ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (ঢামেক) বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার রাতে এবং বৃহস্পতিবার ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে তাদের মৃত্যু হয়েছে বলে ঢামেক পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক মো. বাচ্চু মিয়া জানিয়েছেন।
দগ্ধ আরও ২১ জন ঢামেকের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন আছেন। তাদের অবস্থাও ভালো নয় বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।
তাদের মধ্যে আটজনকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে বলে জানান বার্ন ইউনিটে কর্মরত ডা. আরিফুল ইসলাম নবীন।
পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া বলেন, ওই কারখানার ধ্বংসস্তুপ থেকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা বুধবার জাকির হোসেন (২২) নামে এক যুবকের পোড়া দেহ উদ্ধার করেছিল।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার রাতে ও বৃহস্পতিবার মারা যান ওই কারখানার কর্মী ইমরান (১৮), বাবুল (৩২), আলম হোসেন, রায়হান (১৬), জিয়ারুল ইসলাম, খালেক, সালাউদ্দিন (৩২), মো. সুজন, জাহাঙ্গীর (৫৫), ফয়সাল (২৬), মেহেদী (২০) ও আব্দুর রাজ্জাক (৪৫)।
এর আগে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের হিজলতলা এলাকায় বুধবার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে প্রাইম পেট অ্যান্ড প্লাস্টিক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড কারখানায় গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের পর অগ্নিকাণ্ডে একজন নিহত ও কমপক্ষে ৩৩ জন দগ্ধ হন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও কারখানার আহত শ্রমিকরা জানান, প্লাস্টিকের ওয়ানটাইম গ্লাস তৈরির সময় হঠাৎ একটি গ্যাস সিলিন্ডারের বিস্ফোরণ ঘটলে মুহূর্তেই কারখানার ভেতরে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। পরে ফায়ার সার্ভিসের ১২টি ইউনিট সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
নজরুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তির মালিকানাধীন একতলা টিনশেড ওই কারখানায় ওয়ান টাইম প্লেট, কাপসহ প্লাস্টিকের বিভিন্ন সামগ্রী তৈরি করা হত।
আগুন লাগার কারণ ও ক্ষতির পরিমাণ জানতে ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
জানা গেছে, কারখানায় একটিমাত্র প্রবেশ। এবং সেই প্রবেশ পথেই এবার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। বের হওয়ার বিকল্প কোনো পথ না থাকায় হতাহতের ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে। জীবন বাঁচাতে শ্রমিকরা আগুনের মধ্যেদিয়েই বাইরে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করে দগ্ধ হন।
এর আগে প্রাইম প্লাস্টিক কারখানায় ২০১৬ সালে একবার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে দ্বিতীয় দফা আগুন লেগে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল। তারপরও কারখানার মালিক শুধুমাত্র একটি গেট থেকে সকল কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিলেন বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।