ বলেন, ‘সকাল থেকেই বিএনপির নেতাকর্মীরা সমাবেশ স্থলে আসতে থাকে। অনুষ্ঠান শুরুর কিছুক্ষণ পরই তারা নিজেরাই মারামারিতে জড়ায়, তবে কেউ তেমন গুরুতর আহত হয়নি। বিএনপির এক নেতা লাঞ্ছিত হয়েছেন বলে শুনেছি। তবে এ ঘটনায় কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে।প্রতক্ষ্যদর্শীরা জানান, সমাবেশের প্রধান অতিথি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বক্তব্য দেয়ার সময় নেতাকর্মীরা হুড়োহুড়ি করে উঠতে গেলে দুই পক্ষের মধ্যে প্রথমে ধাক্কাধাক্কি ও হাতাহাতি শুরু হয়। এসময় হঠাৎ মঞ্চ ভেঙে পড়ে। এরপর দুই দলের সদস্যরা চেয়ার মারামারি ও লাঠিসোটা নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়।
আরও পড়ুন: বিএনপির সমাবেশ বন্ধ করতে নতুন বিধিনিষেধ: রিজভী
পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে প্রধান অতিথি আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, দক্ষিণ জেলার আজকের সমাবেশ বাঁধ ভেঙেছে সরকার পতন আন্দোলনের। কিছুতেই জনগণকে আটকে রাখা যাবে না। এত লোকের সমাবেশ মঞ্চ তো ভাঙবেই। আন্দোলন বন্ধ হবে না, চলতে থাকবে।তিনি আরও বলেন, ১৪৪ ধারার দিন শেষ হয়ে গেছে। দফায় দফায় অনুমতি নিয়ে জনসভার দিন শেষ হয়ে গেছে। দেশের মানুষ আজ ঐক্যবদ্ধ।এ সমাবেশে আবু সুফিয়ানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা জয়নাল আবেদীন ফারুক, বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, কেন্দ্রীয় যুবদলের সভাপতি সাইফুল আলম, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি জাফরুল ইসলাম চৌধুরী, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবুল হাশেম ছাড়াও কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা বক্তব্য দেন।
সমাবেশকে ঘিরে সকাল থেকে দক্ষিণ চট্টগ্রামের আনোয়ারা, পটিয়া, বোয়ালখালী, বাঁশখালী, সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, চন্দনাইশ ও কর্ণফুলী উপজেলা থেকে নেতা-কর্মীরা সমাবেশে যোগ দেন।
আরও পড়ুন: বিএনপির ১০ নেতাকর্মীর পাঁচ বছরের কারাদণ্ড
বিরোধী ও ভিন্নমত দমনে সরকার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ব্যবহার করছে: বিএনপি
বিএনপির সমাবেশ বন্ধ করতে নতুন বিধিনিষেধ: রিজভী
বিএনপির সভা-সমাবেশ বন্ধ করতে সরকার জনসমাবেশ বন্ধসহ নতুন বিধিনিষেধ আরোপ করেছে কি না তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছে বিএনপি।
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, শুধু বিএনপির সমাবেশ ঠেকানোর জন্যই বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে কি না তা নিয়ে জনগণ প্রশ্ন করছে। কারণ জনগণ সরকারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে উঠেছে।
মঙ্গলবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে জনগণ তাদের দলের সমাবেশে যোগ দেয়ায় সরকার ভয় পেয়েছে।
রিজভী সতর্ক করে বলেন, আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, যত ষড়যন্ত্রই করা হোক না কেন বর্তমান সরকারের পতন ঠেকানো যাবে না। মামলা, সাজা ও বিধিনিষেধ দিয়ে ষড়যন্ত্রের আশ্রয় নিয়ে জনগণকে আর দমন করা যাবে না।
ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ বৃদ্ধির কারণে সরকার সোমবার জনসমাগম, সামাজিক অনুষ্ঠান, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানসহ বিভিন্ন বিষয়ের ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। ১৩ জানুয়ারি থেকে এসব বিধিনিষেধ কার্যকর হওয়ার কথা রয়েছে।
আরও পড়ুন: বিএনপির ১০ নেতাকর্মীর পাঁচ বছরের কারাদণ্ড
