বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আদালত হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টের (বৃহস্পতিবারের) পরিস্থিতিকে নজিরবিহীন বলছে। আমরাও মনে করি (আপিল বিভাগের) এমন সিদ্ধান্ত নজিরবিহীন।’
এক আলোচনা সভায় তিনি আরও বলেন, ‘একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রী, যার অবস্থা গুরুতর, তিনি জামিনের জন্য আবেদন করেছেন, কিন্তু আদালত এ আবেদনে গুরুত্ব না দিয়ে বরং যারা তার আদেশ মানেনি তাদের সময় দিল। এটা দেশ ও জাতির জন্য দুর্ভাগ্য।’
বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে এবং ১৯৯০ সালে স্বৈরাচারী এইচএম এরশাদের পতন উপলক্ষে জাতীয় প্রেস ক্লাবে ৯০-এর ডাকসু ও সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্যের বিএনপিপন্থী ছাত্র নেতারা এ আলোচনা সভার আয়োজন করে।
ফখরুল বলেন, সরকার এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য আদালত অবমাননা করেছেন। তারা নির্দেশ থাকার পরও খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার প্রতিবেদন আদালতে জমা দেননি। ‘আমরা প্রধান বিচারপতি ও বিচার বিভাগকে শ্রদ্ধা করি। কিন্তু (আদালত অবমাননায়) ব্যবস্থা না নেয়ায় আমরা বিস্মিত হয়েছি।’
বৃহস্পতিবার আপিল বিভাগ জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার জামিন আবেদনের শুনানি পিছিয়ে ১২ ডিসেম্বর ধার্য করে। সেই সাথে খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় নিয়োজিত বিএসএমএমইউর মেডিকেল বোর্ড ২৮ নভেম্বরের আদেশ অনুযায়ী তার শারীরিক অবস্থার প্রতিবেদন বৃহস্পতিবার জমা দিতে না পারায় তাদের এ প্রতিবেদন ১২ ডিসেম্বর জমা দিতে বলে আদালত।
ফখরুল অভিযোগ করেন যে অ্যাটর্নি জেনারেল রাষ্ট্র নয় বরং শাসক দলের স্বার্থ রক্ষায় কাজ করছেন।
খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ হওয়ায় জামিন পাওয়া তার সাংবিধানিক অধিকার বলে উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘চিকিৎসকরা বলছেন যদি তাকে অবিলম্বে সুচিকিৎসা দেয়া না হয় তাহলে তিনি হয়তো জীবন হারাতে পারেন। ‘এ জন্য আমরা মানবিক কারণে তাকে কারামুক্তি দিয়ে তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে তাদের বলছি।’
খালেদা জিয়া ভালো আছেন বলে প্রধানমন্ত্রী যে মন্তব্য করেছেন সে প্রসঙ্গে ফখরুল বলেন, যখন সরকারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন যে তিনি অসুস্থ নন তখন বিএসএমএমইউর উপাচার্যের ঘাড়ে কয়টা মাথা আছে যে তিনি বলবেন খালেদা জিয়া অসুস্থ।
ফখরুল দুঃখ করে বলেন, গণমাধ্যম ভুলে গেছে যে ৬ ডিসেম্বর ‘স্বৈরাচার পতন দিবস’। বেশির ভাগ পত্রিকা দিবসটির গুরুত্ব তুলে ধরেনি। ‘আমার কাছে মনে হয় যে গণমাধ্যম এখন গণতন্ত্রের আর দরকার নেই বলে মনে করে। এটি অবাক করার মতো বিষয়।’
তিনি ১৯৯০ সালে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন এবং এরশাদকে সরিয়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় খালেদা জিয়ার অসামান্য এবং আপসহীন ভূমিকার কথাও স্মরণ করেন।