বিশ্ব
লিবিয়ায় দু’পক্ষের সংঘর্ষে নিহত ৩০, গৃহযুদ্ধের আশঙ্কা
লিবিয়ায় সশস্ত্র দুই গোষ্ঠীর মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষে ৩০ জন নিহত হওয়ার একদিন পর সরকার সমর্থিত মিলিশিয়া বাহিনী রবিবার রাজধানী ত্রিপোলির রাস্তায় টহল দিতে দেখা গেছে।
নিহতদের মধ্যে অন্তত ১৭ জন বেসামরিক নাগরিক রয়েছে বলে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
শনিবারের প্রথম দিকে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। ত্রিপোলি-ভিত্তিক সরকার সমর্থক মিলিশিয়াদের সঙ্গে জোটবদ্ধ অন্যান্য সশস্ত্র গোষ্ঠীর মধ্যে এ সংঘর্ষ হয়।
স্থানীয় বাসিন্দাদের আশঙ্কা, গত এক মাস মোটামুটি স্থিতিশীল থাকার পর এ সংঘর্ষ লিবিয়ায় দীর্ঘস্থায়ী সংঘাতের দিকে ফিরে যেতে পারে।
২০১১ সালে ন্যাটো-সমর্থিত অভিযানে দীর্ঘকালীন স্বৈরশাসক মোয়াম্মার গাদ্দাফির পতন ও নিহত করার পর থেকে লিবিয়ায় রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলা শুরু হয়।
ডিসেম্বরে নির্বাচন আয়োজনে ব্যর্থতা এবং প্রধানমন্ত্রী আবদুল হামিদ দ্বেইবাহের পদত্যাগে অস্বীকৃতির কারণে বর্তমান অচলাবস্থা বেড়েছে।
শনিবারের সংঘর্ষে ভারী কামান ব্যবহার করা হয়েছে। সংঘর্ষে শত শত লোক আটকা পড়েছে এবং হাসপাতাল, সরকারি ও আবাসিক ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সংঘর্ষের এলাকায় পোড়া যানবাহন ময়লা-আবর্জনা পড়ে থাকতে দেখা গেছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সংঘর্ষে অন্তত ৩০ জন নিহত ও ১৫৯ জন আহত হয়েছে।
পড়ুন: গুজরাট দাঙ্গা: ১১ দণ্ডপ্রাপ্ত ধর্ষকের মুক্তির বিরুদ্ধে ভারতে বিক্ষোভ
লিবিয়ায় ইউনিসেফের প্রতিনিধি মিশেল সার্ভেদেই বলেছেন, নিহতদের মধ্যে একজন ১৭ বছর বয়সী কিশোর এবং পাঁচ বছর বয়সী আরও চারজন আহত হয়েছে।
নিহতদের মধ্যে মুস্তফা বারাকা নামে একজন রয়েছেন। তিনি একজন কৌতুক অভিনেতা যিনি মিলিশিয়া এবং দুর্নীতিকে উপহাস করার জন্য তার সোশ্যাল মিডিয়া ভিডিওগুলোর জন্য পরিচিত। সোশ্যাল মিডিয়ায় লাইভ-স্ট্রিমিং করার সময় তাকে গুলি করা হয়েছিল বলে জানা গেছে। তাকে টার্গেট করা হয়েছিল কি না তা স্পষ্ট নয়।
অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস কয়েক ডজন বাসিন্দা এবং প্রত্যক্ষদর্শীর সাথে কথা বলেছে। তারা তাদের বাড়ি, সরকারি ভবন ও হাসপাতালে আটকে পড়া নারী ও শিশুসহ মানুষের ভয়ঙ্কর দৃশ্য বর্ণনা করেছেন।
একটি আবাসিক অ্যাপার্টমেন্টে অনেক পরিবারের সাথে আটকে পড়া একজন নারী বলেন, ‘আমরা আমাদের চোখের সামনে আমাদের বাচ্চাদের চোখে মৃত্যু দেখছি। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত সেই নিরপরাধ শিশুদের রক্ষা করা, যেমনটি তারা গাদ্দাফির সময় করেছিল।’
পড়ুন: পারমাণবিক চুক্তি সম্মেলনে চূড়ান্ত নথিতে রাশিয়ার বাধা
বন্যা: পাকিস্তানে মৃত্যু হাজার ছাড়াল
পাকিস্তানে আকস্মিক বন্যায় মৃত্যুর সংখ্যা এক হাজার ছাড়িয়েছে। রবিবার দেশটির জলবায়ুমন্ত্রী এই বর্ষা মৌসুমকে ‘একটি মারাত্মক জলবায়ু বিপর্যয়’ বলে অভিহিত করেছেন।
ভারী বর্ষণের ফলে সৃষ্ট আকস্মিক বন্যায় গত মধ্য জুন থেকে বহু হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। পানির তোড়ে শস্য ও অনেক গ্রাম ভেসে গেছে। সেনাবাহিনী ও উদ্ধারকর্মীরা হাজার হাজার বাস্তুচ্যুত পাকিস্তানিদের নিরাপদে সরিয়ে আশ্রয় শিবিরে নিচ্ছে এবং খাদ্য সরবরাহ করছে।
পাকিস্তানের জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ জানায়, চলতি বছরের মধ্য জুনে বর্ষা মৌসুমের শুরু থেকে মানুষের প্রাণহানির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে
এক হাজার ৩৩ জনে। এছাড়া খাইবার পাখতুন ও সিন্ধু প্রদেশে নতুন করে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।
পাকিস্তানি সিনেটর ও দেশের জলবায়ু বিষয়ক শীর্ষ কর্মকতা শেরি রেহমান টুইটারে একটি ভিডিও পোস্ট করে তার অভিজ্ঞতা বর্নণা করে বলেন, ‘এই দশকে সবচেয়ে কঠিনতর একটি মারাত্মক জলবায়ু বিপর্যয়।’
