ঠাকুরগাঁও জেলা কৃষির ওপর নির্ভরশীল হওয়ায় এ অঞ্চলের কৃষকরা হাঁস-মুরগি ও গরু-ছাগল পালন করে থাকেন। বিশেষ করে মুরগির খামার গড়ে তুলেছে শত শত কৃষক। বিভিন্ন কারণে তারা কখনও লাভের মুখ দেখে আবার কখনও লোকসান গুনতে হয়। তবে করোনার থাবায় এবার মুহূর্তেই নিঃশেষ হয়ে গেছে জেলার অনেক মুরগি খামারির স্বপ্ন।
করোনার শুরুর দিকে হঠাৎ করে সারা দেশে গণপরিবহন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পরেন তারা। বাধ্য হয়ে ব্রয়লার মুরগি ৫৫-৬০, পাকিস্তানি মুরগি ১০০ ও দেশি মুরগি ২৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেছেন। ডিম বিক্রি করতে হয়েছে ২০ টাকা হালি দরে। এমন লোকসানে পড়া খামারিদের খামার ধীরে ধীরে মুরগি শূন্য হয়ে যায়। নতুন করে আর খামারে মুরগি পালন করতে পারেননি তারা।
সদর উপজেলার গড়েয়া, চিলারং ও সালন্দর এলাকার জয়নাল আলী, সফিকুল ইসলাম ও কিসমত আলীসহ বেশ কয়েকজন খামারি জানান, ঋণ করে মুরগি পালন করেন। খামারের পেছনে প্রতিদিন শ্রমিকরাও কাজ করেন। ফলে খরচ অনেক বেশি। কিন্তু এখন এত কম দামে মুরগি ও ডিম বিক্রি করে খামার চালানো সম্ভব নয়।
জেলার অনেক খামার মালিক এখন পথে বসেছেন। তারা আবার খামার চালু করতে আগ্রহী হচ্ছেন না। অর্থের অভাবের কারণেও তাদের পক্ষে নতুন করে দাঁড়ানো সম্ভব হচ্ছে না।
তারা জানান, প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের কোনো লোক তাদের খোঁজ নিতে আসেননি। আগে থেকেই তারা মাঠে আসতেন না। খামারিরা কোনো পরামর্শ পাচ্ছেন না।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. আলতাফ হোসেন জানান, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্য মতে জেলায় বর্তমানে ৭ শতাধিক মুরগির খামার রয়েছে। বার্ষিক মুরগি উৎপাদন হয় ৪০ লাখ ২২ হাজার ৯৯১টি। ডিম উৎপাদন হয় প্রায় ১৮ কোটি।
‘তবে কতগুলো খামার বন্ধ হয়েছে তার হিসাব এ মুহূর্তে আমাদের কাছে নেই,’ যোগ করেন তিনি।