ব্যবসা
বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বাড়ালে তা আত্মঘাতী হবে: এফবিসিসিআই
সরকারের কাছে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম না বাড়ানোর দাবি জানিয়ে ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বারস অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (এফবিসিসিআই) বলেছে, এ ধরনের ইউটিলিটির দাম বাড়ানো আত্মঘাতী হবে।
শনিবার রাজধানীর মতিঝিল কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠনের নেতারা এ দাবি জানান।
তারা বলেছেন, বৈশ্বিক মহামারি কোভিড -১৯ এর ধাক্কা থেকে পুনরুদ্ধারের চেষ্টার সময় বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বাড়ানোর যে কোনো পদক্ষেপ দেশের ব্যবসায় ও শিল্পের জন্য ক্ষতিকর হবে।
আরও পড়ুন: পোল্যান্ড ও বুলগেরিয়ায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করল রাশিয়া
এফবিসিসিআই সভাপতি জসিম উদ্দিন লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন। এ সময় বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন, বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) সহ-সভাপতি শহীদুল্লাহ আজিমসহ বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
নেতারা বলেন, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বাড়ানোর এটা সঠিক সময় নয়।
বেনাপোলে ট্রান্সপোর্ট এজেন্সির ধর্মঘট প্রত্যাহার
বেনাপোল বন্দরে পূর্বঘোষিত ডাকা ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নিয়েছে ট্রান্সপোর্ট এজেন্সি মালিক সমিতি। শনিবার ঘোষিত অনির্দিষ্টকালের জন্য ডাকা কর্মবিরতি সোমবার সন্ধ্যায় প্রত্যাহার করে নেয়া হয়।
জানা গেছে, বেনাপোল স্থল বন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যৌথ আলোচনার ভিত্তিতে শর্ত পূরণের শর্তে এই কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে নেয় তারা।
বেনাপোল ট্রান্সপোর্ট এজেন্সি মালিক সমিতি'র সাধারণ সম্পাদক আজিম উদ্দীন গাজী জানান, আগামী ১৬ জুনের মধ্যে শর্তগুলো যথাযথভাবে পূরণ না করলে পরবর্তীতে সমিতির পক্ষ হতে কঠোর নির্দেশনা ঘোষণা করা হবে।
আরও পড়ুন: বেনাপোল বন্দরে অনির্দিষ্টকালের জন্য পণ্য পরিবহন বন্ধ
এ ব্যাপারে বেনাপোল বন্দরের উপপরিচালক (ট্রাফিক) মামুন কবীর তরফদার জানান, আগামী ১৫ দিনের মধ্যে তিনটি করে নতুন ক্রেন ও ফর্কক্লিপ বন্দরে সংযোজন করা হবে। এছাড়া আগামী দুই মাসের মধ্যে পুরোনো ক্রেন ও ফরক্লিপগুলো পরিবর্তন করে সব নতুন ক্রেন ফরক্লিপ পণ্য উঠানো-নামানোর জন্য দেয়া হবে এই মর্মে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আশা করছি, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে এ কাজ সম্পন্ন হবে।
বিকল্প ৫ উৎস থেকে গম আমদানির প্রচেষ্টা চলছে: টিপু মুনশি
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, ভারত গম রপ্তানি নিষিদ্ধ করার পর সরকার ইউক্রেনসহ পাঁচটি বিকল্প উৎস থেকে গম আমদানির চেষ্টা করছে।
তিনি বলেন, মার্কিন ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়নের মধ্যে ভারত গম রপ্তানি নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে।