তিনি বলেন, ‘আমরা এই মুহূর্তে চরম আবহাওয়া বিপর্যয়ের সামনে অবস্থান করছি, অবিরাম তীব্র দাবদাহ, দাবানল, আকস্মিক বন্যা, বহু হিমবাহ গলে যাওয়া, বন্যা পরিস্থিতি ও সারাদেশে দশকের দানব বন্যা অবিরাম ধ্বংসযজ্ঞ চালাচ্ছে।’ ইউরোপীয় ইউনিয়নে দেশটির রাষ্ট্রদূত একটি ভিডিও বিবৃতি পুনরায় টুইট করেছেন।
প্রাদেশিক সরকারের মুখপাত্র কামরান বঙ্গশ বলেন, রাতভর সোয়াত নদীর প্লাবনে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের খাইবার পাখতুন প্রদেশের হাজার হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে- বিশেষ করে চরসদ্দা ও নওশেরা জেলা। তাদেরকে বাড়ি থেকে সরিয়ে সরকারি ভবনের আশ্রয় শিবিরে নেয়া হয়েছে। তাদের অনেকে রাস্তার পাশে আশ্রয় নিয়েছেন।
এই অভূতপূর্ব বর্ষা মৌসুম দেশের চারটি প্রদেশকেই ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। এতে প্রায় তিন লাখ বাড়িঘর, অসংখ্য রাস্তাঘাট ধ্বংস এবং বিদ্যুৎ সরবরাহ বিঘ্নিত হওয়ায় লাখ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
তুর্কি সংবাদ সংস্থা টিআরটি ওয়ার্ল্ডকে রেহমান বলেন, অল্প বৃষ্টিতেই আমাদের পাকিস্তানের চারভাগের একভাগ বা তিন ভাগের একভাগ পানিতে তলিয়ে যায়।
পড়ুন: ‘ভুল’ করে পাকিস্তানে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ: ভারতীয় বিমানবাহিনীর ৩ কর্মকর্তা বরখাস্ত
তিনি বলেন, ‘এটি কিছুটা বৈশ্বিক সংকট এবং ভূমির টেকসই উন্নয়নে অবশ্যই ভালো পরিকল্পনা দরকার।পাশাপাশি জলবায়ু সহনশীল ফসলের পাশাপাশি ভালো কাঠামো থাকতে হবে।’
সরকার সারাদেশে বেসামরিক কর্তৃপক্ষের উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রমে সহায়তার জন্য সেনাবাহিনী মোতায়েন করেছে।
ইতোমধ্যে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী একটি বিবৃতিতে বলেছেন, তারা দেশের উত্তরাঞ্চলের একটি দ্বীপে আটকে পড়া ২২ পর্যটককে আকাশপথে সরিয়ে নিয়েছেন।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানে বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১ হাজার
পাকিস্তানে মৌসুমী বৃষ্টিতে নিহত ৩৫৭, আহত ৪ শতাধিক
গুঁড়িয়ে দেয়া হয়েছে নয়ডার টুইন টাওয়ার
ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লির কাছে নয়ডা শহরে নয় বছর আগে স্থাপিত দুটি আকাশচুম্বী ভবন রবিবার দুপুর আড়াইটায় নিয়ন্ত্রিত এক বিস্ফোরকের সহায়তায় গুঁড়িয়ে দেয়া হয়েছে।
ভারতের সুপ্রিম কোর্ট গত বছরের আগস্টে ৪০ তলা বিশিষ্ট জোড়া এই বহুতল ভবন ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেন। একটি বেসরকারি ডেভেলপার সুপারটেকের তৈরি ‘অ্যাপেক্স’ ও ‘সিয়ানে’ নামের এই বহুতল ভবন দুটিতে স্থাপনার নীতিমালা ভঙ্গের দায়ে এ আদেশ দেয়া হয়েছিল।
তিন হাজার ৭০০ কেজি বিস্ফোরক ব্যবহার করে জোড়া বহুতল ভবন দুটি ভেঙে ফেলা হয়। ভারতে এই প্রথম এতো উঁচু ভবন ভেঙে ফেলা হল।
স্থানীয় গণমাধ্যমকে ভেঙে ফেলার কাজে নিয়োজিত কোম্পানি এডিফিস ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের উৎকর্ষ মেহতা বলেন, ‘যেমনটা ভেবেছিলাম ঠিক সেরকমই স্বল্পমাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। আমরা ১০০ শতাংশ সফলতা অর্জন করেছি।’
স্থানীয় সরকারি কর্মকর্তা পূর্বেই স্থানীয় বাসিন্দাদের নিরাপদ দূরে সরিয়ে নেয় এবং বিপথগামী কুকুরগুলোকে পশু কেন্দ্রে নিয়ে যায়।
আরও পড়ুন: আজ গুঁড়িয়ে দেয়া হবে নয়ডার টুইন টাওয়ার
একজন পুলিশ অফিসার জানিয়েছেন, ভেঙে ফেলার সময় কাছাকাছি নয়ডা এক্সপ্রেসওয়ে ৪৫ মিনিটের জন্য বন্ধ রাখা হয়। শহরের হাসপাতালগুলোকে সতর্ক থাকতে বলা হয়। কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতির জন্য ৮-১০টি অ্যাম্বুলেন্স পাশেই প্রস্তুত রাখা হয়েছিল।
ভারতে বহুতল ভবন ভেঙে ফেলার ঘটনা বিরল। দুই বছর আগে, দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য কেরালার কর্তৃপক্ষ পরিবেশগত নিয়ম লঙ্ঘনের জন্য সমুদ্রের কাছে দুটি বিলাসবহুল আকাশচুম্বী ভবন ভেঙ্গে ফেলে।
আরও পড়ুন: নদীর মাঝখানে সরকারি বহুতল ভবন!
