শুক্রবার ভোরে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে নওগাঁর রানীনগর উপজেলার নান্দাইবাড়ী-মালঞ্চি এলাকার ছোট যমুনা নদীর বেড়ি বাঁধ ভেঙে ৩টি গ্রামের আটশ পরিবারের প্রায় ১৫ হাজার লোক পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বাঁধ ভেঙে নান্দাইবাড়ী-মালঞ্চি ও কৃষ্ণপুর গ্রামের বিস্তীর্ণ এলাকা বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে। ডুবে গেছে বাড়িঘরসহ সবজি খেত। বসতঘর ডুবে যাওয়ায় ৩টি গ্রামের মানুষ ভোগান্তিতে পড়েছেন। অনেকে বাড়িঘর ছেড়ে আসবাবপত্র ও গবাদিপশু নিয়ে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন।
রানীনগর উপজেলার গোনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল হাসনাত খাঁন হাসান জানান, এই এলাকার ছোট যমুনা নদীর নান্দাইবাড়ি, মালঞ্চি, কৃষ্ণপুর ও আত্রাই উপজেলার ফুলবাড়ি বেরি বাঁধটি নির্মিত হওয়ার পর থেকে অভিভাবকহীন অবস্থায় আছে। কোনো দপ্তর কোনো দিন এই বাঁধটি সংস্কার করেনি।
তিনি আরও জানান, শুক্রবার বাঁধটির মালঞ্চি এলাকার কিছু অংশ ভেঙে গেছে। এতে করে নদীর তীরবর্তী কয়েকটি গ্রাম পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এই এলাকা পুকুর ও সবজি আবাদের জন্য বিখ্যাত। শুধু বাড়িঘরই নয় বন্যার কারণে এই এলাকার কয়েকশ পুকুর ও শতাধিক হেক্টরের সবজির আবাদ পানিতে তলিয়ে যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এছাড়াও নওগাঁ-আত্রাই সড়কের বেশকিছু জায়গা ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। সেইসব ঝুঁকিপূর্ণ স্থান স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সহায়তায় স্থানীয়রা রক্ষা করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
রানীনগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, ভেঙে যাওয়া অংশে নদীর পানিতে তেমন গতি না থাকায় বন্যাকবলিত এলাকা ছাড়া অন্যান্য ফসলের তেমন উল্লেখযোগ্য ক্ষতি হবে না বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে ৩টি গ্রামের সবজির আবাদ ও পুকুর বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে। কৃষি অফিসের সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করে বন্যা কবলিত এলাকায় সার্বক্ষণিক থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
রানীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আল মামুন বলেন, আমরা ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের সংখ্যা ও ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করে তাদের জন্য সহায়তা হিসেবে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করার পদক্ষেপ নিয়েছি। এছাড়াও ভেঙে যাওয়া অংশে বাঁধ দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বাঁধটি পরিদর্শন করে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।