জীবনধারা
মা দিবসে মায়ের জন্য সেরা উপহার
মা দিবসে সন্তানের পক্ষ থেকে মায়ের জন্য ছোট্ট একটি উপহার মায়ের কাছে পরিণত হতে পারে একটি অমূল্য সম্পদে। যদিও মূল্যমানের দিক থেকে পৃথিবীর কোনো উপহার-ই মায়ের অবদানের সমতুল্য নয়, এরপরেও ছোট্ট একটি উপহার বিশেষ দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে পারে। বস্তুগত দিক থেকে উপহারটি নিছক একটি টোটেম মাত্র। কিন্তু তার নেপথ্যে যে ভালবাসার প্রকাশ ঘটছে, সেটাই এখানে প্রধান। মা দিবসে মাকে চমকে দিতে চলুন জেনে নেয়া যাক দারুণ কিছু উপহারের খোঁজ।
মা দিবসে মায়ের জন্য সেরা ১০টি উপহার
পছন্দের খাবার
মায়ের প্রতি আবেগের অভিব্যক্তি প্রকাশের সেরা উপায় হলো তার পছন্দের খাবারটি বানিয়ে তাকে খাওয়ানো। হতে পারে সেটা দুপুরের কোন খাবার আইটেম বা বিকালের হাল্কা খাবার। মিষ্টান্ন খাবার অথবা কোনো ঝাল ভর্তা যেটা বাসায় খুব একটা বানানো হয় না। মাকে না জানিয়ে আগের দিন রাতে বানিয়ে রেখে পরের দিন মাকে চমকে দেয়া যায়। আবার রান্না ঘরে মায়ের সঙ্গে গল্প করতে করতে একসঙ্গে মিলে বানানো যেতে পারে খাবারটি। এভাবে একসঙ্গে রান্নায় মায়ের সঙ্গে দারুণ একটি সময় কাটানো যাবে আর রান্নাপ্রিয় মায়েরা ভীষণ খুশিও হবেন।
প্রিয় বই
মা যদি বই পড়তে ভালবাসেন, তাহলে যে ধরনের বই তিনি সব সময় পড়েন তার সর্বশেষ সংস্করণটি যোগাড় করা যেতে পারে। এই পুরনো ও অকৃত্রিম উপহারটি যে কোনো বইয়ের পোকাকে নিমেষেই পুলকিত করতে পারে। বই পড়ার সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক ও আরামের জায়গাটা অনেক আগে থেকেই প্রতিষ্ঠিত। দিনের সবচেয়ে প্রিয় মুহুর্তটিতে অনেকেই বেশ আয়োজন করে সময় কাটাতে বই নিয়ে বসে পড়েন। তারপর হারিয়ে যান নিজের প্রিয় কোন জগতে। আর সেই বইটি যদি হয় নিজের সন্তানের দেয়া তাহলে তার থেকে অমূল্য সম্পদ আর কিই বা হতে পারে।
আরও পড়ুন: কান পেতে রই: দেশের প্রথম মানসিক সহায়তা হেলপলাইন
রান্নার সরঞ্জাম
গৃহিণী মায়েদের দিনের সিংহভাগ সময় কাটে রান্নাঘরে। সন্তানসহ ঘরের প্রতিটি মানুষের আহারের দিকটা খুব দায়িত্বের সঙ্গে খেয়াল রাখেন এই মানুষটি। নিজে খাওয়ার থেকে পরিবারের প্রতিটি সদস্যকে খাইয়েই তিনি বেশি আনন্দ পান। তাই রান্নার কাজে সাহায্য হয় এমন কোনো সরঞ্জাম উপহার তাঁর জন্য শুধু চমকপ্রদই হবে না, নিজের ভালবাসার রান্নার কাজটিতে তিনি আরও বেশি করে মনোন্নিবেশ করতে পারবেন। রাইস কুকার, ওভেন, ব্লেন্ডারের মত রান্নাঘরের সংযোজনগুলো ক্লান্তিকর কাজগুলোকে আরও সহজতর করে তুলবে। শুধু গৃহিণী নয়; কর্মব্যস্ত মায়েদের জন্যও এই উপহারগুলো একটি সঠিক পছন্দ হতে পারে।
অলঙ্কার
উপহারের জিনিসটি যত দামিই হোক না কেন; মায়ের ভালবাসার কাছে সে সবই মূল্যহীন। এরপরেও নিজের পরিশ্রম ও কষ্টার্জিত উপার্জনকে মায়ের ভালবাসায় সিক্ত করার এক উপযুক্ত প্রয়াস হতে পারে এই উপহারগুলো। এটি হতে পারে মায়ের ঘরে ভেতরেই প্রতিদিন পড়ে থাকা কানের দুল বা বাইরে গেলে টুকটাক সাজসজ্জায় মা যেগুলো ব্যবহার করেন সেই অলঙ্কারগুলো। এর যেকোনটিই হিরা দিয়ে বাঁধিয়ে উপহার দেয়া যেতে পারে মাকে। এটি হতে পারে একজন সন্তানের পক্ষ থেকে তার চোখে পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দরী নারীটিকে আরও বেশি সুন্দর করে তোলার জন্য শ্রেষ্ঠ উপহার।
আরও পড়ুন: গ্যালারি চিত্রকে বিপাশা হায়াতের ‘প্রস্তরকাল’
মায়ের জন্য শাড়ি
বাঙালী নারীর ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির সঙ্গে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে আছে এই বিশেষ পোশাক শাড়ি। ঘর থেকে শুরু করে বাঙালী সংস্কৃতির সাথে সম্পৃক্ত যে কোন অনুষ্ঠানে নারীর সৌন্দর্য ও আভিজাত্যের অবিসংবাদিত প্রতীক এই শাড়ি। এই মা দিবসে এই সৌন্দর্য সূচকটি দিয়ে সাজিয়ে তোলা যেতে পারে মাকে। মাকে সঙ্গে করে তার প্রিয় রঙের সন্নিবেশে তারই পছন্দ করা প্রিয় শাড়িটি কেনা যেতে পারে। এছাড়া মাকে না জানিয়ে আগে থেকে কিনে রেখে মা দিবসে তাকে চমকে দেয়া যেতে পারে। ভালবাসার প্রকাশ করতে নয়; বরঞ্চ আপন আনন্দের আতিশয্যে সন্তানের দেয়া এই উপহারটি মা পরম মমতায় অঙ্গে ধারণ করে ঘরের যত্রতত্র ঘুরে বেড়াবেন।
ফুল গাছ
মায়েদের প্রিয় কাজের মধ্যে একটি হচ্ছে ঘর সাজানো। নানা ধরনের জিনিসপত্র দিয়ে বারান্দা থেকে শুরু করে ঘরের আনাচে কানাচে প্রতিটি অংশে মায়ের স্পর্শে মিশে থাকে। এই সৌন্দর্যবর্ধক বস্তুগুলোর মধ্যে সবচেয়ে সাধারণ হচ্ছে ফুল গাছ। শো পিস বা কৃত্রিম ফুল গাছ হোক অথবা সত্যিকারের ছোট্ট টবের ফুল গাছ-ই হোক; ঘরের অন্যান্য আসবাব ও ফার্নিচারের সঙ্গে সেই ফুল গাছের সজ্জায় দারুণ এক পরিবেশ সৃষ্টি হয়। আর এটা সম্ভব করেন মা তার অদ্ভূত নৈপুণ্য দিয়ে। জানালার গরাদে বা বারান্দার ছোট্ট বাগানটির জন্য ছোট্ট একটি ফুল গাছ মা দিবসের সেরা উপহার হতে পারে।
আরও পড়ুন: মধু কি সত্যি অমৃত?
একসঙ্গে পছন্দের টিভি অনুষ্ঠান দেখা
সন্ধ্যার পর মায়েদের প্রিয় কাজের মধ্যে একটি হচ্ছে টিভিতে তাদের পছন্দের অনুষ্ঠানটি দেখা। সারাদিন সংসার গোছানোর মাঝে তাদের বিনোদনের জায়গাটি থাকে না বললেই চলে। মুলত প্রিয় মানুষগুলোর দিকে খেয়াল রাখার কাজটি মনপ্রাণ ঢেলে করার মাঝেই তারা বিনোদন খুঁজে নেন। এরপরেও যতটুকু অবসর মেলে সেটুকু কোন টিভি নাটক বা রিয়েলিটি শো দেখে কাটানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু এই সময়টিতে যখন সন্তান সঙ্গী হয়, তখন সে আনন্দ যেন বহুগুণ বেড়ে যায়। পরিবারের সবাই মিলে যে কোন নাটক, সিনেমা ও ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান দেখলে নিমেষেই উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
নিত্য ব্যবহার্য প্রসাধনী
মায়ের নিত্য ব্যবহার্য চিরুনি, তেল, সুগন্ধী ও ক্রিমসহ নানা প্রসাধনীগুলো উপহারের মাধ্যমে সার্বক্ষণিক মায়ের সঙ্গেই থাকা যেতে পারে। সন্তান অনেক দূরে থাকলেও তার দেয়া প্রসাধনীগুলো মাও অনেক যত্ন নিয়ে ব্যবহার করবেন। যদিও বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মায়েদের এ ধরনের প্রসাধনী ব্যবহারের প্রবণতা কমে যায়। কিন্তু এই প্রসাধনীগুলো সন্তানের পক্ষ থেকে শুধু উপহারই নয়; মায়ের নিজের শরীরের প্রতি যত্ন নেয়াতেও উদ্বুদ্ধ করবে। বিভিন্ন সময় পরিবারের বাইরের লোকদের সঙ্গে একত্রিত হওয়ার সময় তাদের সামনে মায়ের সাবলীল উপস্থিতির দিকে দৃষ্টি রাখা সন্তানের কর্তব্য।
আরও পড়ুন: বিশ্বে প্রথমবারের মতো মানবদেহে সফলভাবে শূকরের হৃৎপিণ্ড প্রতিস্থাপন
ভিডিও বা ফটো অ্যালবাম
সন্তানের বড় হওয়ার প্রতিটি ফ্রেমবন্দি মুহুর্তগুলোকে আত্মীয়-স্বজনকে দেখাতে পছন্দ করেন প্রতিটি মা-ই। এই ভালো লাগাটিকেই আরও বাড়িয়ে দিতে পারে সন্তানের সঙ্গে কাটানো সেরা কিছু মুহুর্তের ভিডিও বা ফটো অ্যালবাম। জন্মদিন, কোথায় ঘুরতে যাওয়া, বাসায় বিশেষ কোন অতিথির আগমন ইত্যাদি পারিবারিক সময়গুলোতে মায়ের সঙ্গে অতিবাহিত দারুণ মুহুর্তগুলোকে রেকর্ড করে উপহার দেয়া যেতে পারে। এছাড়া বিভিন্ন সময়ে সন্তানের বিশেষ অর্জনের কথা জানানোর পর মায়ের প্রতিক্রিয়া রেকর্ড করে রাখা যেতে পারে। অতঃপর অনেক দিন বাদে ভিডিও বা ছবিগুলো মাকে দেখালে এক অবিস্মরণীয় মুহুর্তের জন্ম দিতে পারে।
প্রিয় জিনিস দিয়ে ঘর গোছানো
কোনো মা-ই তার সন্তানের কাছ থেকে কোন বিনিময় আশা করেন না। এরপরেও হঠাৎ কোন দিন বাড়িতে ঢুকে নিজের পছন্দের যাবতীয় জিনিস দিয়ে পরিপাটি করে সাজানো ঘর দেখে মা অবাক বনে যেতে পারেন। সন্তানরা বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাদের পছন্দগুলো দিয়ে প্রতিস্থাপিত হতে থাকে মায়ের পছন্দগুলো। এক সময় নিজেই ভুলে যেতে বসেন অনেক আগে তার কি পছন্দ ছিলো। তাই এক্ষেত্রে সন্তানদের সাহায্য করতে পারেন বাবা ও নানা-নানীরা। মায়ের শৈশবের হারিয়ে যাওয়া আঁকার খাতা, শিক্ষাজীবনের বড় বড় অর্জন, প্রিয় শো-পিস, ওয়ালম্যাট প্রভৃতি যোগাড় করা খুব কষ্টসাধ্য হলেও তা মায়ের অমূল্য প্রতিক্রিয়ার কাছে অচিরেই ম্লান হয়ে যাবে।
আরও পড়ুন: এয়ার কন্ডিশনার ছাড়াই গরমে ঘর ঠান্ডা রাখার কার্যকরী উপায়
শেষাংশ
কাজসহ বিভিন্ন কারণে যাদের মায়ের কাছ থেকে দূরে থাকতে হয় তারা মায়ের প্রতি টানটা বেশি অনুভব করে থাকেন। তবে যারা প্রতিনিয়ত চোখের সামনে দেখতে পান তারা মায়ের জন্য আলাদা করে বিশেষ কিছু করার কথা প্রায়ই ভুলে গিয়ে থাকেন। এখানে মা দিবস উদযাপনটি হতে পারে সেই কর্তব্যের চেতনাটি জাগ্রত করার মাধ্যম। এই ছোট্ট প্রয়াসে হয়ত মায়ের ঋণ পরিশোধ সম্ভব নয়, তবে অবাক বনে যাওয়ার মায়ের মুখে যে হাসিটা ফুটে উঠবে তা যে কোন সন্তানের জন্যই সারা জীবনের পাথেয়।
জাফলংয়ে প্রবেশ ফি: ৭ মাসে আয় ৪০ লাখ টাকা
সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলা প্রশাসন জাফলংয়ের জনপ্রিয় ও প্রাকৃতিক নৈসর্গিক পর্যটনকেন্দ্রে প্রবেশ ফি থেকে গত সাত মাসে ৪০ লাখ টাকা আয় করেছে।
গত বছরের সেপ্টেম্বরের শেষদিকে জাফলংয়ে প্রবেশে চালু করা হয় ফি। জেলা প্রশাসনের সিদ্ধান্তে জনপ্রতি এখন ১০ টাকা ফি দিয়ে টিকিটের মাধ্যমে পর্যটকদের প্রবেশ করতে হয় জাফলংয়ে।
এদিকে, ফি চালুর পর থেকে অনেকেই এর সমালোচনা করেছেন। জাফলংয়ের টিকিট কাউন্টারে বৃহস্পতিবার (৫ মে) পর্যটকদের মারধরের ঘটনার পর আবারও টিকিটের বিষয়টি আলোচনায় এসেছে।
আগে পর্যটকরা জাফলং জিরো পয়েন্টে যেতেন বল্লাঘাট এলাকা দিয়ে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখন গুচ্ছগ্রাম এলাকা দিয়ে পর্যটক প্রবেশের ব্যবস্থা করা হয়েছে। পর্যটকদের ওঠানামার সুবিধার জন্য বানানো হয়েছে সিঁড়ি। আর গুচ্ছগ্রামে বিজিবি ক্যাম্পের পাশেই বসানো হয়েছে টিকিট কাউন্টার।
প্রবেশ ফি চালুর বিষয়ে গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাহমিলুর রহমান বলেন, ‘গত বছর জেলা পর্যটন কমিটির সভায় ফি চালুর সিদ্ধান্ত হয়। উপজেলা প্রশাসন এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করছে। এটি কাউকে ইজারা দেয়া হয়নি। চুক্তিভিত্তিক কিছু কর্মীর মাধ্যমে উপজেলা প্রশাসন ফি আদায় করে।’
তিনি বলেন, ‘জাফলং পরিষ্কার রাখাসহ পর্যটকদের সেবা দেয়ার জন্য কিছু অস্থায়ী কর্মী রাখা হয়েছে। এই টাকায় ঘণ্টাপ্রতি ৫০ টাকা হিসাবে তাদের বেতন দেয়া হয়। কর্মীর সংখ্যা নির্দিষ্ট নয়। সর্বনিম্ন পাঁচ-ছয়জন থেকে সর্বোচ্চ ৩০ জন কাজ করেন।’
পর্যটকদের ওপর হামলাকারীদের সম্পর্কে তাহমিলুর রহমান বলেন, ‘স্বেচ্ছাসেবক বলা হলেও আসলে তারা স্বেচ্ছাসেবক নন। সম্মানির বিনিময়ে চুক্তিভিত্তিক কাজ করেন। অন্যদের থেকে তাদের আলাদা করার জন্য অ্যাপ্রোন দেয়া হয়েছে।’
পর্যটকদের সেবার মান বাড়াতেই এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, ‘১০ টাকার বিনিময়ে আমরা পর্যটকদের কয়েকটি সেবা দেই। পর্যটন এলাকায় ড্রেস চেঞ্জ করার রুম ও টয়লেট নির্মাণ করা হয়েছে। পর্যটকরা এগুলো বিনা মূল্যে ব্যবহার করতে পারেন। সেই সঙ্গে রয়েছে ফ্রি ওয়াইফাই ব্যবস্থা। এ ছাড়া প্রবেশ ফি দিয়ে পর্যটন এলাকা পরিচ্ছন্ন রাখারও কাজ করা হয়। টিকিট দেখালে পর্যটকরা সহজে ও নির্ধারিত দামে ফটোগ্রাফার, ট্যুর গাইড ও নৌকার মাঝি পান।’
জমা হওয়া টাকার বিষয়ে ইউএনও বলেন, ‘টিকিট ফি থেকে প্রতিদিন সমান টাকা ওঠে না। একেক দিন একেক রকম হয়। আমি দিনে সর্বোচ্চ দুই লাখ টাকা আদায় হতে দেখেছি। উপজেলা পর্যটন কমিটি নামে একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট আছে। এই অ্যাকাউন্টে প্রবেশ ফি জমা হয়। ইউএনও এবং সহকারী কমিশনার (ভূমি) অ্যাকাউন্ট পরিচালনা করেন। এখন পর্যন্ত ৪০ লাখ টাকা জমা হয়েছে।’
এদিকে বৃহস্পতিবার গোয়াইনঘাট প্রশাসনের নিয়োগকৃত স্বেচ্ছাসেবকরা জাফলং পর্যটনকেন্দ্রে নারী ও শিশুসহ একদল পর্যটককে লাঞ্ছিত করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
দুপুর ২টার দিকে টিকিট কেনাকে কেন্দ্র করে পর্যটকদের ওপর হামলা চালায় উপজেলা প্রশাসনের টোল কাউন্টারে নিযুক্ত কয়েকজন স্বেচ্ছাসেবক।
পড়ুন: জাফলংয়ে পর্যটকদের ওপর হামলার ঘটনায় আটক ৫
প্রত্যক্ষদর্শীরা ঘটনার ভিডিও ভাইরাল হলে বিকাল ৫টার দিকে উপজেলা প্রশাসন ও জাফলং সাব জোনের ট্যুরিস্ট পুলিশের পরিদর্শক ঘটনাস্থলে যান। পরে হামলাকারী পাঁচ স্বেচ্ছাসেবককে গ্রেপ্তার করে গোয়াইনঘাট থানা পুলিশ। হামলার ঘটনায় আহত সুমন নামের এক পর্যটক বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার রাতে গোয়াইনঘাট থানায় মামলা দায়ের করেছেন।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন- গোয়াইঘাটের পন্নগ্রামের মৃত রাখা চন্দ্রের ছেলে লক্ষ্মণ চন্দ্র দাস (২১), ইসলামপুর গ্রামের বাবুল মিয়ার ছেলে মো. সেলিম আহমেদ (২১), নয়াবস্তি এলাকার ইউসুফ মিয়ার ছেলে সোহেল রানা, পশ্চিম কালীনগর গ্রামের মৃত আব্দুল কাদিরের ছেলে নাজিম উদ্দিন ও ইসলামপুর রাধানগর গ্রামের মৃত সিরাজ উদ্দীনের ছেলে জয়নাল আবেদীন। তাদেরকে শুক্রবার দুপুরে সিলেটের আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
এদিকে সিলেট জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমান জানিয়েছেন, ঈদ উপলক্ষে শুক্রবার (৬ মে) সকাল থেকে আগামী সাত দিন পর্যটকদের কাছ থেকে কোনো ধরনের টিকিট বাবদ টাকা আদায় করা হবে না। জাফলং সবার জন্য উন্মুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকেও (ইউএনও) নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। পর্যটকদের জন্য আগামী সাত দিন জাফলং উন্মুক্ত থাকবে।
পড়ুন: জাফলংয়ে পর্যটকের ওপর স্বেচ্ছাসেবীদের হামলা, আহত ৬
চট্টগ্রামে আজ ঐতিহ্যবাহী জব্বারের বলীখেলা
চট্টগ্রাম আজ (২৫ এপ্রিল) সোমবার অনুষ্ঠিত হচ্ছে শত বছরের ঐতিহ্যবাহী আব্দুল জব্বারের বলীখেলা (কুস্তি প্রতিযোগিতা)। এ উপলক্ষে চলছে তিন দিনের বৈশাখী মেলা।
বিকেলে শহরের লালদীঘির জেলা পরিষদ মার্কেট প্রাঙ্গণের সড়কের উপর বিশেষ ব্যবস্থায় এ বলীখেলা অনুষ্ঠিত হবে। করোনার মহামারির কারণে দুই বছর এ আয়োজন বন্ধ থাকার পর ঐতিহ্যবাহী এ বলীখেলা ও মেলার এবার বসছে ১১৩তম আসর। প্রতিযোগিতায় অংশ নেবেন চট্টগ্রাম কক্সবাজার, নোয়াখালী কুমিল্লাসহ বিভিন্ন অঞ্চলের শতাধিক বলী।
এদিকে আজকের বলীখেলা ও গতকাল রবিবার থেকে শুরু তিন দিনের বৈশাখী মেলার কারণে কয়েকদিন ধরে লালদীঘি, কে সি দে রোড, বক্সিরহাট, সিনেমা প্যালেস, আমানত শাহ রোড, খাতুনগঞ্জ-আসাদগঞ্জগামী রোড সহ কয়েক কিলোমিটার এলাকায় যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। সিএমপির পক্ষ থেকে নেয়া হয়েছে ব্যাপক নিরাপত্তা। কয়েক কিলোমিটার এলাকা জুড়ে লাগানো হয়েছে সিসি টিভি ক্যামেরা।
তিন দিনব্যাপী এ মেলা আজ এবং আগামীকাল পর্যন্ত চলবে। মেলায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ব্যবসায়ীরা নানা ধরনের গৃহস্থালি ও লোকজ পণ্য নিয়ে হাজির হয়েছেন। ঐতিহ্যবাহী এ মেলায় হরেক রকমের পণ্যের পসরা সাজিয়েছেন বিক্রেতারা। মাটির তৈরি তৈজসপত্র, মাটির টেপা পুতুল, কাঁচের চুড়ি, পাটপণ্যের পাশাপাশি কাঠের পুতুল, খেলনা, বাঁশ-বেতের জিনসিপত্র আর মুড়ি-মুড়কি বাতাসার দোকানের ভিড় লেগেছে।
বৈশাখের তপ্ত দুপুরে মাথার ওপর প্রচণ্ড তাপদাহ। তারই মাঝে বাহারি গ্রামীণ পণ্যের পসরায় সেজেছে লালদিঘী মাঠের আশে পাশের প্রায় তিন কিলোমিটার এলাকা। মেলায় এসেছে নানা বয়সী মানুষ।
পড়ুন: চট্টগ্রামে জব্বারের বলীখেলা হবে: মেয়র
ঈদের ছুটিতে ভ্রমণের পূর্ব প্রস্তুতি এবং দুর্ঘটনা এড়াতে কিছু সতর্কতা
ইতিবাচক দৃষ্টিকোণ থেকে ভাবলে পুরো পৃথিবীটা ভ্রমণকারীদের জন্য নিরাপদ জায়গা। হোক সেটা নিজের দেশে অথবা বিদেশে। প্রতিটি মানুষ তার নিজের আবাসস্থলকে মনপ্রাণ দিয়ে ভালোবাসে। তাই কোন বহিরাগতকে দেখলে যারপরনাই খুশি হয়ে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়। কিন্তু মুদ্রার অন্য পিঠের মত অনেক অনর্থও ঘটতে পারে এই ভ্রমণের সময়। প্রতি ঈদের মত এবারো ঢাকা ছাড়ছে অজস্র মানুষ। কেউ প্রস্তুতি নিচ্ছে গ্রামের বাড়িতে যাওয়ার, কেউ বা প্ল্যান করছে পরিবার নিয়ে দূরে কোথাও ঘুরে আসার। উভয় ক্ষেত্রেই একটু স্মার্ট চিন্তার অভাবে বহু প্রত্যাশিত ভ্রমণটি নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তাই ভ্রমণের পূর্ব প্রস্তুতি সহ চলুন জেনে নিই ঈদের ছুটিতে নিরাপদে ভ্রমণের কিছু দরকারি টিপ্স।
ঈদের ছুটিতে ভ্রমণের পূর্ব প্রস্তুতি
গন্তব্য সুনির্দিষ্টকরণ
বেড়াতে যাওয়ার আগে সর্বপ্রথম ঠিক করতে হয় গন্তব্য। আর এর উপর নির্ভর করেই পরবর্তীতে নির্ধারিত হয় ভ্রমণের সময়, বাজেট, অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা ইত্যাদি। গত বছরের ন্যায় এবারের ঈদও বেশ গরমের মধ্যেই পড়তে যাচ্ছে। তাই যে জায়গাগুলোতে অত্যধিক কায়িক পরিশ্রম হবে সে জায়গাগুলোকে এড়িয়ে যাওয়া উত্তম। যেমন-পাহাড় ও ঘন বনাঞ্চলের স্থলে গুরুত্ব দেয়া যেতে পারে সাগর, নদী, হাওড় এবং হালকা গাছ-গাছালি ঘেরা উদ্যান বা এরকম কোন খোলামেলা জায়গা।
যে জায়গাটিকে গন্তব্য হিসেবে ঠিক করা হবে তার ব্যাপারে স্থানীয় বা আগে কেউ সেখানে গেছে এরকম কারো কাছ থেকে তথ্য নেয়া উত্তম। এছাড়াও এখন সামাজিক যোগাযোগ প্ল্যাটফর্মের যুগে ভ্রমণ বিষয়ক বিভিন্ন পরিচিত-অপরিচিত জায়গাগুলোর তথ্য অনায়াসেই পাওয়া যায়।
পড়ুন: ঈদের ছুটিতে দেশের বাইরে কোথায় ঘুরতে যাবেন?
পরিবহন ব্যবস্থা বাছাই
প্রতি ঈদে বাড়ি গ্রামের বাড়ি যাওয়া এবং ঢাকার বাইরে পরিজন নিয়ে ঈদের ছুটি কাটানো উভয়ের ক্ষেত্রেই পরিবহন ঠিক করা বেশ ঝামেলার কাজ। বিশেষ করে যারা মাঝারি ধরনের পাবলিক পরিবহনগুলোতে যাতায়াত করে থাকেন, তাদের জন্য এই সময়টা রীতিমত বিভীষিকাময়। প্রতি ঈদে পরিবহনগুলোর সিট বুকিংয়ের লাইনে প্রচুর মানুষের ভীড়ে হাজারো ঝামেলা পোহাতে হয়। তাই টিকেট ছাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই যত আগে সম্ভব সিট বুক করে নেয়া উত্তম।
তাছাড়া প্রত্যহ যানজট অত্যধিক হারে বৃদ্ধি পাবার ফলে স্থলপথে যাতায়াত এখন সমূহ হয়রানির নামান্তর। তাই যারা শুধুমাত্র প্রমোদ ভ্রমণে ঢাকা ছাড়ছেন তাদের জন্য ঈদের দিন দিবাগত রাত বা পরদিন রওনা হওয়া ভালো। এছাড়া একই গন্তব্যের যাত্রীরা ৬ থেকে ৭ জন হলে একসাথে একটা মাইক্রো বাস ভাড়া করেও যাওয়া যায়। বড় গ্রুপের পর্যটকরাও এভাবে ঈদের মৌসুমে যে কোন সময় যাতায়াত করতে পারেন।
থাকা-খাওয়ার পূর্ব পরিকল্পনা
ঈদের ভ্রমণপিপাসুদের জন্য এই বিষয়টি নিয়ে আগে থেকেই ভেবে রাখা ভালো। কি ধরনের আবাসিক হোটেল ঠিক করা হচ্ছে, সাথে বা আশেপাশে খাবারের হোটেল আছে কিনা প্রভৃতি ব্যাপারগুলো ঢাকা থেকেই ঠিক করে যাওয়া উচিত। বিশেষ করে ২ থেকে ৩ দিনের ভ্রমণের ক্ষেত্রে ভ্রমণ সঙ্গীদের সাথে আলোচনা করে বাজেট অনুযায়ী একটি উপযুক্ত লোকেশানে আবাসন ঠিক করতে হবে।
পড়ুন: ঈদের ছুটি কাটানোর জন্য ঢাকার কাছাকাছি সেরা কয়েকটি রিসোর্ট
এই লোকেশান থেকে খাবারের হোটেল এবং দর্শনীয় স্থানসমূহের দূরত্বের ব্যাপারটা খেয়াল রাখতে হবে। কেননা এই বিষয়টি বাজেটের উপর একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে। যেহেতু ঈদের সময় যাওয়া হচ্ছে সেহেতু অত্যধিক হোটেল ভাড়া বিবেচনার মধ্যে রাখতে হবে।
অভিজতা রেস্টুরেন্ট এড়িয়ে যাওয়াই ভালো। এক্ষেত্রে স্থানীয় কারো থেকে অথবা ট্রাভেল ব্লগগুলোর মাধ্যমে খাবার খরচের ব্যাপারে জেনে নেয়া যেতে পারে।
ভ্রমণের জন্য ব্যাগ গোছানো
এই গোছগাছের ব্যাপারটির সঙ্গে কি ধরনের জায়গায় যাওয়া হচ্ছে এবং কতদিন থাকতে হবে তা জড়িত। যারা বাড়িতে ঈদ করতে যান তাদের লাগেজটা স্বভাবতই একটু বড় হয়। আর পর্যটকদের জন্য বেশ মাপজোখ করেই ব্যাগ গোছাতে হয়। উভয় ক্ষেত্রেই যতটা সম্ভব অপ্রয়োজনীয় জিনিস বাদ দেয়া উচিত। চলুন, দেখে নেয়া যাক ব্যাক-প্যাকের জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী।
পড়ুন: ঢাকার কাছেই প্রকৃতির মাঝে ক্যাম্পিং সাইট
টাকা-পয়সার ব্যবস্থাপনা
নির্ধারিত বাজেটের থেকে কিছুটা বাড়িয়ে টাকা-পয়সা নেয়া উচিত। ক্রেডিট বা ডেভিট কার্ডধারীদেরও সাথে ক্যাশ টাকা রাখতে হবে। এমনকি ছোট ছোট ভাংতিও প্রস্তুত রাখতে হবে। মোবাইলে বেশি করে রিচার্জ করা অথবা বিকাশ বা নগদে টাকা ভরে নেয়া যেতে পারে।
প্রয়োজনীয় পরিধেয়
যেহেতু গরমের ঈদ, তাই সাদা বা হালকা রঙের কাপড়ই শ্রেয়। সদ্য কেনা জুতা ব্যবহার করা যাবে না, কেননা মাঝ রাস্তায় পায়ের আঙ্গুলে ঠোসা পরে বেকায়দায় ফেলে দিতে পারে। ভ্রমণের জন্য স্পোর্ট্স ট্রাওজারের সাথে শক্ত গ্রিপ সহ কেড্স ভালো। গ্যাবাডিং বা জিন্স পড়া যেতে পারে তবে খেয়াল রাখতে হবে প্রচন্ড গরমের সময় কাপড় যেন বেশি আঁটসাঁট না হয়।
কিছু ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস
যে কোন ধরনের মোবাইল ফোনের ব্যবহারকারিদের জন্য চার্জার এবং পুরো চার্জ দেয়া পোর্টেবল চার্জার নেয়া আবশ্যক। বাসা থেকে বেরনোর আগে মোবাইল ফোনে পুরো চার্জ দিয়ে নেয়া জরুরি। এছাড়া সাথে নেয়া ক্যামেরার ক্ষেত্রেও ব্যাটারি ফুল চার্জ দিয়ে নিতে হবে। ক্যামেরা ঠিকমত কাজ করছে কিনা সেটাও একবার দেখে নেয়া উচিত।
পড়ুন: হিমাচল, জম্মু-কাশ্মীর ও লাদাখ ভ্রমণ: দর্শনীয় স্থান ও খরচ
ঈদেভ্রমণে দুর্ঘটনা এড়াতে সতর্কতা
ভ্রমণ পথ ও গন্তব্যের ব্যাপারে যথাযথ তথ্য নেয়া
যে কোন গন্তব্যে যাওয়া আগে তার ব্যাপারে যত বেশি জেনে নেয়া যায় ততই ভালো। প্রথমেই সেখানকার আবহাওয়া এবং আইনশৃঙ্খলার অবস্থা জেনে নিতে হবে। নিকটস্থ থানা, হাসপাতাল ও অ্যাম্বুলেন্সের নাম্বার, আবাসিক হোটেল, এবং ভ্রমণকারির যে ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট আছে তার শাখা লোকেশন ও যোগাযোগ নাম্বার মোবাইলে সংরক্ষণ করতে হবে।
এছাড়া যে রুট ব্যবহার করে গন্তব্যে পৌছবে সে রুটেও কোন ঝামেলা চলছে কিনা আগে থেকেই যাচাই করে নিতে হবে। মোবাইলে নূন্যতম একদিনের ইন্টারনেট প্যাকেজ কিনে নেয়া যেতে পারে। এতে করে যাত্রাপথে যে কোন জায়গায় নিকটস্থ অ্যাম্বুলেন্স ও থানার নাম্বার খুঁজে বের করা যাবে।
নিকট বন্ধু ও আত্মীয়দের জানিয়ে রাখা
বাড়িতে বাবা-মার সাথে ঈদ করার জন্য ঢাকার ছাড়ার সময় ঢাকার অন্তত একজন নিকট আত্মীয় বা বন্ধুকে প্রস্থানের বিষয়টি জানিয়ে রাখা উচিত। সেই সাথে রওনা হওয়া সময়টিও জানাতে হবে গন্তব্যের লোকদের। বিশেষত পৌছতে গভীর রাত হয়ে গেলে তারা যেন গাড়ির ব্যবস্থা করতে সহায়তা করতে পারে। অনেক সময় দেখা যায় গ্রামের বাড়িটি বাস বা ট্রেন ষ্টেশন থেকে অনেক ভেতরে।
একই কথা খাটে যারা প্রতিনিয়ত ঢাকাতে ঈদ করেন তাদের জন্যও।
পড়ুন: কলকাতা ভ্রমণ: দর্শনীয় স্থানে যাওয়ার উপায় ও খরচ
ওষুধপত্র ও ফার্স্ট এইড বক্স সঙ্গে রাখা
যাত্রাপথে বা গন্তব্যে পৌছে বিভিন্ন সময় ছোট-খাট দূর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাই চট জলদি প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য ফার্স্ট এইড কিট সঙ্গে রাখা জরুরি। জ্বর, বমি, মাথা ব্যথা, পেট খারাপের ওষুধ এবং ডাক্তারের পরামর্শ অনুসারে অ্যান্টিবায়োটিক সাথে রাখা জরুরি। সাথে নেয়া যেতে পারে মশা নিরোধক ওডোমোস। সাথে বাচ্চা থাকলে তাদের স্বাস্থ্যের দিকে বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে।
সাথে খাবার পানীয় নেয়া
ভয়াবহ দাবদাহে ঈদ উৎসবে শক্ত সমর্থ থাকতে বিশুদ্ধ পানি পানের কোন বিকল্প নেই। শুধু দীর্ঘ মেয়াদের ভ্রমণেই নয়; রোদের মধ্যে ঘন্টাখানেক হাটার ক্ষেত্রেও সাথে পানি বা জুসের বোতল বহনে অভ্যস্ত হওয়া উচিত।
ভ্রমণের সময় খাওয়া-দাওয়ার ব্যাপারে সতর্কতা
ভ্রমণের সময় খাবারের মান যাচাইয়ের ক্ষেত্রে খাবারটি কিভাবে প্রস্তুত হচ্ছে তা দেখা জরুরি। কিন্তু সেটা সম্ভব না হলে খাবারটি যথেষ্ট রান্না হয়েছে কিনা সেদিকে নজর দিতে হবে। কোন খাবারে অ্যালার্জি থাকলে সেটি সেখানকার বিখ্যাত খাবার হলেও এড়িয়ে যাওয়া উচিত। ব্যাকটেরিয়া থেকে দূরে থাকতে শুধুমাত্র যেগুলো খোসা ছাড়িয়ে খেতে হয় সে ফলগুলো খাওয়া যেতে পারে।
পড়ুন: নেপাল ভ্রমণ: শত বছরের তীর্থস্থান ঘুরতে হিমালয়ের দেশে
ভ্রমণের পূর্বে পর্যাপ্ত ঘুম
ভ্রমণের সময় দীর্ঘ দূরত্ব না থাকা সত্ত্বেও প্রায়ই যানজটের জন্য দীর্ঘক্ষণ রাস্তাতেই কেটে যায়। এমতাবস্থায় শরীরে যথেষ্ট পরিমাণে শক্তির যোগানের জন্য ভ্রমণের পূর্বে পর্যাপ্ত ঘুম দরকার। এছাড়াও ট্রেনে মোশন সিকনেস থেকে রক্ষা পেতে যানবাহন চলাকালে অল্প কিছুক্ষণ চোখ বন্ধ রাখা অথবা সম্ভব হলে ঘুমিয়ে নেয়া ভালো।
প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
শুধু এই ঈদের জন্য নয়; দেশের ভেতরে যে কোন ভ্রমণকালে জাতীয় পরিচয়পত্র সাথে থাকা উচিত। বর্তমানে করোনা টিকা কার্ডও একটি অবিচ্ছেদ্য সংযোজন হয়ে দাড়িয়েছে। এগুলোর প্রতিটির স্ক্যান কপি অনলাইনে তথা- ড্রপবক্স, গুগল ড্রাইভ, ওয়ান ড্রাইভ অথবা অফলাইনে মোবাইলের ফাইল ম্যানেজারে সংরক্ষণ করা উচিত, যেন মোবাইলের মাধ্যমে দ্রুত দেখা যায়।
শেষাংশ
যারা নিয়মিত ভ্রমণ করেন তাদের জন্য ভ্রমণের এই পূর্ব প্রস্তুতি ও সতর্কতাগুলো অবচেতন মনের কিছু কার্যকলাপের মত। নতুন ভ্রমণকারিদেরও প্রতিবার ভ্রমণে এই পদ্ধতিগুলো চর্চার মধ্যে নিয়ে আসা উচিত। এতে করে নিজের নিরাপত্তার পাশাপাশি ভ্রমণসঙ্গীরও নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা যায়। সর্বোপরি, ঈদের ছুটিতে ভ্রমণের প্রস্তুতি, সতর্কতা ও নিরাপত্তা অব্যাহত থাকলে চির স্মরণীয় এক ভ্রমণ অভিজ্ঞতার আশা করা যায়।
পড়ুন: সীতাকুণ্ড ডে ট্যুর: একদিনে ঘুরে আসুন চন্দ্রনাথ পাহাড় ও মহামায়া লেক
এয়ার কন্ডিশনার ছাড়াই গরমে ঘর ঠান্ডা রাখার কার্যকরী উপায়
বিশ্বব্যাপী উষ্ণতায়নের নিরন্তর প্রভাব বিস্তারে বিলাসবহুল এসি বা এয়ার কন্ডিশনার পরিণত হয়েছে প্রতিদিনের প্রয়োজনীয় পণ্যে। ফ্যানের নিচে থেকেও ঘর্মাক্ত কলেবর অবস্থাটা এখন নিত্যদিনের প্রতিচ্ছবি। লোডশেডিংয়ের শহরে এসির শতভাগ সুবিধা পাওয়া নিয়ে মুশকিলে পড়তে হয়। এছাড়া মাস শেষে মোটা অঙ্কের বিদ্যুৎ বিলের চাপ তো আছেই। এরপরে কয়েক মাস পর পর মেরামতের হয়রানি। একদিকে প্রচন্ড গরমে ডিহাইড্রেশন সহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ার ভয়, আরেক দিকে কৃত্রিম ঠান্ডা বাতাসের সাথে মানিয়ে নিতে না পারার কারণে নানা শারীরিক জটিলতার সৃষ্টি। সর্বোপরি স্বাস্থ্যের প্রতি হুমকিটা থেকেই যাচ্ছে। এ অবস্থায় চলুন জেনে নেয়া যাক- এয়ার কন্ডিশনার ছাড়াই কিভাবে ঘরকে ঠান্ডা রাখবেন।
গ্রীষ্ম ঋতুতে ঘরের পরিবেশ ঠান্ডা রাখতে এয়ার কন্ডিশনার-এর বিকল্প উপায়সমূহ
ঘরের ভেতর গাছ রাখা
ঘরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে এই কাজটি অনেকেই করে থাকেন। অনেকেরই বারান্দায় ছোট বাগান করার শখ থাকে। ঘরের ভেতর জানালার কাছে বা বারান্দায় এভাবে গাছ রাখা হলে তা বাইরের গরম তাপ শুষে নেয়। তাছাড়া গাছগুলো সারা ঘরের শোভাবর্ধনও করে। এগুলোর মধ্যে মানিপ্লান্ট, স্নেক প্লান্ট, অ্যালো ভেরা, এবং অ্যারিকা পাম বেশ জনপ্রিয়। তবে কারো উদ্ভিদে অ্যালার্জি থাকলে সতর্ক থাকতে হবে। এক্ষেত্রে আগে থেকেই ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে নেয়া উত্তম।
পড়ুন: ঈদের ছুটিতে দেশের বাইরে কোথায় ঘুরতে যাবেন?
তাছাড়া গাছ শুধু রাখলেই হবে না, এর যথাযথ পরিচর্যাও করতে হবে। ঘরের ভেতর রাখা এই গাছগুলো সালোকসংশ্লেষ প্রক্রিয়ার জন্য ঘরের গরম বাতাসের কার্বন-ডাই-অক্সাইড শোষণ করে নেয়। এতে বাতাসে আর্দ্রতা বৃদ্ধির কারণে উষ্ণতা হ্রাস পেয়ে ঘরে ঠান্ডা ভাব বজায় থাকে। সম্ভব হলে বাড়ির বাইরের দিকেও গাছ লাগানো উচিত। এতে করে বাইরের যত গরম তাপ বাড়ির দেয়ালের বাইরে অংশেই রয়ে যায়। অন্যদিকে ঘরের ভেতরটা শীতল থাকে।
ঈদের ছুটিতে দেশের বাইরে কোথায় ঘুরতে যাবেন?
ঈদুল ফিতরের দীর্ঘ ছুটিকে উপলক্ষ করে অনেকেই দেশের বাইরে ঘুরতে চলে যান। এয়ারলাইন্স এবং ট্যুর কোম্পানিগুলো এই ঈদের ছুটিকে কেন্দ্র করে দেশ ভ্রমণের জন্য বিভিন্ন সুবিধা দিয়ে থাকে। ফলে প্রতি বছরই বাড়ছে ঈদের ছুটিতে বিদেশ ভ্রমণের প্রবণতা। করোনা মহামারির জন্য মাঝের প্রায় দেড় বছর সীমিত ছিল বিদেশে পরিবহন ব্যবস্থা। কিন্তু গত এক বছর ধরে আবারো সরব হয়ে উঠেছে দেশ-বিদেশের পর্যটন শিল্পগুলো। চলুন, ঈদের ছুটিতে সেরা কয়েকটি দেশ ভ্রমণের ব্যাপারে জেনে নেয়া যাক।
ঈদের ছুটিতে ভ্রমণের জন্য সেরা কয়েকটি দেশ
ভারত
পার্শ্ববর্তী দেশ হওয়ায় ভারতের প্রদেশগুলো বাংলাদেশি ভ্রমণপিপাসুদের পছন্দের তালিকায় সব সময়ই শীর্ষ স্থানে ছিল। বিশেষ করে কলকাতা, জম্মু-কাশ্মীর, হিমাচলের মানালি ও শিমলার মত জনপ্রিয় স্থানগুলো বছর জুড়ে প্রতিটি ছুটিতে লোকারণ্যে পরিণত হয়।
কলকাতার সাথে সরাসরি পরিবহন ব্যবস্থার উন্নতি হওয়ায় বাংলাদেশের সবচেয়ে কাছাকাছি এই সবৃহৎ শহরটি হতে পারে ছুটি কাটানোর দারুণ একটি উপায়। এর ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল, ফোর্ট উইলিয়াম, হাওড়া ব্রিজ ও চির নির্ঘুম সড়ক পার্ক স্ট্রিট-এ কোন এক বিকেল অমূল্য স্মৃতি হয়ে থাকতে পারে।
পড়ুন: হিমাচল, জম্মু-কাশ্মীর ও লাদাখ ভ্রমণ: দর্শনীয় স্থান ও খরচ
মানালির সোলাং ভ্যালিতে ক্যাম্পিং ও অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্ট্স, রাফটিং, আর পাহাড় ট্রেকিং এক অবিস্মরণীয় অভিজ্ঞতার যোগান দিতে পারে। প্রাচীন ভারত ও বৃটিশ সভ্যতার রসায়ন দেখতে হলে হারিয়ে যেতে হবে শিমলাতে।
আর জম্মু কাশ্মীরের পাহাড় চূড়ার ঐতিহাসিক স্থাপনাগুলো প্রকৃতির প্রেমের পাশাপাশি অনুভূতি দেবে আধ্যাত্মিকতার।
কলকাতার ট্রানজিট ভিসা নিয়ে ভারতের যে কোন প্রদেশেই ভ্রমণ করা যায়। সরাসরি বাসে ৯০০ থেকে সর্বোচ্চ ২০০০ টাকায় পৌঁছে যাওয়া যায় প্রাচীন শহর কলকাতায়। অতঃপর হিমাচল ও জম্মু-কাশ্মীরের ভাড়া বাবদ খরচ পড়তে পারে প্রায় ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকা।
পড়ুন: কলকাতা ভ্রমণ: দর্শনীয় স্থানে যাওয়ার উপায় ও খরচ
কলকাতার নিউমার্কেট, মারকুইস স্ট্রিট পার্ক, রফি আহমেদ রোড ও সদর স্ট্রিট-এর হোটেলগুলোতে খাওয়া-দাওয়া এবং রুম ভাড়া প্রায় ১৫০০ থেকে ২৫০০ টাকা। হিমাচল ও জম্মু-কাশ্মীরে থাকা-খাওয়া সব মিলিয়ে জনপ্রতি একদিনের খরচ সামলাতে হবে চার থেকে সাড়ে পাঁচ হাজার টাকার মত।
ভুটান
ঈদের ছুটি কাটানোর জন্য পুনাখা, পারো অথবা রাজধানী শহর থিম্পু হতে পারে দারুণ একটি জায়গা।
পায়ে হেটেই ঘোরা যাবে থিম্পুর সিটি ভিউ পয়েন্ট, ক্লক টাওয়ার, মেমোরিয়াল চর্টেন, থিম্পু নদী, পার্লামেন্ট হাউস ও থিম্পু জং।
পুনাখার পুনাখা জং, ন্যাশনাল লাইব্রেরি ও ফোক হেরিটেজ মিউজিয়াম দেখতে দেখতে পুরো একটা দিন ফুরিয়ে যাবে। তবে রাফটিং না করলে পুনাখার মজার পুরোটাই বাকি থেকে যাবে।
পড়ুন: ঈদের ছুটি কাটানোর জন্য ঢাকার কাছাকাছি সেরা কয়েকটি রিসোর্ট
গ্যালারি চিত্রকে বিপাশা হায়াতের ‘প্রস্তরকাল’
মনোমুগ্ধকর শিল্পকর্ম প্রদর্শনীর জন্য প্রশংসিত অভিনেত্রী-চিত্রশিল্পী বিপাশা হায়াতের ‘প্রস্তরকাল’ শিরোনামের একক প্রদর্শনীর উদ্বোধন করা হয়েছে।
শনিবার রাজধানীর ধানমন্ডির গ্যালারি চিত্রক-এ এই প্রদর্শনীর উদ্বোধন করা হয়েছে। এই চিত্রকর্মগুলোতে সাম্প্রতিক বিশ্বব্যাপী বিপর্যয়, সংকট এবং উত্থান-পতন দেখানো হয়েছে।
বিপাশা হায়াতের সপ্তম একক প্রদর্শনী অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন একুশে পদক প্রাপ্ত বিশিষ্ট কার্টুনিস্ট ও চিত্রকর রফিকুন নবী এবং সভাপতিত্ব করেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন চিত্রশিল্পী ও মুদ্রণকার শহীদ কবির।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক নিসার হোসেন এবং কিংবদন্তি অভিনেতা ও বিপাশা হায়াতের বাবা আবুল হায়াত, পোল্যান্ডে বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত মাহফুজুর রহমানসহ অন্যান্য শিল্পী ও শিল্প অনুরাগীরা উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
ঈদের ছুটি কাটানোর জন্য ঢাকার কাছাকাছি সেরা কয়েকটি রিসোর্ট
ঢাকার কাছাকাছি মনোমুগ্ধকর রিসোর্টগুলো অতি ব্যস্ততায় পর্যুদস্ত নগরবাসীকে দিয়েছে হাফ ছেড়ে বাঁচার উপায়। স্বল্প মেয়াদের ছুটি কাটাতে নিত্য বাড়তে থাকা শব্দ দূষণের শহর ছেড়ে তারা পাড়ি জমান প্রকৃতির সান্নিধ্যে সময় কাটাতে। প্রাত্যহিক জীবনের প্রায় সবগুলো সুবিধা থাকার ফলে প্রতিটি উৎসবেই এগুলোর চাহিদা বাড়ছে। সেদিক থেকে ঈদের দীর্ঘমেয়াদী ছুটি কাটানোর জন্য সেরা উপায় হতে পারে এই রিসোর্টগুলো। চলুন, জেনে নেয়া যাক এবারের পরিবার, আত্মীয় বা বন্ধুদের নিয়ে ঈদে ছুটি কাটানোর মতো ঢাকার কাছাকাছি কয়েকটি আকর্ষণীয় রিসোর্টের খোঁজ।
ঢাকার নিকটবর্তী চমৎকার রিসোর্টে কাটাতে পারেন ঈদের ছুটি
জল ও জঙ্গলের কাব্য, গাজীপুর
টঙ্গীর পুবাইলের প্রায় ৯০ বিঘা জমির উপর গড়ে ওঠা এই রিসোর্টটিকে ঢেকে দেয়া হয়েছে বাঁশ, পাটখড়ির বেড়া, দিগন্ত বিস্তৃত জলরাশি ও ছনের ছাউনি দিয়ে। রিসোর্টের নিজস্ব জমিতে ফলানো শাক-সবজি এবং বিলের মাছ রান্না করে পরিবেশন করা হয় দর্শনার্থীদের।
সারা দিন ঘুরে দেখতে খরচ করতে হবে ১৫০০ থেকে ৩৫০০ টাকা। আর তাতে রাতে থাকা যোগ করলে মূল্য দাড়াবে ৪৫০০ থেকে ৫৫০০ টাকা। এখানে দর্শনার্থীদের নেয়া হয় গ্রুপে, আর সেই গ্রুপের সদস্য সংখ্যা কমপক্ষে ১০ জনের হতে হয়।
আরও পড়ুন: ফ্লাই ডাইনিং: কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে বাংলাদেশের প্রথম ঝুলন্ত রেস্টুরেন্ট
এখানে আসতে হলে প্রথমে ঢাকা থেকে নরসিংদী কিংবা কালিগঞ্জের পথে পুবাইল কলেজ গেট আসতে হবে। পুবাইল কলেজ গেট থেকে এই রিসোর্টের দূরত্ব প্রায় তিন কিলোমিটার।
নক্ষত্রবাড়ি রিসোর্ট, গাজীপুর
গাজীপুরের রাজেন্দ্রপুরের গ্রামের চিনাশুখনিয়াতে অভিনয় শিল্পী-দম্পতি তৌকির আহমেদ ও বিপাশা হায়াত গড়ে তুলেছেন নক্ষত্রবাড়ি রিসোর্ট। প্রায় ২৫ বিঘা জমির উপর দাড়িয়ে আছে রেস্তোরাঁ, সুইমিংপুল, কনফারেন্স সেন্টার, এবং প্রাকৃতিক উপকরণে সুসজ্জিত ১১টি এসি কটেজ। সিনেমার শুটিং-এর জন্য প্রসিদ্ধ এই জায়গাটিতে সুব্যবস্থা আছে মুভি থিয়েটার, বাচ্চাদের খেলাধুলা, মাছ ধরা ও নৌকায় ঘুরে বেড়ানোর।
গাজীপুর চৌরাস্তা থেকে রাজেন্দ্রপুর চৌরাস্তায় এসে ক্যান্টনমেন্ট হয়ে কাপাসিয়ার দিকে যেতে হবে। এই পথে রাজাবাড়ী বাজারের দিকে প্রায় সাত কিলোমিটার যেয়ে, অগ্রণী ব্যাংক থেকে ডান দিকে দেড় কিলোমিটার পরেই এই রিসোর্ট।
আরও পড়ুন: হিমাচল, জম্মু-কাশ্মীর ও লাদাখ ভ্রমণ: দর্শনীয় স্থান ও খরচ
ধরন ভেদে এর আবাসনগুলোতে খরচ পড়বে প্রায় ৬,৫০০ থেকে ২৮,০০০ টাকার মত। একদিনের প্যাকেজে সর্বনিম্ন ১০ জনের জন্য সর্বমোট খরচ বিশ থেকে পঁচিশ হাজার টাকা। গ্রুপ ছাড়া সাধারণ লোকজন ৫০০ টাকা টিকেট কেটে ভেতরে ঢুকতে পারেন।
ঈদের ছুটিতে ২০২২-এর ২ মে থেকে ৯ মে পর্যন্ত কটেজ ভাড়ার উপর ২৫ শতাংশ ছাড় থাকছে।
সুবর্ণভূমি রিসোর্ট, মুন্সিগঞ্জ
মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া উপজেলায় মেঘনা নদীর তীর ছুঁয়ে গড়ে উঠেছে এই রিসোর্টটি। এর সুইমিং পুলসহ নানা খেলাধুলার সরঞ্জাম ও দোলনার মত সুযোগ-সুবিধাগুলো অনেকটা ম্লান হয়ে যাবে এর প্রকৃতির স্নিগ্ধতার কাছে।
আরও পড়ুন: নেপাল ভ্রমণ: শত বছরের তীর্থস্থান ঘুরতে হিমালয়ের দেশে
বিলাসবহুল রিসোর্টটির কটেজগুলোর সাধারণ খরচ ১১,০০০ থেকে ২৮,৫০০ টাকা। তবে ডে আউট প্যাকেজে রুম ভাড়া পড়ে সাড়ে ছয় থেকে সাড়ে সাত হাজার টাকা। আর রাতে থাকতে হলে ১১,৫০০ থেকে ১২,৫০০ টাকা গুণতে হয়।
যাত্রাবাড়ী পেরিয়ে মেঘনা ব্রিজের আগে হাতের ডানে গোলিতে নেমে চলে যেতে হবে ইসমানীর চর লোহার ব্রিজ। এই ব্রিজের নিচে বাইপাস সড়কটি নিয়ে যাবে সরাসরি সুবর্ণভূমি রিসোর্টে।
সারাহ রিসোর্ট, গাজীপুর
গাজীপুরের রাজাবাড়িতে পরিবার নিয়ে সুন্দর সময় কাটানো আরও একটি মনোমুগ্ধকর জায়গা এই সারাহ রিসোর্ট। প্রায় ২০০ বিঘার রিসোর্টটিতে তৈরি হয়েছে একদম স্বয়ংসম্পূর্ণ ভাবে। বাংলো ও ভিউ টাওয়ার থেকে শুরু করে একটি শতভাগ নিখুঁত রিসোর্টের জন্য যা যা প্রয়োজন তার সবি আছে এখানে।
আরও পড়ুন: সীতাকুণ্ড ডে ট্যুর: একদিনে ঘুরে আসুন চন্দ্রনাথ পাহাড় ও মহামায়া লেক
এই বিলাসবহুল রিসোর্টে থাকতে হলে খরচ করতে হবে ৮,৫০০ থেকে ৬৬,০০০ টাকা। সারা বছর ব্যাপি ডে লং প্যাকেজের মূল্য থাকছে ৩০০০ টাকা।
রাজেন্দ্রপুর ক্যান্টনমেন্ট থেকে রাজাবাড়ী বাস স্টপ থেকে ডান দিকে প্রায় আড়াই কিলোমিটার ভেতরে সারাহ রিসোর্ট।
ছুটি রিসোর্ট, গাজীপুর
গাজীপুরের প্রখ্যাত ভাওয়াল জাতীয় উদ্যান ঘেঁষে নির্মিত এই রিসোর্টটির জায়গা প্রায় ৫০ বিঘা। এখানে গড়ে তোলা হয়েছে শহুরে স্পোর্টস জোন, রেস্তোরাঁ, সুইমিংপুল, এমনকি ক্যাম্পিং-এর সুবিধা। এছাড়াও আছে ছনের তৈরী ঘর, ২১ টি কটেজ, মাছ ধরার ও নৌকা ভ্রমণের ব্যবস্থা, সবজি ও ফুল-ফলের বাগান এবং গ্রামীণ পিঠার ব্যবস্থা। এখানকার সবচেয়ে বড় আকর্ষণ পাখির কলরব, বাঁদুড়, শিয়ালের হাঁক, জোনাকি আলো এবং ঝিঁঝিঁ পোকার ডাক।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে ই-পাসপোর্ট করার নিয়ম: প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও খরচ
ধরন ভেদে কটেজগুলোর ভাড়া ৮০০০ থেকে ১৭,০০০ টাকা। ৭-৮ জনের গ্রুপের জন্য ডে আউট প্যাকেজ জনপ্রতি ২,৫৩০ টাকা।
গাজীপুরের চৌরাস্তায় থেকে গাজীপুর ডিসি অফিস হয়ে তিন কিলোমিটার দূরে আমতলী বাজারের কাছেই ছুটি রিসোর্ট।
ড্রিম স্কয়ার, গাজীপুর
গাজীপুরের মাওনার অজহিরচালা গ্রামের প্রায় ১২০ বিঘা জমি নিয়ে তৈরি এই বিশালাকৃতির রিসোর্টটি। বিভিন্ন প্রজাতির ফলজ, ঔষধি ও বনজ গাছে বিস্তীর্ণ এলাকা পরিণত হয়েছে সবুজের সমারোহে। এখানকার মুল আকর্ষণগুলো হলো ডেইরি ফার্ম, তেলের ঘানি, মৎস্য হ্যাচারি, কম্পোস্ট সার প্লান্ট, বায়োগ্যাস প্লান্ট এবং প্রাকৃতিকভাবে গড়ে ওঠা প্রকান্ড কয়েকটি লেক। শীতকালে এখানকার সর্পিলাকারের তিনটি লেকে ভীড় করে হাজারো অতিথি পাখি।
আরও পড়ুন: ঢাকার কাছেই প্রকৃতির মাঝে ক্যাম্পিং সাইট
ক্যাটাগরি অনুযায়ী এখানে থাকার জন্য খরচ হবে ৬,০০০ থেকে ৫৪,০০০ টাকা।
গাজীপুরের মাওনা থেকে পশ্চিমের রাস্তায় কিছুটা এগিয়ে উত্তরে পাঁচ কিলোমিটার গেলেই পৌঁছানো যাবে ড্রিম স্কোয়ার রিসোর্টে।
মাওয়া রিসোর্ট, মুন্সিগঞ্জ
মুন্সিগঞ্জের লৌহজং উপজেলাস্থ কান্দিপাড়া গ্রামে পদ্মা পাড় ঘেষে গড়ে উঠেছে আকর্ষণীয় এই পর্যটন কেন্দ্রটি। প্রধান ফটক দিয়ে ভেতরে ঢুকলেই সারি সারি নারিকেল ও সুপারি গাছ ঘেড়া একটি মনোরম দীঘি স্বাগত জানাবে। পাড়ে বাধা নৌকা শান্ত জলে ভেসে বেড়ানোর হাতছানি দিবে। দীঘির এক পাড়ে আছে একটি ক্যাফেটেরিয়া আর অন্য দিকে রয়েছে ১৮ টি সারিবদ্ধ কটেজ। সেই কটেজগুলোতে যাওয়ার জন্য আছে আবার রঙিন দৃষ্টিনন্দন কাঠের সেতু।
আরও পড়ুন: সাজেক ভ্রমণ: ঘুরে আসুন মেঘে ঢাকা স্বর্গে
ক্যাটাগরি ভেদে কটেজগুলোর ভাড়া ১৫০০ থেকে ১২,০০০ টাকা। এছাড়া শুধু দিনের অর্ধেক অংশ ঘুরে বেড়ানোর জন্য ৩০ টাকা টিকেট কেটে ঢোকা যায়।
অঙ্গনা রিসোর্ট, গাজীপুর
প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের লীলাভূমি সূর্যনারায়ণপুর গ্রামটি অবস্থিত গাজীপুরের কাপাসিয়ায়। উপমহাদেশের প্রখ্যাত কণ্ঠশিল্পী রুনা লায়লার ভাই সৈয়দ আলী মুরাদ এই গ্রামেই গড়ে তুলেছেন অঙ্গনা নামের রিসোর্টটি। প্রায় ১৮ বিঘা জমি সাজানো হয়েছে মাটির ঘর, বাগান, পার্ক, সুইমিং পুল, ব্যাডমিন্টন কোট, লেক, মসজিদ, ১৪ কক্ষ বিশিষ্ট একটি বাংলো এবং দুটি খেলার মাঠ দিয়ে।
রিসোর্টটির কটেজের একদিনের জন্য রুম প্রতি ভাড়া ৫ হাজার টাকা। অনুষ্ঠান বা পিকনিকের জন্য ভাড়া দিতে হয় ৭০ থেকে ৮৫ হাজার টাকা।
আরও পড়ুন: ঘুরে আসুন মহামায়া, উপভোগ করুন প্রকৃতির সৌন্দর্য
রাজেন্দ্রপুর ক্যান্টনমেন্টের এমপি চেকপোস্ট থেকে প্রায় সাত কিলোমিটারের পথ অঙ্গনা রিসোর্ট।
রিভেরি হলিডে রিসোর্ট, গাজীপুর
মোটামুটি বাজেটের রিসোর্ট হিসেবে গাজীপুরের সালনার এই রিসোর্টটি একটি দারুণ পছন্দ হতে পারে।
লেকে বুনো হাঁসের জলকেলি দেখতে দেখতে পুকুর পাড়ে বসে আড্ডা হতে পারে। অথবা বড় বড় খেজুর ও আমগাছের ছায়ায় সবুজ বেঞ্চগুলোতে বা ঘাসে বসে উদাস সময় কাটিয়ে দেয়া যেতে পারে। প্রতিটা মুহুর্তই পাথেয় হয়ে থাকবে সারা জীবনের জন্য।
আরও পড়ুন: দেশে অবকাশে থাকার শীর্ষ ৩ জায়গা
এখানকার বাংলোর রুম গুলোতে থাকতে খরচ হবে ক্যাটাগরি ভেদে ৪০০০ থেকে ৬০০০ টাকা পর্যন্ত। গাজীপুর চৌরাস্তা থেকে শিমুলতলী সড়ক ধরে সালনা পৌছে বামে দুই কিলোমিটার গেলেই পাওয়া যাবে রিভেরি হলিডে রিসোর্ট।
জলেশ্বরী রিসোর্ট, গাজীপুর
গাজীপুরের রাজেন্দ্রপুরস্থ ফাউগান নামক এলাকায় প্রায় ১০০ বিঘা জমির উপর তৈরি হয়েছে জলেশ্বরী রিসোর্ট। সবুজের গালিচার মাঝে এখানে বানানো হয়েছে তিনটি সুসজ্জিত ভবন, বাচ্চাদের খেলার জায়গা, সুইমিংপুল, রেস্টুরেন্ট, বিশাল লেক ও খেলার মাঠ।
ডে লং প্যাকেজের খরচ ক্যাটাগরি ভেদে ৫,০০০ থেকে ৬,৫০০ টাকা। রাতে থাকার প্যাকেজে খরচ হবে ৭০০০ থেকে ৮৫০০ টাকা। কমপক্ষে ১০ জনের গ্রুপের জন্য নির্ধারিত প্যাকেজ হচ্ছে জনপ্রতি ১,৭৫০ টাকা।
আরও পড়ুন: সুন্দরবনের কোথায়, কীভাবে যাবেন?
রাজেন্দ্রপুর চৌরাস্তা পার হয়ে রাজেন্দ্রপুর বাজার থেকে ফাউগান বাজার পেরিয়ে কিছুটা সামনেই জলেশ্বরী রিসোর্ট।
পরিশিষ্ট
ঢাকার কাছাকাছি এই ১০টি রিসোর্টে রয়েছে গ্রামীণ পরিবেশ এবং শহুরে সুযোগ সুবিধা। পরিবার, পরিজন, আত্মীয় বা বন্ধুদের নিয়ে ঘুরে আসা স্মরণীয় করে রাখতে পারে ঈদের ছুটিকে। শুধু দারুণ কিছু মুহুর্তের অবতারণা করবে তা নয়; ছুটির পর কর্মজীবনে ফিরে যেতে নব উদ্যম সঞ্চার করবে শরীর ও মন জুড়ে। রিসোর্টগুলোর জনপ্রিয়তা বাড়ার নেপথ্যে রয়েছে নিজের বাসায় থাকার মত অভিজ্ঞতা ও শতভাগ নিরাপত্তার সুবিধা। তাই দলবেধে বনভোজন ও রোমাঞ্চপ্রিয় ভ্রমণপিপাসুদের পাশাপাশি পরিবার নিয়ে বিনোদন সন্ধানী মানুষগুলোরও প্রিয় গন্তব্যে পরিণত হয়েছে এই দর্শনীয় স্থানগুলো।
আরও পড়ুন: সিঙ্গাপুর ভ্রমণ: সাগরের উপকন্ঠে অভিজাত উদ্যাননগরী
জল উৎসবের মধ্য দিয়ে শেষ হচ্ছে বৈসাবি
রাঙামাটিতে মারমাদের ঐতিহ্যবাহী সাংগ্রাই বা জল উৎসবের মধ্য দিয়ে শনিবার পাহাড়ে শেষ হচ্ছে বৈসাবি উৎসব।
শনিবার সকালে রাঙামাটিতে কেন্দ্রীয়ভাবে মারমা সংস্কৃতি সংস্থা (মাসস) আয়োজনে ‘পার্বত্য অঞ্চলে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জাতিসত্তার ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও সংস্কৃতি বিকাশে এগিয়ে আসুন’এই শ্লোগানে কাউখালী বেতবুনিয়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে পিতলের ধর্মীয় ঘণ্টা বাঁজিয়ে পানি খেলার সূচনা করেন রাঙামাটির সংসদ সদস্য ও খাদ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি দীপংকর তালুকদার।
আরও পড়ুন: প্রবারণা পূর্ণিমা: পাহাড়ে সম্প্রীতির কল্প জাহাজ ভাসলো
এরপর ফিতা কেটে প্রধান অতিথি ও বিশেষ অতিথিরা মারমা তরুণ-তরুণীদের গায়ে পানি ছিটিয়ে জলকেলির শুভ সূচনা করেন।
বাঙালি সংস্কৃতি ধারণ করেই আমরা এগিয়ে যাব: মেয়র তাপস
বাঙালি সংস্কৃতিকে ধারণ করেই আমরা সামনের দিকে এগিয়ে যাব বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।
বৃহস্পতিবার (১৪ এপ্রিল) সকালে রমনা বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠান অবলোকন শেষে গণমাধ্যমের সাথে মতবিনিময়কালে তাপস এই মন্তব্য করেন।
ডিএসসিসি মেয়র শেখ তাপস বলেন, ‘আজ আমরা রমনা বটমূলে সমবেত হয়েছি। রমনা বটমূলের এই বর্ষবরণ অনুষ্ঠান আমাদের জাতীয় সংস্কৃতির অন্যতম ও অবিচ্ছেদ্য অনুষঙ্গ। আমাদের ইতিহাস, ঐতিহ্যের সাথে রমনা বটমূলের এই সাংস্কৃতিক মিশেল আমাদেরকে পরিতৃপ্ত করে, বাঙালিত্বে সামগ্রিকতা দান করে। তাই, আমাদেরকে এগিয়ে যেতে হলে বাঙালি সংস্কৃতিকে ধারণ করেই সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে।’
পড়ুন: পহেলা বৈশাখ: বাংলা নববর্ষের উৎপত্তি এবং ইতিহাস