আজ গুঁড়িয়ে দেয়া হবে নয়ডার টুইন টাওয়ার
ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লির কাছে নয়ডা শহরে নয় বছর আগে স্থাপিত দুটি আকাশচুম্বী ভবন আজ (রবিবার) দুপুরে নিয়ন্ত্রিত এক বিস্ফোরকের সহায়তায় গুঁড়িয়ে দেয়া হবে।
ভারতের সুপ্রিম কোর্ট গত বছরের আগস্টে ৪০ তলা বিশিষ্ট জোড়া এই বহুতল ভবন ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেন। একটি বেসরকারি ডেভেলপার সুপারটেকের তৈরি ‘অ্যাপেক্স’ ও ‘সিয়ানে’ নামের এই বহুতল ভবন দুটিতে স্থাপনার নীতিমালা ভঙ্গের দায়ে এ আদেশ দেয়া হয়েছিল।
স্থানীয় সময় দুপুর ২টায় তিন হাজার ৭০০ কেজি বিস্ফোরক ব্যবহার করে জোড়া বহুতল ভবন দুটি ভেঙে ফেলা হবে। ভারতে এই প্রথম এতো উঁচু ভবন ভেঙে ফেলা হচ্ছে।
স্থানীয় গণমাধ্যমকে ভেঙে ফেলার কাজে নিয়োজিত কোম্পানি এডিফিস ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের উৎকর্ষ মেহতা বলেন, ‘আমার লোম খাড়া হয়ে যাচ্ছে। আমি কিছুটা নার্ভাস, সেইসাথে আত্মবিশ্বাসী।’
মেহতা আরও বলেন, বিস্ফোরণের সময় ৩০-৪০ মিটার ব্যাসার্ধে স্বল্পমাত্রার ভূমিকম্পের মতো কম্পন অনুভূত হতে পারে।
ধুলাবালি ঠিক হতে ১৫-২০ মিনিট সময় লাগতে পারে। তবে পুরো ভবনের ধ্বংসাবশেষ সড়াতে তিন থেকে চার মাস সময় লেগে যেতে পারে। নয়ডার আকাশ পরিষ্কার করতে ‘অ্যান্টি স্মোক’ বন্দুক প্রস্তুত করা হয়েছে।
স্থানীয় সরকারি কর্মকর্তা জানিয়েছেন, স্থানীয় নাগরিক কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যে যমজ বহুতল ভবনের আশেপাশের সমস্ত হাউজিং সোসাইটির বাসিন্দাদের সরিয়ে নেয়ার বিষয় নিশ্চিত করেছে। বিপথগামী কুকুরদেরও পশু আশ্রয় কেন্দ্রে স্থানান্তর করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: নগরীর বহুতল ভবনের আগুন নিয়ন্ত্রণে
একজন পুলিশ অফিসার জানিয়েছেন, ভেঙে ফেলার সময় কাছাকাছি নয়ডা এক্সপ্রেসওয়ে ৪৫ মিনিটের জন্য বন্ধ থাকবে। শহরের হাসপাতালগুলোকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতির জন্য ৮-১০টি অ্যাম্বুলেন্স পাশেই প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
ভারতে বহুতল ভবন ভেঙে ফেলার ঘটনা বিরল। দুই বছর আগে, দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য কেরালার কর্তৃপক্ষ পরিবেশগত নিয়ম লঙ্ঘনের জন্য সমুদ্রের কাছে দুটি বিলাসবহুল আকাশচুম্বী ভবন ভেঙ্গে ফেলে।
আরও পড়ুন: নদীর মাঝখানে সরকারি বহুতল ভবন!
