সোমবার রাতে কর্ণফুলী থানায় একটি লিখিত এজাহার দায়ের করেন হামলার শিকার হিসাবরক্ষক মো. রফিক উল্যাহ।
মঙ্গলবার সকালে অভিযোগটি মামলা হিসেবেনথিভুক্ত হয়েছে বলে জানান, তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আলমগীর হোসেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে কর্ণফুলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইসমাইল হোসেন বলেন, ‘এলজিডির হিসাবরক্ষককে শাররিকভাবে নাজেহালের ঘটনার বিষয়ে একটি অভিযোগ পাওয়া গেছে। আমরা বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেবো।’
মামলার সূত্রে জানা যায়, গত ২৬ জুলাই সকাল ১১টায় উপজেলা প্রকৌশল অফিস কক্ষে বানাজা বেগম নিশি ও অন্যান্য বিবাদীরা প্রবেশ করে তার নিজ নামীয় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের ফাইলের তথ্য জানতে চান। প্রতি উত্তরে হিসাবরক্ষক খোঁজ নেয়া ফাইলটি দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ-সহকারী প্রকৌশলীর মতামতের জন্য উপস্থাপন এবং উপজেলা প্রকৌশলীর স্বাক্ষর হয়নি বলে জানান। এ কথা শোনার পর ভাইস চেয়ারম্যান হিসাবরক্ষককে দেখে নিবেন বলে চলে যান। তার কিছু সময় পর সাড়ে ১২ টার দিকে আবারও নারী ভাইস চেয়ারম্যান ও অজ্ঞাতনামা আরও ৭/৮ জনসহ এলজিইডি অফিস কক্ষে প্রবেশ করে হিসাবরক্ষককে তার সরকারি কাজে বাধা প্রদান করে তাকে অকথ্য ভাষায় গালি গালাজ করেন।
এক পর্যায়ে নারী ভাইস চেয়ারম্যান বানাজা বেগম নিশি অফিস কক্ষের কম্পিউটার নিচে ফেলে দেন। তার স্বামী অফিস কক্ষের ওয়াকিং টেবিল উল্টিয়ে ফেলেন। নারী ভাইস চেয়ারম্যান হিসাবরক্ষককে ধরে বাম গালে ঘুষি মেরে চোখের চশমা ফেলে দেন। হঠাৎ মারধরের এ দৃশ্য দেখে অফিস সহকারী জসিম উদ্দিন ও মো. নাসির উদ্দিন বাধা দিতে আসলে বিবাদীরা তাদের প্রতিও ক্ষিপ্ত হন।
এজাহারে আরও উল্লেখ্য করা হয়, নারী ভাইস চেয়ারম্যানের নিজ নামের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স নিসাম কনস্ট্রাকশনসহ আরাও অনেকের জামানত ফেরৎ ফাইলে মতামত দেওয়ার জন্য নোট দিয়ে উপজেলা প্রকৌশলী ম্যাডামের টেবিলে পাঠানো হয়। যা ছিলো গত বছরের কাজ সম্পন্ন হওয়া ফাইল।
এদিকে, এই ঘটনায় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহকারী কমিশনার (ভূমি) এসিল্যান্ডকে প্রধান করে এক সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী ২৯ জুলাইয়ের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।
কর্ণফুলী উপজেলা প্রকৌশলী জয়শ্রী দে বলেন, ‘সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত থানায় বসে থেকে কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত নিয়ে লিখিত এজাহার দেয়া হয়েছে। আশা করি আইনি প্রক্রিয়ায় পুলিশ বাকি ব্যবস্থা নেবেন।’
তিনি অভিযোগ করে বলেন, কিছুতেই নারী ভাইস চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে এজাহার নিতে পুলিশ রাজি হচ্ছিল না। এমনকি উপজেলা প্রকৌশলীকে সাফ জানিয়ে দেন পরিষদের লিখিত সুপারিশ আনলে মামলা নথিভূক্ত করা হবে। এনিয়ে ৩ ঘন্টা যাবত তর্ক বির্তক শেষে ওসি মো. ইসমাইল হোসেন এজাহার নিতে বাধ্য হন।