রবিবার বিকালে বগুড়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট খালিদ হাসানের আদালতে জবানবন্দি দেন তিনি।
হত্যাকাণ্ডে জড়িত অটোরিকশা চালক নূর ইসলাম (২৮) বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার মোকামতলার পাকুড়তলা এলাকার রফিকুল ইসলামের ছেলে।
বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সনাতন চক্রবর্তী জানান, আশুলিয়ার গ্রিন লাইফ গার্মেন্টের কর্মী মিম আক্তার গত ৪ জুন গাজীপুরের মৌচাক এলাকা থেকে বগুড়াগামী একটা বাসে উঠেন। তার কাছে মোবাইল না থাকায় বাসের হেলপারের মোবাইলের মাধ্যমে তিনি তার মায়ের সাথে যোগাযোগ করেছিলেন। বাসটি রাত সাড়ে ৯টার দিকে বগুড়ার বনানী পেট্রোল পাম্পের সামনে মিমকে নামিয়ে দেয় এবং হেলপার তাকে একটি অটোরিকশায় তুলে দেন। যথাসময়ে বাড়িতে না পৌঁছায় মিমের পরিবার সেই হেলপারের নম্বরে দফায় দফায় যোগাযোগ করেন। পরদিন সকালে রানিরহাট–গন্ডগ্রাম রোডের ৪ ইঞ্জিনিয়ার্সগামী রাস্তা থেকে মেয়েটির লাশ উদ্ধার করে পুলিশ এবং নিহতের পরিচয়পত্রের নম্বরে ফোন দিয়ে তার মাকে ডাকলে তিনি এসে লাশ শনাক্ত করেন। এ ঘটনায় মিমের মা বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন।
তিনি জানান, মেয়েটি যে রিকশায় উঠেছিল সেই রিকশা চালক নূর ইসলামকে গত ১৬ জুন রাতে কৈগাড়ি পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই ফারুক খুঁজে পান এবং চ্যালেঞ্জ করেন। এরপর তিনি মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শাজাহানপুর থানার এসআই রাজ্জাককে জানান এবং নূর ইসলামকে শাজাহানপুর থানায় নিয়ে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি ঘটনার কথা স্বীকার করেন।
নূর ইসলাম জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, মেয়েটাকে তুলে নিয়ে তিনি বনানী মোড়ে আসতেই তার মাথায় কুবুদ্ধি চেপে যায়। শহরের দিকে না এসে তিনি শাকপালার দিকে যেতে থাকেন। মেয়েটি বগুড়ার রাস্তাঘাট না চেনায় বুঝতে পারেনি। টিপটিপ বৃষ্টি হওয়াতে রাস্তা জনশূন্য ছিল। মেয়েটিকে ফাঁকা জায়গায় নিয়ে গিয়ে তার ব্যাগ কেড়ে নিয়ে তার সাথে খারাপ আচরণ শুরু করলে মেয়েটি বাঁধা দেয় এবং ধস্তাধস্তি শুরু করে। তিনি মেয়েটির মুখে আঘাত করলে তার ঠোঁট কেটে যায়। এরপর নূর ইসলাম রিকশার চাকা খোলার রড দিয়ে তার ঘাড়ে আঘাত করে। এক আঘাতেই মেয়েটি মারা গেলে তিনি রডটি ছুড়ে ফেলে দিয়ে ব্যাগটি নিয়ে চলে যায়। তার স্বীকারোক্তি মোতাবেক রডটি উদ্ধার করেছে পুলিশ।
উল্লেখ্য, স্বামী তালাক দিয়ে গাজীপুরের বাসা থেকে বের করে দিলে মিম আক্তার বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিয়ে পথে মধ্যে খুনের স্বীকার হন।