সোমবার সন্ধ্যায় দোয়ানি পয়েন্টে বিপদসীমার ৫০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও মঙ্গলবার সকালে তা কমে ১০ সেন্টিমিটারে নেমে এসেছে।
তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে নদীর পানি বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। তবে ধরলা ও রতনাই নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় সদর উপজেলার মোগলহাট ও কুলাঘাট ইউনিয়নের নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে।
এদিকে উজানের পাহাড়ি ঢলের সাথে গত ৮ দিনের ভারী বর্ষণ যোগ হয়েছে। এতে লালমনিরহাটের পাঁচটি উপজেলার তিস্তা ও ধরলা অববাহিকার চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। জেলার লক্ষাধিক পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। চরাঞ্চলের সাথে জেলার সম্পূর্ণ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। বন্যায় বড় সমস্যায় পড়েছে শিশু, বৃদ্ধ, নারী ও প্রতিবন্ধীরা। চারদিকে অথৈ পানির কারণে গবাদি পশুপাখি নিয়ে অনেকটা বিপদে পড়েছেন চরাঞ্চলের খামারি ও চাষিরা।
চারদিন ধরে উজানের পাহাড়ি ঢল ও টানা ভারী বৃষ্টিতে সৃষ্ট বন্যায় জেলার পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম, হাতীবান্ধার সানিয়াজান, গড্ডিমারী, সিন্দুর্না, পাটিকাপাড়া, ডাউয়াবাড়ী, সিংগিমারী, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, কাকিনা, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা, সদরের খুনিয়াগাছ, রাজপুর, গোকুন্ডা, কুলাঘাট ও মোগলহাট ইউনিয়নের তিস্তা ও ধরলার নদীর চরাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এসব ইউনিয়নের পরিবার পানিবন্দী হয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন।
অপরদিকে পানিবন্দী পরিবারগুলো এখনও সরকারি কোনো ত্রাণ বা শুকনো খাবার পায়নি। জেলার লক্ষাধিক পরিবার এখন দুর্বিষহ জীবন-যাপন করছেন।
কুলাঘাট ইউপি চেয়ারম্যান ইদ্রিস আলী জানান, ধরলা নদীর পানি বেড়ে কুলাঘাট ইউনিয়নের বনগ্রাম, শিবেরকুঠি, চর শিবেরকুঠি, বোয়ালমারী চর ও আলোকদীঘি গ্রামের প্রায় সাড়ে তিন হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।
লালমনিরহাট জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম জানান, জেলার ৩৪টি বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে পানি প্রবেশ করায় পাঠদান বন্ধ রয়েছে।
তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়ার নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম বলেন, তিস্তার পানি ধীরে ধীরে কমতে শুরু করছে। বর্তমানে ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপদসীমার ১০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক আবু জাফর বলেন, বন্যার্ত পরিবারগুলোর মাঝে শুকনো খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ত্রাণ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।