২৪ ঘণ্টায় বিশ্বে করোনায় মৃত্যু ১ হাজার ৪৩০
বিশ্বের বিভিন্ন অংশে নতুন করে সংক্রমণ বৃদ্ধির মধ্যে দিয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বব্যাপী করোনায় এক হাজার ৪৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে।
বৈশ্বিক ডাটা অনুযায়ী, রবিবার সকাল পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে করোনায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৬০ কোটি ৫৪ লাখ ২৯ হাজার ৫১২ জনে ছাড়িয়েছে এবং মারা গেছেন ৬৪ লাখ ৮৭ হাজার ৩৪ জন।
করোনায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ আমেরিকায় এখন পর্যন্ত মোট শনাক্তের সংখ্যা ৯ কোটি ৬০ লাখ তিন হাজার ৪০৪ জন এবং মৃত্যুবরণ করেছে ১০ লাখ ৬৯ হাজার ১২৪ জন।
আরও পড়ুন: বিশ্বে করোনায় মৃত্যু ৬৪ লাখ ৮৫ হাজার ছাড়াল
বাংলাদেশের প্রতিবেশি দেশ ভারতে মোট চার কোটি ৪৩ লাখ ৯৮ হাজার ৬৯৬ জনের সংক্রমণ চিহ্নিত হয়েছে। একই সময়ে মৃত্যু সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে পাঁচ লাখ ২৭ হাজার ৫৯৭ জনে।
বাংলাদেশ পরিস্থিতি
শনিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও দুজন মারা গেছেন। এসময়ে নতুন ১৫৬ জনের শরীরে এই ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। দেশে এখন পর্যন্ত করোনায় মৃতের সংখ্যা ২৯ হাজার ৩৩২ জন এবং শনাক্তের সংখ্যা ২০ লাখ ১১ হাজার ১০০ জনে পৌঁছেছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় তিন হাজার ৬৬৩ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত ১৭ লাখ ৮৯ হাজার ছাড়াল
এ সময় শনাক্তের হার চার দশমিক ২৬ শতাংশ। মোট পরীক্ষায় এ পর্যন্ত শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৬৫ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় মোট মৃত্যুর হার এক দশমিক ৪৬ শতাংশ।
এদিকে, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন আরও ১৮০ জন। এ নিয়ে দেশে মোট সুস্থ ব্যক্তির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৯ লাখ ৫৫ হাজার ২৬৪ জনে। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯৭ দশমিক ২২ শতাংশ।
গুজরাট দাঙ্গা: ১১ দণ্ডপ্রাপ্ত ধর্ষকের মুক্তির বিরুদ্ধে ভারতে বিক্ষোভ
২০০২ সালে ভারতের গুজরাটের সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় এক মুসলিম নারীর সংঘবদ্ধ ধর্ষণ মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পাওয়া ১১ আসামির মুক্তির প্রতিবাদে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। শনিবার শত শত মানুষ ভারতের বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ করে।
দেশটির রাজধানী নয়াদিল্লিতে বিক্ষোভকারীরা স্লোগান দেয় এবং গুজরাট সরকারের কাছে এই মুক্তির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করার দাবি জানায়। ভুক্তভোগীদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে গানও গায় বিক্ষোভকারীরা।
অন্যান্য রাজ্যেও একই ধরনের বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
পড়ুন: নূপুর শর্মার দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত: ভারতের সুপ্রিম কোর্ট
১৫ আগস্ট যখন ভারত স্বাধীনতার ৭৫ বছর উদযাপন করে, তখন সাজা স্থগিত করে এই ১১ জনকে মুক্তি দেয়া হয়। ধর্ষণ, হত্যা এবং বেআইনি সমাবেশের জন্য ২০০৮ সালে তারা দোষী সাব্যস্ত হয়েছিল।
ভুক্তভোগী, যার বয়স এখন ৪০, তিনিও আদালতের এই সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, গুজরাট রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্ত তাকে অসাড় করেছে এবং ন্যায়বিচারের প্রতি তার বিশ্বাসকে নড়বড়ে করে দিয়েছে।
২০০২ সালে গুজরাটে সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় নির্মমভাবে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের সময় ওই ভুক্তভোগী গর্ভবতী ছিলেন।
১৯৪৭ সালে ব্রিটেনের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভের পর থেকে ভারতের সবচেয়ে বড় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার ঘটনা ছিল এই গুজরাট দাঙ্গা। এই দাঙ্গায় এক হাজারেরও বেশি লোক নিহত হয়েছিল, যাদের বেশিরভাগই মুসলমান ছিল। এই সহিংসতায় ভুগভোগী নারীর তিন বছরের মেয়েসহ পুরো পরিবারও নিহত হয়েছে।
সমাজকর্মী কবিতা কৃষ্ণান বলেন, ‘পুরো দেশের উচিত প্রধানমন্ত্রীর কাছে সরাসরি উত্তর চাওয়া।’
গুজরাটের কর্মকর্তারা, যেখানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)ক্ষমতায় রয়েছে, তারা বলেছে যে অপরাধীদের ক্ষমার আবেদন মঞ্জুর করা হয়েছে। কারণ তারা ১৪ বছরেরও বেশি জেল খেটেছে। ১৯৯২ সালের ক্ষমা নীতির অধীনে তাদের মুক্তি দেয়া হয়েছে।
ফেডারেল সরকার কর্তৃক ২০১৪ সালে গৃহীত নীতির একটি নতুন সংস্করণে ধর্ষণ এবং হত্যাসহ কিছু অপরাধের জন্য দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তিদের সাজা মওকুফ ও মুক্তি দেয়ার বিধান বাতিল করা হয়েছে।
এই দাঙ্গার জন্য গুজরাটের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী এবং ভারতের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে দায়ী করা হয়। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি এই দাঙ্গার অনুমতি দিয়েছেন এবং এমনকি উস্কানি দিয়েছেন। কিন্তু মোদি বারবার এ ঘটনায় নিজেকে নির্দোষ বলে আসছেন। তিনি দাঙ্গায় ভূমিকা রাখার কথা অস্বীকার করেছেন এবং সুপ্রিম কোর্টও বলেছে যে তার বিরুদ্ধে মামলা করার কোনও প্রমাণ খুঁজে পাওয়া যায়নি।
নয়াদিল্লির তরুণ বিক্ষোভকারী আছিয়া কুরেশি জানান, তিনি ভুক্তভোগীর জন্য ন্যায়বিচারের নিশ্চিতে বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘মোদি ১৫ আগস্ট ভারতের নারীদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষার বিষয়ে একটি ভাষণ দিয়েছিলেন এবং একই দিনে তারা ধর্ষকদের মুক্তি দেয়। এমন পরিস্থিতিতে আমরা কীভাবে নিরাপদ?’
আরও পড়ুন: ভারতে মন্দিরে পদদলিত হয়ে নিহত ৩
বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের সঙ্গে অন্য কোনো সম্পর্কের তুলনা হয়না: তথ্যমন্ত্রী
পাকিস্তানে বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১ হাজার
পাকিস্তানে ভারী বর্ষণে আকস্মিক বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে এক হাজার জনে দাঁড়িয়েছে।
শনিবার দেশটির কর্মকর্তারা বন্যায় এই মৃতের সংখ্যার পাশাপাশি হাজার হাজার মানুষ আহত ও বাস্তুচ্যুত হওয়ার কথা জানায়।
দরিদ্র ইসলামিক জাতিটি মারাত্মক বন্যার ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক সহযোগিতা চাওয়ার একদিন পরই নতুন করে মৃত্যুহার বাড়ল।
এই সংকট সরকারকে জরুরি অবস্থা জারি করতে বাধ্য করেছে।
চরসদ্দার একজন উচ্চ কর্মকর্তা সানিয়া সাফি বলেন, উত্তর-পূর্বাঞ্চলের প্রদেশ খায়বার পাখতুনে বন্যায় সোয়াত নদীর পানি নিয়ন্ত্রণের প্রধান
গেটটি ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় চরসদ্দা ও নওশেরা জেলা প্লাবিত হয়েছে।
দেশটির তথ্যমন্ত্রী মারিয়াম আওরঙ্গজেব বলেন, সিন্ধু, খায়বার পাখতুন ও পূর্বাঞ্চলীয় পাঞ্জাব এবং দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের বেলুচিস্তান প্রদেশের অনেক জেলায় সেনাবাহিনী ও উদ্ধারকারী সংস্থাগুলো আক্রান্ত মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে নিচ্ছে। সরকার ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য পর্যাপ্ত তহবিল ঘোষণা করেছে।
শুক্রবার সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অসীম ইফতেখার বলেন, শাহবাজ শরীফের সহযোগিতার আহ্বানের পর জাতিসংঘ বন্যার্তদের জন্য ১৬০ মিলিয়ন ডলার সহায়তা দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
দেশটির জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ জানায়, শুক্রবার ও শনিবার পর্যন্ত বন্যায় মৃতের সংখ্যা ছিল ৪৫ জন। যা এখন দাঁড়িয়েছে ৯৮২ জনে, আহত হয়েছেন আরও ১৪৫৬ জন।
প্রবল বর্ষণ পরবর্তী আকস্মিক বন্যায় সেতু, সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় গোটা পাকিস্তানে ফল ও সবজি বাজারে সরবরাহ কমে যাওয়ায় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে।
আরও পড়ুন: ‘ভুল’ করে পাকিস্তানে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ: ভারতীয় বিমানবাহিনীর ৩ কর্মকর্তা বরখাস্ত
পাকিস্তানে মৌসুমী বৃষ্টিতে নিহত ৩৫৭, আহত ৪ শতাধিক
পাকিস্তানে নৌকাডুবিতে ১৯ নারীর মৃত্যু
ফিলিপাইনে ফেরিতে অগ্নিকাণ্ডে ৮০ জনের বেশি মানুষ উদ্ধার
ফিলিপাইনের ম্যানিলার দক্ষিণের একটি বন্দরের কাছে ‘এমভি এশিয়া ফিলিপাইন’ নামের একটি ফেরিতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এঘটনায় ওই ফেরি থেকে যাত্রী ও ক্রু মিলিয়ে ৮০ জনের বেশি মানুষকে জীবিত উদ্ধার করেছে দেশটির উপকূলরক্ষী কর্মী ও স্বেচ্ছাসেবকরা। তবে এখনও দুজন যাত্রী নিখোঁজ রয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
জানা যায়, এমভি এশিয়া ফিলিপাইন ৪৯ জন যাত্রী ও ৩৮ জন ক্রু নিয়ে যাত্রা করেছিল।
শনিবার কর্মকর্তারা জানায়, ঝোড়ো বাতাসের কারণে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। অনেকে পানিতে ঝাঁপ দিয়ে নিজেদের প্রাণ বাঁচায়। দুইজন যাত্রীর খোঁজে অনুসন্ধান চালানো হচ্ছে।
কোস্টগার্ড জানিয়েছে, কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত না দুজন নিখোঁজ আছেন নাকি ইতোমধ্যেই তারা অন্য যাত্রীদের সঙ্গে পাড়ে উঠে এসে কর্মকর্তাদের না জানিয়েই তাৎক্ষণিকভাবে বাড়ি চলে গেছেন।
উদ্ধারকৃত যাত্রীদের একজন জানান, ফেরিটি ওরিয়েন্টাল মিন্ডোরো প্রদেশের কালাপান শহর থেকে যাত্রা শুরু করে। বাটাঙ্গাস বন্দর থেকে প্রায় এক মাইল দূরে থাকার সময় দ্বিতীয় ডেক থেকে ধোঁয়া বের হয় এবং তারপরে আগুন ধরে যায়।
আরও পড়ুন: ফিলিপাইনে ৭.৩ মাত্রার ভূমিকম্প, ব্যাপক ক্ষতির শঙ্কা
বন্দরের কাছাকাছি চলে আসায় উপকূলরক্ষী কর্মকর্তারা দ্রুত জাহাজ, মোটর ব্যাঙ্কাস ও টাগবোট নিয়ে গিয়ে দুর্ঘটনাগ্রস্তদের উদ্ধার করে।
উপকূলরক্ষী কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, কোস্টগার্ড একটি জাহাজ নিয়ে গিয়ে ফেরিটির আগুন নেভাতে সমর্থ হয়। ফেরিটিতে অন্তত ১৬টি গাড়ি ও ট্রাক ছিল।
অপর এক যাত্রী বেনেডিক্ট ফার্নান্দেজ শুক্রবার রাতে ডিজেডএমএম রেডিওকে জানান, ফেরিটি বন্দরের কাছে আসার সঙ্গে সঙ্গে ক্রু সদস্যরা একটি ইঞ্জিন চালু ও বন্ধ করার চেষ্টা করার সময় দ্বিতীয় ডেক থেকে ধোঁয়া ও আগুনের শিখা দেখা যায়।
তিনি আরও জানান, তিনি অন্যান্য যাত্রীদের সঙ্গে তৃতীয় ডেক থেকে তার দুই সন্তানকে নিয়ে পানিতে ঝাঁপ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।
উপকূলরক্ষীরা বলেছেন, সাধারণত এমন ঘটনা ঘটে যখন ফেরিগুলো নিয়ম অমান্য করে অধিক যাত্রী বহন করে। তবে এই ফেরিটি প্রায় ৪০০ যাত্রী বহন করতে সক্ষম। এখনও তদন্ত চলছে।
ঘন ঘন ঝড়, খারাপভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করা নৌযান ও অতিরিক্ত ভিড় প্রভৃতি কারণে ফিলিপাইন দ্বীপপুঞ্জে প্রায়ই সমুদ্র দুর্ঘটনা ঘটে।
১৯৮৭ সালের ডিসেম্বরে, ফেরি ডোনা পাজ একটি জ্বালানি ট্যাঙ্কারের সঙ্গে সংঘর্ষের পরে ডুবে যায়। শান্ত সমুদ্রে হওয়া বিশ্বের সবচেয়ে ভয়াবহ সামুদ্রিক বিপর্যয় এটি। এ ঘটনায় প্রায় ৪৩০০ জনেরও বেশি মানুষ মারা যায়।
আরও পড়ুন: ফিলিপাইনে ঝড়ে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৬৭, নিখোঁজ ১১০
ফিলিপাইনে টাইফুন ‘রাই’য়ের তাণ্ডবে নিহত বেড়ে ২০৮
এফবিআই: ম্যাগাজিন ও অন্যান্য নথির সঙ্গে ‘টপ সিক্রেট’ নথি মিশিয়ে রেখেছিল ট্রাম্প
চলতি বছরের শুরুর দিকে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ফ্লোরিডা এস্টেট থেকে উদ্ধার করা ১৫টি বাক্সের মধ্যে ১৪টি শ্রেণীবদ্ধ নথি রয়েছে। যার মধ্যে অনেকগুলো ‘টপ সিক্রেট’ নথি বিভিন্ন সংবাদপত্র, ম্যাগাজিন ও ব্যক্তিগত চিঠিপত্রের সঙ্গে মিশিয়ে রাখা হয়েছিল। দেশটির বিচার বিভাগের অনুরোধের প্রেক্ষিতে শুক্রবার প্রকাশিত এফবিআই হলফনামা থেকে এ তথ্য জানা যায়।
ট্রাম্পের মার-এ-লাগো এস্টেটে অভিযান চালিয়ে এসব নথি উদ্ধারের দাবি করে আমেরিকার এই গোয়েন্দা সংস্থা।
৩২-পৃষ্ঠার হলফনামা সাক্ষী ও আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তাদের নিরাপত্তার স্বার্থে ও ‘চলমান তদন্তের অখণ্ডতা’ রক্ষা করার জন্য ব্যাপকভাবে সংশোধন করা হয়েছে।
এই প্রতিবেদনে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে যে কীভাবে শীর্ষ গোপনীয় সরকারি নথিগুলো এলামেলো করে রাখা হয়েছিল এবং মার্কিন কর্মকর্তাদের কয়েক মাসব্যাপী অনুরোধ সত্ত্বেও ট্রাম্প সেগুলো হস্তান্তর করতে অস্বীকৃতি জানায়।
এর ফলে ২০২৪ সালে পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভিত্তি স্থাপনের আগেই ট্রাম্প সম্ভবত নতুন আইনি বিপদের মুখোমুখি হতে পারেন।
