সংশ্লিষ্টরা জানান, পদাবনতি হওয়ায় তার ৩২ হাজার টাকার বেতন স্কেল কমিয়ে ১৬ হাজার টাকা করা হয়েছে। এ ছাড়া তাকে মিরপুর থেকে রাঙামাটির বরকল উপজেলায় বদলি করা হয়। তাছাড়া মাদক সেবনের বিষয়টি প্রমাণ হলে তাকে আরেকবার শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে। তবে বদলির পর গত ২৮ অক্টোবর কাইয়ুমকে মিরপুর থেকে রিলিজ করা হলেও নতুন কর্মকর্তাকে দায়িত্ব বুঝিয়ে না দিয়েই তিনি পালিয়ে যান বলে অভিযোগ উঠেছে।
জানা গেছে, জেলা প্রশাসনের একটি দল কাইয়ুমের সময় বরাদ্দকৃত সরকারি টিআর, কাবিখাসহ বিভিন্ন প্রকল্পে বড় ধরনের অনিয়ম পায়। এ নিয়ে এর আগে তদন্ত দল তাকে ভর্ৎসনা করে। পাশাপাশি নিয়মিত অফিস না করার বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও জেলা প্রশাসন থেকে বারবার তাগাদা দিলেও তিনি কর্ণপাত না করে স্বেচ্ছাচারিতা চালিয়ে যেতে থাকেন।
এর আগে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে মিরপুর উপজেলায় গ্রামীণ রাস্তায় ১৫ মিটার দৈর্ঘ্য পর্যন্ত কালভার্ট নির্মাণ প্রকল্পে ২৬টি সেতু নির্মাণের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়। গত ২০ জুন একদিনেই সব দরপত্র বিক্রি শেষ দেখানো হয়। পিআইও আব্দুল কাইয়ুমের যোগসাজশে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা সাধারণ ঠিকাদারদের বঞ্চিত করে নিজেরাই সব কাজ ভাগাভাগি করে নেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়। অনিয়মের অভিযোগ ওঠায় তিন কার্যদিবসের মধ্যে চিঠির জবাব দিতে প্রকল্পের পিডি যুগ্ম সচিব আবু বকর সিদ্দিক পিআইওকে ২৩ জুন চিঠি দেন।
পরে অধিকতর তদন্ত করতে গত ৮ জুলাই দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর থেকে যুগ্ম সচিবকে প্রধান করে দুই সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। দলের প্রধান ছিলেন ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব এম খালিদ মাহমুদ; সদস্য ছিলেন ত্রাণ ও দুর্যোগ অধিদপ্তরের পরিচালক (উপসচিব) মাহবুব আলম তালুকদার। ওইদিন রাতেই তারা কুষ্টিয়ার মিরপুরে আসেন তদন্তে। তারা সরেজমিন কাইয়ুমের নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রমাণ পান। এ সময় তার মাদক গ্রহণের বিষয়টিও জানতে পারেন।
কুষ্টিয়া জেলা ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা আব্দুর রহমান জানান, আব্দুল কাইয়ুমের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
মিরপুরের ইউএনও লিংকন বিশ্বাস জানান, নানা অনিয়ম পেয়ে আব্দুল কাইয়ুমকে বদলি করা হয়েছে। এ ছাড়া তাকে পদাবনতি দিয়ে মাদক সেবনের বিষয়টি পরীক্ষা করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।