পরবর্তী প্রজন্মের জন্য আরও সবুজ ভবিষ্যত বিনির্মাণে গ্রিন গ্রোথ অ্যান্ড গ্লোবাল গোলস ২০৩০ (পিফোরজি) শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নেয়া নেতাদের ঐক্য বাড়িয়ে আরও নিবিড়ভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রবিবার বিকালে পিফোরজির সিউল সম্মেলনে এক ভিডিও বার্তায় এ বিষয়ে তিনটি প্রস্তাব তুলে ধরেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।
২০২১ পিফোরজির সিউল সম্মেলনে রেকর্ড করা ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, পিফোরজির মনোযোগের পাঁচটি ক্ষেত্রে (খাদ্য, পানি, জ্বালানি, নগর, চক্রাকার অর্থনীতি) বিনিয়োগকারী, নীতি নির্ধারক ও সৃজনশীল উদ্যোক্তাদের আরও বেশি সম্পৃক্ত করা এবং এসব ক্ষেত্রে সর্বোত্তম অনুশীলন বিনিময় করে কর্মমুখী আবেদনের ভিত্তিতে আরও প্রচারণা চালানো প্রয়োজন।
আরও পড়ুন: ডাক অধিদপ্তরের সদর দপ্তর ‘ডাক ভবন’ উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
এই দশককে আরও উন্নত ও সবুজতর গড়ার লক্ষ্যে 'ইনক্লুসিভ গ্রিন রিকভারি টুওয়ার্ডস কার্বন নিউট্রালিটি' প্রতিপাদ্যে দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিউলে অনুষ্ঠিত হচ্ছে পিফোরজির দু দিনব্যাপী এ সম্মেলন।
প্রধানমন্ত্রী তার দ্বিতীয় প্রস্তাবে সবুজ প্রবৃদ্ধি এবং বিশ্বের লক্ষ্য ২০৩০ অর্জনের পাশাপাশি পুরো-সমাজ-পদ্ধতির আবেদনের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।
আরও পড়ুন: জলবায়ু সমস্যা নিরসনে কমনওয়েলথের প্রতি আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
তৃতীয় প্রস্তাবে তিনি বলেন, ‘পিফোরজি শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নেয়া নেতাদের তথা আমাদের, পরবর্তী প্রজন্মের জন্য সবুজ ভবিষ্যত নিশ্চিত করতে আরও নিবিড়ভাবে কাজ করা দরকার।’
বার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ প্রথম স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে নিজেদের সম্পদ দিয়ে জয়বায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ড গঠন করেছে। বাংলাদেশ পিফোরজি এর সদস্য হিসেবে কম কার্বন নিঃসরণের পথ অনুসরণ করে।
পিফোরজি এর কাজের ক্ষেত্রে পানি বাংলাদেশের অন্যতম মূল্যবান সম্পদ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ডেল্টা প্ল্যান ২১০০ নামে একটি ১০০ বছরের টেকসই উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি যা পানির সুষ্ঠু ব্যবহার ও সংরক্ষণের উপর জোর দিচ্ছে।’
আরও পড়ুন: কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে তরুণদের মাছ চাষের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
প্রতি বছর আমরা জলবায়ু অভিযোজন এবং প্রশমন ব্যবস্থার জন্য প্রায় ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয় করি, উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘আমাদের জাতীয় সোলার এনার্জি অ্যাকশন প্ল্যান ২০২১-২০৪১-এর আওতায় ৪০ গিগা ওয়াট পর্যন্ত নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদনের আশা করা হচ্ছে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আশা প্রকাশ করেন, চলমান কোভিড-১৯ মহামারির নানা চ্যালেঞ্জ থাকা সত্বেও সবুজ পুনরুদ্ধার এবং সবুজ বৃদ্ধির মাধ্যমে তাদের আরও ভালো করে গড়ে তোলার সুযোগ রয়েছে।
জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলা এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ২০১৭ সালে পিফোরজি নামে এই বৈশ্বিক উদ্যোগ শুরু হয়।
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁ, জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মার্কেল, দক্ষিণ কোরিয়ার প্রধানমন্ত্রী চার্লস মিশেল, জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস, চীনের প্রধানমন্ত্রী লি খছিয়াং, ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদো, নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জ্যাসিন্ডা আরডেন, উজবেকিস্তানের প্রেসিডেন্ট শওকত মির্জা ওয়েব এবং চিলির প্রেসিডেন্ট সেবাস্তিয়ানসহ বিশ্বের অন্যান্য নেতারা সম্মেলনের ভার্চুয়াল লিডারস অধিবেশনে বক্তব্য দেন।