সোমবার সচিবালয়ে বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএসআরএফ) আয়োজিত এক সংলাপে এসব কথা বলেন বাণিজ্যমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘তবে আশার কথা হলো প্রতিবেশী দেশের ক্ষেত্রে ভারত এটা বিবেচনা করবে। আমরা আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি।’
মন্ত্রী বলেন, সরকার নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণ নয়, স্থিতিশীল রাখতে চায়।
আরও পড়ুন: বাজার নিয়ন্ত্রণ নয়, স্থিতিশীল রাখতে চায় সরকার: বাণিজ্যমন্ত্রী
তিনি বলেন, ‘সরকারের বাজার নিয়ন্ত্রণ করা উচিত না। আমরা ব্যবসায়ীবান্ধব। আমরা আন্তর্জাতিক বাজারের দাম অনুযায়ী দাম নির্ধারণ করে দেই। সে অনুযায়ী বাজারে দামটা থাকলে বাজার স্থিতিশীল থাকবে। আমরা নিয়ন্ত্রণ করা নয়, বাজার স্থিতিশীল রাখতে চাই।
তিনি বলেন, বিশ্ববাজারে পরিস্থিতি স্থিতিশীল হলে অভ্যন্তরীণ বাজারও স্থিতিশীল থাকে।
ভোজ্যতেল, চিনি ও মসুর ডালের দাম নিয়ে সামান্য সমস্যা রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের ভোজ্যতেলের ৯০ শতাংশ আমদানি করতে হয়। বিশ্ববাজারের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমাদের দেশে দাম বাড়ে।’
তিনি বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ খাদ্যপণ্যের ওপর ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে। তাই সামনে কিছু সংকট থাকায় সবাইকে সহনশীল হওয়ার আহ্বান জানান মন্ত্রী।
টিপু মুনশি বলেন, ‘শ্রীলঙ্কায় চলমান পরিস্থিতি নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। অনেকেই বলছেন, বাংলাদেশের এমন অবস্থা হতে পারে। কিন্তু সে রকম কোনো সম্ভাবনা নেই। প্রকৃতপক্ষে আমরা শ্রীলঙ্কাকে আর্থিক সহায়তা দিয়েছি।’
পেঁয়াজ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বর্তমানে পেঁয়াজের দাম একটু বেশি হলেও ক্রেতাদের নাগালের মধ্যে রয়েছে।
আরও পড়ুন: জুন মাসে আরও এক কোটি পরিবারকে খাদ্য সহায়তা দেয়া হবে: বাণিজ্যমন্ত্রী
তিনি বলেন, কৃষকরা যাতে দাম পায় এবং ভোক্তারাও যাতে কম দামে পেঁয়াজ কিনতে পারে সেটি আমরা দেখছি।
ভোজ্যতেলের ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, প্রচুর ব্যবসায়ীকে আমরা ধরছি। সেখানে অনেকের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থাও নেয়া হয়েছে এবং জেলেও পাঠানো হয়েছে। তবে এমন কোন পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চাই না যাতে বাজারে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ব্যবসায়ীরা জানে ঈদের পর দাম বাড়বে। তারা সেই সুযোগ নিয়েছে। আমাদের ভুল হয়েছে টানা দুই মাস তেলের দামটা নির্ধারণ করিনি। যদি করতাম তাহলে তারা সুযোগটা নিতে পারত না।
বিএসআরএফের সাধারণ সম্পাদক মাসউদুল হকের উপস্থাপনায় সংলাপ অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি তপন বিশ্বাস।
বেনাপোল বন্দরে অনির্দিষ্টকালের জন্য পণ্য পরিবহন বন্ধ
বেনাপোলে পর্যাপ্ত ক্রেন ও ফরক্লিপ না থাকায় মঙ্গলবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য পণ্য পরিবহন বন্ধ ঘোষণা দিয়েছে বেনাপোল ট্রান্সপোর্ট এজেন্সি মালিক সমিতি।