ইসি গঠনের আগে সংলাপ তামাশা মাত্র: বিএনপি
সস্ত্রীক করোনায় আক্রান্ত মির্জা ফখরুল
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও তার স্ত্রী রাহাত আরা বেগম করোনা পজেটিভ হয়েছেন।
বিএনপি চেয়ারপার্সনের মিডিয়া উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান মঙ্গলবার ইউএনবিকে বলেন, ‘বিএনপি মহাসচিব ও তার স্ত্রী করোনা আক্রান্ত হয়েছেন।’
তিনি বলেন, করোনার বুস্টার ডোজ নেয়ার প্রায় এক সপ্তাহ পর তিনি করোনায় আক্রান্ত হলেন।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, কয়েকদিন ধরেই মির্জা ফখরুল ও তার স্ত্রী অসুস্থ বোধ করছিলেন। রবিবার তাদের করোনা পরীক্ষা করালে পজেটিভ আসে।
আরও পড়ুন: করোনা আক্রান্ত লতা মঙ্গেশকর আইসিইউতে
তিনি বলেন, এই দম্পতি তাদের উত্তরার বাসায় আইসোলেশনে থেকে স্কয়ার হাসপাতালের ওষুধ বিশেষজ্ঞ ডা. রায়হান রাব্বানীর তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
তাদের সার্বিক অবস্থা ভালো আছে বলেও জানান জাহিদ হোসেন।
সর্বশেষ ৮ জানুয়ারি মির্জা ফখরুল জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের আয়োজনে এক সমাবেশে যোগ দিয়েছিলেন।
আরও পড়ুন: করোনার মন্দার পর বৈদেশিক কর্মসংস্থানে ঘুরে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ
করোনা পরিস্থিতির অবনতি, ফের কঠোর বিধিনিষেধ
ইসি গঠনের আগে সংলাপ তামাশা মাত্র: বিএনপি
নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠন নিয়ে রাষ্ট্রপতির চলমান সংলাপ তামাশা ছাড়া আর কিছু নয় বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। দলটি বলছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক ইচ্ছায় ইসি গঠিত হবে।
বিএনপির জ্যৈষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘আমরা আগে দেখতাম ট্রেনে-বাসে বড়ি বিক্রি করতে হকার অত্যন্ত মজার মজার চমকপ্রদ অনেক কাহিনী বলত, গল্প বলত, মানুষকে আকৃষ্ট করত। তারপরে সে বড়িটা বিক্রি করত। রাষ্ট্রপতি হলেন সে ধরনের হকার। তিনিও সংলাপের নামে একই ধরনের কাজ করছেন।’
সোমবার এক মানবন্ধনে অংশ নিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, জনগণকে বিভ্রান্ত করতে ও ফাঁকি দেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে রাষ্ট্রপতির সংলাপের মাধ্যমে তামাশা করছেন।
আরও পড়ুন: বিএনপি আসলে নির্বাচন বানচাল করতে চায়: তথ্যমন্ত্রী
তিনি বলেন, ‘আল্টিমেটলি যে নির্বাচন কমিশন বানানো হবে- সেখানে প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক ইচ্ছারই প্রতিফলন ঘটবে। তার আগে একটা তামাশা করে যাচ্ছেন, তার আগে একটা হকারের সেই চমকপ্রদ কাহিনী তিনি করছেন।’
সাংবাদিক নেতা রুহুল আমিন গাজীর মুক্তির দাবিতে ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের একাংশ যৌথভাবে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এ মানবন্ধনের আয়োজন করে।
২০২০ সালের ২১ অক্টোবর ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে রুহুল আমিন গাজীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
রিজভী বলেন, ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করতে যা করার দরকার সব করছে সরকার। ‘কিন্তু এখন আর এটা কাজ করবে না। কেননা এ সরকারের আসল চেহেরা ধীরে ধীরে বিশ্বের মানুষের সামনে উন্মোচিত হতে শুরু করেছে।’
এ সময় তিনি প্রধানমন্ত্রীকে পদত্যাগ এবং খালেদা জিয়া, রুহুল আমিন গাজী ও অন্যান্য রাজবন্দীদের মুক্তি দেয়ার আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: বিরোধী ও ভিন্নমত দমনে সরকার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ব্যবহার করছে: বিএনপি
