মঙ্গলবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্মথন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের উপস্থিতিতে সোনালী, অগ্রণী, জনতা ও রূপালী ব্যাংক এবং বাংলাদেশ হাউস বিল্ডিং ফাইন্যান্স কর্পোরেশনের (বিএইচবিএফসি) সঙ্গে এই সমঝোতা স্মারক সই হয়।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের পক্ষে অর্থ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. মো. জাফর উদ্দীন ও সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর পক্ষে নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এমওইউতে সই করেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব মো. আশাদুল ইসলাম, অর্থ বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সচিব আব্দুর রউফ তালুকদার প্রমুখ।
অর্থ বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সচিব আব্দুর রউফ তালুকদার বলেন ,সরকারের যেসব মন্ত্রণালয় বা প্রতিষ্ঠান অটোমোশন হয়েছে সেসব প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীরা আগামী ১ অক্টোবরই এ ঋণের জন্য আবেদন করতে পারবে। এ ঋণের আওতায় সকল সরকারি কর্মচারীদের আনতে প্রায় ২ বছর সময় লাগবে। এখন পর্যন্ত সম্পূর্ণ অটোমশন হয়েছে ৫টি মন্ত্রণালয়।
গত ৩০ জুলাই অর্থ বিভাগ থেকে ‘সরকারি কর্মচারীদের জন্য ব্যাংকিং-ব্যবস্থার মাধ্যমে গৃহ নির্মাণ ঋণ প্রদান নীতিমালা-২০১৮’ প্রজ্ঞাপন আকারে জারি করা হয়। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, চাকরি স্থায়ী হওয়ার পাঁচ বছর পর থেকে সরকারি চাকরিজীবীরা এই ঋণ পাওয়ার যোগ্য হবেন। আর আবেদনের জন্য সর্বোচ্চ বয়সসীমা হবে ৫৬ বছর। এ ঋণের সীমা ঠিক করা হয়েছে ২০ লাখ থেকে ৭৫ লাখ টাকা। ঋণ পরিশোধের জন্য সর্বোচ্চ সময় হবে ২০ বছর।
সূত্র জানায়, এই ঋণের জন্য ব্যাংক ১০ শতাংশ হারে সরল সুদ নেবে। অর্থাৎ চক্রবৃদ্ধি সুদ (সুদের ওপর সুদ) নেয়া হবে না। তবে ঋণগ্রহীতাকে দিতে হবে ৫ শতাংশ। বাকিটা সরকারের পক্ষ থেকে পরিশোধ করা হবে ভর্তুকি হিসাবে।
শুধু বেসামরিক সরকারি কর্মচারীরা যারা স্থায়ী পদে চাকরি করেন তারাই এই ঋণ পাবেন। সরকারি চাকরিতে চুক্তিভিত্তিক, খণ্ডকালীন ও অস্থায়ী ভিত্তিতে নিযুক্ত কেউ এই ঋণ পাবেন না।
৫ শতাংশ সুদে গৃহনির্মাণ ঋণের বিষয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, সরকারের এটি একটি যুগান্তকারি পদক্ষেপ। আগে একজন সরকারি কর্মচারী অবসরে যাওয়ার পর মাথাগুঁজার ঠাই নিয়ে চিন্তিত থাকতো। এর মাধ্যমে সে অনিশ্চয়তা থাকবে না।
তিনি বলেন, আবাসনে আমরা এখনো একটু পিছিয়ে আছি। এখন আবাসনে জোর দেয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, শতভাগ জনগণকে আবাসনের আওতায় আনতে সময় লাগবে। এখন দেশে হয়তো ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ মানুষ আবাসনের আওতায় রয়েছে।
সিঙ্গেল ডিজিটে সুদ বিষয়ে বেসরকারী ব্যাংকগুলো সরকারে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করেনি প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, এখনো অনেক ব্যাংক ঋণে সুদহার সিঙ্গিল ডিজিটে (৯ শতাংশ) আনতে পারেনি। তবে আশি আশা করছি শিগগির তারা তা বাস্তবায়ন করবে। হয়তো কয়েক মাস সময় লাগবে। এটা করা খুবই সহজ এক্ষেত্রে ব্যাংকগুলো প্রোফিট একটু কম করলেই হয়।
উল্লেখ্য, সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল গত ৯ আগস্ট থেকে দেশের সব বাণিজ্যিক ব্যাংকে ৬ শতাংশে আমানত সংগ্রহ ও ৯ শতাংশ সুদহারে শিল্প ঋণ বিতরণ করতে হবে। কিন্তু বাংলাদেশ বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদনে দেখা গেছে অধিকাংশ ব্যাংকে এ নির্দেশনা বাস্তবায়ন করেনি। তবে সরকারি কয়েকটি ব্যাংক তা বাস্তবায়ন করেছে।