দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘অবস্থাদৃষ্টে মনে হয়, বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্টের বিরুদ্ধে গতকাল (বৃহস্পতিবার) নির্বাচন কমিশন ও পুলিশ কর্মকর্তারা একজোট হয়ে বৈঠক করেছেন। বৈঠকের আলোচনায় মনে হয়, বিএনপি এবং ঐক্যফ্রন্টকে আসন্ন জাতীয় নির্বাচন থেকে কীভাবে দমন করে চাপিয়ে রাখা যায় তারই মহাপরিকল্পনা হয়েছে সেখানে।’
রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, বৈঠকের আলোচনায় এটি অত্যন্ত সুস্পষ্ট যে দলীয় পুলিশ কর্মকর্তাদের সরকার যেসব পদে নিয়োগ দিয়েছিল সেখান থেকে তাদের সরাতে ইসি কোনো পদক্ষেপ নেবে না।
‘ইসি সরকারের অনুকূলে লেভেল-প্লেয়িং ফিল্ড নির্মাণ করতে দিনরাত কাজ করে যাচ্ছে। আর এই ক্ষেত্রে পুলিশ অত্যন্ত নিষ্ঠার সাথে নির্বাচন কমিশনকে সহায়তা করবে যাতে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন না হয়। কারণ সুষ্ঠু নির্বাচন হলে ঐক্যফ্রন্টের বিজয় ঠেকিয়ে রাখা সম্ভব নয়,’ যোগ করেন বিএনপির এ নেতা।
তিনি বলেন, ‘প্রশাসন ও পুলিশে কর্মরত বিতর্কিত ও দলবাজ কর্মকর্তাদের প্রত্যাহার করতে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে গতকাল নির্বাচন কমিশন বরাবর আবেদন করা হয়। কিন্তু প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সভায় বলেছেন, কোনো কর্মকর্তাকে বদলি করা হবে না। বিরোধী দলগুলোর পক্ষ থেকে বিতর্কিতদের সরানোর আহ্বানের বিপরীতে সিইসির এ ধরনের বক্তব্যে দলবাজ কর্মকর্তাদের আরও বেপরোয়া করে তুলবে।’
রিজভী জানান, পুলিশ কর্তৃপক্ষ বলেছিল যে তফসিল ঘোষণার পর গায়েবি মামলা দেয়া হবে না। কিন্তু এখনও বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে অব্যাহতভাবে গায়েবি মামলা দায়ের করা হচ্ছে।
তার অভিযোগ, এখনও আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু না হলেও আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থীরা নিজ এলাকায় মাইকিং করে মাঠে ময়দানে সভা-সমাবেশ করে করে যাচ্ছেন, নৌকার পক্ষে প্রচারণা চালাচ্ছেন। অন্যদিকে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীদের এলাকায় যেতে বাধা দিচ্ছে পুলিশ ও আওয়ামী সন্ত্রাসীরা। ঘরোয়া বৈঠক করতে চাইলে সেখানে চলছে সশস্ত্র হামলা।
বিএনপির এ নেতা আরও অভিযোগ করেন, প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে ক্ষমতাসীন দলের নিম্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করলেও নির্বাচন কমিশন ও পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
বিএনপিকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখতে দলটির মনোনয়ন প্রত্যাশীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
রিজভী গ্রেপ্তার হওয়া দলের সম্ভাব্য প্রার্থী রফিকুল ইসলাম মিয়া, গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী ও এহসানুল হক মিলনের অবিলম্বে মুক্তি দাবি করেন।