তাদের ফিরিয়ে আনতে আইওএম একটি বিশেষ ভাড়া করা বিমানের ব্যবস্থা করে বলে সংস্থাটি এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে।
বিমানটি মঙ্গলবার লিবিয়ার মিসারত বিমানবন্দর থেকে রওনা দিয়ে বুধবার দুপুরে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায়। এতে যুদ্ধে আহত, সমুদ্রপথে ইউরোপ যেতে ব্যর্থ এবং লিবিয়ার জেলে বন্দী থাকা অভিবাসীরা ছিলেন।
ফিরে আসা অভিবাসীরা আইওএম লিবিয়া থেকে মনসামাজিক ও তৎক্ষণিক সেবা, ফিরে আসার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তৈরি, স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং বাংলাদেশ সরকারের দূতাবাসের সাথে যোগাযোগ করতে সহায়তা পেয়েছেন।
আর ঢাকায় পৌঁছানোর পর তারা বিমানবন্দরে আইওএম বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বাড়ি ফিরতে প্রত্যেকে ৪ হাজার ৭৩০ টাকা, খাবার, স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও মানসিক সেবা পেয়েছেন।
আগামীতে এ অভিবাসীদের অর্থনৈতিক সহযোগিতাও করবে আইওএম, যাতে তারা দেশে আয় করে জীবন চালাতে পারেন।
ফিরে আসাদের মধ্যে আটজন শারীরিকভাবে অসুস্থ আছেন। তাদের নিবিড়ভাবে স্বাস্থ্যসেবা এবং চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তির ক্ষেত্রে সহায়তা করা হয়েছে।
বুধবার ফেরত আসাদের একজন ঝিনাইদাহ জেলার মহেশপুরের মো. আকবর। তিনি চার বছর আগে লিবিয়া যান পারিবারের ভাগ্য বদলাতে।
তিনি জানান, গ্রামের দালাল ধরে লিবিয়ায় গিয়েছিলেন। বেতন ছিল খুবই কম। কোনোমতে নিজে চলতে পারতেন। যে কারখানায় তিনি কাজ করতেন সেখানে হঠাৎ বিমান হামলা হয়। চার বাংলাদেশিসহ ১৩ জন মারা যায়।
আকবর বলেন, ‘সে এক ভায়াবহ অভিজ্ঞতা। মনে হলো অল্পের জন্য জীবনটা বাঁচল। সিদ্ধান্ত নিলাম দেশে ফিরে আসব।’
এরপর তিনি লিবিয়ায় বাংলাদেশ দূতাবাস হয়ে আইওএমের সাথে যোগাযোগ এবং স্বেচ্ছায় দেশে ফেরার আগ্রহ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘এ এক বিরাট উপকার। কারণ আইওএমের মাধ্যমে জীবন নিয়ে দেশে ফিরতে পেরেছি।’
আইওএম বাংলাদেশের চিফ আব মিশন গিওর্গি গিগাওরি বলেন, ‘লিবিয়ায় প্রতিকূল অবস্থা অব্যাহত থাকায় ঝুঁকিপূর্ণ বাংলাদেশিদের সুরক্ষা ও সহায়তা দিতে সর্বদা আমরা তৎপর। যারা ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছেন তাদের তাৎক্ষণিক সব ধরনের সহযোগিতা নিশ্চিত করছি আমরা। একই সাথে ফিরে আসা অভিবাসীদের দীর্ঘমেয়াদী সহযোগিতাও করব আমরা।’
ইউরোপিয় ইউনিয়নের অর্থায়নে এবং বাংলাদেশ সরকার ও লিবিয়া কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় ২০১৫ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ১৪ শতাধিক বাংলাদেশিকে দেশে ফিরতে সহযোগিতা করছে আই্ওএম। তারা বিশ্বব্যাপী ভিএইচআর কর্মসূচির সহযোগিতায় ঝুঁকিপূর্ণ অভিবাসীদের প্রয়োজনীয় সুরক্ষা ও সহায়তা দিয়ে থাকে।