আরও পড়ুন: মার্কিন ক্যাপিটল ভবনে হামলায় দায়ী ট্রাম্প
একজন এফবিআই এজেন্ট হলফনামার প্রথম পৃষ্ঠায় লিখেছেন, ‘সরকার অননুমোদিত জায়গায় শ্রেণীবদ্ধ তথ্যের বেআইনিভাবে স্থানান্তর ও সংরক্ষণ এবং বেআইনিভাবে সেগুলো গোপন করা বা সরকারী রেকর্ড অপসারণের বিষয়ে একটি ফৌজদারি তদন্ত পরিচালনা করা হচ্ছে।’
যদিও ট্রাম্প দীর্ঘদিন ধরে জোর দিয়ে বলে আসছেন, নথিগুলিতে ‘গোপন’ কিছু নেই।
হলফনামায় গত ৮ আগস্ট মার-এ-লাগোতে অভিযানে উদ্ধার হওয়া ১১ সেটের শ্রেণীবদ্ধ রেকর্ডের বিষয়ে নতুন কোনো তথ্য দেয়া হয়নি। বরং এর পরিবর্তে পৃথক ১৫টি বাক্সের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। যা ন্যাশনাল আর্কাইভস অ্যান্ড রেকর্ডস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন জানুয়ারিতে ট্রাম্পের বাড়ি থেকে উদ্ধার করেছিল। আর্কাইভস বিষয়টি বিচার বিভাগে পাঠিয়েছে।
হলফনামায় আরও বলা হয়েছে, এই ১৫টি বাক্সে পাওয়া অত্যন্ত সংবেদনশীল উপাদানগুলোর কারণে মার-এ-লাগোতে অনুসন্ধান করা প্রয়োজন ছিল।
হলফনামায় বলা হয়েছে, শ্রেণীবিন্যাস চিহ্ন সহ ১৮৪টি নথির মধ্যে ২৫টি ‘টপ সিক্রেট’ স্তরের।
আর্কাইভের একটি চিঠির বরাত দিয়ে হলফনামায় বলা হয়, এই শ্রেণীবদ্ধ নথিগুলো কিছু সংবাদপত্র, ম্যাগাজিন ও বিবিধ প্রিন্ট-আউট সহ অন্যান্য নথির সঙ্গে মিশিয়ে রাখা হয়েছিল।
আরও পড়ুন: ট্রাম্পের অভিবাসন নীতি বাতিলে ফের বাইডেনের স্বাক্ষর
ট্রাম্পের অভিশংসন বিচার শুরু ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহে
পারমাণবিক চুক্তি সম্মেলনে চূড়ান্ত নথিতে রাশিয়ার বাধা
পারমাণবিক অস্ত্রের বিস্তার রোধ সংক্রান্ত চুক্তি বা অ-প্রফ্লফ্রেশন চুক্তি (এনপিটি) রিভিউ’ নিয়ে জাতিসংঘের চার সপ্তাহব্যাপী পর্যালোচনার চূড়ান্ত নথিতে বাধা দেয় রাশিয়া। কেননা এই নথিতে রুশ সেনাদের ইউক্রেন আক্রমণ করার পর ইউরোপের বৃহত্তম পারমাণবিক কেন্দ্রের সামরিক দখলের বিষয়ে সমালোচনা করা হয়। যার কারণে বড় ধরনের পারমাণবিক দুর্ঘটনা ঘটনার আশঙ্কা ছিল।
শুক্রবার রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অপসারণ ও অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ বিভাগের উপপরিচালক আইগর ভিশনেভেৎস্কি ৫০ বছরের এনপিটি চুক্তির পর্যালোচনামূলক চূড়ান্ত বৈঠকে বলেন, ‘দুর্ভাগ্যবশত এই নথির ক্ষেত্রে কোনো ঐকমত্য নেই।’
এছাড়া আরও বেশ কয়েকটি দেশের কাছে তিনি জোর দাবি করেছিলেন যে, নানা অসংগতিতে জর্জরিত ৩৬ পৃষ্ঠার ওই চূড়ান্ত খসড়া নথিতে যেন সম্মতি না দেয়া হয়।
নথিটিতে পারমাণবিক অস্ত্রের বিস্তার রোধ ও সেসব অস্ত্রমুক্ত বিশ্ব গড়ার জন্য ১৯১টি রাষ্ট্রের অনুমোদন প্রয়োজন।
আরও পড়ুন: যুদ্ধ: ইউক্রেনে রেকর্ড মানবিক সহায়তা সংকটের মুখে জাতিসংঘ
আর্জেন্টিনার রাষ্ট্রদূত ও সম্মেলনের সভাপতি গুস্তাভো জ্লাউভিনেন বলেন, চূড়ান্ত নথিটিতে বিভিন্ন মতামতের সমন্বয় করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হয়েছে এবং এতে অংশ নেয়া দেশগুলো এর মাধ্যমে একটি ‘ইতিবাচক ফলাফল’ প্রত্যাশা করছে।
তিনি আরও বলেন, বিশ্ব এমন এক মুহূর্তে আছে যেখানে আমাদের পৃথিবী ক্রমবর্ধমান সংঘাতে জর্জরিত এবং সবচেয়ে উদ্বেগজনক হচ্ছে অকল্পনীয় পারমাণবিক যুদ্ধের ক্রমবর্ধমান সম্ভাবনা।
কিন্তু ভিশনেভেৎস্কির বক্তব্য পেশ করার পর জ্লাউভিনেন সম্মেলনের প্রতিনিধিদের বলেন, ‘এই মুহূর্তে আমি যা দেখছি, তাতে সম্মেলনটি চুক্তি বাস্তবায়নের অবস্থায় নেই।’