সিইসির ওপর নিষেধাজ্ঞা নিয়ে বিএনপি নেতার দাবি নাকচ মার্কিন দূতাবাসের
খালেদা জিয়া সিসিইউ থেকে কেবিনে
রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারর্পাসন খালেদা জিয়াকে রবিবার রাতে ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট (সিসিইউ) থেকে কেবিনে স্থানান্তর করা হয়েছে।
মেডিকেল বোর্ডের সদস্য অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেন, ‘ম্যাডামকে (খালেদা) মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শ অনুযায়ী রাত সাড়ে ৮টার দিকে সিসিইউ থেকে কেবিনে নিয়ে যাওয়া হয়।
তবে তিনি বলেন, ‘তাকে কেবিনে স্থানান্তর করা হলেও সেখানে সিসিইউ’র সব সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা হয়েছে। সিসিইউর নার্সরা কেবিনে তার সেবায় থাকবেন।’
জাহিদ বলেন, খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার কোনো উন্নতি নেই। তার অবস্থা আগের মতোই আছে এবং তার স্বাস্থ্যের সব প্যারামিটার আগের মতো ওঠানামা করছে।’
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসা: আরও ৪০ জেলায় সমাবেশ করবে বিএনপি
৭৬ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া স্বাস্থ্যগত বিভিন্ন জটিলতা নিয়ে গত বছরের ১৩ নভেম্বর থেকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
তার মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা বলেছেন, খালেদা জিয়ার লিভার সিরোসিস ধরা পড়ায় তাকে অবিলম্বে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে হবে।
বিএনপি ও তার পরিবারের পক্ষ থেকে বার বার খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ নেয়ার অনুমতি চেয়ে সরকারের কাছে আবেদন ও আহ্বান জানানো হয়েছে। এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো সাড়া মেলেনি। তবে কয়েকজন মন্ত্রী বলছেন, বিএনপি চেয়ারপার্সন কারাগারে ফিরে নতুন আবেদন না করা পর্যন্ত তার বিদেশে যাওয়ার সুযোগ নেই।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার কিছু হলে সরকারকে ‘হত্যা মামলার আসামি’ করার হুঁশিয়ারি বিএনপির
খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার আইনগত সুযোগ নেই: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
রাজনৈতিক দলের সমন্বয়ে নির্বাচনকালীন সরকারের প্রস্তাব কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের
নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনে আইন প্রণয়ন ও রাজনৈতিক দলের সমন্বয়ে নির্বাচনকালীন সরকারসহ ছয় দফা প্রস্তাব দিয়েছে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ। তবে আইন প্রণয়ন সম্ভব না হলে সার্চ কমিটির পরিবর্তে ব্যক্তিত্বসম্পন্ন দেশপ্রেমিক মানুষদের দিয়ে জনগণের আস্থাভাজন ও গ্রহণযোগ্য পাঁচ সদস্যের নির্বাচন কমিশন গঠনের প্রস্তাব দেন দলটির নেতারা। এই নির্বাচন কমিশনে দু’জন নারী সদস্য অন্তর্ভুক্ত হবেন।
রবিবার সন্ধ্যায় রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে আলোচনায় অংশ নিয়ে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের নেতারা এই ছয় দফা প্রস্তাব দিয়েছেন। দলটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর নেতৃত্বে ৯ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল বঙ্গভবনের দরবার হলে অনুষ্ঠিত আলোচনায় অংশ নেয়। রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ প্রতিনিধিদলকে বঙ্গভবনে স্বাগত জানান।
প্রতিনিধিদল নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীন ও মুক্ত রাখার প্রস্তাব করেন। তারা নির্বাচন কমিশনকে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত না নিয়ে কোনো নির্বাচনী বিধি বিধান প্রণয়ন না করারও প্রস্তাব করেন। প্রতিনিধিদল নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর সমন্বয়ে নির্বাচনকালীন সরকার গঠনের মাধ্যমে জাতীয় নির্বাচন পরিচালনার প্রস্তাব করেন। তারা বলেন, নির্বাচন কমিশনের দক্ষতার চেয়েও সরকারের নিরপেক্ষতা বেশি জরুরি।
রাষ্ট্রপতি মতামত প্রদানের জন্য তাদের ধন্যবাদ জানান এবং আশা প্রকাশ করেন একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন গঠনে তাদের মতামত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সচিব সম্পদ বড়ুয়া, সামরিক সচিব মেজর জেনারেল এস এম সালাহ উদ্দিন ইসলাম, রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন এবং সচিব (সংযুক্ত) মো. ওয়াহিদুল ইসলাম খান এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: নির্বাচনের সংলাপ বর্জন করলেই সব সমস্যার সমাধান হবে না: গণ ফ্রন্ট
ইসি নিয়ে সংলাপ: ৩ দফা দাবি গণফোরাম ও বিকল্পধারার
বিএনপি আসলে নির্বাচন বানচাল করতে চায়: তথ্যমন্ত্রী
রাষ্ট্রপতির সংলাপে অংশ না নিয়ে বিএনপি আসলে নির্বাচন বানচাল করতে চায় বলে অভিযোগ করেছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
তিনি বলেছেন, ‘রাষ্ট্রপতি একটি স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সবার মতামতের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন গঠন করার লক্ষ্যে সংলাপের আয়োজন করেছেন যা বিএনপি কখনো করেনি। বিএনপি সেই সংলাপে যাবে না এবং সংলাপের বিরুদ্ধে নানা ধরনের অপপ্রচার চালাচ্ছে। কারণ আসলে বিএনপির উদ্দেশ্য হচ্ছে আগামী নির্বাচনটাকে বানচাল করা। তারা যেভাবে ২০১৪ সালে নির্বাচন বানচাল করতে চেয়েছিল, ২০১৮ সালে নির্বাচনে ষড়যন্ত্র করেছিল একইভাবে তারা আগামী নির্বাচনটাকে বানচাল করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। কিন্তু দেশের মানুষ তাদেরকে সেই সুযোগ দেবে না।’রবিবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র টিএসসি সড়কদ্বীপে পোস্টার সাংস্কৃতিক সংসদ ও বজ্রকণ্ঠ সংগঠনদ্বয় আয়োজিত দিন বদলের মেলা’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী একথা বলেন।
আরও পড়ুন: পার্বত্য অঞ্চলের পর্যটন সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে অর্থনৈতিক উন্নয়নের আহ্বান তথ্যমন্ত্রীরপোস্টার সাংস্কৃতিক সংসদ সভাপতি এস এম জামাল উদ্দিন ইউসুফের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রব্বানী বাবলুর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে ঢাবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান উদ্বোধক হিসেবে, আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী বিশেষ অতিথি এবং ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. শাহে আলম মুরাদ সম্মানিত আলোচক হিসেবে বক্তব্য দেন।তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে দিন বদল হয়েছে। কিন্তু এই দিন বদল অনেকের পছন্দ নয়। দেশের মানুষ ভালো আছে এটি অনেকের পছন্দ নয়। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে আমরা যখন পদ্মা সেতু নির্মাণ শুরু করলাম, তখন বেগম খালেদা জিয়া এবং বিএনপি নেতারা বললেন, আওয়ামী লীগ করতে পারবে না, তারা ক্ষমতায় গেলে একসঙ্গে দু’টা পদ্মা সেতু করবে। এখন তো পদ্মা সেতু হয়েই গেছে। পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে প্রধানমন্ত্রী ক’দিন আগে গাড়ি চালিয়ে এই প্রান্ত থেকে ওই প্রান্তে গেছেন। আবার ওই প্রান্ত থেকে গাড়ি চালিয়ে এ প্রান্তে ফেরত এসেছেন। এখন আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের অপেক্ষায়। আর আমরা অপেক্ষায় আছি, যারা পদ্মা সেতু হবে না বলেছিল, তারা গাড়ি চালিয়ে পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে যায়, না কি আওয়ামী লীগের মার্কা নৌকায় এপার থেকে ওপার যায় সেটা দেখার জন্য।’ড. হাছান মাহমুদ বলেন, তারা (বিএনপি) ফ্লাইওভার দিয়ে বিমানবন্দরে যায় আর গিয়ে বলে দেশে কোনো উন্নয়ন হয়নি। এই হঠকারি রাজনীতি বন্ধ হওয়া আবশ্যক। গত ১৩ বছরে দেশ আরও অনেক এগিয়ে যেতে পারতো যদি বিএনপি-জামাত এবং তাদের দোসরদের ধ্বংসাত্মক রাজনীতি, পেট্রোলবোমা নিক্ষেপ করে মানুষ হত্যার রাজনীতি, দিনের পর দিন মানুষকে অবরোধ করার রাজনীতি না থাকতো এবং দেশের বিরুদ্ধে দেশে-বিদেশে অপপ্রচার চালানোর অপরাজনীতি যদি তারা না করতো। আজ থেকে ১০ বছর পর বাংলাদেশ ২০৩১ সাল নাগাদ বাংলাদেশকে উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশে এবং ২০৪১ সাল নাগাদ উন্নত সমৃদ্ধ বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা রচনা করতে চাই, সেই স্বপ্নের ঠিকানায় পৌঁছুতে হলে এই অপরাজনীতির অবসান হতে হবে।’
আরও পড়ুন: বেগম জিয়ার কিছু হলে বিএনপি নেতারাই আসামি হবেন: তথ্যমন্ত্রীদেশকে এগিয়ে নিতে রাজনীতি স্থিতিশীলতা প্রয়োজন উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘স্বাধীনতার চেতনাকে যদি সমুন্নত রাখতে হয় একইসাথে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি যদি রাষ্ট্র ক্ষমতায় না থাকে এই কবিতা পাঠের আসর, সংস্কৃতির চর্চা ভবিষ্যতে হবে কি না সন্দেহ আছে। মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা যদি দেশ পরিচালনার দায়িত্বে না থাকেন তাহলে দেশের সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর গলা চেপে ধরা হবে। কারণ বিএনপি-জামাত তাদের সঙ্গে জোট করেছে, যারা এই দেশটাকে তালেবানী রাষ্ট্র বানাতে চায়। এই অপশক্তির যাতে বিনাশ হয় ও চিরতরে দূরীভূত হয় সেই চেতনা মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে সারাদেশে একটি সাংস্কৃতিক গণজোয়ার তৈরির জন্য আমি সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোকে অনুরোধ জানাবো। তাহলে নতুন প্রজন্মকে আমাদের আবহমান সংস্কৃতির সঙ্গে সংযুক্ত করতে পারবো, একইসঙ্গে মাদকাসক্তি এবং মৌলবাদ-আসক্তি থেকে তাদেরকে মুক্ত রাখা সম্ভব হবে।আলোচক হিসেবে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা কামাল চৌধুরী, ঢাকা মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এবিএম আশরাফুল ইসলাম মারুফ, স্পেশাল পিপি অ্যাডভোকেট মো. ফোরকান মিঞা, আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা উপপরিষদ সদস্য সুজন হালদার, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক অরুণ সরকার রানা এবং মেলা উদযাপন পরিষদের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা সরকার আলী আসগর স্বাগত বক্তা হিসেবে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন। কবি ও সাহিত্যিকদের মধ্যে কবিতা আবৃত্তি করেন ড. শাহাদৎ হোসেন নিপু, অসীম সাহা, আসলাম সানি, অঞ্জনা সাহা, তপন বাগচী, রহিম শাহ, বাপ্পি রহমান, ইউসুফ রেজা প্রমুখ।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের অবনতি হলে দায় বিএনপিরই: তথ্যমন্ত্রী