রবিবার বেনাপোল ট্রান্সপোর্ট এজেন্সি মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আজিম উদ্দিন গাজী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, বেনাপোল বন্দর দেশের সর্ববৃহৎ স্থলবন্দর হওয়া সত্ত্বেও এখানে ভারি পণ্য ওঠানো-নামানোর জন্য পর্যাপ্ত ক্রেন ও ফরক্লিপ নেই। যেগুলো আছে তার মধ্যে কয়েকটা কিছুটা ভালো থাকলেও পণ্য খালাস করতে গিয়ে বার বার নষ্ট হয়ে যায়। যে কারণে এ বন্দরে আমদানিকৃত ভারি পণ্য খালাস করতে দীর্ঘদিন সময় লেগে যাচ্ছে।
আরও পড়ুন: ৬ দিন পর বেনাপোলে আমদানি-রপ্তানি শুরু
তাই আগামী ১৭ মে থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য পণ্য পরিবহন বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে তারা।
এছাড়া এ বিষয়ে বেনাপোল স্থলবন্দরের উপ-পরিচালক (ট্রাফিক) মামুন কবির তরফদারকে চিঠি দিয়ে বিষয়টি জানালেও তিনি বিষয়টি আমলে নেননি বলে জানান তিনি।
বেনাপোল বন্দরের উপ-পরিচালক (ট্রাফিক) মামুন কবির তরফদার জানান, বন্দরে ছয়টি ক্রেন ও ১০টি ফরক্লিপ রয়েছে। এর মধ্যে কয়েকটি ক্রেন ফরক্লিপ নষ্ট হয়ে গেছে। যা মেরামতের কাজ চলছে। শিগগিরই সমস্যা কেটে যাবে।
বেনাপোল বন্দরে ক্রেন ও ফরক্লিপ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ব্ল্যাক বেঙ্গল এন্টারপ্রাইজের ম্যনেজার মিল্টন বলেন, বেনাপোল বন্দর দিয়ে বর্তমানে অধিক পরিমাণে পিডিপি (বিদ্যুৎ টাওয়ারের মালামাল) অ্যাঙ্গেল আমদানি হচ্ছে। এতে এ টিটিবি অ্যাঙ্গেল ওঠাতে ও নামাতে গিয়ে তাদের বেশ কিছু ক্রেন ও ফরক্লিপের যন্ত্রপাতি নষ্ট হয়েছে। ফলে পণ্য ওঠাতে-নামাতে সমস্যা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: বেনাপোল কাস্টমস হাউস থেকে ৪টি শুটার গান উদ্ধার
তিনি জানান, বন্দরের তিনটি ক্রেন ও আটটি ফরক্লিপের মধ্যে সচল আছে। খুব দ্রুত আরও দুটি ক্রেন আনা হবে।
নষ্ট হয়ে যাওয়া ক্রেন ফরক্লিপগুলো দ্রুত মেরামত করা হবে বলে তিনি জানান।
ইলেকট্রনিক পণ্যের মান বজায় রাখার আহ্বান এফবিসিসিআই সভাপতির
ইলেকট্রনিক্স পণ্যের বৈশ্বিক বাজারের সম্ভাবনা কাজে লাগাতে দেশীয় পণ্যের মান যথাযথভাবে নিশ্চিতের তাগিদ দিয়েছেন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ড্রাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন।
শনিবার (১৪ মে) বিকালে ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিকস মার্চেন্ডাইজ শীর্ষক এফবিসিসিআই স্ট্যান্ডিং কমিটির সভায় এ আহ্বান জানান তিনি।
এফবিসিসিআই কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সভায় জসিম উদ্দিন বলেন, একসময় ইলেকট্রিক্যাল পণ্য আমদানি করতে হত আমাদের। এখন প্রায় ৮০ শতাংশই দেশে তৈরি হয়। ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিকস খাতের প্রসারের জন্য কমপ্লায়ান্স একটি বড় ইস্যু। মানসম্মত পণ্য তৈরি করতে পারলে বিশ্ববাজারে ইলেকট্রিক্যাল পণ্য পৌঁছে দেয়া সম্ভব বলে জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, ছোট বড় সব কোম্পানিই দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখছে। ছোট ব্যবসায়ীদের টিকিয়ে রাখতে সরকারও যথেষ্ট নিরাপত্তা দিচ্ছে। তাদের জন্য নীতিমালা তৈরিতে সহযোগিতা করতে হবে আমাদেরকে। শুধুমাত্র নিজস্ব ব্যবসার উন্নতি হিসেব না করে পুরো খাতের উন্নয়নে কাজ করতে হবে আমাদের।
এসময় ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ প্রতিষ্ঠায় জোর দিতে ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানান জসিম উদ্দিন।
এফবিসিসিআই’র সিনিয়র সহসভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু বলেন, ইলেকট্রিক্যালসহ যেসব খাতের পণ্য দেশের বাইরে রপ্তানি করে রাজস্ব আয় করা সম্ভব, সেসকল খাতকে পূর্ণ সহযোগিতা করতে হবে আমাদের।
এফবিসিসিআই’র সহসভাপতি ও কমিটির ডিরেক্টর ইনচার্জ এম এ রাজ্জাক খান রাজ বলেন, গার্মেন্টস, চামড়াসহ প্রায় সব খাতে নীতিমালা থাকলেও ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিকস খাতের উন্নয়নে কোন সুনির্দিষ্ট নীতমালা নেই। যার ফলে দেশের অল্প কিছু কোম্পানি ছাড়া বেশিরভাগই মন্দা অবস্থায় আছে।
তিনি বলেন, ছোট ও মাঝারি উদ্যেক্তাদের বাঁচিয়ে রাখতে না পারলে তারা ব্যাংক থেকে দেয়া ঋণ পরিশোধ করতে ব্যর্থ হবে। ফলে ব্যাংক ও উদ্যোক্তা উভয়ই ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
পড়ুন: বাংলাদেশ ব্যাংকের রেমিট্যান্স অ্যাওয়ার্ড পেলেন ৬৭ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান
বাংলাদেশ টেলিভিশন প্রস্তুতকারক সমিতির সভাপতি ও কমিটির কো-চেয়ারম্যান মো. সোহেল খান সরকারের কাছে এ খাতে ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ এর সুবিধাসহ টেলিভিশন প্রস্তুতে আলাদা শিল্পাঞ্চলের দাবি জানান।
এফবিসিসিআই’র প্যানেল উপদেষ্টা ও কমিটির কো-চেয়ারম্যান ড. কাজী ইকবাল জানান, গবেষণা ও যথেষ্ট তথ্য উপাত্ত না থাকার কারনে বাংলাদেশে ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিকস খাতের লক্ষনীয় প্রসার হচ্ছে না। এ খাতের উন্নয়নে সামগ্রিক ম্যাপিং করে কাজ করা দরকার।
সভায় সভাপতিত্ব করেন এফবিসিসিআই’র সাবেক পরিচালক ও কমিটির সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মোহাব্বাত উল্লাহ। ইলেকট্রনিকস খাতে তথ্য উপাত্তের ঘাটতি উল্লেখ করে তিনি নিজ উদ্যোগে এ খাতের ডাটাব্যাংক তৈরি করে এফবিসিসিআইর মাধ্যমে সরকারের কাছে পাঠানোর পরিকল্পনার কথা জানান।
সভায় নিরাপত্তা যন্ত্রপাতি তৈরিতে সরকারের প্রণোদনা পাওয়া, সরকারি প্রকল্পে দেশীয় ক্যাবলের ব্যবহার বাড়ানো, দুবাই বা আফ্রিকাতে ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিকস পণ্যের হাব তৈরি করা, এ খাতে সরকারের ১৫ শতাংশ নগদ প্রণোদনা সহ বিভিন্ন দাবি তুলে ধরেন কমিটির অন্য সদস্যরা।
পড়ুন: বিদেশি মুদ্রা পাঠানো ও অ্যাকাউন্ট খোলার ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাখ্যা
বাংলাদেশ ব্যাংকের রেমিট্যান্স অ্যাওয়ার্ড পেলেন ৬৭ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান
পাঁচ বিভাগে ৬৭ জন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ব্যাংক রেমিট্যান্স অ্যাওয়ার্ড- ২০২০ পেয়েছেন।
পুরস্কারপ্রাপ্তদের মধ্যে রয়েছেন পেশাজীবী, ব্যবসায়ী, রেমিট্যান্স গ্রহণকারী ব্যাংক, এক্সচেঞ্জ হাউস ও প্রবাসী।
গত সাত বছর ধরে বাংলাদেশ ব্যাংক এ পুরস্কার দিলেও করোনা মহামারির কারণে সপ্তম রেমিটেন্স অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানের আয়োজন বিলম্বিত হয়।
আরও পড়ুন: বিদেশি মুদ্রা পাঠানো ও অ্যাকাউন্ট খোলার ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাখ্যা
রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ (কেআইবি) মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এ পুরস্কার তুলে দেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. আহমেদ মুনিরুহু সালেহীন ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব শেখ মোহাম্মদ সলীম উল্লাহ।
বিদেশি মুদ্রা পাঠানো ও অ্যাকাউন্ট খোলার ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাখ্যা
বাংলাদেশ ব্যাংক স্পষ্ট করে জানিয়েছে প্রবাসীরা দেশের যে কোনো তফসিলি ব্যাংকে বৈদেশিক মুদ্রা পাঠানোর জন্য অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবেন এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমতি ছাড়াই সেই অ্যাকাউন্টগুলোতে যে কোনো পরিমাণ অর্থ জমা করা যাবে।
প্রবাসীরা ফেরত আসার সময় যে কোনো পরিমাণ নগদ টাকা, ডলার বা অন্যান্য বৈদেশিক মুদ্রা নিয়ে আসলে, তারা তা তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা করতে পারবে এবং স্থানীয় মুদ্রার সঙ্গে তা বিনিময় করতে পারবে।
প্রবাসীরা কাস্টমস কর্তৃপক্ষকে না জানিয়েই তাদের অ্যাকাউন্টে ১০ হাজার মার্কিন ডলার পর্যন্ত জমা করতে পারবেন।
জনগণকে জানাতে এবং অবাধে বৈদেশিক মুদ্রা বিদেশে স্থানান্তরের বিভ্রান্তি দূর করতে মঙ্গলবার এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
বিদ্যমান বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেন নীতির অধীনে বিদেশে বসবাসকারী প্রবাসীরা দেশের ব্যাংকগুলোতে বৈদেশিক মুদ্রা পাঠানোর জন্য ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট বা অনাবাসি অ্যাকাউন্ট পরিচালনা করতে পারেন।
বিদেশ থেকে পাঠানো যে কোনো পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা বা বিদেশ থেকে দেশে আনা বৈদেশিক মুদ্রা কোনো প্রশ্ন ছাড়াই এসব অ্যাকাউন্টে জমা করা যাবে।
এছাড়া দেশ ত্যাগের সময় প্রবাসীরা তাদের সঙ্গে নগদ অর্থ, সর্বাধিক পাঁচ হাজার মার্কিন ডলার এবং বৈদেশিক মুদ্রা ব্যালেন্সের স্থিতি সাপেক্ষে বিদেশে নিয়ে যেতে পারেন।
প্রবাসী বা অনাবাসীদের নামে পরিচালিত এই অ্যাকাউন্টের বৈদেশিক মুদ্রা অবাধে সুদসহ বিদেশে পাঠানো যেতে পারে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদনের প্রয়োজন নেই।
বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, স্থানীয়ভাবে পরিচালিত অ্যাকাউন্টের বৈদেশিক মুদ্রা কোনো ঝামেলা ছাড়াই নির্ভরযোগ্য ব্যাংক থেকে টাকা হিসেবে ক্যাশ করা যাবে।
তৈরি পোশাক খাতের জন্য ভার্চুয়াল মার্কেটপ্লেস প্রতিষ্ঠায় চুক্তি
বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএমইএ) ‘আরএমজি সেক্টরের জন্য একটি ভার্চুয়াল মার্কেটপ্লেস প্ল্যাটফর্ম স্থাপন’- বিষয়ে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে জন্য সমীক্ষা পরিচালনার জন্য লাইটক্যাসল পার্টনারদের সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।
