রপ্তানিকারকরা জানান, খুব শিগগিরই ডুমুরিয়া থেকে অন্তত ১৫ ধরনের সবজি রপ্তানি হবে ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে।
সবজিগুলোর মধ্যে রয়েছে- পটল, কুশি (চিচিঙ্গা), ঝিঙা, লাউ, মিষ্টি ও চাল কুমড়া, লাল শিম, শসা, পেঁপে, ধুন্দুল, কাঁচা কলা, কচুর মুখি ও লতি, কাঁকরোল ও বেগুন।
সূত্র জানায়, সফল প্রকল্পের আওতায় ডুমুরিয়ার ৩ হাজার ৮৬ জন কৃষকের কাছ থেকে সবজি সংগ্রহ করা হবে। ডুমুরিয়ার ভিলেজ সুপার মার্কেটে প্রক্রিয়াজাতকরণের পর প্যাকিং হবে সবজি।
গত ৩০ অক্টোবর কৃষি বিভাগের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে বিএফভিএপিইএ, এফবিসিসিআই’র শীর্ষ নেতারা ডুমুরিয়া সবজি ক্ষেত সরেজমিন পরিদর্শন শেষে কৃষকদের সাথে মতবিনিময় করেন।
এ সময় বাংলাদেশ ফ্রুট, ভেজিটেবল অ্যান্ড অ্যালাইড প্রোডাক্টস এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএফভিএপিইএ) সভাপতি এবং এফবিসিসিআই’র পরিচালক এসএম জাহাঙ্গীর হোসেন, সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মেদ মনসুর, রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান ‘লী’ এন্টারপ্রাইজের প্রোফাইটার মো. আবুল হোসেন, এনএইচবি কর্পোরেশনের প্রোপাইটার মো. নাজমুল হায়দার ভূঁইয়া এবং সলিডারিডাড নেটওয়ার্ক এশিয়ার সিনিয়র ম্যানেজার মো. মজিবুল হক উপস্থিত ছিলেন।
ডুমুরিয়ার ভিলেজ সুপার মার্কেটের সলিডারিডাড নেটওয়ার্ক এশিয়ার কমডিটি ম্যানেজার (ফল ও সবজি) ড. নাজমুন নাহার জানান, নেদারল্যান্ডের অর্থায়নে সলিডারিডাড নেটওয়ার্ক এশিয়ার সার্বিক সহযোগিতায় উত্তরণ সহায়ক হিসেবে ‘সফল’ প্রকল্পে কাজ করছে। খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, যশোর, নড়াইল, লক্ষ্মীপুর ও নোয়াখালী জেলার দুটি করে উপজেলায় এক লাখ ৬ হাজার কৃষক রয়েছেন এ প্রকল্পে। তবে সকলেই রপ্তানি সুবিধা পাচ্ছেন না।
২০১৮ সাল থেকে যশোরের সবজি বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘যশোরের পাশাপাশি এখন খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলা থেকে সবজি রপ্তানি প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে।’
‘ইউরোপিয়ান দেশসমূহের মধ্যে ফ্রান্স, জার্মানি ও ইতালি এবং মধ্যপ্রাচ্যের কাতার, কুয়েত, সৌদি আরবসহ অন্যান্য দেশে ডুমুরিয়ার এ সবজি রপ্তানি হবে,’ বলেন তিনি।
ডুমুরিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মোসাদ্দেক হোসেন বলেন, ‘ডুমুরিয়াকে খুলনার শস্য ভাণ্ডার বলা হয়। এ অঞ্চলের শাক-সবজি, ফলমূল ও খাদ্য শস্য উৎপাদনে দেশজুড়ে খ্যাতি রয়েছে। বিষমুক্ত সবজি রপ্তানির সামার্থ্য রয়েছে এ অঞ্চলের কৃষকদের।
তিনি আরও বলেন, ‘ডুমুরিয়ার কৃষকদের উৎপাদিত সবজি রপ্তানির সুযোগ পেলে খুলনা অঞ্চলের কৃষি অর্থনীতিতে যুগান্তকারী পরিবর্তন আসবে। কৃষি অর্থনীতি ব্যাপক সমৃদ্ধি ঘটবে।’
বিএফভিএপিইএ’র সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মনসুর আলী জানান, প্রবাসে থেকেই দেশের টাটকা শাক-সবজি, ফলমূল খেতে পারেন বাংলাদেশিরা। কৃষকদের কাছ থেকে সরাসরি এসব পণ্য সংগ্রহ করে রপ্তানি করছেন প্রায় ২০০ রপ্তানিকারক। খুলনার ডুমুরিয়ায় উৎপাদিত শাক-সবজি বিদেশে রপ্তানিযোগ্য।
খুব অল্প সময়ের মধ্যে খুলনা থেকে শাকসবজি রপ্তানি শুরু হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
এফবিসিসিআই’র পরিচালক এসএম জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘ডুমুরিয়ার কৃষকদের উৎপাদিত সবজি দেখেছি, সন্তোষজনক। তবে কিছু রিক্যুয়ারমেন্ট রয়েছে। যেমন, লাউ, চাল ও মিষ্টি কুমড়া অনূর্ধ্ব এক কেজি সাইজের হতে হবে। পটল ও কাঁকরোলের সাইজটা বড় হতে হবে। বেগুন ও শিম লাল রংয়েরটাই পছন্দ। কৃষক ও কৃষি বিভাগের সাথেও কথা বলেছি-তারা আমাদের চাহিদা অনুযায়ী সবজি সরবরাহ করতে পারবেন বলে জানিয়েছেন।’
তিনি বলেন, ‘ইতোমধ্যে কয়েকজন রপ্তানিকারকও সরেজমিন পরিদর্শন করেছেন। ফলে আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া শেষ, এখন কাজ শুরুর পালা।’