প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বর্তমান সরকার বাংলাদেশকে একটি উন্নত দেশে পরিণত করতে চায়। তাই প্রত্যাশিত উন্নয়ন অর্জনের লক্ষ্যে সকল দেশের সাথেই বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতে হবে।
শনিবার বিশ্ব শান্তিরক্ষী দিবস ২০২১ উপলক্ষে সেনাকুঞ্জে অনুষ্ঠিত এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যোগদান করেন।
এ সময় তিনি বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশকে উন্নত ও সমৃদ্ধশালী দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। তাই বাংলাদেশকে সকলের সাথে বন্ধুত্ব বজায় রাখার পথেই এগিয়ে যেতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী মনে করেন, বর্তমানে সরকারের প্রাথমিক দায়িত্ব হলো জনগণের আর্থিক অবস্থার উন্নতি সাধন, দারিদ্র্যতা দূরীকরণ, সকলের জন্য শিক্ষা, চিকিৎসা এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য কর্মসংস্থান সুনিশ্চিত করা।
আরও পড়ুন: ডাক অধিদপ্তরের সদর দপ্তর ‘ডাক ভবন’ উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
বিশ্ব শান্তিরক্ষী দিবসের এবারের প্রতিপাদ্যে তারুণ্যেকে বিশ্ব মুক্তি ও শান্তির দূত হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে। ঠিক একইভাবে সরকার এদেশের তরুণ প্রজন্মকে বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় অবদান রাখার জন্য পরিপূর্ণভাবে যোগ্য হিসেব গড়ে তুলতে চায়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, দেশের সশস্ত্র ও পুলিশ বাহিনীর তরুণ সদস্যরা এই একুশ শতকের বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য প্রস্তুত। সরকার এই বাহিনীগুলোর সদস্যদের ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার লক্ষ্যে সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে চায়।’
প্রধানমন্ত্রী দৃঢ়তার সাথে জানান, বাংলাদেশ জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের অধীনে বিশ্বের যেকোনও প্রান্তে শান্তি প্রতিষ্ঠায় কাজ করতে প্রস্তুত আছে। এছাড়া বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে কর্মরত বাংলাদেশ সেনা, নৌ, বিমান ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের সততা, নিষ্ঠা ও কর্তব্যপরায়ণ হয়ে নিজ দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানান তিনি।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্ব শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষায় বাংলাদেশ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এমনকি বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীরা নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়েও নিজেদের দায়িত্ব পালন করে চলেছে। সকল প্রকার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় শান্তিরক্ষায় নিয়োজতি সদস্যদের জন্য আরও উন্নত প্রশিক্ষণ, প্রযুক্তি ও সরঞ্জামাদি সরবরাহ প্রদান করা হবে।’
আরও পড়ুন: জলবায়ু সমস্যা নিরসনে কমনওয়েলথের প্রতি আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
বাংলাদেশে শান্তিরক্ষীরা বিশ্বজুড়ে বাংলাদেশ ও জাতিসংঘের পতাকা সমুন্নত রাখছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই মুহূর্তে বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের ৬ হাজার ৭৪২ জন শান্তিরক্ষী নিয়োজিত রয়েছেন। শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশই সবচেয়ে বেশি সংখ্যায় সৈন্য পাঠাচ্ছে। এছাড়া মেজর জেনারেল ও ব্রিগেডিয়ার পদ মর্যাদার কর্মকর্তারা ডেপুটি ফোর্স কমান্ডার ও সেক্টর কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।’
বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীরা পৃথিবীর বুকে বাংলাদেশকে শান্তি প্রতিষ্ঠার দেশ হিসেবে পরিচিত করাবে আশাব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী।
এদিকে অনুষ্ঠানের শুরুতে শান্তিরক্ষা মিশনে প্রাণ উৎসর্গকারীদের স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে শান্তিরক্ষা মিশনে নিহত ও আহত সদস্যদের পরিবারের হাতে সম্মাননা তুলে দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন।