ধর্ষণের ঘটনাগুলো মোবাইলে ধারণ করে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়ার হুমকিও দেয়া হয়েছে ওই কিশোরীকে। আবার প্রভাবশালী সাবেক ওই ইউপি সদস্যের ভয়ে মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছে না নির্যাতিত কিশোরী ও তার পরিবার।
তবে গত শনিবার রাতে কিশোরীর মা বাদী হয়ে দুজনের নামে ঝালকাঠি থানায় মামলা দায়ের করেছেন। যার প্রধান আসামি এমদাদুল থলপহরী। তিনি নবগ্রাম ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি আমজেদ আলী থলপহরীর ছেলে ও সাবেক ইউপি সদস্য।
ভুক্তভোগী কিশোরীর অভিযোগ, গত ৮ নভেম্বর সদর উপজেলার বাউকাঠি গ্রামের বাড়ি থেকে পিপলিতা গ্রামে ফুপুর বাড়িতে বেড়াতে যাচ্ছিলেন তিনি। পথে প্রতিবেশী এমদাদুল তাকে জোর করে স্থানীয় একটি বাড়িতে নিয়ে ধর্ষণ করে। আর ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করে এমদাদুলের আত্মীয় বর্ষা নামের একটি মেয়ে। পরে ওই ভিডিও ছড়িয়ে দেয়ার কথা বলে এমদাদুল একাধিকবার তাকে ধর্ষণ করে।
ঘটনা এলাকায় জানাজানি হলে ১৫ নভেম্বর এমদাদ ওই কিশোরীকে অপহরণ করে বাকেরগঞ্জের বোয়ালিয়া গ্রামে ফাতেমা নামের অপর নারীর বাসায় আটকে রেখে ধর্ষণ করতো। এমনকি ফাতেমা নামের ওই নারী অন্য পুরুষ এনে কিশোরীকে নির্যাতন করাতো।
গত ৫ ডিসেম্বর ভুক্তভোগী কিশোরী সেখান থেকে কৌশলে পালিয়ে পূর্বচাঁদকাঠি এলাকায় আসলে স্থানীয়রা থানায় খবর দেয়। পুলিশ আসলে মেয়েটি বিস্তারিত পুলিশকে জানিয়ে বাড়িতে চলে যায়।
এদিকে মেয়ে নিখোঁজের ঘটনায় বাবা ঝালকাঠি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরিও করেছিলেন। কিন্তু এমদাদ থলপহরী প্রভাবশালী হওয়ায় থানায় মামলা না করার জন্য চাপ দিতে থাকে বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী কিশোরীর পরিবার।
মেয়েটির মা বলেন, ‘আমার মেয়ে সবকিছু পুলিশের কাছে অভিযোগ করলেও পুলিশ তেমন কোনো গুরুত্ব দেয়নি। এমাদুল প্রভাবশালী, আর আমরা গরিব মানুষ। আমার মেয়ের সাথে যে অন্যায় হয়েছে, আমরা তার বিচার চাই।’
অভিযুক্ত এমদাদের বাবা আমজেদ আলী থলপহরী বলেন, ‘আমাকে ওসি সাহেব থানায় ডেকেছিলেন। আমি মেয়েটিকে তার পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিতে বলেছি। ধর্ষণের কোনো ঘটনা ঘটেনি। যেহেতু ওরা আমাদের এলাকার লোক, সেহেতু একটা মিমাংসা করে ফেলব।’
যোগাযোগ করা হলে ঝালকাঠি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খলিলুর রহমান বলেন, ‘মামলা দায়ের হয়েছে। পুলিশ আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছে।’