সমীক্ষায় (আরএমজি) সেক্টরের নীতির বিভিন্ন ত্রুটি, বাজারের সম্ভাব্যতা এবং এ খাতের প্রস্তুতি বিশ্লেষণ করা হবে। পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য একটি উপযুক্ত ব্যবসায়িক মডেল ও কর্ম পরিকল্পনা দেয়া হবে।
বিজিএমইএ-এর সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, ডিজিটাল প্রযুক্তির বিপ্লব ব্যবসায়িক প্রেক্ষাপটে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন এনেছে এবং নতুন ধারা ও সুযোগ সৃষ্টি করেছে; বিশেষ করে অনলাইন মার্কেটপ্লেসের দ্রুত বিস্তৃতি ঘটেছে।
তিনি বলেন, ‘ডিজিটাল প্রযুক্তির অগ্রগতির ফলে কোম্পানিগুলো ক্রমেই অনলাইনের দিকে ঝুঁকছে এবং কোভিড-১৯ ডিজিটাল রূপান্তরের গতিকে ত্বরান্বিত করেছে। ফলে ডিজিটাল ও ই-কমার্স খাতে বিপ্লব হয়েছে।
আরও পড়ুন: ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ ব্র্যান্ডের প্রচারের আহ্বান বিজিএমইএ’র
বিজিএমইএ প্রধান বলেন, পরিবর্তনশীল বাণিজ্যের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেয়াই নতুন সুযোগ টিকিয়ে রাখার এবং ব্যবহার করার চাবিকাঠি।
একটি ভার্চুয়াল মার্কেট প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা আরএমজি সেক্টরের বিক্রয়কে বাড়িয়ে তুলবে এবং মহামারির প্রভাব কাটিয়ে উঠবে।
‘এই গবেষণাটি একটি অনলাইন মার্কেটপ্লেস প্রতিষ্ঠার জন্য এ সেক্টরের চ্যালেঞ্জ এবং সুযোগগুলো চিহ্নিত করতে সাহায্য করবে।’
লাইটক্যাসল পার্টনার্সের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক জাহেদুল আমিন বলেন, বাংলাদেশের পোশাক খাতকে তার প্রতিযোগীদের থেকে এগিয়ে যাওয়ার জন্য প্রযুক্তি চালিত বাজার উন্নয়নকে কাজে লাগিয়ে প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা ধরে রাখতে হবে।
চুক্তি স্বাক্ষরের সময় লাইটক্যাসল পার্টনার্সের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইভদাদ আহমেদ খান মজলিশ, সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক জাহেদুল আমিন এবং বিজনেস কনসালটেন্ট রাফায়েত খান উপস্থিত ছিলেন।
এই গবেষণায় অর্থায়ন করা হবে আইএফসি-এর পার্টনারশিপ ফর ক্লিনার টেক্সটাইল প্রোগ্রাম, ডেনমার্ক সরকার ডেনিশ ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট এজেন্সি এবং বাংলাদেশে নেদারল্যান্ডস রাজ্যের দূতাবাসের মাধ্যমে সমর্থিত।
আরও পড়ুন: গার্মেন্টস ও টেক্সটাইল শিল্পে বৈচিত্র্য আনার আহ্বান এফবিসিসিআই সভাপতির
শ্রমিক ছাঁটাইয়ের ‘ঘোষণা’ দেয়া হয়নি: বিজিএমইএ
বিদেশি মুদ্রা আদায়ে এলসি মার্জিন বাড়িয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক
বিদেশি মুদ্রা আদায়ে পণ্য আমদানির ঋণপত্র বা এলসি মার্জিন পরিবর্তন করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কিছু অত্যাবশ্যকীয় ছাড়া বাকি সব পণ্য আমদানির জন্য ব্যাংকগুলোকে ৫০ থেকে ৭৫ শতাংশ এলসি মার্জিন আরোপ করার নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এ বিষয়ে গত ১১ এপ্রিল জারি করা নির্দেশনাটি স্থগিত করা হয়েছে।
