যদিও স্থানীয় হিসেবে এর পরিমান আরও বেশি এবং ক্ষতিগ্রস্তের মধ্যে ধান, সবজি ও রবিশষ্যের জমির পরিমান বেশি। এর মধ্যে ফরিদপুরের অন্যতম ফসল পাটও রয়েছে।
জেলার কয়েকটি ইউনিয়নে সরেজমিনে দেখা গেছে, প্রথম দফার বন্যাতেই ফরিদপুরের নিম্মাঞ্চল তলিয়ে যায়। সে সময় বাদাম, ভুট্টাসহ বিভিন্ন রবিশষ্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর পরে দ্বিতীয় দফায় পানি বাড়লে পাকা ধান, সবজি খেত, কলা বাগান ও পাট বিনষ্ট হয়।
কয়েকদিনের মধ্যেই ধান ও পাট কাটার কথা ছিল কৃষকদের। কিন্তু পানি বৃদ্ধি পেয়ে ধান ও পাট কেটে ঘরে তোলার সুযোগ হয়নি তাদের।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. মো. হযরত আলী জানান, জেলায় আউশ, রোপা আমন, বোপা আমন, রিলে আমন, বীজতলা ও সবজি খেতসহ ১৪ হাজার ৬৫৮ হেক্টর জমির ফসল পানির তলিয়ে নষ্ট হয়েছে। বন্যায় জেলার ৬৩ হাজার ৪২৫ জন কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর বাইরে চরাঞ্চলের কলা বাগানসমূহের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বলে জানান তিনি।
তিনি জানান, ক্ষতিগ্রস্ত চাষীদের তালিকা করে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। সরকারিভাবে সহযোগিতা আসলে তাদের দেয়া হবে।
সরকারি হিসেবে পাটের তথ্য উল্লেখ না থাকলেও কৃষকরা জানিয়েছে, তাদের সকলের পাট খেত পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় তারা কাটতে পারেনি। আর এতদিন পানিতে ডুবে থাকায় ওই পাট আর কোনো কাজেও আসবে না।
জেলার সদর উপজেলার অম্বিকাপুর এলাকার কৃষক বক্কার খান বলেন, প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে ক্ষতি হয়, কিন্তু এবারের ক্ষতির পরিমাণ অনেক বেশি। আমার ২০ বিঘা আমন ধান, দুই একর পাটের ক্ষেত গত ২০দিন হলো পানির নিচে। এই খেত থেকে ফসল পাওয়ার কোনো আশা নেই।
নর্থচ্যানেল ইউপির গোলডাঙ্গীর এলাকার চাষী হাফিজুর জানান, ‘সংসার চালানোর চালের চাহিদা মেটানোর জন্য ৬ বিঘা জমিতে আমন চাষ করেছিলাম। এখন সব শেষ।’
তিনি জানান, একদিকে করোনায় আয়-ইনকামের পথ বন্ধ, এখন বন্যায় ক্ষতি হলো। কিভাবে চলবে, বুঝতে পারছি না।’
সদর উপজেলার নর্থচ্যানেল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মুস্তাকুজ্জামান বলেন, ‘আমার ইউপির ৯০ শতাংশ পানিতে প্লাবিত। খেত-খামার যা ছিলো সব নষ্ট হয়ে গেছে।
ফরিদপুর সদর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা মো. আবুল বাশার বলেন, ‘সদর উপজেলার নর্থচ্যানেল, ডিক্রীরচর, অম্বিকাপুর, চরমাধবদিয়া ও আলীয়াবাদ ইউনিয়নের বেশির ভাগ এলাকায় এখনও পানিতে নিমজ্জিত। এ সকল এলাকার চাষিদের আবাদকৃত ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। আমরা ক্ষতিগ্রস্ত চাষীদের তালিকা করে জেলা কৃষি বিভাগকে জানিয়েছি।’