১৪ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ১৪টি দল সকাল থেকে রাত পর্যন্ত নির্বাচনী এলাকায় ঘুরে প্রার্থীদের আচরণবিধি পর্যবেক্ষণ এবং প্রতিপক্ষের কোনো হুমকি রয়েছে কিনা তা নজরদারি করবেন।
এদিকে নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু হতে আরও তিন দিন বাকি। অধিকাংশ ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী। ফলে নির্বাচনের মাঠে উত্তেজনা রয়েছে। তাই নির্বাচনী পরিবেশ শান্ত রাখতে মাঠে ১৪টি ভ্রাম্যমাণ আদালত কাজ করছে। চট্টগ্রাম মহানগরীতে ৪১টি ওয়ার্ড থাকলেও ১৪টি সংরক্ষিত ওয়ার্ড অনুযায়ী ভ্রাম্যমাণ আদালত কাজ করবে।
অতিরিক্ত রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ মুনীর হোসাইন খান জানান, প্রার্থীদের জন্য নির্বাচনী আচরণবিধি রয়েছে। এর বাইরে গেলেই ভ্রাম্যমাণ আদালত বিষয়টি দেখবেন। প্রথম পর্যায়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা প্রতীক বরাদ্দের আগেই বিভিন্ন স্থানে লাগানো প্রার্থীদের শুভেচ্ছামূলক পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুন অপসারণ করছেন। একই সাথে অন্যান্য আচরণবিধি লঙ্ঘনের ঘটনার তদন্ত এবং প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের একে-অপরের প্রতি হুমকি-ধামকিও তদারকি করছেন তারা।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবদুস সামাদ সিকদার বলেন, ‘কেউ কাউকে হুমকিধামকি দিচ্ছে কিনা সে বিষয়গুলো খতিয়ে দেখছি। অভিযোগ পেলেই সেটিকে আমলে নিয়ে তদন্ত করছি।’
তবে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা নির্বাচন কমিশনের পরিবর্তে জেলা প্রশাসনের অধীন হওয়ায় স্বাধীনভাবে কাজ করা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে সুশীল সমাজের।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) কেন্দ্রীয় পর্ষদ ট্রাস্টি সদস্য প্রকৌশলী দেলোয়ার হোসেন মজুমদার বলেন, ‘নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নির্বাচনের সময় ইসির অধীনে কাজ করে। নির্বাচনের পরেই আবার সরকারের অধীনে চলে যেতে হয়। এই বিষয়টা চিন্তা করলেই যেটি দাঁড়ায় সেটি হলো, এদের দিয়ে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড করানো যায় তা আমি মনে করি না।’
নির্বাচন কমিশন সূত্র জানায়, চসিক নির্বাচনে মেয়র পদে ৭ জন, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১০৯ জন এবং সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৫৮ জন নির্বাচনী মাঠে রয়েছেন। এর মধ্যে ২৮ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় ১২ নং সরাইপাড়া ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী মো. নুরুল আমিনের সর্মথকদের সাথে বর্তমান কাউন্সিলর ও বিদ্রোহী প্রার্থী সাবের আহমদের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হলে উভয় পক্ষের ১০ জন আহত হন।
এরপর ১ মার্চ পাঠানটুলী এলাকার দক্ষিণ ঢেবার পাড় এলাকায় ওরশের নামে নির্বাচনী মেজবান দেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ২৮ নং দক্ষিণ পাঠানটুলী ওয়ার্ড থেকে আওয়ামী লীগ মনোনীত কাউন্সিলর প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাহাদুর। মেজবানে তিনি ৪টি গরু জবাই করে ভুড়িভোজ করান। এর আগে নির্বাচনী আচরণবিধি ভেঙে মসজিদে মুসল্লিদের কাছে ভোট চেয়ে সমালোচিত হন এই কাউন্সিলর প্রার্থী।
এছাড়া মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের শুভেচ্ছা-স্বাগতম জানিয়ে নগরীর প্রতিটি ওয়ার্ডের অলি-গলিতে টাঙানো পোস্টার-ব্যানারও সরানো হয়নি, যা নির্বাচনী আচরণবিধির লঙ্ঘন। এই আচরণবিধি নিয়ন্ত্রণে মাঠে নামানো হয়েছে ১৪ ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ১৪টি ভ্রাম্যমাণ আদালত।
চসিক নির্বাচনের অতিরিক্ত রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. মুনীর হোসাইন খান জানান, প্রথম পর্যায়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা প্রতীক বরাদ্দের আগেই বিভিন্ন স্থানে লাগানো প্রার্থীদের শুভেচ্ছামূলক পোস্টার-ব্যানার ফেস্টুন অপসারণ করছেন। একই সাথে অন্যান্য আচরণবিধি লঙ্ঘনের ঘটনাও তদন্ত করছেন। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের একে-অপরের প্রতি হুমকি-ধামকিও তদারকি করছেন তারা।
চট্টগ্রাম আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান বলেন, এবারের চসিক নির্বাচনে ৪১ ওয়ার্ডের অধিকাংশ ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছে। ফলে উত্তেজনাও রয়েছে। তাই নির্বাচনী পরিবেশ শান্ত রাখতে মাঠে কাজ করছে ১৪ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ১৪টি ভ্রাম্যমাণ আদালত।
উল্লেখ্য, ইসির ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী চসিক নির্বাচনে ৮ মার্চ মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন। ৯ মার্চ প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হবে। ২৯ মার্চ ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।