ঝিনাইদহ-কুষ্টিয়া সড়কের দুধসর নামক স্থানে বুধবার বিকালে সড়ক দুর্ঘটনায় তিনজন নিহত ও চারজন আহত হয়েছেন।
নিহতরা হলেন শৈলকুপার ফুলহরি গ্রামের ফজলুর রহমানের স্ত্রী তহুরা খাতুন (২৫), একই উপজেলার গোকুলনগর গ্রামের ছবুর আলীর ছেলে তুহিন (২৮) ও রেনু খাতুন।
দুর্ঘটনায় আহতদের মধ্যে দুজনের অবস্থা গুরুতর।
নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক মারুফ আক্তার জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: মানিকগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১
দুর্ঘটনায় আক্রান্ত ইজিবাইকটি দুমড়ে মুচড়ে রাস্তার খাঁদে পড়ে যায়।
শৈলকুপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহাঙ্গীর আলম জানান, বুধবার বিকাল পৌনে ৩টার দিকে শৈলকুপার দুধসর নামক স্থানে একটি প্রাইভেট কারের সঙ্গে ইজিবাইকের সংঘর্ষে ঘটনাস্থলেই রেনু নামে এক নারী নিহত হন। এ সময় আহত হন ৬ জন।
শৈলকুপা দমকল বাহিনীর সদস্যরা আহতদের উদ্ধার করে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে নিয়ে আসলে তহুরা ও তুহিনকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। হতাহতরা সবাই ইজিবাইকের যাত্রী বলে পুলিশ ধারণা করছে।
মার্চে সারাদেশে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৫১৩: আরএসএফ
সারাদেশে গত মার্চে ৪০৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৫১৩ জন নিহত এবং আহত হয়েছেন ৫৯৮ জন।
সম্প্রতি রোড সেফটি ফাউন্ডেশন এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়।
সংগঠনটি ৭টি জাতীয় দৈনিক, ৫টি অনলাইন নিউজ পোর্টাল এবং ইলেক্ট্রনিক গণমাধ্যমের তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে।
নিহতের মধ্যে নারী ৭৮, শিশু ৬৩।
সবচেয়ে বেশি ১৩৮টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত ১৪৭ জন, যা মোট নিহতের ২৮.৬৫ শতাংশ। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার হার ৩৩.৭৪ শতাংশ। দুর্ঘটনায় ১৩৬ জন পথচারী নিহত হয়েছে, যা মোট নিহতের ২৬.৫১ শতাংশ। যানবাহনের চালক ও সহকারী নিহত হয়েছেন ৮২ জন, অর্থাৎ ১৫.৯৮ শতাংশ।
এই সময়ে ২টি নৌ-দুর্ঘটনায় দুজন নিহত এবং ৮ জন আহত হয়েছেন। ১৫টি রেলপথ দুর্ঘটনায় ১৯ জন নিহত এবং ৬ জন আহত হয়েছেন।
যানবাহন ভিত্তিক যাত্রী/চালক নিহতের চিত্র:
দুর্ঘটনায় মোট নিহতের যানবাহন ভিত্তিক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, মোটরসাইকেল চালক ও আরোহী ১৪৭ জন (২৮.৬৫%), বাস যাত্রী ৩০ জন (৫.৮৪%), ট্রাক-পিকআপ-ট্রাক্টর-ট্রলি যাত্রী ৫১ জন (৯.৯৪%), মাইক্রোবাস-প্রাইভেটকার যাত্রী ৫০ জন (৯.৭৪%), থ্রি-হুইলার যাত্রী (সিএনজি-ইজিবাইক-অটোরিকশা-অটোভ্যান-টেম্পু-মিশুক) ৮১ জন (১৫.৭৪%), নসিমন-ভটভটি-মাহিন্দ্র-লাটাহাম্বা ও বাইসাইকেল আরোহী ১৮ জন (৩.৫০%) নিহত হয়েছে।
দুর্ঘটনা সংঘটিত সড়কের ধরন:
রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ বলছে, দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে ১৭২টি (৪২.০৫%) জাতীয় মহাসড়কে, ১১৬টি (২৮.৩৬%) আঞ্চলিক সড়কে, ৭৩টি (১৭.৮৪%) গ্রামীণ সড়কে, ৩৬টি (৮.৮০%) শহরের সড়কে এবং অন্যান্য স্থানে ১২টি (২.৯৩%) সংঘটিত হয়েছে।
দুর্ঘটনার ধরন:
দুর্ঘটনাসমূহের ৯১টি (২২.২৪%) মুখোমুখি সংঘর্ষ, ১৪২টি (৩৪.৭১%) নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে, ১৩৪টি (৩২.৭৬%) পথচারীকে চাপা/ধাক্কা দেয়া, ২৯টি (৭.০৯%) যানবাহনের পেছনে আঘাত করা এবং ১৩টি (৩.১৭%) অন্যান্য কারণে ঘটেছে।
দুর্ঘটনায় সম্পৃক্ত/দায়ী যানবাহন:
দুর্ঘটনার জন্য দায়ী- ট্রাক-কাভার্ডভ্যান-পিকআপ ২৭.৫৪ শতাংশ, ট্রাক্টর-ট্রলি-লরি ৬.১৩ শতাংশ, মাইক্রোবাস-প্রাইভেটকার ৪.০৪ শতাংশ, যাত্রীবাহী বাস ১১.০৭ শতাংশ, মোটরসাইকেল ২১.৫৫ শতাংশ, থ্রি-হুইলার (ইজিবাইক-সিএনজি-অটোরিকশা-অটোভ্যান-লেগুনা-টেম্পু-মিশুক) ১৭.৫১ শতাংশ, নসিমন-ভটভটি-আলমসাধু-মাহিন্দ্র-বাইসাইকেল-প্যাডেল রিকশা ৮.৯৮ শতাংশ এবং অন্যান্য (মাটিকাটা ট্রাক্টর-ড্রাম ট্রাক-লাটাহাম্বা-তেলবাহী লরি-পাওয়ারটিলার-কন্টেইনার-কোস্টার-ঠেসার) ৩.৫৯ শতাংশ।
দুর্ঘটনার সময় বিশ্লেষণ:
সময় বিশ্লেষণে দেখা যায়, দুর্ঘটনাসমূহ ঘটেছে ভোরে ৪.৬৪%, সকালে ৩৩%, দুপুরে ১৭.৬০%, বিকালে ২০.৫৩%, সন্ধ্যায় ৪.৮৮% এবং রাতে ১৯.৩১%।