বিশিষ্ট লেখক ও জলবায়ু কর্মী অমিতাভ ঘোষ জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশের পদক্ষেপের প্রশংসা করেছেন। তবে তিনি তার জন্মভূমি পশ্চিমবঙ্গের জন্য চিন্তিত।
তিনি বলেন, ‘আসলে, জলবায়ু পরিবর্তনের সহনশীলতা কর্মসূচি তৈরিতে তথ্য প্রচারে বাংলাদেশ বিশ্বে শীর্ষস্থানীয় হয়ে উঠেছে। অনেক উদ্ভাবন রয়েছে।’
রবিবার দক্ষিণ কলকাতায় তার বাড়িতে এক সংক্ষিপ্ত সফরকালে টাইমস অব ইন্ডিয়াকে এসব কথা বলেছেন অমিতাভ ঘোষ।
তিনি বলেন, তথ্য প্রচার, নিয়মিত সতর্কতা ও বুলেটিনের মাধ্যমে বাংলাদেশ সফলভাবে জলবায়ু পরিবর্তন সমস্যা মোকাবিলা করেছে।
লেখক বলেন, ‘সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির প্রভাবকে প্রতিহত করতে একটি ডাচ দলের সহযোগিতায় তারা তাদের দ্বীপের চারপাশে ওয়াস্টার বেড তৈরি করেছে। বাংলাদেশ বহু বছর আগে সফলভাবে মাত্র একবার ব্যবহার করতে হয় এমন প্লাস্টিক নিষিদ্ধ করতে সক্ষম হয়েছে। এমনকি যুক্তরাষ্ট্র এমন প্লাস্টিক নিষিদ্ধ করার কাছাকাছি আসতে পারেনি।’
আরও পড়ুন: সাতক্ষীরায় জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সঙ্গে ডেনমার্কের প্রিন্সেসের মতবিনিময়
ঘোষ নিয়মিত সুন্দরবন পরিদর্শন করেন এবং তার বহুল প্রশংসিত উপন্যাস ‘দ্য হাংরি টাইড’ এর জন্য এই অঞ্চলটি নিয়ে গবেষণা করেছেন।
তিনি ভারতের শীর্ষ সাহিত্য পুরস্কার জ্ঞানপীঠ জিতেছেন এবং তার ‘সি অব পপিজ’ এবং ‘গ্লাস প্যালেস’ উপন্যাসের জন্য বুকার ও আর্থার ক্লার্ক পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছেন।
গত ২০ বছর ধরে সুন্দরবন ভ্রমণ করা ঘোষ দেখতে পেয়েছেন প্রত্যন্ত এই অঞ্চলে অনেক সুবিধা পৌঁছেছে।
‘অনেক বাঁধ পুনঃনির্মাণ করা হয়েছে এবং প্রচুর শক্তিবৃদ্ধি ঘটেছে। তবে সেখানে জলবায়ু পরিবর্তনের গতির যেরূপ সমস্যা, বাঁধ নির্মাণ তার সমাধান নয় বলে মনে করেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘বাঁধ সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি কিংবা জলোচ্ছ্বাস প্রতিহত করতে পারে না।’
জলবায়ু পরিবর্তন একটি বৈশ্বিক সমস্যা এবং বৈশ্বিক শাসন ব্যবস্থাকে এর সমাধান করতে হবে। জলবায়ু পরিবর্তনের ভূ-রাজনীতি এ সমস্যার নির্দিষ্ট,সম্মিলিত বৈশ্বিক সাড়াদানের সবচেয়ে বড় বাধা বলে মনে করেন ঘোষ।
আরও পড়ুন: মার্কিন প্রেসিডেন্টের জলবায়ু বিষয়ক বিশেষ দূত জন কেরির সঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বৈঠক
তিনি বলেন, ‘প্যারিসে চুক্তিবদ্ধ ধনী দেশগুলো জলবায়ু সহনশীলতা তহবিলের জন্য ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। কিন্তু এর ১০ ভাগও দেয়া হয়নি। ধনী দেশগুলো তাদের প্রতিরক্ষা ব্যয় এক দশমিক দুই ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার বাড়িয়েছে। তাই পর্দার আড়ালে তারা যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে। ইউক্রেন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে এটি আরও পরিষ্কার হয়ে গেছে।’
তবে ঘোষ বলেছেন, তিনি তার জন্মস্থান কলকাতার জন্য মারাত্মক চিন্তিত যেখানে তার মা ও বোন এখনও বসবাস করেন।
তিনি বলেন, ‘কলকাতা একাধিক কারণে হুমকির সম্মুখীন। শহরের একটি বড় অংশ সমুদ্রপৃষ্ঠের নিচে এবং অনেক দিন ধরে শহরটিকে রক্ষা করেছে বাঁধ।’
তিনি বলেন,পশ্চিমবঙ্গ সুন্দরবনের তার অংশে অনেক বাঁধ নির্মাণ করেছে এবং পুরনো বাঁধগুলো জোরদার করেছে।