সোমবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয় রিজেন্ট বোর্ডের এক জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
এদিকে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতাদের সাময়িক বহিষ্কারের সিদ্ধান্তের পর মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি সভা করে তাদের পদত্যাগপত্র প্রত্যাহার করে নেয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. সিরাজুল ইসলাম জানান, গত রবিবার সেমিস্টার পরীক্ষায় অকৃতকার্য এক ছাত্রীকে পরবর্তী সেমিস্টারের পরীক্ষা জোর করে দেয়ানোকে কেন্দ্র করে দায়িত্বরত শিক্ষকদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন ছাত্রলীগের নেতারা।
এ ঘটনায় সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সভাপতিত্বে রিজেন্ট বোর্ডের সভায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি সজীব তালুকদার, সহসভাপতি ইমরান মিয়া ও পান্না দাস এবং যুগ্ম সম্পাদক জাবির ইকবাল ও ইয়াসিন আরাফাতকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। মঙ্গলবার তাদের সাময়িক বহিষ্কারের চিঠি দেয়া হয়েছে। কেন স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে না সাত দিনের মধ্যে তার কারণ দর্শাতেও বলা হয়েছে।
রিজেন্ট বোর্ডের সভায় বোর্ড সদস্য নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য সাইদুল হক চৌধুরীকে প্রধান করে একটি অর্ডিনেন্স সংশোধনী কমিটি গঠন করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল অনুষদের ডিন এই কমিটির সদস্য থাকবেন।
এছাড়া রবিবার শিক্ষকদের সাথে কতিপয় শিক্ষার্থীর অসৌজন্যমূলক আচরণের ঘটনা তদন্তের জন্য রিজেন্ট বোর্ড সদস্য জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য শরীফ এনামুল কবিরকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী তিন সপ্তাহের মধ্যে কমিটিকে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
এদিকে পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক মহিউদ্দিন তাসনিমের বিরুদ্ধে ওই বিভাগের এক শিক্ষার্থীর আনা যৌন হয়রানির অভিযোগ বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘যৌন নির্যাতন ও হয়রানি প্রতিরোধ কমিটি’কে তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. মোহাম্মদ শাহিন উদ্দিন জানান, শিক্ষকদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণে জড়িত শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ায় বিভিন্ন দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করা শিক্ষকদের পদত্যাগপত্র প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
এদিকে মঙ্গলবার সকাল থেকেই বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করে। দুপুরে টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে পাঁচ ছাত্রলীগ নেতাকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার এবং বিশ্ববিদ্যালয় অর্ডিনেন্স সংশোধনের দাবি জানানো হয়। এছাড়া পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের এক ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নকারী ওই বিভাগের শিক্ষকের শাস্তিও দাবি করা হয়।
উল্লেখ্য, গত রবিবার মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সেমিস্টার পরীক্ষায় অকৃতকার্য এক ছাত্রীকে পরবর্তী সেমিস্টারের পরীক্ষা জোর করে দেয়ায় ছাত্রলীগের নেতারা। এসময় শিক্ষকরা বাধা দিলে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা দায়িত্বরত শিক্ষকদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন। এ ঘটনায় ছাত্রলীগের চার নেতার বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কাছে তাৎক্ষণিক বিচার দাবি করে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি।
বিচার না পাওয়ায় সোমবার শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন পদে থাকা ৫২ জন শিক্ষক বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড. তৌহিদুল ইসলামের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন।