খবর পেয়ে বিআইডব্লিউটিএ ও নৌপুলিশের সহযোগিতায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আমিনুল ইসলাম তেলবাহী কার্গো ‘ওটি সাংহাই-৪’ জব্দ করে।
তেলবাহী কার্গো ও লঞ্চটি দৌলতদিয়া এক নম্বর ফেরি ঘাটের কাছে রাখা হয়েছে। লঞ্চটি সামান্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। লঞ্চটি মাস্টারের পরিবর্তে সুকানি চালাচ্ছিলেন ও কার্গোটির কোম্পানির আরেক কার্গোর চালক চালাচ্ছিলেন। কার্গোটি চট্টগ্রাম থেকে পাবনার নটাখোলা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ফার্নিস তেল নিয়ে যাচ্ছিল।
আরও পড়ুন: শ্রমিকদের কর্মবিরতিতে হঠাৎ বন্ধ লঞ্চ চলাচল, দুর্ভোগে যাত্রীরা
সুন্দরবনে পশুর নদীতে ট্যুরিস্ট লঞ্চডুবি
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুপুর পৌনে ১২টার দিকে পাটুরিয়া থেকে যাত্রীবোঝাই লঞ্চ দৌলতদিয়ায় যাচ্ছিল। ঘাটের উজান বাহির চর থেকে আসা তেলবাহী দুটি কার্গো নটাখোলা যাচ্ছিল। ১২টার দিকে দৌলতদিয়ার ৬ নম্বর ফেরি ঘাটের সামনে পৌঁছলে কার্গোর সাথে ধাক্কা লাগতে পারে ভেবে গতি কমিয়ে দিলেও নিয়ন্ত্রণ করতে না পারায় লঞ্চের মাঝ বরাবর কার্গোর সাথে ধাক্কা লাগে। এতে অন্তত অর্ধশতাধিক যাত্রী পানিতে পড়ে, অনেকে ভয়ে লাফ দেয়। পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় রো রো ফেরি কেরামত আলী স্থানীয়দের সহযোগিতায় যাত্রীরা উপরে ওঠে। দুটি শিশু বাচ্চা প্রথমে নিখোঁজ থাকলেও পরবর্তীতে উদ্ধার করা হয়। এতে ২০ জন যাত্রী আহত হন বলে স্থানীয়রা জানায়।
লঞ্চের আহত যাত্রী সেনা সদস্য হারুন অর রশিদ জানান, ছুটি কাটিয়ে টাঙ্গাইলের গোপালপুর বাড়ি থেকে তিনি বরিশাল ক্যান্টনমেন্ট যাচ্ছিলেন। তাদের লঞ্চটিতে অতিরিক্ত যাত্রী ছিল। দৌলতদিয়া ফেরি ঘাটের কাছে পৌঁছলে পাশ দিয়ে একই কোম্পানির তেলবাহী দুটি কার্গো আসতে থাকে। কার্গো দুটি কাছাকাছি দেখে লঞ্চের চালক দিক হারিয়ে ফেলেন। একবার গতি কমিয়ে দেন, আবার বাড়ান। এমন অবস্থার মধ্যে লঞ্চের মাঝ বরাবর এসে আঘাত করে কার্গোটি। লঞ্চের কেবিনের ওপর থাকা সকল যাত্রী নদীতে পড়ে যায়।
লঞ্চের চালক সুকানি আবুল হোসেন বলেন, দুটি কার্গো একত্রে পাল্লা দিয়ে যাচ্ছিল। আমাদের লঞ্চটি কার্গোর কাছাকাছি পৌঁছলে ধারণা করছিলাম সামনে দিয়ে আগেই পার হয়ে যাব। কিন্তু দুটি কার্গোর পাল্লার কারণে কি হতে যাচ্ছে বুঝতে পারিনি। পরে মুহূর্তের মধ্যে লঞ্চের মাঝ বরাবর এসে আঘাত করে। এতে লঞ্চের বেশকিছু অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
আরও পড়ুন: মেঘনায় লঞ্চ ডাকাতি, যাত্রীদের সর্বস্ব লুট
মেঘনায় দিনের আলোতেই লঞ্চে ডাকাতি, আটক ১
তেলবাহী কার্গোর চালক সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘চালক ছুটিতে যাওয়ায় কোম্পানির আরেক কার্গো থেকে আমি আসি। গত বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম থেকে ৫০০ টন ফার্নিস তেলবোঝাই করে পাবনার নটাখোলার উদ্দেশে রওনা করে শুক্রবার সন্ধ্যায় দৌলতদিয়া পৌঁছেছি। রাত শেষ করে শনিবার দুপুরে রওনা করি। স্বাভাবিক গতিতে চালালেও লঞ্চটি অতিরিক্ত যাত্রী বহন করে দ্রুতগতিতে সামনে দিয়ে পার হওয়ার চেষ্টাকালে দুর্ঘটনাটি ঘটে। তবে কার্গোর গতি অনেক কম থাকায় বড় কোনো দুর্ঘটনা ঘটেনি।’
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) আরিচা কার্যালয়ের পরিবহন পরিদর্শক মোফাজ্জল হোসেন বলেন, ‘ইউএনও কার্গোটি জব্দ করেছেন। বিস্তারিত খোঁজ নিয়ে মূল অপরাধীর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত পদক্ষেপ নেয়া হবে।’