মঙ্গলবার বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধান ও নীতি বিভাগ (বিআরপিডি) অবিলম্বে কার্যকর এই নতুন নির্দেশ জারি করেছে, যা পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত বলবৎ থাকবে।
আরও পড়ুন: নতুন নোট বাজারে ছাড়া শুরু করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং বৈশ্বিক পরিস্থিতির পরিবর্তনের কথা বিবেচনা করে ঋণ ও সমন্বিত বৈদেশিক মুদ্রার উত্তম ব্যবস্থাপনার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক আগের এলসি মার্জিন পরিবর্তন করেছে বলে নির্দেশনায় বলা হয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক মোটর গাড়ি, হোম অ্যাপ্লায়েন্স ইলেকট্রনিক্স এবং বৈদ্যুতিক পণ্যগুলোর জন্য সর্বনিম্ন ৭৫ শতাংশে ক্রেডিট খোলার মার্জিন নির্ধারণ করেছে।
শিশুখাদ্য, অত্যাবশ্যকীয় খাদ্যদ্রব্য ও জ্বালানি, জীবনরক্ষাকারী ওষুধ, স্থানীয় ও রপ্তানিমুখী শিল্প এবং কৃষি সংশ্লিষ্ট পণ্য ব্যতীত অন্য সব পণ্য ও পণ্য আমদানিতে এলসি খোলার জন্য ন্যূনতম ৫০ শতাংশ মার্জিন সংরক্ষণ করতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: চলতি মূলধনের ঋণসীমা বাড়াল বাংলাদেশ ব্যাংক
এজেন্ট ব্যাংকিং কার্যক্রমের সংশোধিত নির্দেশিকা জারি বাংলাদেশ ব্যাংকের
রপ্তানি আয় ১০ মাসে রেকর্ড ৪৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়াল
চলতি অর্থবছরের ১০ মাসে বাংলাদেশের রপ্তানি আয় ৩৫ দশমিক ১৪ শতাংশ বেড়ে ৪৩ দশমিক ৩৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার হয়েছে যা ২০২১ অর্থবছরের চেয়ে ১২ শতাংশ বেশি।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) চলতি অর্থবছরে ৫১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রমের মাইলফলক তৈরি করবে বলে আশা করছে।
সোমবার প্রকাশিত ইপিবির তথ্য অনুযায়ী, এপ্রিলে এক মাসে পণ্য ও সেবা রপ্তানি করে বাংলাদেশি উদ্যোক্তারা চার দশমিক ৭৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করেছেন।
আরও পড়ুন: নেপালে বিদ্যুৎ রপ্তানির পাশাপাশি আমদানির প্রস্তাব বাংলাদেশের
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ সত্ত্বেও কোভিড-১৯ মহামারি পরবর্তী সময়ে বিশ্ববাজারে তৈরি পোশাকের ক্রমবর্ধমান চাহিদার কারণে দেশের উদ্যোক্তারা এই রেকর্ড অর্জন করেছেন।
এ ধারা অব্যাহত থাকলে চলতি অর্থবছরের শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো ৫১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করে রপ্তানি বাণিজ্যে ইতিহাস সৃষ্টি করবে।
আরও পড়ুন: রপ্তানি বাড়াতে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্পকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে সরকার: প্রধানমন্ত্রী
উচ্চ রপ্তানি আয়ের একক মাস হিসেবে এপ্রিল বাংলাদেশের ইতিহাসে চতুর্থ সর্বোচ্চ মাস।
চলতি অর্থবছরের ডিসেম্বরে সর্বোচ্চ আয় ছিল চার দশমিক ৯০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ছিল জানুয়ারিতে চার দশমিক ৭৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। মার্চে ছিল চার দশমিক ৭৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার যা ফেব্রুয়ারিতে চার দশমিক ২৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছিল।