এসএসসিতে চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডে পাসের হার এবং জিপিএ ৫ দুটোতেই ছেলেদের তুলনায় এগিয়ে রয়েছে মেয়ে শিক্ষার্থীরা। এ বছর ছাত্র পাসের হার ৯০ দশমিক ১৪ শতাংশ যা গত বছরের তুলনায় পাঁচ দশমিক ২১ শতাংশ বেশি এবং ছাত্রী পাসের হার ৯১ দশমিক ৯৯ শতাংশ যা গত বছরের তুলনায় সাত দশমিক ৩৯ শতাংশ বেশি। তবে পাসের হারে ছেলেদের তুলনায় এক দশমিক ৮৫ শতাংশ নিয়ে এগিয়ে রয়েছে মেয়েরা।
বৃহস্পতিবার সকালে প্রকাশিত এসএসসি'র ফলাফলের প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা যায়।
চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ড সূত্রে জানা গেছে, এবার জিপিএ ৫ পেয়েছে সর্বমোট ১২ হাজার ৭৯১ জন। এর মধ্যে ছাত্র পাঁচ হাজার ৩৮২ জন। ছাত্রী সাত হাজার ৪০৯ জন এবং গতবারের তুলনায় দুই হাজার ৬৪৬ জন মেয়ে জিপিএ ৫ বেশি পেয়েছে। বোর্ড কর্তৃপক্ষ বলছেন, জিপিএ ৫ এর বাড়ার ক্ষেত্রে বেশিরভাগ অবদান রেখেছে মেয়ে শিক্ষার্থীরা।
অন্যদিকে, এ বছর চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডে গত বছরের তুলনায় ছয় দশমিক ৩৭ শতাংশ বেড়ে পাসের হার হয়েছে ৯১ দশমিক ১২ শতাংশ। যা গত বছর ছিল ৮৪ দশমিক ৭৫ শতাংশ এবং অংশ নেয়া পরীক্ষার্থীদের মধ্যে ছাত্র পাস করেছে ৬৭ হাজার ১৭১ জন এবং ছাত্রী ৭৭ হাজার ৩৭৯ জন। এখানেও এগিয়ে রয়েছে মেয়ে শিক্ষার্থীরা।
এদিকে, বিজ্ঞান বিভাগে ছাত্র পাসের হার ৯৬ দশমিক ৬৫ শতাংশ এবং ছাত্রী ৯৭ শতাংশ। ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে ছাত্র পাসের হার ৯০ দশমিক শূন্য ছয় শতাংশ এবং ছাত্রী ৯৪ দশমিক ৪৮ শতাংশ। মানবিক বিভাগে ছাত্র পাসের হার ৮৫ দশমিক ৭৯ শতাংশ এবং ছাত্রী পাসের হার ৮৮ দশমিক ৪২ শতাংশ।
আরও পড়ুন: এসএসসি ফলাফল: যশোরে বেড়েছে পাসের হার
বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ ৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১১ হাজার ২৯১ জন। তারমধ্যে ছাত্র জিপিএ ৫ পেয়েছে পাঁচ হাজার ছয় জন এবং ছাত্রী জিপিএ ৫ পেয়েছে ছয় হাজার ২৮৫ জন। এখানেও ছাত্রদের তুলনায় ছাত্রীরা এগিয়ে।
ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে মোট জিপিএ ৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা এক হাজার ৩৪৪ জন। তারমধ্যে ছাত্রের সংখ্যা ৩৩৮ জন এবং ছাত্রী এক হাজার ৬ জন। যেখানে ছাত্রের তুলনায় ৬৬৮ জন ছাত্রী বেশি জিপিএ ৫ পেয়েছে।
মানবিক বিভাগে মোট জিপিএ ৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১৫৬ জন। এরমধ্যে ছাত্র মাত্র ৩৮ জন এবং ছাত্রী ১১৮ জন। এখানেও ছাত্রের চেয়ে ছাত্রীরা বেশি জিপিএ ৫ পেয়েছে।
এ বিষয়ে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক নারায়ণ চন্দ্র নাথ বলেন, ‘সকল সূচকেই এ বছর পরীক্ষার্থীরা বিগত বছরের তুলনায় ভালো ফল করেছে। তবে জিপিএ ৫ বৃদ্ধির ক্ষেত্রে বেশিরভাগ অবদান রেখেছে ছাত্রীরা। যাকে মেয়ে শিক্ষার অগ্রগতির ক্ষেত্রে অভাবনীয় সাফল্য বলা যেতে পারে। কোভিড পরিস্থিতিতেও শিক্ষার্থীরা অভূতপূর্ব সাফল্য দেখিয়েছে। আশা করছি ভবিষ্যতেও এ ধারা অব্যাহত থাকবে।’
প্রসঙ্গত, করোনা সংক্রমণের কারণে নির্ধারিত সময়ের আট মাস পর অনুষ্ঠিত হয় এ পরীক্ষা। যার কারণে এবারের পরীক্ষা নেয়া হয় সংক্ষিপ্ত আকারে এবং শুধুমাত্র তিনটি নৈর্বাচনিক বিষয়ের ওপর। প্রতি বিষয়ে মোট ১০০ নম্বরের পরিবর্তে পরীক্ষা হয় ৫০ নম্বরের এবং পরীক্ষার সময়ও ছিল অর্ধেক। অর্থাৎ তিন ঘন্টার পরীক্ষা নেয়া হয়েছিল দেড় ঘন্টায়। ফলাফল প্রকাশের ক্ষেত্রে আবশ্যিক বিষয়ের যে পরীক্ষা নেয়া হয়নি সেসব বিষয়ে পরীক্ষার্থীদের জেএসসি ও নবম শ্রেণির ফল মূল্যায়ন করেই ফলাফল তৈরি করা হয়েছে।