এনপিটি চুক্তির পর্যালোচনা সম্মেলন প্রতি পাঁচ বছর পর পর হওয়ার কথা থাকলেও এবার কোভিড-১৯ মহামারির কারণে এ সভা দেরিতে শুরু হয়েছে। নথির ক্ষেত্রে ঐকমত্যে পৌঁছানোর ক্ষেত্রে দেশগুলোর দ্বিতীয় ব্যর্থ চেষ্টা এটি।
এর আগে ২০১৫ সালের পর্যালোচনা সম্মেলনটিও ব্যর্থ হয়েছিল। গণবিধ্বংসী অস্ত্রমুক্ত মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চল প্রতিষ্ঠা নিয়ে গুরুতর মতপার্থক্যের কারণে সেসময়ের চুক্তি হয়নি।
সে মতপার্থক্যগুলো এখনও দূর হয়নি, তবে আলোচনা চলমান।
আরও পড়ুন: শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক শক্তি ব্যবহারে সহযোগিতায় বাংলাদেশ ও দ. কোরিয়ার সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর
অ্যাসোসিয়েট প্রেসের (এপি) সংগৃহীত খসড়া নথি অনুযায়ী একটি পারমাণবিক অস্ত্র মুক্ত মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চল প্রতিষ্ঠার বিষয়টি পুনরায় নিশ্চিত করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে। সুতরাং,বলা যায় এ বছর এটি নিয়ে বড় কোনো মতপার্থক্য হয়নি।
ধারণা করা হচ্ছে, ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণ ইস্যুটি সম্মেলনের গতিপথ বদলে দিয়েছে। কেননা এই আলোচনায় রুশ প্রেসিডেন্টের সতর্কবার্তার কথা উল্লেখ করা হয়। প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সেসময়জোর দিয়ে বলেন, রাশিয়া একটি ‘পারমাণবিক অস্ত্র সমৃদ্ধ’ দেশ এবং তাদের কার্যক্রমে যেকোনো হস্তক্ষেপের ফলে ‘এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে বিশ্ব যা আগে কখনও দেখেনি।’
যদিও পরবর্তীতে পুতিন তার বক্তব্য থেকে সরে এস বলেন, ‘পারমাণবিক যুদ্ধ জয় করা সম্ভব না এবং এই যুদ্ধ করা উচিত নয়।’
২ আগস্ট সম্মেলনে একজন জ্যৈষ্ঠ রুশ কর্মকর্তা পুতিনের এই বক্তব্যটি পুনরায় ব্যক্ত করেন।
কিন্তু পুতিনের প্রাথমিক হুমকি ও দক্ষিণ-পূর্ব ইউক্রেনের জাপোরিঝিয়া পারমাণবিক কেন্দ্র দখলের পাশাপাশি চেরনোবিল পারমাণবিক কেন্দ্র দখল নতুন করে বিশ্বব্যাপী আরেকটি পারমাণবিক জরুরি অবস্থার আশঙ্কা সৃষ্টি করে।
এ সপ্তাহের শুরুর দিকে জাতিসংঘের মার্কিন রাষ্ট্রদূত লিন্ডা থমাস-গ্রিনফিল্ড নিরাপত্তা পরিষদকে জানিয়েছেন, বাইডেন প্রশাসন একটি সর্বসম্মত চূড়ান্ত নথি চাইছিল যা পারমাণবিক চুক্তিকে শক্তিশালী করবে এবং স্বীকার করবে যে রাশিয়ার যুদ্ধ ও তাদের ইউক্রেনে দায়িত্বজ্ঞানহীন কর্মকাণ্ড গুরুতরভাবে চুক্তিটির অবমূল্যায়ন করেছে।
রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত ভ্যাসিলি নেবেনজিয়া ওই কাউন্সিলের বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্র ও এর মিত্রদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন, চূড়ান্ত নথির কাজে রাজনীতিকরণ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, বৈশ্বিক নিরাপত্তা জোরদার করার বদলে রাশিয়াকে শাস্তি দেয়ার মাধ্যমে তাদের নিজেদের স্বার্থ হাসিল করাই এর মূল উদ্দেশ্য।
জাপোরিঝিয়া প্ল্যান্টের খসড়া চূড়ান্ত নথিতে চারটি রেফারেন্স রয়েছে, যেখানে রাশিয়া ও ইউক্রেনকে একে অপরকে গোলাগুলির জন্য অভিযুক্ত করা হয়।
এ কথা বলে সম্মেলনে অংশগ্রহণকারীরা পারমাণবিক কেন্দ্রের কাছে সামরিক অভিযানের জন্য উদ্বেগ প্রকাশ করে।
খসড়াটি ইউক্রেনের পারমাণবিক স্থাপনা, বিশেষ করে জাপোরিঝিয়ায় নিরাপত্তা নিয়ে ‘গভীর উদ্বেগ’ প্রকাশ করেছে।
আরও পড়ুন: ইউক্রেনজুড়ে সামরিক স্থাপনায় রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা