শনিবার রাজধানীতে হোটেল সোনারগাঁওয়ে ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড একাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএবি) আয়োজিত ‘সাউথ এশিয়ান ফেডারেশন অব একাউন্ট্যান্টস (এসএএফএ) ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স ২০১৯’ এ বক্তব্যকালে তিনি এ আহ্বান জানান।
রাষ্ট্রপ্রধান বলেন, ‘বাংলাদেশের অর্থনীতির আয়তন আজ বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০০৫-০৬ অর্থবছরে আমাদের বাজেটের আকার ছিল ৬৪ হাজার কোটি টাকা। আর ২০১৯-২০ অর্থবছরে প্রস্তাবিত বাজেটের আকার ধরা হয়েছে ৫ লাখ ২৩ হাজার কোটি টাকা, যা ২০০৫-০৬ এর তুলনায় আট গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। একই সাথে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটেছে।’
‘পাবলিক ও কর্পোরেট খাতে হিসাবের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে চার্টার্ড একাউন্ট্যান্টদেরকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে,’ বলেন তিনি।
সম্মেলনের প্রতিপাদ্য ‘প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ: গন্তব্য বাংলাদেশ’ এদেশের প্রেক্ষাপটে খুবই গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীল দেশ। ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশে পরিণত হওয়ার আকাঙ্ক্ষাকে সামনে রেখে সমৃদ্ধির সোপানে এগিয়ে যাচ্ছে। অর্থনীতির এই ক্রমবর্ধমান ধারাকে টেকসই ও বেগবান করতে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের (এফডিআই) ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
বাংলাদেশে এখন বিনিয়োগের সুবর্ণ সুযোগ বিরাজ করছে জানিয়ে আবদুল হামিদ বলেন, সরকার প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগকে (এফডিআই) উৎসাহিত করার জন্য দেশে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করছে। বিনিয়োগকারীদের প্রয়োজনীয় সকল সেবা দ্রুতমত সময়ে এবং সিঙ্গেল উইন্ডো থেকে প্রদানের লক্ষ্যে ওয়ান স্টপ সার্ভিস আইন- ২০১৮ এবং এ সংক্রান্ত বিধিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে।
তিনি উল্লেখ করেন, শিল্প স্থাপনের লাইন্সেস, অনুমতিসহ ২৭টি ক্যাটাগরিতে ১২৫ ধরনের সেবা ‘ওয়ান স্টপ সার্ভিস’ থেকে প্রদান করা হচ্ছে। এছাড়া কর রেয়াতসহ অন্যান্য নানাবিধ সুবিধা সরকার বিনিয়োগকারীদের প্রদান করছে।
‘বাংলাদেশে এখন বিনিয়োগের সুবর্ণ সুযোগ বিরাজ করছে। এ সুযোগ কাজে লাগাতে এবং বিদ্যমান সুযোগ-সুবিধা দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের নিকট তুলে ধরতে এই সম্মেলন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আমার বিশ্বাস,’ যোগ করেন তিনি।
সার্কভুক্ত দেশ ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা থেকে আগত অতিথিদের স্বাগত জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বৈদেশিক প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ: গন্তব্য বাংলাদেশ’প্রতিপাদ্যটি শুধুমাত্র বাংলাদেশ নয়, দক্ষিণ এশিয়ার দেশের জন্যও একটি অত্যন্ত সময়োপযোগী পদক্ষেপ। দক্ষিণ এশিয়ার অধিকাংশ দেশই স্বল্প আয়তনের কিন্তু জনবহুল। জনবহুল হলেও এ অঞ্চলের রয়েছে অপার সম্ভাবনাময় জনসম্পদ। এই অঞ্চলের উন্নয়নে আপনাদের মত পেশাজীবীদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।
আবদুল হামিদ আরও বলেন, ‘স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির ক্ষেত্রে আপনাদের ভূমিকা হওয়া উচিত দেশের সমষ্টিগত স্বার্থ ও মঙ্গলের জন্য, শুধু ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের জন্য নয়। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এ অঞ্চলের অর্থনীতি টেকসই হোক, উন্নয়নের অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকুক এ প্রত্যাশা করি।’
রাষ্ট্রপতি আনুষ্ঠানিকভাবে এসএএফএ ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স ২০১৯ উদ্বোধন করেন। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, আইসিএবি সভাপতি এএফ নেছারউদ্দিন, আইসিএবি সভাপতি জগন মোহন রাও উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান।