���������������
সৌদি আরবে আজ রোজা শুরু
সৌদি আরবে রবিবার(১০ মার্চ) সন্ধ্যায় পবিত্র রমজান মাসের চাঁদ দেখা গেছে। তাই আজ সোমবার (১১ মার্চ) পবিত্র রমজান মাস শুরু হয়েছে।
এর আগে মুসলমানদের পবিত্র রমজান মাসের চাঁদ দেখার আহ্বান জানিয়েছিল সৌদি আরব। খালি চোখে বা দূরবীন দিয়ে যারাই অর্ধচন্দ্র দেখবেন, তাঁদের নিকটস্থ আদালতে রিপোর্ট করতে এবং পর্যবেক্ষণ নথিভুক্ত করতে বলেছে সুপ্রিম কোর্ট।
অস্ট্রেলিয়া, মালয়েশিয়া, ফিলিপাইন ও ব্রুনাইসহ আরও কয়েকটি দেশ ১২ মার্চ থেকে রমজান মাস হিসেবে ঘোষণা করেছে।
ওমানও ঘোষণা দিয়েছে যে তারা ১২ মার্চ, মঙ্গলবার পবিত্র রমজান মাস শুরু করবে, কারণ রবিবার সন্ধ্যায় চাঁদ দেখা যায়নি।
নাইজেরিয়ার উত্তর-পশ্চিম অঞ্চলে ৩০০ শিক্ষার্থী অপহরণ
নাইজেরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে একটি বিদ্যালয় থেকে ৩০০ শিক্ষার্থীকে অপহরণ করেছে সশস্ত্র ইসলামিক চরমপন্থীরা।
বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) কাদুনা রাজ্যের কুরিগা শহরের প্রত্যন্ত শহরের একটি বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটেছে।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সহিংস হত্যাকাণ্ড, অনাচার ও ছিনতাইপ্রবণ এলাকা হিসেবে পরিচিত ওই রাজ্যে অপহৃত হওয়া শিশুদের মধ্যে অন্তত ১০০ জন ১২ বছর বা তার চেয়ে কমবয়সী।
কুরিগার এ ঘটনাটি উত্তর নাইজেরিয়ায় গত সপ্তাহ থেকে এ পর্যন্ত তৃতীয় গণ-অপহরণের ঘটনা। এর আগে গত সপ্তাহে শনিবারে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য সোকোটোর একটি স্কুল থেকে ১৫ জন শিশুকে অপহরণ করা হয়। তারও আগে উত্তর-পূর্ব বোর্নো রাজ্যে ২০০ জনকে অপহরণ করা হয়।
বার্তাসংস্থা এপির এক প্রতিবেদনে জানা যায়, কোনো গোষ্ঠী এখনো এই অপহরণের দায় স্বীকার করেনি। তবে ইসলামিক চরমপন্থীরা উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বিদ্রোহ চালাচ্ছে। তারা বোর্নোতে অপহরণ চালিয়েছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। আর বিদ্যালয়ে অপহরণের জন্য ওই অঞ্চলে বসতি স্থাপন করা সম্প্রদায়ের সঙ্গে দ্বন্দ্বে লিপ্ত পশুপালকদের দায়ী করেছে স্থানীয়রা।
নাইজেরিয়ায় বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অপহরণের ঘটনা এবারই প্রথম নয়। এর আগে ২০১৪ সালে ইসলামিক চরমপন্থীরা বোর্নোর চিবোক থেকে দু’শোর বেশি স্কুলছাত্রীকে অপহরণ করেছিল।
অপহরণের কথা স্মরণ করে এলইএ প্রাইমারি অ্যান্ড সেকেন্ডারি স্কুলের শিক্ষক নুরা আহমেদ এপিকে বলেন, সরকারি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কেবলই শ্রেণিকক্ষে অবস্থান নিচ্ছিল সে সময় মোটরসাইকেলে করে এসে এলোপাতাড়ি গুলি বর্ষণ করে।
গত বছরে নাইজেরিয়া জুড়ে ৩ হাজার ৫০০ জনেরও বেশি লোককে অপহরণ করা হয়। এমনকি রাজধানীতে বাড়ি থেকেও কয়েকজনকে অপহরণ করা হয়।
নাইজারের সঙ্গে দীর্ঘ ১ হাজার ৫০০ কিলোমিটার সীমান্তের অনেকটা জুড়ে সাভানা বনভূমি। এই পথে অস্ত্র পাচার করে সেসব অস্ত্র অপহরণের কাজে ব্যবহার করে ইসলামিক চরমপন্থী বিদ্রোহীরা আর অপহৃতদের বনের গভীরে লুকিয়ে রাখে।
দেশটির সামরিক বাহিনীর দাবি, চরমপন্থীরা অপহৃতদের ‘মানব ঢাল’ হিসেবে ব্যবহার করে যে কারণে আকাশপথেও বনে বোমাবর্ষণ করে হামলা চালানো সম্ভব হয় না।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক হাডসন ইনস্টিটিউটের পশ্চিম আফ্রিকার বিশেষজ্ঞ গবেষক জেমস বার্নেট বলেন, এই দলগুলো নতুন নতুন কৌশল ব্যবহার করে আর চাঁদাবাজির মাধ্যমে নাইজেরিয়ার উত্তর-পশ্চিম অঞ্চলে আরও ছড়িয়ে পড়ছে।
কুরিগা শহর থেকে কাদুনা শহরে যেতে ৮৯ কিলোমিটার রাস্তা পাড়ি দিতে হয়। এ রাস্তায় এখন এক ডজনেরও বেশি চেকপয়েন্ট এবং সামরিক ট্রাককে নিরাপত্তার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনের ভিত্তিতে সৈন্যদের শিগগিরই অন্যত্র মোতায়েন করা হতে পারে।
শুক্রবার নাইজেরিয়ার পুলিশ এবং সৈন্যরা নিখোঁজ শিশুদের সন্ধানের জন্য বনের দিকে রওনা করেছে বলে জানায় সামরিক বাহিনী।
কুরিগার বাসিন্দারা কেবল আশা করছেন তাদের সন্তানরা অক্ষত অবস্থায় ফিরে আসবে এবং সামরিক কর্মীদের উপস্থিতিতে তারা এখন যে সুরক্ষা অনুভব করছে তা যেন স্থায়ী হয়।
যুদ্ধবিরতি আলোচনা থমকে যাওয়ায় গাজায় ত্রাণের জন্য আলোচনায় সমুদ্রপথ
অবরুদ্ধ গাজার ২৩ লাখ মানুষের মধ্যে খাদ্য সংকট ছড়িয়ে পড়ায় উদ্বেগ বাড়ার প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ একটি সমুদ্রপথ খুলে দিতে চাইছে, যা গাজায় মানবিক ত্রাণ পৌঁছে দেবে।
তবে ত্রাণ কর্মকর্তারা বলছেন, স্থলপথে ট্রাক পাঠানোর চেয়ে জাহাজ বা সাম্প্রতিক এয়ারড্রপের মাধ্যমে সরবরাহ অনেক বেশি ব্যয়বহুল এবং অপর্যাপ্ত।
ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, শুক্রবার গাজায় এয়ারড্রপ কার্যক্রমে বিপর্যয় ঘটে তা নিচে থাকা মানুষদের আঘাত করে এবং বাড়িঘরের উপর পড়ে। এতে ৫ জন নিহত ও বেশ কয়েকজন আহত হন।
পাঁচ মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা ইসরায়েলি সামরিক অভিযানের পর গাজার বেশির ভাগ এলাকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।
জাতিসংঘ বলছে, দেশটির এক-চতুর্থাংশ মানুষ অনাহারের মুখোমুখি। গাজার উত্তরাঞ্চলে এখনো বসবাসরত আনুমানিক তিন লাখ মানুষের অনেকেই বেঁচে থাকার তাগিদে পশুখাদ্যে নির্ভর করছে। তা-ও কমে আসছে।
আরও পড়ুন: কয়েক মাস ধরে দুর্ভিক্ষের সতর্কতার পর গাজায় বাড়তে শুরু করেছে শিশুদের মৃত্যু
কয়েক মাস ধরে দুর্ভিক্ষের সতর্কতার পর গাজায় বাড়তে শুরু করেছে শিশুদের মৃত্যু
ইসরায়েলের বোমাবর্ষণ, হামলা ও অবরোধের মুখে গাজায় গত কয়েক মাস ধরেই দুর্ভিক্ষের সতর্কতা দেওয়া হচ্ছিল। এবার সেখানে শিশু মৃত্যুর হার বাড়তে শুরু হয়েছে।
বিশেষ করে বিচ্ছিন্ন উত্তর গাজায় দীর্ঘ সময় ধরে খাদ্য সরবরাহ বন্ধ থাকায় তীব্র আকার ধারণ করেছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, উত্তরের কামাল আদওয়ান ও শিফা হাসপাতালে অপুষ্টি ও পানিশূন্যতার কারণে কমপক্ষে ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের অধিকাংশই শিশু - যাদের বয়স ১৫ বছরের মধ্যে আর একজন ৭২ বছর বয়সী পুরুষ।
অন্যদিকে দক্ষিণ গাজায় সাহায্য মিললেও দুর্বল শিশুরা মারা যেতে শুরু করেছে।
গত পাঁচ সপ্তাহে অপুষ্টিজনিত কারণে ১৬টি শিশুর মৃত্যু হয়েছে বলে বার্তা সংস্থা এপিকে জানিয়েছে রাফাহর এমিরাতি হাসপাতালের একজন জ্যেষ্ঠ চিকিৎসক।
এই সপ্তাহের শুরুতে ইউনিসেফের মধ্যপ্রাচ্য প্রধান অ্যাডেল খোদর এক বিবৃতিতে বলেন, ‘আমরা যে শিশু মৃত্যুর আশঙ্কা করছিলাম তা শুরু হয়ে গিয়েছে।’
ইউনিসেফের শিশু পুষ্টি বিশেষজ্ঞ অনুরাধা নারায়ণ বলেন, বিশুদ্ধ পানি ও স্যানিটেশনের অভাবে গাজায় ডায়রিয়াজনিত রোগ বাড়ছে যার ফলে অনেকেই ক্যালরি ধরে রাখতে পারছে না।
এপির প্রতিবেদনে জানা যায়, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য পাওয়া প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় বাসিন্দারা। কিছু দোকানে মিললেও দাম অনেক বেশি।
বেশিরভাগ লোক ‘খুবাইজা’ নামে লতা-পাতা সিদ্ধ করে খেয়ে বেঁচে থাকছে। উত্তর গাজায় দুই ছেলে এবং তাদের সন্তানদের সঙ্গে বসবাসকারী ৭০ বছর বয়সী ফাতিমা শাহীন বলেন, সিদ্ধ খুবাইজা তার প্রধান খাবার এবং খুব হিসাব করে খাবার তৈরি করতে হচ্ছে।
শাহীন বলেন, আমরা এক টুকরো রুটির জন্য মরছি।
গাজার উত্তরাঞ্চলের আরেক বাসিন্দা ইউরো-মেড হিউম্যান রাইটস মনিটরের গবেষক এবং অর্থনৈতিক সাংবাদিক কামার আহমেদ জানান, তার ১৮ মাস বয়সী মেয়ে মীরা বেশিরভাগ সেদ্ধ লতা-পাতা খায়। তার বয়সের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ কোনো খাবার নেই।
কামাল আদওয়ান হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত প্রধান ডা. হুসাম আবু সাফিয়া এপিকে বলেন, তার কর্মীরা বর্তমানে দিনে ৩০০ থেকে ৪০০ শিশুর চিকিৎসা করেন এবং তাদের মধ্যে ৭৫ শতাংশই অপুষ্টিতে ভুগছে।
আবু ইউসুফ নাজ্জার হাসপাতালের শিশুদের জরুরি বিভাগের প্রধান ডা. জাবর আল-শায়েরের মতে, খাবারের অভাবে শিশুদের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়াও হাসপাতালে আরও অপুষ্টির শিকার ৮০ শিশু রয়েছে।
এমিরাতি হাসপাতালের নার্সারি ইউনিটের ডেপুটি হেড ডক্টর আহমেদ আল-শাইর বলেন, অকাল শিশুদের মৃত্যুর মূল কারণ মায়েদের মধ্যে অপুষ্টি। অপুষ্টির কারণে কম ওজনের শিশুর জন্ম ও মৃত্যু হচ্ছে। যুদ্ধের সময় এ মৃত্যু বেড়েছে বলে জানান চিকিৎসকরা।
চিকিৎসক আল-শাইর বলেন, হাসপাতালে ফেব্রুয়ারিতে ১৪টি এবং মার্চে এ পর্যন্ত আরও দুটি শিশু মারা গেছে। বর্তমানে হাসপাতালের ওয়ার্ডে ১০ দিনের কম বয়সী ৪৪টি শিশু রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা এখন তাদের চিকিৎসা করি কিন্তু ভবিষ্যৎ কী হবে আল্লাহ জানেন।’
গত ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে হামাসের হামলার পর গাজায় পাল্টা আক্রমণ চালায় ইসরায়েল। এরপর থেকে খাবার-পানি-ওষুধসহ সব ধরনের নিত্য প্রয়োজনীয় সরবরাহ বন্ধ করে দেয়। শুধু দক্ষিণে দুটি ক্রসিং দিয়ে দুই-একটি সাহায্যকারী ট্রাক প্রবেশের অনুমতি দেয়।
গাজায় ক্রমবর্ধমান ক্ষুধার জন্য জাতিসংঘের এজেন্সিগুলোকে দায়ী করে ইসরায়েল বলেছে, গাজা ক্রসিংয়ে তারা সাহায্য দ্রব্যগুলো বিতরণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। এ প্রসঙ্গে গাজায় জাতিসংঘের বৃহত্তম সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ জানায়, ইসরায়েল কিছু পণ্য প্রবেশের অনুমতি দেয় না আর জটিল নিয়ম আরোপ করে যে কারণে ত্রাণ প্রবেশের গতি কমে যায়।
এছাড়াও গাজায় বিতরণ ব্যবস্থা প্রায় পঙ্গু হওয়ার পথে। যেসব সাহায্য বহনকারী ট্রাকগুলো ইসরায়েলি বাহিনী ফিরিয়ে দেয়। সেগুলো ফেরার সময় তারা কোনো নিরাপত্তা দিতে অস্বীকৃতি জানায়। যার ফলে ফেরার পথে ক্ষুধার্ত ফিলিস্তিনিরা ট্রাকে হামলা চালিয়ে সাহায্য ছিনিয়ে নেয়।
এছাড়াও খাবার বিতরণকালে সাহায্যের অপেক্ষায় থাকা ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলি বাহিনী গুলি চালায়, যার ফলে ১২০ জনের মৃত্যু হয়। ইসরায়েল দাবি করে খাদ্য বিতরণকারী ট্রাকগুলোতে ফিলিস্তিনিরা হামলা করছিল তাই আত্মরক্ষার্থে গুলি চালানো হয়।
তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক চাপের মুখে ইসরায়েল জানিয়েছে, শিগগিরই উত্তর গাজায় সাহায্যের জন্য ক্রসিং খোলা হবে এবং সমুদ্রপথে চালান আসার অনুমতি দেওয়া হবে।
কানাডায় ৬ জনকে ছুরিকাঘাতে হত্যা, শিক্ষার্থী গ্রেপ্তার
কানাডায় ছয়জনকে ছুরিকাঘাতে হত্যার অভিযোগ উঠেছে শ্রীলঙ্কার ১৯ বছর বয়সী এক ছাত্রের বিরুদ্ধে। নিহতদের মধ্যে আড়াই মাস বয়সী শিশু কন্যা এবং শ্রীলঙ্কার একটি পরিবারের আরও তিন শিশু রয়েছে। অভিযুক্ত ওই ছাত্র ও ভুক্তভোগীরা একসঙ্গে বাস করতেন। বৃহস্পতিবার (৮ মার্চ) অটোয়া পুলিশ এ তথ্য জানিয়েছে।
অটোয়ার পুলিশ প্রধান এরিক স্টাবস বলেন, অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর নাম ফেব্রিও ডি-জয়সা। হামলাকারী 'ধারালো অস্ত্র' বা 'ছুরির মতো বস্তু' ব্যবহার করেছেন। তার বিরুদ্ধে ছয়টি হত্যা মামলা এবং একটি হত্যাচেষ্টার অভিযোগ আনা হয়েছে। কানাডায় এ ধরনের হত্যার ঘটনা বিরল।
স্টাবস আরও জানান, নিহতরা শ্রীলঙ্কার নাগরিক এবং তারা সম্প্রতি কানাডায় গিয়েছিলেন। এদের মধ্যে ৩৫ বছর বয়সী এক মা, ৭ বছর বয়সী এক ছেলে, চার বছরের এক মেয়ে, দুই বছরের এক মেয়ে, আড়াই মাস বয়সী এক মেয়ে এবং সেইসঙ্গে ৪০ বছর বয়সী এক ব্যক্তিও নিহত হয়েছেন। তিনি এই পরিবারের পরিচিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: গাজার হাত ও পরিবার হারানো শিশু ওমরের দ্বিতীয় জীবন শুরু
পুলিশ প্রধান বলেন, প্রথমে কর্মকর্তারা যখন বাড়িতে পৌঁছান তখন তারা দেখতে পান বাড়ির বাইরে পরিবারের দায়িত্বশীল ব্যক্তি চিৎকার করে কাউকে বলছিলেন ৯১১ নম্বরে ফোন করার জন্য। এছাড়া বুধবার রাত ১০টা ৫২ মিনিটে দুইটি জরুরি কল পায় পুলিশ।
ওই ব্যক্তি গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।
স্টাবস বলেন, ‘এটি ছিল একদম নিরীহ মানুষের উপর কাণ্ডজ্ঞানহীন সহিংসতা।’
শ্রীলঙ্কার হাইকমিশন জানিয়েছে, দেশটির রাজধানী কলম্বোতে তাদের আত্মীয়দের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার ডি-জয়সা আদালতে হাজিরা দেন এবং স্বীকারোক্তি দেন। এ সময় আক্রমণ থেকে বেঁচে যাওয়া ওই পরিবারের ব্যক্তি এবং পুলিশের কাছে বিবৃতি প্রদানকারী অন্য চারজন সাক্ষীর সঙ্গে কথা বলতে নিশেধ করেন বিচারপতি।
এদিকে আইনজীবী খোঁজার জন্য সময় দিতে তার মামলাটি ১৩ মার্চ পর্যন্ত মুলতবি করা হয়।
বুধবার বেলা ১১টার আগে বারহাভেন এলাকার বাড়িতে পুলিশ ডাকা হয়েছিল। সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে দ্রুত গ্রেপ্তার করা হয় এবং এবং পুলিশ জানায়- জননিরাপত্তার জন্য কোনো হুমকি নেই।
ডন পেরেরা নামে এক প্রতিবেশী জানান, গত শরতে পাশের ক্যাথলিক এলিমেন্টারি স্কুলে একটি হ্যালোইন পার্টিতে ওই বাড়িতে থাকা পরিবারের সঙ্গে তার দেখা হয়।
আরও পড়ুন: ভারতে পর্যটককে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ: নারীর প্রতি যৌন সহিংসতা রোধে দেশজুড়ে বিক্ষোভ
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন শাহবাজ শরিফ
ভারতে পর্যটককে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ: নারীর প্রতি যৌন সহিংসতা রোধে দেশজুড়ে বিক্ষোভ
সম্প্রতি ইনস্টাগ্রামের একটি ভিডিওতে বিধস্ত অবস্থায় এক নারীকে কথা বলতে দেখা যায়। এতে দেখা যায়, তিনি কথা বলতে বলতে কেঁপে কেঁপে উঠছেন। তার মুখ ফুলে ও ক্ষতবিক্ষত হয়ে আছে। স্বামীর পাশে বসে তিনি ভয়ংকর সেই মুহূর্তের কথাগুলো বলছেন।
ভিডিওতে ইংরেজিতে ক্যাপশন দিয়ে তিনি স্প্যানিশ ভাষায় বলেন, 'আমাদের সঙ্গে এমন ঘটনা ঘটেছে, যা অন্য কারোর সঙ্গে যেন না ঘটে। সাতজন লোক আমাকে ধর্ষণ করেছে, মারধর ও লুটপাট করেছে।'
পরে অবশ্য ভিডিওটি সরিয়ে ফেলা হয়েছে। কিন্তু ওই ভিডিওতে ভুক্তভোগী নারী জানান, শুক্রবার রাতে পূর্ব ঝাড়খণ্ড রাজ্যের দুমকা জেলার একটি জঙ্গলে তাকে এবং তার ব্রাজিলিয়ান সঙ্গীর ওপর হামলা করে দুর্বৃত্তরা। তিনি বলেন, সাতজন পুরুষ তাদের গলায় ছুরি ধরে তাকে যৌন নির্যাতন করে।
একটি ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে দুই লাখেরও বেশি অনুসারীর জন্য তাদের ভ্রমণের ডকুমেন্টেশন করছিলেন তারা। হামলার শিকার হওয়ার পর এই দম্পতিকে একটি পুলিশ টহল ভ্যানে করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালের নারী চিকিৎসককে তিনি বলছিলেন, তাকে ধর্ষণ করা হয়েছে।
ঝাড়খণ্ড পুলিশ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছে এবং সপ্তাহের মধ্যে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে। সোমবার পুলিশ জানিয়েছে, তারা আরও চারজন সন্দেহভাজনকে খুঁজছে।
নীতি অনুযায়ী যৌন নির্যাতনের শিকারদের পরিচয় প্রকাশ করেনি অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি)।
এই ঘটনায় ভারতজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়। দেশটির বড় সমস্যাগুলোর একটি এটি। নারীদের বিরুদ্ধে ক্রমবর্ধমান যৌন সহিংসতা রোধে কয়েক দশক ধরে এ আন্দোলন দেশব্যাপী তুমুল আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল।
দেশটির ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালে পুলিশ ৩১ হাজার ৫১৬টি ধর্ষণের ঘটনা নথিভুক্ত করেছে, যা ২০২১ সালের তুলনায় ২০ শতাংশ বেশি।
আরও পড়ুন: ভারতে ধর্ষণের ভয়াবহতা অব্যাহত রয়েছে যে কারণে
ভারতে ২০১৩ সালে ধর্ষণ আইন সংশোধন করা হয়। গোপনে অন্যদের নগ্ন অবস্থায় দেখাকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয় এবং প্রাপ্তবয়স্ক হিসেবে বিচারের বয়স ১৮ থেকে কমিয়ে ১৬ বছর করা হয়।
মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন, কঠোর আইন সত্ত্বেও সরকার এখনও নারীদের সুরক্ষা ও হামলাকারীদের শাস্তি দেওয়ার জন্য যথেষ্ট পদক্ষেপ নিচ্ছে না।
বেশ কয়েকটি সরকারি প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত কয়েক বছরে ধর্ষণের মামলায় সাজার হার ৩০ শতাংশের নিচেই থাকছে।
বিদেশি হাই প্রোফাইল দর্শনার্থীদের ধর্ষণের ঘটনাগুলো এই বিষয়ে আন্তর্জাতিক দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। ২০২২ সালে গোয়ায় এক ব্রিটিশ পর্যটক তার সঙ্গীর সামনে ধর্ষণের শিকার হন। এর আগে চলতি বছরের শুরুর দিকে নয়া দিল্লির একটি হোটেলে এক ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন নারী অভিযোগ করেন, তিনি ধর্ষণের শিকার হয়েছেন।
দুই দশক আগে ভয়াবহ ধর্মীয় দাঙ্গার সময় এক মুসলিম নারীকে ধর্ষণের দায়ে ১১ হিন্দু পুরুষের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড জানুয়ারিতে পুনর্বহাল করেন দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। পরে তারা ২০২২ সালে মুক্তি পেয়েছিলেন এবং পরিবার ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টির একজন সংসদ সদস্য আসামিদের ফুলের মালা দিয়ে বরণ করেছিলেন।
আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ধর্ষণবিরোধী দেয়ালচিত্র আঁকায় জাবি ছাত্র ইউনিয়নের ২ নেতা বহিষ্কার
গত বছর নারী কুস্তিগীররা কুস্তি ফেডারেশনের প্রধানের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছিলেন। তার বিরুদ্ধে বারবার নারীদের স্পর্শ করার অভিযোগ এনেছিলেন। কয়েক মাস ধরে চলা বিক্ষোভের পর মোদির দলের প্রভাবশালী আইনপ্রণেতা ব্রিজভূষণ শরণ সিংয়ের বিরুদ্ধে আদালতে উত্ত্যক্ত, হয়রানি ও ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগ আনা হয়। সিং অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
নারী অধিকারকর্মী ধাওয়ালে বলেন, হাই প্রোফাইল ধর্ষণের ঘটনাগুলো গণমাধ্যমের দৃষ্টি আকর্ষণ করলেও ভারতে যৌন হয়রানি ও নারীর প্রতি সহিংসতাকে খাটো করে দেখার সংস্কৃতি এখনও রয়েছে।
তিনি বলেন, 'আমরা প্রতিবাদ জানাতে প্রতিনিয়ত রাস্তায় নেমেছি, কখনও কখনও একটি মামলা দায়ের করার জন্য। এমনটা হওয়া উচিত নয়।’
আরও পড়ুন: খুলনায় ২ শিশুকে ধর্ষণ মামলায় ১ জনের যাবজ্জীবন
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন শাহবাজ শরিফ
একদিন আগে পার্লামেন্টের অধিবেশনে নির্বাচিত হওয়ার পর সোমবার পাকিস্তানের নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন শাহবাজ শরিফ।
অনাস্থা ভোটে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর পদ ছাড়তে হয় ইমরান খানকে। তার জায়গায় স্থলাভিষিক্ত হন শাহবাজ শরিফ এবং ২০২২ সালের এপ্রিল থেকে ২০২৩ সালের আগস্ট পর্যন্ত এই পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। শাহবাজ তিনবারের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের ছোট ভাই।
তার নিয়োগ বিতর্কিত, কারণ গত মাসের সংসদীয় নির্বাচনে তার বিরোধীরা দাবি করেছিল যে তার পক্ষে কারচুপি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: পার্লামেন্টে বিক্ষোভের মধ্যেই পাকিস্তানের নতুন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত শেহবাজ শরীফ
ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) জোর দিয়ে বলছে, নির্বাচনে তারা ভালো করেছে। কিন্তু নির্বাচনে চুরি ও অন্যান্য অনিয়মের কারণে দলটি পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা থেকে বঞ্চিত হয়েছে।
নওয়াজ শরিফের দল পাকিস্তান মুসলিম লীগ (পিএমএল-এন) সরকার গঠনের জন্য যথেষ্ট আসন পায়নি, তবে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনের জন্য অন্যদের সঙ্গে জোট বেঁধেছে।
তিনি পার্লামেন্টে ২০১ ভোট পেয়ে পিটিআই সমর্থিত প্রার্থী ওমর আইয়ুবকে পরাজিত করেন, যিনি পান ৯২ ভোট।
সোমবার রাজধানী ইসলামাবাদে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। প্রেসিডেন্ট আরিফ শপথ বাক্য পাঠ করান।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানের নির্বাচনের পূর্ণাঙ্গ ফল ঘোষণা করেছে ইসিপি
পাকিস্তানে পার্লামেন্ট নির্বাচন: স্বতন্ত্র প্রার্থীর কার্যালয়ে বোমা হামলায় নিহত ১৪
গাজার হাত ও পরিবার হারানো শিশু ওমরের দ্বিতীয় জীবন শুরু
গাজার হাত ও পরিবার হারানো শিশু ওমরের দ্বিতীয় জীবন শুরু
সাব- কৃত্রিম হাত দেখিয়ে বলে, ‘আমার বাহু সুন্দর’
ওমর আবু কুওয়াইক গাজার নিজ বাড়ি থেকে এখন অনেক দূরে। ইসরায়েলি বিমান হামলায় বাবা-মা ও বোনের মৃত্যুর পাশাপাশি নিজ হাতের একটি অংশ হারিয়েছিল ৪ বছর বয়সী শিশুটি।
তবে খানিকটা ভাগ্যবান বরা যেতে পারে শিশুটিকে। পরিবার ও অপরিচিতদের প্রচেষ্টায় ওমরকে গাজা থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে আসা হয়, যেখানে একটি কৃত্রিম হাতসহ প্রয়োজনীয় চিকিৎসা পায়। নিউ ইয়র্ক শহরে দাতব্য চিকিৎসালয় পরিচালিত একটি বাড়িতে ফুফুর সঙ্গে দিন কাটিয়েছে শিশু ওমর।
অবশেষে ফিলাডেলফিয়ার শ্রীনার্স চিলড্রেনস হাসপাতালে বুধবার কৃত্রিম হাত পায় এবং মিষ্টি হাসি দিয়ে বলে, ‘আমার বাহু সুন্দর।’
দুর্ভোগের সমুদ্রে এটি ওমর ও তার ফুফু মাহা আবু কুওয়াইকের জন্য অনুগ্রহের ছিটাফোটা মাত্র। তারা একটি অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে ছিল। যারা এখনও গাজায় আটকে আছে তাদের জন্য দুঃখ ও হতাশা সব সময়ই অদূরে।
মাহা এ নিয়ে খুশি যে তিনি তার প্রিয় ভাইয়ের ছেলের জন্য এই ব্যবস্থা করতে পেরেছিলেন। ওমরকে তিনি এখন নিজের চতুর্থ সন্তান বলে মনে করেন।
কিন্তু এটি তার জন্য খুবই কঠিন সিদ্ধান্ত ছিল। ওমরের সঙ্গে যাওয়া মানে গাজার দক্ষিণতম শহর রাফাহতে তাবু ক্যাম্পে নিজের স্বামী ও তিন কিশোর সন্তানকে রেখে যাওয়া। রাফাহসহ যেসব এলাকায় বেসামরিক লোকদের আশ্রয় নিতে বলা হয়েছে এমন এলাকাগুলোতে ইসরায়েলি বাহিনী হামলা চালিয়েছে। মাহা জানেন, তিনি তার পরিবারকে আর কখনও দেখতে পাবেন না।
তিনি বলেছিলেন,‘আমার বাচ্চারা ওমরকে খুব ভালোবাসে। তারা আমাকে বলেছিল, আমরা আর শিশু নই। যাও, ওমরের চিকিৎসা হোক। এটি ওর জন্য সবচেয়ে ভালো এবং এটি ওর একমাত্র সুযোগ।’
তিনি বলেন, ওমর বেশ চটপটে এবং তার প্রকৌশলী বাবার মতোই বুদ্ধিমান ছিল। কিন্তু এখন প্রায়ই সে হাল ছেড়ে দেয় আর কান্নায় ভেঙে পড়ে।
ওমরকে কিছু জিজ্ঞাসা করা হলে সে ডান হাত ও বাম হাতের বাকি অংশ দিয়ে কান চেপে ধরে বলে, ‘আমি কথা বলতে চাই না।’
অবশেষে ওমর বলেছে,‘বিদ্যালয় ভালো ছিল এবং আমি প্রথম দিনেই খুশি ছিলাম।’ যুদ্ধ শুরুর কয়েক সপ্তাহ আগে বিদ্যালয়ে যাওয়া শুরু করেছিল সে। কিন্তু এখন আর বিদ্যালয়ে যেতে চায় না সে। সে এখন ফুফুর কাছ থেকে দূরে যেতে ভয় পায়।
যদিও নিউইয়র্কে উড়ে যাওয়ায় নতুন করে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে ওমর।
‘যখন আমি বড় হব, আমি পাইলট হতে চাই,’ ওমর বলছিল, ‘যাতে আমি মানুষকে বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে আসতে পারি।’
ওমরই গাজার প্রথম ফিলিস্তিনি শিশু যাকে গ্লোবাল মেডিকেল রিলিফ ফান্ডের অধীনে নেওয়া হয়েছিল। স্টেটেন আইল্যান্ড দাতব্য সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা এলিসা মন্টান্টি, যুদ্ধ বা বিপর্যয়ে অঙ্গ হারানো শত শত বাচ্চাদের বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবার ব্যবস্থা করতে এক চতুর্থাংশ সময় কাটিয়েছেন।
কয়েক দশক ধরে চলে আসা ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতের মধ্যে সবচেয়ে মারাত্মক ঘটনা ঘটে গত ৭ অক্টোবর। গাজার চারপাশে ইসরায়েলের নিরাপত্তা বেষ্টনী ভেঙে ইসরায়েলি সম্প্রদায়গুলোতে ঢুকে পড়ে হামাস। প্রায় ১ হাজার ২০০ জন নিহত হয় এবং ২৫০ জনকে জিম্মি করা হয়।
পাল্টা জবাবে ইসরায়েল গাজাকে ধ্বংস করেছে। পাঁচ মাসের যুদ্ধে, গাজার ২.৩ মিলিয়ন লোকের মধ্যে ৮০ শতাংশ তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়েছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার গাজায় মৃতের সংখ্যা ৩০ হাজার ছাড়িয়েছে, ৭০ হাজারেরও বেশি আহত হয়েছে। নিহতদের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ নারী ও শিশু। ইসরায়েল বেসামরিক মৃত্যুর জন্য হামাসকে দায়ী করে বলেছে, সশস্ত্র বিদ্রোহীরা জনগণের মধ্যে কাজ করছে।
যুদ্ধ শুরুর ২ সপ্তাহ পর ওমর ও মাহা অল্পের জন্য মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা পান। ইসরায়েলি বিমান হামলায় ভবনগুলো মাটিতে মিশে যাওয়ার আগে তারা বাড়ি ছেড়ে চলে গিয়েছিল।
এই দুই পরিবার বিভিন্ন আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে থাকতে চলে যায়।
৬ ডিসেম্বর, নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরে ওমরের দাদা-দাদির বাড়িতে দুটি ইসরায়েলি বিমান হামলা চালায়। বিস্ফোরণে তার মুখের চামড়া উঠে যায়। বাম হাতের কনুইয়ের নিচ থেকে হারিয়ে ফেলে সে। পা ও ঘাড় পুড়ে যায়। বাবা-মা, ৬ বছর বয়সী বোন, দাদা-দাদি, দুই ফুফু এবং এক চাচাতো ভাইয়ের মৃত্যু হয়।
ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে ওমর। উদ্ধারকারীরা খনন করে যখন তার ছোট্ট দেহটি খুঁজে পায়, তখন তার শরীর রক্তাক্ত ছিল।
ইউএস-ভিত্তিক দাতব্য সংস্থা রাহমা ওয়ার্ল্ডওয়াইডের ভাইস প্রেসিডেন্ট আদিব চৌকি বলেন, ‘আমাদের মনে হয়েছিল, গাজায় থাকার চেয়ে অন্য যেকোনো জায়গাই তার জন্য ভালো।’
গাজাবাসীর চলাচল সীমাবদ্ধ করে প্রতিদিন মাত্র কয়েক শতাধিক মানুষকে ওই অঞ্চল ছেড়ে যাওয়ার অনুমতি দিচ্ছে, যাদের বেশিরভাগেরই বিদেশি নাগরিকত্ব রয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে চিকিৎসার উদ্দেশ্যে ২ হাজার ২৯৩ জন রোগী গাজা ত্যাগ করেছে। যাদের মধ্যে ১ হাজার ৪৯৮ জন আহত ও ৭৯৫ জন অসুস্থ। আর তাদের সঙ্গী হিসেবে ১ হাজার ৬২৫ জন গাজা ছেড়ে যেতে পেরেছেন। এখনও প্রায় ৮ হাজার রোগী বিদেশে যাওয়ার জন্য অপেক্ষায় আছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা।
ফিলিস্তিনি, ইসরায়েলি ও মিশরীয় সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করে আদিব চৌকি ওমর এবং মাহা আবু কুওয়াইকের জন্য নতুন পাসপোর্ট এবং তাদের মিশরে যাওয়ার জন্য ইসরায়েলি নিরাপত্তা ছাড়পত্র পেয়েছেন।
একটি অ্যাম্বুলেন্স তাদের সীমান্তে নিয়ে আসে, যেখানে সিনাই মরুভূমি দিয়ে একটি মিশরীয় অ্যাম্বুলেন্স তাদের নিয়ে আসে।
১৭ জানুয়ারি নিউ ইয়র্কে উড়ে যেতে ইউএস কাস্টমস অ্যান্ড বর্ডার প্রোটেকশনের সবুজ বাতির জন্য মিশরীয় একটি হাসপাতালে কয়েক সপ্তাহ ধরে অপেক্ষা করছিল ওমর আর তার ফুফু।
ফিলাডেলফিয়ার শ্রীনার্স চিলড্রেনস হাসপাতালে, ওমরের পায়ে পোড়ার জন্য স্কিন গ্রাফ্ট সার্জারি হয়েছিল। সে তার নতুন কৃত্রিম হাত পাওয়ার অপেক্ষায় ছিল। অবশেষে বুধবার সেটি দেখতে পেয়ে ধরতে হাত বাড়িয়ে দেয় আর দুষ্টু হাসি দিয়ে বলে, ‘আমার বাহু সুন্দর।’
ওমর ও তার ফুফু পরের দিন কায়রোর উদ্দেশে একটি বিমানে উঠেছিলেন। সঙ্গে তাদের দূর সম্পর্কের এক আত্মীয়ও ছিলেন। স্থায়ী আবাস না হওয়া পর্যন্ত মিশরে তার বাড়িতেই থাকবেন তারা।
মাহা আবু কুওয়াইক বলেন, ‘আমি প্রায় ঘুমাই না । আমি ওমরের কথা ভাবি এবং আমি আমার বাচ্চাদের কথা ভাবি । তারা সেখানে তাঁবুতে বসবাস করছে এখনো।’
খাদ্যের অভাব। ইসরায়েলের হাতে গাজার অবরোধ অর্ধ মিলিয়নেরও বেশি ফিলিস্তিনিকে অনাহারের দিকে ঠেলে দিয়েছে এবং আসন্ন দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা তৈরি করেছে।
তিনি বলেন, তার পরিবার একটি তাঁবুতে ৪০ জনের সঙ্গে ভাগ করে থাকছে যা ঝড়-বৃষ্টি থেকে সামান্যই সুরক্ষা দেয়। আর একজন অসুস্থ হলে অসুখ দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ে।
যুদ্ধের কারণে গাজায় সেলফোন এবং ইন্টারনেট পরিষেবা বারবার বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, কিন্তু আবু কুওয়াইক ‘যখন নেটওয়ার্ক থাকে’ যোগাযোগ রাখে।
মিশরে ফেরার পর ওমর এবং তার ফুফুর ভবিষ্যৎ অস্পষ্ট; কেননা তাদের নির্বাসনে যেতে হতে পারে।
আবু কুওয়াইকের জন্য, যদিও, ওমরের ফিরে যাওয়ার জন্য কোনো বাড়ি নেই।
তিনি বলেন, ‘আমি কল্পনাও করতে পারি না, যে আমি গাজায় ফিরে যাব। তার জীবন কী হবে? কোথায় তার ভবিষ্যৎ?’
পার্লামেন্টে বিক্ষোভের মধ্যেই পাকিস্তানের নতুন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত শেহবাজ শরীফ
দ্বিতীয়বারের মতো পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছেন শেহবাজ শরীফ। রবিবার দেশটির জাতীয় পরিষদের আইনপ্রণেতারা তাকে নির্বাচিত করেন।
এ সময় পার্লামেন্টে অবস্থানরত কারাবন্দি সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের মিত্ররা নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তুলে এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করে।
স্পিকার আয়াজ সাদিক বলেন, শরীফ ২০১ ভোট পেয়ে সুন্নি ইত্তেহাদ কাউন্সিলের ওমর আইয়ুবকে পরাজিত করেন, যিনি ৯২ ভোট পেয়েছিলেন। সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে শরীফের প্রয়োজন ছিল মাত্র ১৬৯ ভোট।
ওমর আইয়ুব পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ পার্টি বা পিটিআই-এর সমর্থন পেয়েছিলেন, যাদের প্রার্থীরা নিজেরা সরকার গঠনের জন্য পর্যাপ্ত আসন পায়নি। পিটিআই প্রতিদ্বন্দ্বীদের সঙ্গে জোট গঠন করতে অস্বীকার করে।
কয়েকদিনের আলোচনার পর, ৮ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনের পরে সমর্থকদের নিয়ে একটি জোট গঠন করে শরীফের পাকিস্তান মুসলিম লীগ। দেশব্যাপী মোবাইল নেটওয়ার্ক বিভ্রাটের কারণে অস্বাভাবিক দেরি করে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছিল। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, প্রার্থী ও নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর জঙ্গি হামলা এড়াতে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করা জরুরি ছিল।
এদিকে এই ফলাফল ঘোষাণায় দেরির হওয়ার বিষয়ে কঠোর সমালোচনা করে খানের দল। সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে ভোটে কারচুপি করা হয়েছিল বলে তারা জোর দাবি তুলেছিল। দলটি দাবি করে, তাদের কাছে প্রমাণ রয়েছে ‘ভোট গণনার সময় কারচুপি করে তাদের বিজয় চুরি করা হয়েছিল’। যদিও নির্বাচন কমিশন তা অস্বীকার করে।
ব্রাজিলে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা ১০ লাখ ছাড়িয়েছে
ব্রাজিলে সম্ভাব্য ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা মোট ১০ লাখ ১৭ হাজার ২৭৮টি নথিভুক্ত করা হয়েছে এবং এ রোগে ২১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। অন্যদিকে, ৬৮৭ জনের মৃত্যুর বিষয়টি অনুসন্ধান করা হচ্ছে।
দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
দক্ষিণ আমেরিকার দেশটিতে বর্তমানে প্রতি লাখ বাসিন্দার মধ্যে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্তের হার ৫০১ জন।
দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী নিসিয়া ত্রিনদাদে বলেন, ২০২৩ সালের তুলনায় এ বছর ব্রাজিলে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা দ্বিগুণ হতে পারে। গত বছর ১৬ লাখ ৫৮ হাজার ৮১৬টি কেস রেকর্ড করা হয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, ২০০৯ সাল থেকে বিশ্বব্যাপী ডেঙ্গুর প্রকোপ মারাত্মকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে, যা আগে এই রোগে আক্রান্ত হয়নি এমন অনেক অঞ্চলেও ছড়িয়ে পড়েছে।
আরও পড়ুন: ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে ভর্তি আরও ১৪ ডেঙ্গু রোগী
নিজেরা সচেতন হলে ডেঙ্গু ও এডিস মশা প্রতিরোধ কার্যকর করা সম্ভব: স্থানীয় সরকারমন্ত্রী