রোহিঙ্গা ক্যাম্পের স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলো নতুনভাবে সজ্জিত করা এবং নতুন নতুন সিভিয়ার একিউট রেস্পিরেটরি ইনফেকশন (এসএআরআই- গুরুতর তীব্র শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণ) আইসোলেশন অ্যান্ড ট্রিটমেন্ট সেন্টার (আইটিসি) নির্মাণ করা হচ্ছে।
পাশাপাশি, শরণার্থী এবং স্থানীয় জনগোষ্ঠীদের এসব সেবা ব্যবহার নিশ্চিত করার জন্য গুজব এবং ভুল তথ্য দূরীকরণের প্রচেষ্টা বৃদ্ধি করতে এগুলো পরিদর্শন করাচ্ছে জাতিসংঘের অভিবাসন বিষয়ক সংস্থা (আইওএম)।
টেকনাফের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে মমতাজ বলেন, ‘এর আগে আমরা জানতাম না আইসোলেশন অ্যান্ড ট্রিটমেন্ট সেন্টারের ভেতরে কী কী আছে। কেন এ কেন্দ্রটি স্থাপন করা হয়েছিল সে সম্পর্কে তথ্যেরও ঘাটতি ছিল ‘
‘এখন আমাদের কাছে আইটিসির ভেতরে কী কী আছে তার চিত্র স্পষ্ট হয়েছে এবং এটি আমাদের জন্য খুব সহায়ক। আমি আমার পরিবার, আত্মীয়স্বজন এবং প্রতিবেশীদের কাছে আমার অভিজ্ঞতাটি তুলে ধরব যাতে তাদের ধারণাও স্পষ্ট হয়,’ পরিদর্শনে অংশগ্রহণ করার পর বলেন মমতাজ।
সম্প্রতি টেকনাফের শামলাপুরে ৬০ শয্যাবিশিষ্ট আইটিসিটি নির্মাণ করেছে ইন্টারন্যাশনাল রেসকিউ কমিটি (আইআরসি) এবং আগামী সপ্তাহেই এটি চালু করা হবে।
কোভিড-১৯ স্বাস্থ্য সুবিধা সম্পর্কে শরণার্থীদের আশঙ্কা ও দ্বিধা থেকে মুক্তি দেয়ার জন্য আইওএম-এর সাইট ম্যানেজমেন্ট এবং সাইট ডেভেলপমেন্ট (এসএমএসডি) শরণার্থীদের মধ্য থেকে বাছাইকৃতদের নিয়ে আইআরসির এ আইটিসিতে পরিদর্শনের আয়োজন করে।
শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরিদর্শনকারীদের মোট ১৩টি ছোট ছোট দলে বিভক্ত করা হয় (প্রতি দলে ২০ জন)। এতে শামলাপুর শরণার্থী শিবিরের (ক্যাম্প নং-২৩) ধর্মীয় নেতা, মাঝি (কমিউনিটি নেতা), চরম বিপদাপন্ন ব্যক্তি (ইভিআই), নারী এবং কিশোরী, যুবক এবং শিক্ষাকেন্দ্রের শিক্ষকদের মধ্য থেকে পরিদর্শনকারীদের বাছাই করা হয় যাতে ব্যক্তিভেদে তারা এ স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম সম্পর্কে জানতে পারে।
এ ছোট ছোট দলগুলো আইআরসির আইটিসির প্রতিটি ব্যবস্থা পরিদর্শন করে। আইওএম, আইআরসি এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) কর্মীরা এ স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রের সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা করেন এবং পরিদর্শনকারীদের প্রশ্নের উত্তর দেন।
শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের কার্যালয় থেকে ক্যাম্পে নিযুক্ত ক্যাম্প ইনচার্জ পুলক কান্তি চক্রবর্তী এ পরিদর্শন কার্যক্রম মনিটর করেন এবং ক্যাম্পে এ ধরনের সচেতনতামূলক কার্যক্রমের প্রশংসা করেন।
ক্যাম্পের রোহিঙ্গা ধর্মীয় নেতা ওমর বলেন, ‘এ আইটিসি সেবা পরিদর্শনের মাধ্যমে আমরা সবকিছুই দেখেছি এবং বুঝতে পারছি যে এ কেন্দ্রটি রোগী রাখা এবং সেবা প্রদানের জন্য যথেষ্ট ভালো মানের। এখন থেকে আমরা আমাদের সম্প্রদায়ের লোকদের কাছে এ সেবার তথ্যটি জানাব যাতে তাদের যদি প্রয়োজন হয় তারা যেন এখানে আসতে পারে।’
আইওএম কক্সবাজারের সাইট ম্যানেজমেন্ট এবং সাইট ডেভেলপমেন্ট কো-অর্ডিনেটর (টেকনাফ) কোনি তাংগারা বলেন, ‘আইটিসিটি চালু হওয়ার আগে জনগণকে প্রথম দেখার সুযোগ দেয়ার জন্য এ সফরটির আয়োজন করা হয়েছিল। জনগোষ্ঠীকে অবহিত করা, আইটিসির ভেতরে আইসোলেশন পদ্ধতি বোঝাতে এবং প্রয়োজনীয় পরিবর্তনের বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে সক্ষম করার মাধ্যমে জবাবদিহি বাড়ানোর জন্য এটি গুরুত্বপূর্ণ ছিল।’
আইওএম ক্যাম্প কর্তৃপক্ষ এবং সহযোগী সংস্থাদের সাথে মিলে কক্সবাজারে আইটিসি পরিদর্শনের মাধ্যমে সচেতনতা বাড়ানোর এমন কার্যক্রম ভবিষ্যতেও অব্যাহত রাখবে যাতে স্থানীয়দের বিশ্বাস আরও দৃঢ় হয় এবং স্বাস্থ্যসেবা বাড়ানো মাধ্যমে কোভিড-১৯ কার্যক্রমে ভূমিকা রাখা যায়।